আপনি কি মাধ্যমিকের বাংলা প্রশ্নপত্রের উত্তর খুঁজছেন? এই আর্টিকেলে আপনি ২০২৫ সালের মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্নপত্রের সঠিক উত্তরগুলো পাবেন।
নিচে ২০২৫ সালের প্রশ্নপত্রের প্রতিটি উত্তর সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য পূর্ববর্তী বছরের প্রশ্ন ও উত্তরপত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
MadhyamikQuestionPapers.com ২০১৭ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত সব মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তর বিনামূল্যে আপলোড করে আসছে।
Download 2017 to 2024 All Subject’s Madhyamik Question Papers
View All Answers of Last Year Madhyamik Question Papers
যদি দ্রুত প্রশ্ন ও উত্তর খুঁজতে চান, তাহলে নিচের Table of Contents এর পাশে থাকা [!!!] চিহ্নে ক্লিক করুন। এই পেজে থাকা সমস্ত প্রশ্নের উত্তর Table of Contents-এ ধারাবাহিকভাবে সাজানো আছে। যে প্রশ্নে ক্লিক করবেন, সরাসরি তার উত্তরে পৌঁছে যাবেন।
Table of Contents
Toggle১. সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো:
১.১ রাবণ ইন্দ্রজিৎ-কে রামচন্দ্রের সঙ্গে যুদ্ধ করার কোন্ সময় নির্দেশ করেছিলেন?
ক) অপরাহে
খ) প্রদোষকালে
গ) প্রভাতে
ঘ) রাত্রে
উত্তর: (গ) প্রভাতে
১.২ বিখ্যাত লেখক শৈলজানন্দের ফাউন্টেন পেনের সংগ্রহ ছিল –
ক) এক ডজন
খ) দুই ডজন
গ) তিন ডজন
ঘ) ২৫টি
উত্তর: (খ) দুই ডজন
১.৩ “প্রাচীন সুমেরিয়ান বা ফিনিসিয়ান” ফিনিসিয়ানদের লেখনী কী ছিল?
ক) নল-খাগড়া
খ) বাঁশের কঞ্চি
গ) ব্রোঞ্জের শলাকা
ঘ) হাড়
উত্তর: (ক) নল-খাগড়া
১.৪ কত সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় পরিভাষা সমিতি নিযুক্ত করেন?
ক) ১৯৩৫ সালে
খ) ১৯৩৬ সালে
গ) ১৯৪৫ সালে
ঘ) ১৯৪৬ সালে
উত্তর: (খ) ১৯৩৬ সালে
১.৫ বাক্যের অর্থবোধের জন্য পরস্পরের সঙ্গে সম্বন্ধযুক্ত পদগুলি যখন ঠিকঠাক বসে, তাকে বলে?
ক) যোগ্যতা
খ) আকাঙ্ক্ষা
গ) আসত্তি
ঘ) যোগ্যতাশূন্য
উত্তর: (গ) আসত্তি
১.৬ ‘আবার তোরা মানুষ হ’।’- বাক্যটি
ক) নির্দেশক বাক্য
খ) আবেগসূচক বাক্য
গ) অনুজ্ঞাসূচক বাক্য
ঘ) প্রার্থনাসূচক বাক্য
উত্তর: (গ) অনুজ্ঞাসূচক বাক্য
১.৭ ভাববাচ্যে প্রাধান্য পায়
ক) কর্তার ভাব
খ) কর্মের ভাব
গ) কর্মকর্তৃবাচ্যের ভাব
ঘ) ক্রিয়ার ভাব
উত্তর: (ঘ) ক্রিয়ার ভাব
১.৮ ‘আমি তোমাকে বইটি দিলাম।’ এটি কোন্ বাচ্যের উদাহরণ?
ক) কর্তৃবাচ্যের
খ) কর্মবাচ্যের
গ) ভাববাচ্যের
ঘ) কর্মকর্তৃবাচ্যের
উত্তর: (ক) কর্তৃবাচ্যের
১.৯ অনুসর্গ-প্রধান কারক হল
ক) চার প্রকার
খ) তিন প্রকার
গ) দুই প্রকার
ঘ) পাঁচ প্রকার
উত্তর: (গ) দুই প্রকার
১.১০ ‘বুলবুলিতে ধান খেয়েছে’ বুলবুলি’র সঙ্গে ‘তে’ যুক্ত হয়ে কী কারক হয়েছে?
ক) অধিকরণ কারক
খ) কর্তৃকারক
গ) কর্মকারক
ঘ) অপাদান কারক
উত্তর: (খ) কর্তৃকারক
১.১১ কোন্ সমাসে উভয় পদের অর্থ অক্ষুন্ন থাকে?
ক) দ্বন্দু সমাসে
খ) কর্মধারয় সমাসে
গ) বহুব্রীহি সমাসে
ঘ) দ্বিগু সমাসে
উত্তর: (ক) দ্বন্দু সমাসে
১.১২ যে সমাসে পূর্বপদে উপমেয় ও পরপদে উপমান এবং সাধারণ ধর্মটি উহ্য থাকে, তাকে বলে –
ক) রূপক কর্মধারয়
খ) উপমিত কর্মধারয়
গ) উপমান কর্মধারয়
ঘ) সাধারণ কর্মধারয়
উত্তর: (খ) উপমিত কর্মধারয়
১.১৩ “তবু লিখছে। লুকিয়ে লিখছে।” এভাবে লেখার কারণ কী?
ক) যেন ভূতে পেয়েছে
খ) যেন স্বপ্নে পেয়েছে
গ) যেন নেশায় পেয়েছে
ঘ) এক আনন্দের অনুভূতিতে
উত্তর: (গ) যেন নেশায় পেয়েছে
১.১৪ নদেরচাঁদের বয়স হলো-
ক) ত্রিশ বছর
খ) পয়ত্রিশ বছর
গ) চল্লিশ বছর
ঘ) পঁচিশ বছর
উত্তর: (ক) ত্রিশ বছর
১.১৫ গিরীশ মহাপাত্রের জামার রং ছিল-
ক) গেরুয়া
খ) নীল
গ) রামধনু
ঘ) লাল
উত্তর: (গ) রামধনু
১.১৬ ‘আফ্রিকা’ কবিতায় ‘আদিম যুগ’ ছিল-
ক) অন্ধকার
খ) উদভ্ৰান্ত
গ) শান্ত
ঘ) আন্তরিক
উত্তর: (খ) উদভ্ৰান্ত
১.১৭ “বহু যত্নে চিকিৎসিতে পঞ্চকন্যা পাইলা চেতন।”- কতক্ষণ চিকিৎসা করা হয়েছিল?
ক) তিন দণ্ড
খ) চার দণ্ড
গ) পাঁচ দণ্ড
ঘ) দু’দণ্ড
উত্তর: (খ) চার দণ্ড
২. কম-বেশি ২০টি শব্দে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:
২.১ যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও :
২.১.১ “তার আমি জামিন হতে পারি।”- বক্তা কার জামিন হতে পারেন?
উত্তর: তার আমি জামিন হতে পারি।”-বক্তা হলেন অপূর্ব।
নিমাইবাবু যখন গিরিশ মহাপাত্রকে আটক করেন , জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তখন অপূর্ব গিরিশ মহাপাত্রের আচরণ ও বেশভুষা দেখে ধারণা করে সে সব্যসাচী নয়। তাই অপূর্ব গিরিশ মহাপাত্রের জামিন হতে চেয়েছে।
২.১.২ “বিকেলে চায়ের টেবিলে ওঠে কথাটা।” কোন কথাটার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: তপনের ছোটমেসো ছিলেন একজন লেখক, তপনের ছোটমেসো বিকেলে চায়ের টেবিলে তপনের লেখা গল্পে ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপিয়ে দেবার কথা বলেছিলেন,
২.১.৩ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পের লেখকের প্রকৃত নাম কী?
উত্তর: নদীর বিদ্রোহ’ গল্পের লেখক ছিলেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকৃত নাম হলো প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়।
২.১.৪ “পরম সুখ কাকে বলে জানেন?” -বক্তা কাকে ‘পরম সুখ’ বলেছেন?
উত্তর: বহুরূপী গল্পে বক্তা ‘পরম সুখ’ বলেছেন, সমস্ত সুখের বন্ধন থেকে মুক্ত হতে পারাকে।
২.১.৫ অমৃতের মা ওকে বেকায়দায় ফেলার জন্য কী বলেছিলেন?
উত্তর: অমৃতের মা অমৃতকে বেকায়দায় ফেলার জন্য বলেছিলেন, “ইসাবের বাবা ইসাবকে নতুন জামা কিনে দেবার আগে ওকে খুব মেরেছিলেন, তুইও কি সেরকম মার খেতে রাজি আছিস।
২.২ যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও :
২.২.১ “অশুভ ধ্বনিতে ঘোষণা করল” কারা, কী ঘোষণা করলো?
উত্তর: অশুভ ধ্বনিতে ঘোষণা করেছিলো গুপ্ত গহ্বর থেকে বেরিয়ে আসা পশুরা, তারা ঘোষণা ঘোষণা করলো দিনের অন্তিম কাল, অর্থাৎ অশুভ ধ্বনিতে ডেকে আনে বিশ্বের যুদ্ধবাজ রাষ্ট্রগুলি বিধ্বংসী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের সূচনা করে বিশ্বের অন্ধকার।
২.২.২ “সব চূর্ণ হয়ে গেল,”- কী চূর্ণ হয়ে গেল?
উত্তর: সব চূর্ণ হয়ে গেল, লাইনটি নেওয়া হয়েছে কবি শঙ্খ ঘোষ এর লেখা আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতা থেকে, এখানে সব চূর্ণ হয়ে গেল বলতে বঝানো হয়েছে, যুদ্ধের ফলে কবির প্রিয় জিনিসগুলি যেমন,কবির মিষ্টি বাড়ি, প্রিয় সেই ঝুলন্ত বিছানা , করতলের মতো পাতাযুক্ত একটা গোলাপি গাছ ,প্রাচীন জলতরঙ্গ এবং চিমনি ।
২.২.৩ “বিস্মিত হইল বালা…” -বালা কী দেখে বিস্মিত হয়েছিল?
উত্তর: বালা সমুদ্রতীরে অচেতন পদ্মাবতীর রূপ দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন ।
২.২.৪ অস্ত্রের বিরুদ্ধে একটি কোকিল কীভাবে গান বাঁধবে?
উত্তর: অস্ত্রের বিরুদ্ধে একটি কোকিল সহস্র উপায়ে গান বাঁধবে।
২.২.৫ “যথা বৃহন্নলারূপী কিরীটী,” ‘বৃহন্নলারূপী কিরীটী’ কে?
উত্তর: যথা বৃহন্নলারূপী কিরীটী,” ‘বৃহন্নলারূপী কিরীটী’ হলেন অর্জুন।
২.৩ যে-কোনো তিনটি প্রশ্নের উত্তর দাও :
২.৩.১ “তাতে অনেকে মুশকিলে পড়েছেন,” কিসে ‘মুশকিলে’ পড়ার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: রাজকার্যে দেশি পরিভাষা চালানোয় সরকারের কাজে অনেকে মুশকিলে পড়েছেন।
২.৩.২ “বাস, ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম।”-বক্তা ‘ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে’ গেলেন কেন?
উত্তর: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বেশ কয়েক বছর পর লেখক কলেজ স্ট্রিটের একটা দোকানে পেন কিনতে গিয়েছিলেন, তখন দোকানদার জানতে চেয়েছিল কি কলম দোকানদারের এ কথা শুনে বক্তা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলেন।
২.৩.৩ পরিভাষার উদ্দেশ্য কী?
উত্তর: পরিভাষার উদ্দেশ্য হলো একটি বিশেষ ক্ষেত্র বা বিষয়ে নির্দিষ্ট অর্থ বোঝানো এবং সঠিক তথ্য বিনিময় করা। এটি একটি নির্দিষ্ট শব্দ বা শব্দগুচ্ছ যা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে যোগাযোগ সহজতর করে এবং বিষয়বস্তু সম্পর্কে স্পষ্টতা আনে।
২.৩.৪ ‘ক্যালিগ্রাফিস্ট’ কাদের বলে?
উত্তর: যাঁরা সুন্দর ও শিল্পসম্মতভাবে হস্তলিখন করেন, তাঁদের ‘ক্যালিগ্রাফিস্ট’ বা লিপিশিল্পী বলা হয়। তাঁরা বিভিন্ন শৈলীতে অক্ষর ও লেখাকে নান্দনিকভাবে উপস্থাপন করতে দক্ষ হন।
২.৪ যে-কোনো আটটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
২.৪.১ একটি মিশ্র বাক্যের উদাহরণ দাও।
উত্তর: “যদি তুমি পড়াশোনা করো, তবে ভালো ফলাফল পাবে।”
২.৪.২ ‘কদাকার’ পদটির ব্যাসবাক্যসহ সমাসের নাম করো।
উত্তর: কদাকার = কু আকার যার—বস্ত্রীহি সমাস।
২.৪.৩ ‘প্রত্যেককে’ ব্যাসবাক্যসহ সমাসের নাম করো।
উত্তর: ‘প্রত্যেককে’= একে একে > অব্যসীভাব সমাস।
২.৪.৪ ‘যুক্তির পথে হাঁটো’ ভাববাচ্যে রূপান্তর করো।
উত্তর: ‘যুক্তির পথে হাঁটো’ বাক্যটি কর্তৃবাচ্যে আছে। এটিকে ভাববাচ্যে রূপান্তর করলে হবে— ‘যুক্তির পথে হাঁটা যাক’।
২.৪.৫ উক্ত কর্তা কাকে বলে?
উত্তর: কর্তৃবাচ্যের কর্তাকে “উক্ত কর্তা” বলে।
২.৪.৬ ‘আমি ছিলাম কালিকলমের ভক্ত।’- বাক্যটিকে প্রশ্নসূচক বাক্যে পরিবর্তন করো।
উত্তর: ‘আমি কি কালিকলমের ভক্ত ছিলাম না?
২.৪.৭ কর্তৃবাচ্য থেকে ভাববাচ্যে রূপান্তরের প্রধান শর্ত কী?
উত্তর: কর্তৃবাচ্য থেকে ভাববাচ্যে রূপান্তরের প্রধান শর্ত হলো ক্রিয়াকে প্রধান করে বাক্য গঠন করা।
২.৪.৮ অনুসর্গযোগে করণ কারকের একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: অনুসর্গযোগে করণ কারকের একটি উদাহরণ– সে কলম দিয়ে লিখছে।
২.৪.৯ অপাদান কারকে শূন্য বিভক্তির একটা উদাহরণ দাও।
উত্তর: অপাদান কারকে শূন্য বিভক্তির একটা উদাহরণ— সে ভয়ে পালালো।
২.৪.১০ ব্যাসবাক্য কাকে বলে?
উত্তর: সমাসবদ্ধ পদগুলোকে বিশ্লেষণ বা ব্যাখ্যা করার জন্য যে বাক্য বা বাক্যাংশ ব্যবহৃত হয়, তাকে ব্যাসবাক্য বা বিগ্রহবাক্য বলে।
৩. প্রসঙ্গ নির্দেশসহ কম-বেশি ৬০টি শব্দে উত্তর দাও:
৩.১ যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও :
৩.১.১ “তখন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়।” -‘তখন’ বলতে কোন্ সময়ের কথা বলা হয়েছে? বক্তা ‘আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো’ কেন?
উত্তর: নতুন মেসো তপনের লেখা গল্পটা একটু ‘কারেকশান’ বা সংশোধন করে ছাপিয়ে দিতে চাইলে তপন প্রথমটা ভাবে ঠাট্টা, কিন্তু সে সময় দেখে মেসোর মুখে করুণার ছাপ, তখন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়।
৩.১.২ “এতে দুজনেরই ভয় কেটে গেল,”- দু’জন কে কে? কীভাবে তাদের ভয় কেটে গেল?
উত্তর:প্রশ্নে উল্লেখিত দু’জন হল অমৃত আর ইসাব।
ইসাবের সঙ্গে জামা অদলবদল করলেও বাড়ি ফিরে ছেঁড়া জামা দেখলে অমৃতের মা কী বলবেন, সেটাই ছিল অমৃত ও ইসাব দু’জনের ভয়ের কারণ। কিন্তু দিনটা হোলির হওয়ায় একটু ধস্তাধস্তি, টানাহ্যাঁচড়া চলেই। তাই অমৃতের মা ভুরু কোঁচকালেও শেষপর্যন্ত জামা ছেঁড়ার জন্য অমৃতকে মাফ করে দিয়েছিলেন এবং একটা সুই-সুতো দিয়ে ছেঁড়া জামাটা সেলাইও করে দিয়েছিলেন। এতে দু’জনেরই ভয় কেটে গিয়ে ছিলো।
৩.২ যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৩.২.১ “পৃথিবী হয়তো গেছে মরে” – কোন্ কবিতার উদ্ধৃতি? উদ্ধৃতিটির অর্থ পরিস্ফুট করো।
উত্তর: পৃথিবী হয়তো গেছে মরে” কবি শঙ্খ ঘোষের লেখা আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার উদ্ধৃতি।
পৃথিবী হয়তো গেছে মরে” – এটি “আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি” নামক কবিতার একটি উদ্ধৃতি, যা শঙ্খ ঘোষ-এর লেখা। উদ্ধৃতিটির অর্থ হলো,
কবি শঙ্খ ঘোষ তাঁর ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় “পৃথিবী হয়তো গেছে মরে” এই উক্তিটি করেছেন । উপনিষদের কথার রেশ টেনে বলা যায় মানুষ তার মানবতার পক্ষে চলমান , তাই জীবনে থেমে থাকা মৃত্যুরই সমান । আজকের যুদ্ধ ও দাঙ্গাবিধ্বস্ত পৃথিবীতে মানুষ দিশেহারা , তার হাত – পা বাঁধা । গৃহহীন , ইতিহাস – বিস্মৃত এই নিরন্ন মানুষগুলি নিজের ভাবী প্রজন্মকে রক্ষা করতে ব্যর্থ । জীবনের অর্থহীনতায় বেঁচে থাকার আশা সে হারিয়েছে । তাই সমস্ত পৃথিবীটা তার কাছে জীবস্মৃত বলে মনে হয়েছে
৩.২.২ “এ অদ্ভুত বারতা, জননি কোথায় পাইলে তুমি,” – ‘জননি’ কে? তাঁর কোন্ বার্তাকে ‘অদ্ভুত’ বলা হয়েছে?
উত্তর: এ অদ্ভুত বারতা, জননি কোথায় পাইলে তুমি” – এই উক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্তের মেঘনাদবধ কাব্য থেকে নেওয়া, যেখানে ‘জননি’ বলতে মেঘনাদের মা, রাক্ষসী বিভীষণকে বোঝানো হয়েছে।
এখানে ‘অদ্ভুত’ বারতা বলতে বোঝানো হয়েছে রঘুপতি বা রামচন্দ্রকে বধের সংবাদ, যা সীতা কর্তৃক অদ্ভুত বা অপ্রত্যাশিত মনে হয়েছে।
৪. কম-বেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৪.১ “পরস্পরের প্রতি ভালোবাসার গল্প শুনে তাঁদেরও বুক ভরে গেল।”- কাদের ভালোবাসার কথা বলা হয়েছে? পরস্পরের প্রতি তাদের ভালোবাসার পরিচয় দাও।
উত্তর: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ‘ গল্প অনুসারে , ইসাবের বাবা পাঠানের মুখ থেকে অমৃত ও ইসাবের পারস্পরিক ভালোবাসার কথা বলা হয়েছে।
পান্নালাল প্যাটেলের’ অদল বদল’ গল্পের অন্যতম প্রধান চরিত্র হল অমৃত। অমৃত ও ইসাব দুই অভিন্নহৃদয় বন্ধু । তারা একই স্কুলে একই ক্লাসে পড়ে। রাস্তার মোড়ে মুখোমুখি বাড়িতে থাকে। এসব বাইরের মিল ছাড়াও বিকেলে তারা দুজনে দুটি একইরকম দেখতে নতুন জামা পরে বেরোয়। এই দৃশ্য দেখে পাড়ার একদল দুষ্টু ছেলে বদ ফন্দি আঁটে। উভয়ের জামা নষ্ট করার মতলবে কালিয়া নামে একটি ছেলে অমৃতকে খোলা মাঠে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। ধস্তাধস্তির ফলে ইসাবের জামাটি ছিঁড়ে যায়।’ রণভূমি’ ত্যাগ করার পর দুজনেই টের পায় নতুন জামা ছেঁড়ার অপরাধে আজ কপালে তাকে বাবার মারের হাত থেকে বাঁচাতে মা থাকলেও ; মাতৃহারা ইসাবের কেউ নেই। তাই বন্ধুকে মারের হাত থেকে রক্ষা করতে সে তাকে নিজের অক্ষত জামাটি দিয়ে দেয়। ইসাব ইতস্তত করলেও নিরুপায় হয়ে রাজি হয়। বাড়ি ফেরার পরে অমৃতের মা জামা দেখে ভ্রু কুঁচকালেও; হোলির দিন বলে মাফ করে জামাটি রিফু করে দেন। এভাবেই উভয়ে বাঁচলেও ইসাবের বাবা সমস্ত ঘটনাটি দেখে ফেলেন। দুই বন্ধুর ভালোবাসা,
৪.২ “নদীকে এভাবে ভালোবাসিবার একটা কৈফিয়ত নদেরচাঁদ দিতে পারে।”- নদের-চাঁদ কী কৈফিয়ত দিতে পারে? এভাবে ভালোবাসার কী পরিণতি হয়?
উত্তর: নদের চাঁদের দেশের বাড়িতে একটি নদী ছিল বাড়ির পাশেই এবং বর্ষা তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় গ্রীষ্মে সেই নদীর জল শুকিয়ে খটখটে হয়ে গিয়েছিল। সেই নদীর প্রতি নদের চাঁদের অনেক দুঃখ হয়েছিল যেটা নিজের আত্মিয়ের অসুস্থ হওয়াতে যেমন হয়। তখন থেকেই নদের চাঁদের নদীর প্রতি এক ভালোবাসা জন্মে ছিল এটাই ছিল তাঁর কৈফিয়ৎ।
নদীর ওপর বৃষ্টির বামঝম শব্দ মিশে হঠাৎ এমন একটা সংগত সৃষ্টি করেছিলো যে নদেরচাঁদের মন ছেলেমানুষি আমোদ মিলিয়ে গেলও, তার মনে হতে লাগে এই ভীষণ মধুর শব্দ। কিছুক্ষণের জন্য নদেরচাঁদকে দিশেহারা করে ফেলে ব্রিজের উপর দিয়ে একটা ট্রেন চলে যাওয়ার শব্দ তারপর নদেরচাঁদ অতিকষ্টে উয়ে দাঁড়ায়।
নদেরচাঁদ ভাবে ‘রোষে ক্ষোভে উন্মত্ত এই নদীর আর্তনাদি জলরাশির কয়েক হাত উঁচুতে এমন নিশ্চিন্তমনে এতক্ষণ বসে থাকা তার উচিত নই।
অন্ধকারে অতি সাবধানে লাইন ধরে হাঁটতে হাঁটতে নদেরচাঁদ স্টেশনের দিকে ফিরে যেতে লাগলো। নদীর বিদ্রোহের কারণ সে বুঝিতে পারেছে। ব্রিজটা ভাঙে ভাসিয়ে দিতে চাই,। মানুষের হাতে গড়া বাঁধ চুরমার করে, সে স্বাভাবিক গতিতে বয়ে যাবার পথ করে দিতে চায়।
আজ যে ব্রিজ আর বাঁধ সে ভেঙে ফেলবে, কাল মানুষ আবার সেই ব্রিজ আর বাঁধ গড়িয়া তুলবে।
স্টেশনের কাছে নূতন রং করা ব্রিজটির জন্য এতকাল নদেরচাঁদের গর্ব অনুভব করছিলো। আজ তার মনে হলো কী প্রয়োজন ছিল ব্রিজের?
বোধহয়, এই প্রশ্নের জবাব দিবার জন্যই পিছন হইতে ৭নং ডাউন প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি নদেরচাঁদকে পিষে দিয়ে চলে গেলো ছোটো স্টেশনটির দিকে, নদেরচাঁদ চার বছর যেখানে স্টেশনমাস্টারি করেছে এবং বন্দি নদীকে ভালোবেসেছে এভাবে ভালোবাসার পরিণতি হয় নদেরচাঁদর।
৫. কম-বেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৫.১ “চিরচিহ্ন দিয়ে গেল তোমার অপমানিত ইতিহাসে।”কাকে একথা বলা হয়েছে? কীভাবে তার ‘অপমানিত ইতিহাসে’ চিরচিহ্ন দিয়ে গেল?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আফ্রিকা’ কবিতার অন্তর্গত উদ্ধৃত অংশটিতে “চিরচিহ্ন দিয়ে গেল তোমার অপমানিত ইতিহাসে” বলতে আফ্রিকার কথা বলা হয়েছে ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘আফ্রিকা’ কবিতায় আফ্রিকার ওপর সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের অত্যাচার ও শোষণ-বঞ্নার কাহিনিকে বর্ণনা করেছেন । প্রাকৃতিকভাবে দুর্গম আফ্রিকা দীর্ঘসময় ইউরোপীয় শক্তিগুলির নজরের বাইরে ছিল । কিন্তু উনিশ শতকে ইউরোপীয়রা আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপন শুরু করে । এই শতকের শেষে প্রায় পুরো আফ্রিকা ইউরোপের বিভিন্ন দেশের উপনিবেশে পরিণত হয় । এইসব তথাকথিত সভ্য রাষ্ট্রশক্তি আফ্রিকার মানুষদের ওপর নির্মম অত্যাচার চালাত । তাদের নির্লজ্জ লোভ যেন বর্বরতার রূপ ধরে আত্মপ্রকাশ করেছিল । ক্ষতবিক্ষত হয়েছিল আফ্রিকার মানুষ । তাদের রক্ত আর চোখের জলে কর্দমাক্ত হয়েছিল আফ্রিকার মাটি । সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রনায়কদের কাঁটা-মারা জুতোর নীচে বীভৎস কাদার পিণ্ড যেন চিরকালের মতো অত্যাচারের চিহ্ন রেখে গিয়েছিল আফ্রিকার অপমানিত ইতিহাসে ।
৫.২ “নমি পুত্র পিতার চরণে, করযোড়ে কহিলা”-পিতা ও পুত্রের পরিচয় দাও। কবিতা অবলম্বনে পিতা-পুত্রের কথোপকথন সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘অভিষেক’ কাব্যাংশের উল্লিখিত অংশে ‘পিতা’ হলেন রাবণ এবং ‘পুত্র’ হলেন তাঁর পুত্র ইন্দ্রজিৎ।
প্রিয় ভাই বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ শুনে উত্তেজিত ইন্দ্রজিৎ প্রমোদকানন ত্যাগ করে পিতা রাবণের কাছে পৌঁছন। শোকগ্রস্ত রাবণ তখন যুদ্ধসজ্জার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পিতার চরণে প্রণাম করে ইন্দ্রজিৎ প্রথমেই মৃত রামচন্দ্রের ।
পুনর্জীবনলাভের বিষয়টি জানতে চান। রামচন্দ্রের এই মায়া যে তাঁর পক্ষে বোঝা সম্ভব হয়নি তা-ও তিনি বলেন। তারপরেই তিনি রামচন্দ্রকে সমূলে নির্মূল করার জন্য পিতার অনুমতি প্রার্থনা করেন। তীব্র ক্রোধে বলেন যে শরানলে রামচন্দ্রকে ভস্ম করে বায়ু-অস্ত্রে তাঁকে উড়িয়ে দেবেন, অথবা বেঁধে এনে রাজপদে উপহার দেবেন। এইভাবে তীব্র প্রতিশোধস্পৃহা আর বীরের মতো মনোভাবের প্রতিফলন ঘটে ইন্দ্রজিতের উচ্চারণে।
ইন্দ্রজিতের শিরঃচুম্বন করে রাবণ তাঁকে ‘রাক্ষসকুল-শেখর’ এবং ‘রাক্ষসকুল-ভরসা’ বলে উল্লেখ করেন এবং তারপরে গভীর বিষাদের সঙ্গে জানান যে, সেই ভয়ংকর যুদ্ধে তাঁকে বারবার পাঠাতে রাবণের ভয় হয়। নিয়তি তাঁর প্রতি নিষ্ঠুর। তা না হলে মৃত রামচন্দ্রের পুনর্জীবনলাভ ঘটত না। শিলা জলে ভাসার মতোই এ অসম্ভব কাজ। এইভাবে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে রাবণের উচ্চারণে অসহায়তা এবং পিতার স্নেহকাতরতাই যেন লক্ষ করা যায়।
৬. কম-বেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৬.১ “এই দোষ থেকে মুক্ত না হলে বাংলা বৈজ্ঞানিক সাহিত্য সুপ্রতিষ্ঠিত হবে না।” – কোন্ দোষের কথা বলা হয়েছে? কীভাবে এই দোষ থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব বলে লেখক মনে করেন?
উত্তর: এই দোষ থেকে মুক্ত না হলে বাংলা বৈজ্ঞানিক সাহিত্য সুপ্রতিষ্ঠিত হবে না।”এখানে বিজ্ঞান আলোচনার জন্য যে রচনা পদ্ধতি জরুরি তা অনেক লেখক এখনও আয়ত্ত করতে পারেননি। অনেক স্থানে তাঁদের ভাষা আড়ষ্ঠ এবং ইংরেজির আক্ষরিক অনুবাদ হয়ে পড়ে এই দোষের কথা বলা হয়েছে।
লেখক মনে করেন, ইংরেজি শব্দের যে অর্থব্যাপ্তি বা connotation, বাংলা প্রতিশব্দেরও ঠিক তাই হওয়া চাই, এজন্য অনেক সময় তাঁরা অদ্ভুত অদ্ভুত শব্দ প্রয়োগ করেন। ইংরেজি sensitive শব্দ নানা অর্থে চলে, যেমন sensitive person, wound, plant, balance, photographic paper ইত্যাদি। বাংলায় অর্থভেদে বিভিন্ন শব্দ প্রয়োগ করাই উচিত, যেমন অভিমানী, ব্যথাপ্রবণ, উত্তেজী, সুবেদী, সুগ্রাহী। Sensitized paper-এর অনুবাদ স্পর্শকাতর কাগজ অতি উৎকট, কিন্তু তাও কেউ কেউ লিখে থাকেন। সুগ্রাহী কাগজ লিখলে ঠিক হয়।
অনেক লেখক তাঁদের বক্তব্য ইংরেজিতে ভাবেন এবং যথাযথ বাংলা অনুবাদে প্রকাশ করবার চেষ্টা করেন। এতে রচনা উৎকট হয়। The atomic engine has not even reached the blue print stage, -‘পরমাণু এঞ্জিন নীল চিত্রের অবস্থাতেও পৌঁছায়নি।’ এ রকম বর্ণনা বাংলা ভাষায় প্রকৃতিবিরুদ্ধ। একটু ঘুরিয়ে লিখলে অর্থ সরল হয়-পরমাণু এঞ্জিনের নকশা পর্যন্ত এখনও প্রস্তুত হয়নি। When sulphur burns in air the nitrogen does not take part in the reaction ‘যখন গন্ধক হাওয়ায় পোড়ে তখন নাইট্রোজেন প্রতিক্রিয়ায় অংশ গ্রহণ করে না।’ এ রকম মাছিমারা নকল না করে ‘নাইট্রোজেনের কোনো পরিবর্তন হয় না’ লিখলে বাংলা ভাষা বজায় থাকে।
অনেকে মনে করেন পারিভাষিক শব্দ বাদ দিয়ে বক্তব্য প্রকাশ করলে রচনা সহজ হয়। এই ধারণা পুরোপুরি ঠিক নয়। স্থান বিশেষে পারিভাষিক শব্দ বাদ দেওয়া চলে, যেমন ‘অমেরুদন্ডী’র বদলে লেখা যেতে পারে, যেসব জন্তুর শিরদাঁড়া নেই। কিন্তু ‘আলোকতরঙ্গ’র বদলে আলোর কাঁপন বা নাচন লিখলে কিছু মাত্র সহজ হয় না। পরিভাষার উদ্দেশ্য ভাষার সংক্ষেপ এবং অর্থ সুনির্দিষ্ট করা। যদি বার বার কোনো বিষয়ের বর্ণনা দিতে হয় তবে অনর্থক কথা বেড়ে যায়, তাতে পাঠকের অসুবিধা হয়। সাধারণের জন্য যে বৈজ্ঞানিক সন্দর্ভ লেখা হয় তাতে অল্প পরিচিত পারিভাষিক শব্দের প্রথমবার প্রয়োগের সময় তার ব্যাখ্যা দেওয়া আবশ্যক, কিন্তু পরে শুধু বাংলা পারিভাষিক শব্দটি দিলেই চলে।
৬.২ “আমার মনে পড়ে প্রথম ফাউন্টেন কেনার কথা।” -বক্তা কোথায় ফাউন্টেন কিনতে গিয়েছিলেন? তাঁর ফাউন্টেন কেনার ঘটনাটি বিবৃত করো।
উত্তর: আমার মনে পড়ে প্রথম ফাউন্টেন কেনার কথা। বক্তা কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের একটা নামী দোকানে গিয়েছিলেন একটা ফাউন্টেন পেন কিনবে বলে।
বক্তার ফাউন্টেন কেনার ঘটনাটি ছিলো-
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের বেশ কয়েক বছর পরের ঘটনা। বক্তা কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের একটা নামী দোকানে গিয়েছিলেন একটা ফাউন্টেন পেন কিনবে বলে।
দোকানি জানতে চান, কী
কলম। বাস, ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেয়েছিলেন। দোকানি আউড়ে চলেছেন, পার্কার? শেফার্ড? ওয়াটারম্যান? সোয়ান? পাইলট? কোনটার কী দাম সঙ্গে সঙ্গে তা-ও তিনি মুখস্থ বলতে লাগলেন। দোকানি মুখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলেন বক্তার পকেটের অবস্থা। দোকানি বলেন তবে হ্যাঁ, শস্তার একটা পাইলট নিয়ে যাও।
জাপানি কলম কিন্তু দারুণ। বলেই মুখ থেকে খাপটা সরিয়ে ধাঁ করে কলমটা ছুড়ে দিয়েছিলেন টেবিলের এক পাশে দাঁড়-করানো একটা কাঠের বোর্ডের উপর।
সার্কাসে খেলোয়াড় যেমন একজন জ্যান্ত মানুষকে বোর্ডের গায়ে দাঁড় করিয়ে ধারালো ছুরি ছুড়ে দেয় তার দিকে, ভঙ্গিটি ঠিক সে-রকম। সার্কাসের খেলায় লোকটি শেষ পর্যন্ত অক্ষত থাকে।
বক্তা অবাক করে দোকানি কলমটি বোর্ড থেকে খুলে নিয়ে দেখালেন, এবং বক্তা কে বললেন এই দেখো নিব ঠিক আছে। দু’এক ছত্র লিখে দেখিয়ে দিলেন।
৭. কম-বেশি ১২৫ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৭.১ “আজ আপনাদের কাছে এই ভিক্ষা যে,..”আপনাদের’ বলতে বক্তা কাদের বুঝিয়েছেন? তিনি কেন, কী ‘ভিক্ষা’ চেয়েছেন?
উত্তর: শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের লেখা ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাট্যাংশে আপনাদের’ বলতে বক্তা বুঝিয়েছেন সিরাজ তাঁর বিরুদ্ধপক্ষের মীরজাফর, রাজবল্লভ, রায়দুর্লভ প্রমুখ ।
কোম্পানির ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি ধীরে ধীরে সমগ্র বাংলা দখলের উদ্দেশ্যে বিস্তৃত হয়েছিল। নবাব সিরাজদ্দৌলা এই সত্যটি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন এবং এটাও বুঝেছিলেন তাঁরই অধীনস্থ ক্ষমতাদখলে কিছু কর্মচারী ও সভাসদ এই ষড়যন্ত্রে যুক্ত আছে। তবুও নবাব মনেপ্রাণে চাইতেন বাংলার এই স্বাধীনতা যেন অটুট থাকে। আর সে কারণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে থাকতে হবে।
মীরজাফর ও রাজবল্লভ এবং বাকি কিছু সভাসদ তাঁকে ত্যাগ করতে চাই। এই সংহতি বিনষ্ট হবে বলে সিরাজ মনে করেছিলেন তাই সমস্ত বিচার বন্ধ রেখে, সমস্ত ভুল শিকার করে সমস্ত দোষের জন্য ক্ষমা চান এবং ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নিয়ে, সভায় ঐক্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন সিরাজ এবং মীরজাফর ও অন্যান্য সদস্যদের রাজদরবার থেকে ত্যাগ না করার অনুরোধ করেন। তাঁদের কাছে সিরাজ ভিক্ষা চাই যে আমাকে শুধু এই আশ্বাস দিন যে, বাংলার এই দুর্দিনে আমাকে ত্যাগ করবেন না।
৭.২ “তার সামান্য পরিচয় আজ দিয়ে রাখলাম।” -কার উদ্দেশ্যে বক্তা এই কথা বলেছেন? তিনি কী ‘সামান্য পরিচয়’ দিয়ে রাখলেন?
উত্তর: তার সামান্য পরিচয় আজ দিয়ে রাখলাম বক্তা এই কথা বলেছেন ওয়াটসের উদ্দেশ্যে।
তিনি ‘সামান্য পরিচয়’ দিয়ে রাখলেন এখানে, সিরাজ যখন ওয়াটসের হাতের লেখা পত্র মুন্সিজি কে পরতে বলেন মুন্সিজি পত্র পরে বলেন পত্রে লেখা আছে “It is impossible to rely upon the Nabob and it will be wise to attack Chandernagore”.
(নবাবের উপর নির্ভর করা অসম্ভব। চন্দননগর আক্রমণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ)
নবাব সিরাজ তখন ওয়াটসের উদ্দেশ্যে বলেন তোমাদের অভদ্রতার, ঔদ্ধত্যের আরো পরিচয় চাও? জেনে রাখো, তাও আমি দিতে পারি। বক্তা অর্থাত্ সিরাজ ওয়াটসের অভদ্রতার, ঔদ্ধত্যের, এবং সিরাজের নিজের সভাসদ, স্বদেশীয় সকলের শয়তানির পরিচয় দিয়েছেন, বলেছেন আমার সভাসদরা, আমার স্বদেশীয়রা তারস্বরে ঘোষণা করে- আমি নির্বোধ, অত্যাচারী, বিলাস-সর্বস্ব; কিন্তু আমি যে সকলের শয়তানির সন্ধান রাখি, তার সামান্য পরিচয় আজ দিয়ে রাখলাম।
৮. কম-বেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৮.১ ‘কোনি’ উপন্যাস অবলম্বনে প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহের চরিত্র সংক্ষেপে আলোচনা করো।
উত্তর: মতি নন্দী রচিত ‘কোনি’ উপন্যাসের কাহিনী যে মানুষটিকে নিয়ে আবর্তিত হয়েছে তিনি হলেন ক্ষিতীশ সিংহ । ক্ষিতীশ সিংহ নিঃসন্তান, পঞ্চান্ন (৫৫) বছরের একজন সাঁতারের প্রশিক্ষক । তিনি নিয়মিত শরীরচর্চা করতেন । গঙ্গার ঘটে যেতেন প্রায় প্রতিদিন । এখন থেকেই তিনি কোনিকে আবিষ্কার করেন। অভিজ্ঞতার নিরিখে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে কোনির মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা আছে ।
দীর্ঘ ৩৫ বছর ক্ষিতীশ সিংহ জুপিটার ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন । ক্লাবের মধ্যে দলাদলি ও কয়েকজনের চক্রান্তে ক্ষিতীশ সিংহকে ক্লাবের সদস্যপদ ছাড়তে হয় । কিন্তু তাঁর লড়াই এখানেই থেমে যায় নি । তিনি দরিদ্র পরিবারের থেকে উঠে আনা মেয়ে কোনিকে অ্যাপেলো ক্লাবে ভর্তি করিয়ে সাঁতার শেখাতে আরম্ভ করেন । ক্ষিতীশ সিংহের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না, তবুও তিনি কোনির খাওয়ার ব্যবস্থা এবং কোনির সংসার চালানোর জন্য হাত বারিয়ে দেন। এর থেকে তাঁর দরদী ও পরোউপকারী মনের পরিচয় পাওয়া যায় ।
ক্ষিতীশ সিংহের চারিত্রিক দৃঢ়তার পরিচয় সমগ্র উপন্যাস জুড়ে দেখতে পাওয়া যায় । গুরুকে শ্রদ্ধেয় হতে হবে শিষ্যের কাছে এবং কথায় কাজে ও নানারকম উদাহরণ দিয়ে শিষ্যের মনের মধ্যে একটা আকাঙ্খা, বাসনা জাগিয়ে তুলতে হবে এটাই ছিল ক্ষিতীশ সিংহের মূল মন্ত্র। এইরকম মনের অধিকারী ছিলেন বলেই তিনি সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে দূর করে কোনির মতো একজন সাধারণ মেয়েকে জাতীয় চ্যাম্পিয়ান তৈরি করতে পেরেছিলেন ।
এবং ক্ষিতীশ সিংহ কনির কাছে হয়ে ওঠেন ক্ষ্মিদ্দা ।
৮.২ ‘বারুণী’ কী? বারুণী উপলক্ষে গঙ্গাতীরের যে দৃশ্য ‘কোনি’ উপন্যাসে ফুটে উঠেছে, তা লেখো।
উত্তর: বারুণী হল চৈত্র মাসের কৃষ্ণ ত্রয়োদশী তিথিতে শতভিষা নক্ষত্রযোগে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ পূজা এবং স্নান। এই দিনে ভক্তরা গঙ্গায়গঙ্গা স্নান এবং ফল ও অন্যান্য জিনিস উৎসর্গ করে।
গঙ্গাতীরের বর্ণনা: গঙ্গাকে নিবেদিত কাঁচা আম বাবুণী প্রথায় সকলেই গঙ্গাকে কাঁচা আম নিবেদন করেছিলেন। ফলে, গঙ্গার ঘাটে প্রচুর কাঁচা আম ভেসে যাচ্ছিল। মহা উৎসাহের সঙ্গে একদল ছেলেমেয়ের সেই আম কুড়োচ্ছিল। স্নানযাত্রী ও
বামুনদের কার্যকলাপ: ভাটার ফলে জল কিছুটা দূরে সরে যাওয়ায় কাদা-মাখা পায়ে স্নান সেরে ফেরা লোকেদের মুখে ছিল বিরক্তির ছাপ। স্নান সেরে ফেরার পথে অনেকে যাচ্ছিল ঘাটের মাথায় বসে থাকা বামুনদের কাছে। এই বামুনরা সকলের জামাকাপড় জমা রাখে, সরষের তেল বা নারকেল তেল দেয়, আর স্নান সেরে লোকেরা এলে দক্ষিণা নিয়ে কপালে চন্দনের ছাপ এঁকে দেয়।
বহুবিধ দোকান ও মন্দির: এ ছাড়া গঙ্গার ধারে ছিল নানারকম জিনিসের দোকান, ছোটো ছোটো একাধিক মন্দির। বারুণীর দিন বলেই হয়তো গঙ্গার পাড়ে ভিখিরিদের আনাগোনা ছিল বেশি।
বিক্ষুচরণের আদবকায়দা: এই গঙ্গারই ধারে সাড়ে তিন মন ওজনের বিশালাকার বিষ্টুচরণ ধর একটা ছেঁড়া মাদুরের উপর শুয়ে মালিশ করাচ্ছিলেন এবং বিরক্তি নিয়ে গঙ্গার দিকে তাকিয়ে ছিলেন। সাদা লুঙ্গি, গেরুয়া পাঞ্জাবি এবং চোখে মোটা লেন্সের চশমা পরা পঞ্চাশ-পঞ্চান্ন বছরের ক্ষিতীশ সিংহ বিষ্টুচরণকে দেখে হাসছিলেন। মালিশ ওয়ালাকে ‘তানপুরা’, ‘তবলা’, ‘সারেগামা’ ইত্যাদি বিচিত্র ভঙ্গিতে মালিশ করার নির্দেশ দিচ্ছিলেন বিষ্টুচরণ ধর।
৮.৩ “গাছে অনেকদূর উঠে গেছি। মই কেড়ে নিলে নামতে পারব না।” -বক্তা কে? তার এই কথাটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।
উত্তর: বক্তা: মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাসের অষ্টম পরিচ্ছেদের আলোচ্য উদ্ধৃতিটির বক্তা হলেন বিষ্টুচরণ ধর।
বিষ্টু ধরের বর্ণনা: আলোচ্য উপন্যাসে বিষ্টুচরণ ধরের যে বর্ণনা পাই,
তা হল-
পারিবারিক পরিচয়: উপন্যাসে আইএ পাস, অত্যন্ত বনেদি বংশের সন্তান বিষ্টুচরণ ধরের সঙ্গে আমাদের প্রথম পরিচয় ঘটেছে গঙ্গার ঘাটে। পাড়ায় তিনি বেষ্টাদা হিসেবে পরিচিত। তাঁর সাতটি বাড়ি এবং বড়োবাজারে ঝাড়ন মশলার ব্যাবসা আছে। তাঁর বয়স চল্লিশ। তাঁরই সমবয়সি একটি অস্টিন গাড়ির তিনি মালিক।
শারীরিক পরিচয়: বিষ্ট ধরের ওজন সাড়ে তিন মন অর্থাৎ ১৪০ কেডি
ক্ষিতীশ সিংহ এই মানুষটিকে ব্যঙ্গ করে হিপো এবং গন্ধমাদনের সঙ্গে তুলনা করেছেন। বিষ্টুচরণ তার রোজের খাওয়ার যে তালিকা দিয়েছেন, তা শুনে বোঝা যায় যে তাঁর মতো খাদ্যরসিকের এই ওজন হওয়া অত্যন্ত স্বাভাবিক। বিশাল আকারের কারণে নিজের শরীরটাকে একপাশ থেকে আর একপাশে ঘোরানোর জন্য তাঁকে মালিশওয়ালার সাহায্য নিতে হয়েছে।
৯. চলিত বাংলায় অনুবাদ করো:
Work is another name of life. Idle persons have no place on earth. Wastage of time means wastage of life. If you want to be happy, you have to do your duties regularly.
উত্তর: কর্মই জীবনের অপর নাম। অকর্মণ্য মানুষের এই পৃথিবীতে কোনো স্থান নেই। সময়ের অপচয় মানেই জীবনের অপচয়। যদি তুমি সুখী হতে চাও, তবে নিয়মিত নিজের দায়িত্ব পালন করতে হবে।
১০. কম-বেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
১০.১ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে একটি কাল্পনিক সংলাপ রচনা করো।
উত্তর:
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ
রাহুল: আরে অর্ণব, কেমন আছিস?
অর্ণব: ভালো নেই রে! বাজারে যা অবস্থা, প্রতিদিনের খরচ সামলানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তুই কেমন আছিস?
রাহুল: আমিও তো একই সমস্যায় পড়েছি! নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম এত বেড়ে গেছে যে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
অর্ণব: ঠিক বলেছিস। আগে যে চাল, ডাল, তেল কিনতে অর্ধেক টাকা লাগত, এখন তার দ্বিগুণ খরচ হচ্ছে। সাধারণ মানুষের কষ্ট দিন দিন বাড়ছে।
রাহুল: হ্যাঁ রে! শুধু খাদ্যদ্রব্য নয়, গ্যাস, বিদ্যুৎ সবকিছুর দাম বাড়ছে। মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর জন্য এটা খুব চাপের বিষয়।
অর্ণব: সরকারের উচিত দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া। নাহলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।
রাহুল: একদম ঠিক বলেছিস। আমাদেরও সচেতন হতে হবে এবং অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে সঞ্চয় বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে।
অর্ণব: হ্যাঁ রে! আশা করি খুব তাড়াতাড়ি এই সমস্যার সমাধান হবে, নাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
রাহুল: সত্যি বলেছিস। চল, কিছু পরিকল্পনা করি কীভাবে আমরা নিজেদের খরচ সামলাতে পারি।
অর্ণব: ঠিক আছে, চল!
১০.২ ‘জলের অপচয় রোধে সচেতনতা শিবির’-এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।
উত্তর:
নিজস্ব সংবাদদাতা: কলকাতা, ২৯ এপ্রিল: বর্তমান সময়ে বিশুদ্ধ পানির অভাব একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জলের অপচয় রোধে সচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য সম্প্রতি কলকাতা তপশিলী নীল সঙ্ঘ ক্লাবের উদ্যোগে একটি সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়।
শিবিরটি অনুষ্ঠিত হয় কলকাতা পার্ক স্কুল বড়ো মাঠে, সময় সকাল ১০ ঘটিকায় । এতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সমাজকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারা অংশ নেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন সহাপথি রিকা প্রধান যিনি জল সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, “বিশ্বজুড়ে পানির সংকট বাড়ছে, তাই আমাদের উচিত প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় জল ব্যবহারে সচেতন হওয়া।”
শিবিরে বিভিন্ন পোস্টার ও ব্যানারের মাধ্যমে জল সংরক্ষণের উপায় তুলে ধরা হয়। যেমন—অপ্রয়োজনে কল খোলা না রাখা, বৃষ্টির জল সংরক্ষণ, চাষাবাদে ড্রিপ সেচ পদ্ধতি ব্যবহার ইত্যাদি। শিক্ষার্থীরা নাটক ও গান পরিবেশন করে, যেখানে তারা জলের অপচয়ের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করে।
এছাড়াও, একটি বিশেষ শপথ গ্রহণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়, যেখানে সবাই প্রতিজ্ঞা করেন যে তারা ভবিষ্যতে জল অপচয় করবেন না এবং অন্যদেরও সচেতন করবেন।
শিবিরটি সকলের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও আগ্রহ সৃষ্টি করে। উপস্থিত সবাই জল সংরক্ষণের গুরুত্ব উপলব্ধি করেন এবং নিজেদের দৈনন্দিন জীবনে তা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন।
শেষে, আয়োজকরা ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে এবং ভবিষ্যতে আরও এমন কর্মসূচির আয়োজনের আশ্বাস দেন। এ ধরনের উদ্যোগ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
১১. কম-বেশি ৪০০ শব্দে যে-কোনো একটি বিষয় অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা করো।
১১.১ চরিত্র গঠনে খেলাধূলার ভূমিকা
উত্তর:
খেলাধূলা মানবজীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি শুধু শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখে না, পাশাপাশি মানুষের নৈতিক গুণাবলি ও চরিত্র গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমান যুগে শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধূলার গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, কারণ একটি সুষম ব্যক্তিত্ব গঠনের জন্য জ্ঞানার্জনের সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক বিকাশও জরুরি।
খেলাধূলা শৃঙ্খলা শেখায়। প্রতিটি খেলায় কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম থাকে, যেগুলি মেনে চলা অপরিহার্য। এই নিয়ম মেনে চলার অভ্যাস ব্যক্তি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শৃঙ্খলাবোধ গড়ে তোলে।
খেলাধূলা মানুষকে দলবদ্ধভাবে কাজ করতে শেখায়। একযোগে খেলা হলে পারস্পরিক সহযোগিতা, সহনশীলতা ও নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশ লাভ করে। এই গুণাবলি পরবর্তীতে কর্মজীবনেও সহায়ক হয়।
খেলাধূলা মানসিক দৃঢ়তা গড়ে তোলে। খেলায় জয়-পরাজয় উভয়ই স্বাভাবিক ঘটনা। একজন প্রকৃত খেলোয়াড় পরাজয়কে গ্রহণ করতে শেখে এবং নতুন উদ্যমে ফিরে আসার সাহস পায়। এই মনোবল জীবনসংগ্রামে জয়ী হতে সাহায্য করে। খেলাধূলা মানুষকে আত্মনিয়ন্ত্রণ, ধৈর্য, সহানুভূতি এবং পরিশ্রমী হতে শেখায়—যা একটি শক্তিশালী ও ইতিবাচক চরিত্র গঠনের মূলে কাজ করে।
বর্তমান সময়ে মোবাইল, টেলিভিশন ও ইন্টারনেটের আসক্তির ফলে শিশুরা মাঠে খেলাধূলা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এর ফলে তারা একদিকে যেমন শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে, তেমনি মানসিক বিকাশও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই স্কুল-কলেজে নিয়মিত খেলাধূলার আয়োজন এবং অভিভাবকদের সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।
উপসংহারে বলা যায়, খেলাধূলা শুধু বিনোদনের উপায় নয়; এটি মানুষের শরীর, মন ও চরিত্র গঠনের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। একে উপেক্ষা করা মানে আগামী প্রজন্মের সুস্থ, সজীব এবং সৎ চরিত্রের নাগরিক গঠনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা। তাই শিক্ষা জীবনের পাশাপাশি খেলাধূলাকে সমান গুরুত্ব দিয়ে আমাদের শিশুদের একটি সুন্দর ও শক্তিশালী ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিতে হবে।
১১.২ সময়ের মূল্য
উত্তর:
সময় এমন একটি সম্পদ, যা একবার হারিয়ে গেলে কখনোই ফিরে আসে না। জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত অমূল্য, আর এই অমূল্য সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করাই হচ্ছে সাফল্যের চাবিকাঠি। সময়ের গুরুত্ব যে ব্যক্তি উপলব্ধি করতে পারে, সে জীবনে উন্নতি লাভ করতে পারে। আর যারা সময় নষ্ট করে, তাদের জীবনে সফলতা অধরাই থেকে যায়।
প্রত্যেক মানুষের জীবনে সময় সমানভাবে বরাদ্দ থাকে—দিনে ২৪ ঘণ্টা। কেউ এই সময়কে কাজে লাগিয়ে জ্ঞান, দক্ষতা, ও সুনাম অর্জন করে, আবার কেউ অলসতা, বিলম্ব আর অবহেলার মাধ্যমে সময়কে নষ্ট করে নিজের ক্ষতি ডেকে আনে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চলতে না পারলে মানুষ পিছিয়ে পড়ে, জীবনে হীনমন্যতা ও ব্যর্থতা ভর করে।
ছাত্রজীবনে সময়ের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। এই সময়টাই ভবিষ্যৎ জীবনের ভিত্তি গড়ে তোলে। পড়াশোনা, খেলাধুলা, সৃজনশীল কাজ ইত্যাদি নির্দিষ্ট সময়সূচি মেনে করলে ছাত্রজীবন সুন্দর ও সফল হয়। যারা সময়মতো পড়াশোনা করে, পরীক্ষার আগে প্রস্তুত হয়, তারা পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে। অন্যদিকে যারা “পরে করব” বলে সময় নষ্ট করে, তারা শেষপর্যন্ত পেছনে পড়ে যায়।
সময়ের অপচয় মানে জীবনের অপচয়। অনেকেই মনে করে, হাতে অনেক সময় আছে, পরে করলেই হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সময় কারও জন্য অপেক্ষা করে না। তাই “এখনই সময়” এই মনোভাব নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন। সময়ের সদ্ব্যবহার করতে হলে পরিকল্পনা, নিয়মিত অভ্যাস এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
সময়ের মূল্য শুধু ব্যক্তি জীবনে নয়, জাতীয় জীবনেও গভীরভাবে প্রভাব ফেলে। সময়ের কাজ সময়ে না করলে অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও ক্ষতি হয়। উন্নত দেশগুলোর সাফল্যের অন্যতম কারণ হলো সময়ানুবর্তিতা। তারা সময়ের যথাযথ ব্যবহার জানে বলেই অগ্রগতি করতে সক্ষম হয়।
উপসংহারে বলা যায়, সময় হচ্ছে জীবনের সেরা সম্পদ। সময়কে সম্মান করা মানে নিজের জীবনকে সম্মান করা। তাই আমাদের উচিত প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগানো, সময়কে পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করা এবং জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে সময়ের গুরুত্ব বোঝা। মনে রাখতে হবে—“সময় থাকিতে সময়ের মর্যাদা দিতে শেখো, নইলে সময় তোমাকে আর সুযোগ দেবে না।”
১১.৩ বনসংরক্ষণ
উত্তর:
বন আমাদের পরিবেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি শুধুমাত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই বাড়ায় না, বরং জীববৈচিত্র্য রক্ষা, জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ, অক্সিজেন সরবরাহ, এবং বন্য প্রাণীর আবাসস্থল হিসেবেও কাজ করে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, দিন দিন বনভূমি ধ্বংসের ফলে আমাদের পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় হলো বনসংরক্ষণ।
বনের উপকারিতা অপরিসীম। গাছপালা বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে অক্সিজেন সরবরাহ করে, যা জীবজগৎ বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ, ভূমিক্ষয় রোধ, নদীর গতিপথ ঠিক রাখা, এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বন ভূমিকা রাখে। এছাড়াও বন থেকে কাঠ, ফল, ঔষধি গাছসহ নানান প্রাকৃতিক সম্পদ পাওয়া যায়, যা আমাদের অর্থনীতিতেও বড় অবদান রাখে।
কিন্তু মানুষের লোভ, নগরায়ন, কৃষি জমি সম্প্রসারণ, এবং অবৈধভাবে বৃক্ষ নিধনের ফলে প্রতিদিন প্রচুর বনভূমি ধ্বংস হচ্ছে। এর ফলে জলবায়ু পরিবর্তন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, খরার প্রকোপ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও প্রাণী প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটছে। মানুষ নিজের স্বার্থে প্রকৃতিকে ধ্বংস করছে, যার ফল ভোগ করতে হচ্ছে গোটা বিশ্বকে।
বন সংরক্ষণে আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সরকারিভাবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি চালু করা, বনায়নের পরিমাণ বাড়ানো, বন আইনের কঠোর প্রয়োগ, এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা আবশ্যক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম, ও সামাজিক সংগঠনগুলোর এ বিষয়ে ভূমিকা রাখা জরুরি। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও উচিত, নিজের আশেপাশে গাছ লাগানো, গাছ কাটা থেকে বিরত থাকা এবং প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় সচেষ্ট হওয়া।
উপসংহারে বলা যায়, বন সংরক্ষণ মানেই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর, নিরাপদ ও বাসযোগ্য পৃথিবী তৈরি করা। আজ যদি আমরা বন ধ্বংস অব্যাহত রাখি, তাহলে ভবিষ্যতে আমাদের জীবন হবে সংকটময়। তাই এখনই সময় সচেতন হওয়ার, প্রকৃতিকে ভালোবাসার এবং বনকে বাঁচানোর। মনে রাখতে হবে—“বন বাঁচলে প্রাণ বাঁচবে, প্রাণ বাঁচলে পৃথিবী বাঁচবে।”
১১.৪ দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান
উত্তর:
বিজ্ঞান আজ আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। প্রাচীন কালে মানুষ বিজ্ঞানের অনেক কিছুই জানত না, তাই জীবন ছিল কষ্টকর ও সীমাবদ্ধ। কিন্তু আধুনিক যুগে বিজ্ঞানের চমৎকার সব আবিষ্কার মানুষের জীবনকে সহজ, আরামদায়ক ও গতিময় করে তুলেছে। দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিজ্ঞানের ছোঁয়া রয়েছে।
প্রথমেই বলা যায়, যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অবদান অপরিসীম। আগে যেখানে চিঠি পাঠাতে সপ্তাহ বা মাস লেগে যেত, আজ সেখানে মুঠোফোন, ই-মেইল, এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে মুহূর্তেই খবর আদান-প্রদান করা যায়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে এখন ঘরে বসেই সারা বিশ্বের খবর জানা সম্ভব হচ্ছে।
গৃহস্থালির কাজেও বিজ্ঞান অনেক সাহায্য করছে। ফ্রিজ, টিভি, ওয়াশিং মেশিন, গ্যাস, ইত্যাদি যন্ত্রপাতি গৃহস্থালির কাজকে সহজ ও দ্রুত করেছে। এসব যন্ত্র ছাড়া আধুনিক জীবন কল্পনাও করা যায় না।
চিকিৎসাক্ষেত্রেও বিজ্ঞানের অবদান অনস্বীকার্য। একসময় যে সব রোগকে মরণব্যাধি বলা হতো, আজ সেগুলোর চিকিৎসা সম্ভব হয়েছে বিজ্ঞানের কল্যাণে। এক্স-রে, আল্ট্রাসোনোগ্রাম, সিটি স্ক্যান, এমআরআই ইত্যাদি প্রযুক্তি রোগ নির্ণয়ে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। নানা রকম ওষুধ, টিকা ও চিকিৎসা যন্ত্রের মাধ্যমে মানুষের গড় আয়ু বেড়ে গেছে।
পরিবহন ব্যবস্থাতেও বিজ্ঞানের পরিবর্তন চোখে পড়ার মতো। আগের দিনে পায়ে হেঁটে বা গরুর গাড়িতে যাতায়াত করতে হতো, এখন সেই জায়গা নিয়েছে ট্রেন, বাস, বিমান, জাহাজ প্রভৃতি। মানুষ অল্প সময়েই বহু দূরের পথ অতিক্রম করতে পারছে।
শিক্ষাক্ষেত্রেও বিজ্ঞান এনে দিয়েছে বিপ্লব। কম্পিউটার, প্রজেক্টর, অনলাইন ক্লাস, ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এখন আরও সহজে ও আকর্ষণীয়ভাবে জ্ঞান অর্জন করতে পারছে।
তবে বিজ্ঞানের অপব্যবহারও রয়েছে। বোমা, মারণাস্ত্র, দূষণ ইত্যাদি বিজ্ঞানের নেতিবাচক দিক। তাই বিজ্ঞানের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
উপসংহারে বলা যায়, বিজ্ঞান ছাড়া আধুনিক জীবন অচল। এটি যেমন আমাদের জীবনকে সহজ করেছে, তেমনি উন্নত ভবিষ্যতের পথও দেখাচ্ছে। তবে বিজ্ঞানকে মানবকল্যাণে ব্যবহার করাই আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। মনে রাখতে হবে—“বিজ্ঞান যেন হুমকি নয়, বরং হোক মানবতার জন্য আশীর্বাদ।”
MadhyamikQuestionPapers.com এ আপনি অন্যান্য বছরের প্রশ্নপত্রের উত্তরও সহজেই পেয়ে যাবেন। আপনার মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতিতে এই গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ কেমন লাগলো, তা আমাদের কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আরও পড়ার জন্য, জ্ঞান অর্জনের জন্য এবং পরীক্ষায় ভালো ফল করার জন্য MadhyamikQuestionPapers.com এর সাথে যুক্ত থাকুন।