Madhyamik Question Papers

বাংলা Model Question Paper 1 (2025) এর উত্তর – Class 10 WBBSE

Bengali
Bengali Model Question Paper 1 (2025) Answer Thumbnail

আপনি কি মাধ্যমিকের বাংলা Model Question Paper 1 (2025) প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন? এই আর্টিকেলে আপনি 2025 WBBSE-এর বাংলা Model Question Paper 1 প্রশ্নের সঠিক উত্তরগুলো পাবেন।

নিচে ২০২৫ বাংলা Model Question Paper 1 প্রশ্নের প্রতিটি উত্তর সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য Model Question Paper ও উত্তরপত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

MadhyamikQuestionPapers.com ২০১৭ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত সব মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তর বিনামূল্যে আপলোড করে আসছে। এছাড়াও ২০২৫ এর সমস্ত Model Question Paper ও উত্তর বিনামূল্যে আপডেট করেছে।

Download 2017 to 2024 All Subject’s Madhyamik Question Papers

View All Answers of Last Year Madhyamik Question Papers

যদি দ্রুত প্রশ্ন ও উত্তর খুঁজতে চান, তাহলে নিচের Table of Contents এর পাশে থাকা [!!!] চিহ্নে ক্লিক করুন। এই পেজে থাকা সমস্ত প্রশ্নের উত্তর Table of Contents-এ ধারাবাহিকভাবে সাজানো আছে। যে প্রশ্নে ক্লিক করবেন, সরাসরি তার উত্তরে পৌঁছে যাবেন।

Table of Contents

১। সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো:

১.১ ‘আমাদের থাকলে আমরাও চেষ্টা করে দেখতাম।’ উক্তিটি 

(ক) তপনের মামার
(খ) তপনের বাবার
(গ) তপনের মেজোকাকুর
(ঘ) তপনের ছোটোকাকুর

উত্তর: (গ) তপনের মেজোকাকুর

১.২ বাইজির ছদ্মবেশে হরিদার রোজগার হয়- 

(ক) আট টাকা দশ আনা
(খ) আট টাকা আট আনা
(গ) দশ টাকা চার আনা
(ঘ) দশ টাকা দশ আনা

উত্তর: (ক) আট টাকা দশ আনা

১.৩ ‘ও আমাকে শিখিয়েছে, খাঁটি জিনিস কাকে বলে।’ উক্তিটি কার? 

(ক) ইসাবের
(খ) হাসানের
(গ) বাহালি বৌদির
(ঘ) অমৃতের

উত্তর: (ক) ইসাবের

১.৪ ‘ছড়ানো রয়েছে – কাছে দূরে ছড়ানো রয়েছে- 

(ক) ধ্বস
(খ) আমাদের শিশুদের শব
(গ) হিমানির বাঁধ
(ঘ) গিরিখাদ 

উত্তর: (খ) আমাদের শিশুদের শব 

১.৫ ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর।’  কবিতায় বাক্যটি ক’বার ব্যবহৃত হয়েছে? 

(ক) ১৫ বার
(খ) ১৭ বার
(গ) ১৯ বার
(ঘ) ২০ বার

উত্তর: (গ) ১৯ বার

১.৬ ‘তোমায় নিয়ে বেড়াবে গান’ কোথায়? 

(ক) নদীতে
(খ) পাহাড়ে
(গ) সাগরে
(ঘ) আকাশে

উত্তর: (ক) নদীতে

১.৭ বাঙালি সাংবাদিকদের ‘বাবু কুইল ড্রাইভারস’ বলেছিলেন কে? 

(ক) লর্ড আমহার্স্ট
(খ) লর্ড কার্জন
(গ) লর্ড ওয়েলেসলি
(ঘ) লর্ড ক্যানিং

উত্তর: (খ) লর্ড কার্জন

১.৮ ‘অরণ্যে রোদন’ বললে কোন্ বাঞ্ছনার অর্থ প্রকাশিত হয়? 

(ক) বনে গিয়ে কান্না
(খ) নিষ্ফল খেদ
(গ) আক্ষেপ
(ঘ) অনুরাগ

উত্তর: (খ) নিষ্ফল খেদ

১.৯ চারখণ্ড রামায়ণ কপি করে একজন লেখক অষ্টাদশ শতকে কত টাকা পেয়েছিলেন? 

(ক) সাত টাকা
(খ) আট টাকা
(গ) নয়টাকা
(ঘ) দশ টাকা

উত্তর: (ক) সাত টাকা

১.১০ ‘এ কলমে লেখা যায় না।’ রেখাঙ্কিত পদটি 

(ক) কর্মকারক
(খ) করণ কারক
(গ) অপাদান কারক
(ঘ) অধিকরণ কারক

উত্তর: (খ) করণ কারক

১.১১ ব্যুৎপত্তি অনুসারে, ‘কারক’ শব্দটির অর্থ হল 

(ক) যে করে
(খ) যে বলে
(গ) যে করে না
(ঘ) যে চলে

উত্তর: (ক) যে করে

১.১২ পূর্বপদ প্রাধান্য পায় কোন সমাসে? 

(ক) দ্বিগু
(খ) নিত্য
(গ) তৎপুরুষ
(ঘ) দ্বন্দু

উত্তর: (ঘ) দ্বন্দু

১.১৩ ‘ফেলাইলা কনক-বলয় দূরে;’ নিম্নরেখ পদটি যে সমাসের উদাহরণ তা হল 

(ক) তৎপুরুষ
(খ) অব্যয়ীভাব
(গ) বহুব্রীহি
(ঘ) মধ্যপদলোপী কর্মধারয়

উত্তর: (ঘ) মধ্যপদলোপী কর্মধারয়

১.১৪ সরল বাক্যে সমাপিকা ক্রিয়ার সংখ্যা 

(ক) একটি
(খ) অন্তত দুটি
(গ) একাধিক
(ঘ) কোনোটিই নয়

উত্তর: (ক) একটি

১.১৫ ‘আসত্তি’ শব্দের অর্থ 

(ক) আসক্তি
(খ) নৈকট্য
(গ) অন্তর
(ঘ) সামীপ্য

উত্তর: (খ) নৈকট্য

১.১৬ ‘বাঁশি বাজে।’ এটি একটি 

(ক) ঘটক বা সম্পাদক কর্তৃবাচ্য
(খ) অসম্পাদক কর্তা কর্তৃবাচ্য
(গ) লুপ্ত কর্তা ভাববাচ্য
(ঘ) গৌণ কর্মকর্তা ভাববাচ্য

উত্তর: (খ) অসম্পাদক কর্তা কর্তৃবাচ্য

১.১৭ ‘বাচ্য’ শব্দের ব্যুৎপত্তি হল 

(ক) √বচ্+ত
(খ) বাচ+ যত্ত
(গ) √বচ্ + যৎ
(ঘ) বচ্ + তি

উত্তর: (গ) √বচ্ + যৎ

২০২৫ এর আরও Model Question Paper পেতে নীচে দেওয়া Facebook, WhatsApp এবং Telegram গ্রুপ Join করে রাখুন। এখানে সবার আগে Answer-এর Update পাওয়া যাবে।

Facebook Page Like & Follow
WhatsApp Channel Join Now
Telegram Channel Join Now

২। কমবেশি ২০টি শব্দে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:

২.১ যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

২.১.১ ‘দুজন বন্ধু নোক আসার কথা ছিল,’ বন্ধুদের কোথা থেকে আসার কথা ছিল?

উত্তর: গিরীশ কহিল, আজ্ঞে, এনাঞ্ঝাং থেকে দুজন বন্ধু নোক আসার কথা ছিল।

২.১.২ “নদেরচাঁদ সব বোঝে, নদেরচাঁদ কী বোঝে?

উত্তর: নদেরচাঁদ দিনরাত স্টেশনমাস্টার হিসেবে প্যাসেঞ্জার, আর মালগাড়ির তীব্রবেগে ছোটাছুটি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করে। সেজন্য তার পক্ষে নদীর জন্য পাগল হওয়াটা একদম সাজে না—এই বিষয়টি নদেরচাঁদ সব বুঝতে পারে।

২.১.৩ ‘ইসাবের মেজাজ চড়ে গেল।’ কেন?

উত্তর: অমৃতকে যখন কালিয়া  জোর করে কুস্তির লড়ার ছলে খোলা মাঠে ছুড়ে ফেলেদেয় এবং ছেলের দল আনন্দে চেঁচিয়ে উঠে তখন তা দেখে ইসাবের মেজাজ চড়ে গিয়েছিল । 

২.১.৪ তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই, তার থেকে অপমানের।’ তপনের কাছে দুঃখের, অপমানের বিষয়গুলি কী? 

উত্তর: মা-র কথামতো সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় – প্রকাশিত নিজের গল্পটি পড়তে গিয়ে তপন দেখে যে গল্পের প্রতিটি লাইন সংশোধন করে ছোটোমেসো গল্পটি নতুন করে লিখে দিয়েছেন তপনের কাছে পুরো গল্পটি অপরিচিত। সেই গল্পের মধ্যে তার লেখার কোনো ছোঁয়াই ছিল না। নিজের লেখা পড়তে বসে অন্যের লেখা পড়ার থেকে দুঃখের কিছু আছে বলে তপনের মনে হয় না। ‘তার চেয়ে’ কথাটিতে এই অপমানজনক বিষয়টির কথাই বোঝানো হয়েছে।

২.১.৫ জগদীশবাবু তীর্থ ভ্রমণের জন্য কত টাকা বিরাগীকে দিতে চেয়েছিলেন?

উত্তর: জগদীশবাবু তীর্থ ভ্রমণের জন্য একশত এক টাকা বিরাগীকে দিতে চেয়েছিলেন।

২.২ যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

২.২.১ ‘কে কবে শুনেছে, পুত্র, ভাসে শিলা জলে,’ বস্তার এমন মন্তব্যের কারণ কী?

উত্তর: বক্তার বিশ্বাস জন্মেছে বিধাতা তাঁর প্রতি বিরূপ । প্রসঙ্গত তিনি রামচন্দ্রের পুনর্জীবন লাভের কথা বলেছেন।

২.২.২ ‘কৃপণ আলোর অন্তঃপুরে।’ পঙক্তিটির অর্থ বুঝিয়ে দাও।

উত্তর: কোন ব্যক্তির হৃদয়ে কৃপণ বিচারবিধির প্রভাব থাকলে তার হৃদয়ে জ্বলজ্বল করে, যে আলো থাকে সেই আলোকে “কৃপণ আলো” বলে।

২.২.৩ “দেখিয়া রূপের কলা বিস্মিত হইল বালা / অনুমান করে নিজ চিতে।”- ‘বালা’ কী অনুমান করেছিলেন?

উত্তর: সিন্ধুতীরে’ কবিতার সংজ্ঞাহীন অপরূপা পদ্মাবতীকে দেখে ‘বালা’ অনুমান করেন, ইন্দ্রের শাপগ্রস্ত স্বর্গের অপ্সরা বিদ্যাধরি স্বর্গভ্রষ্ট হয়ে অচেতন অবস্থায় সিন্ধুতীরে পড়ে আছেন।

২.২.৪ ‘আমার শুধু একটা কোকিল’ কোকিল কোন কাজ সমাধান করবে বলে কবি আশা প্রকাশ করেছেন?

উত্তর: আমার শুধু একটা কোকিল” এই প্রসঙ্গে কোকিল শব্দটি একটি প্রতিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

কবিতায় কোকিল কবির মনের ভাব প্রকাশ করবে, মানবহৃদয়ের আকুল আকাঙ্ক্ষা ও তার গানের সুমধুর সুর সহস্র উপায়ে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেবে ,বেদনা প্রকাশ করবে।

২.২.৫ ‘অসুখী একজন’ কবিতাটি পাবলো নেরুদার কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?

উত্তর: ‘অসুখী একজন’ কবিতাটি পাবলো নেরুদার Extravagaria কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।

২.৩ যে-কোনো তিনটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

২.৩.১ ‘এক সাহেব লিখে গেছেন’ কী লিখে গেছেন?

উত্তর: সাহেব লিখে গেছেন উনিশ শতকে বারো আনায় বত্রিশ হাজার অক্ষর লেখানো যেত।

২.৩.২ “এ রকম বর্ণনা বাংলা ভাষায় প্রকৃতিবিরুদ্ধ”- কেমন রচনা?

উত্তর: The atomic engine has not even reached the blueprint stage – এর বাংলা পরমাণু ইঞ্জিন নীল চিত্রের অবস্থাতেও পৌঁছায়নি এই ধরনের বর্ণনাকে বাংলা ভাষায় প্রকৃতিবিরুদ্ধ”।

২.৩.৩ কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নিযুক্ত পরিভাষা সমিতিতে কারা ছিলেন?

উত্তর: ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে নিযুক্ত পরিভাষা সমিতিতে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিজ্ঞানের অধ্যাপক, ভাষাতত্ত্ববিদ, সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত এবং কয়েকজন লেখককে নিযুক্ত করা হয়েছিল।

২.৩.৪ ‘তা লেখককে নেশাগ্রস্ত করে।’ কী, কীভাবে লেখককে নেশাগ্রস্ত করে?

উত্তর: নিবের কলম লেখককে নেশাগ্রস্ত করে বলে প্রাবন্ধিক জানিয়েছেন। ফাউন্টেন পেন সংগ্রহের আনন্দ লেখককে নেশাগ্রস্ত করে।

২.৪ যে-কোনো আটটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

২.৪.১ ‘বৃষ্টিতে ধুয়ে দিল আমার পায়ের দাগ’ রেখাঙ্কিত পদটির কারক-বিভক্তি নির্ণয় করো।

উত্তর: ‘বৃষ্টিতে’ পদটি কর্তৃকারক এবং চতুর্থী বিভক্তি।

২.৪.২ সমধাতুজ কর্তা কাকে বলে?

উত্তর: বাক্যে ক্রিয়াপদটি যে ধাতু থেকে এসেছে, কর্তাটিও যদি সেই ধাতু থেকে নিষ্পন্ন হয়, তবে সেই কর্তাকে সমধাতুজ কর্তা বলে।

২.৪.৩ ব্যাসবাক্যসহ সমাস নির্ণয় করো: ‘মেঘাচ্ছন্ন’।

উত্তর: সমাসের প্রকার: তৎপুরুষ সমাস (কর্মধারয় তৎপুরুষ)

ব্যাসবাক্য: মেঘে আচ্ছন্ন

সমাস নির্ণয়:

মেঘ + আচ্ছন্ন = মেঘাচ্ছন্ন

এখানে “মেঘ” হল কর্ম (যা দ্বারা আচ্ছন্ন), এবং “আচ্ছন্ন” হল প্রধান পদ।

২.৪.৪ সন্ধি ও সমাসের সাদৃশ্য কী? (একটি)

উত্তর: সন্ধি ও সমাসের সাদৃশ্য:

উভয়ই দুটি বা ততোধিক শব্দকে যুক্ত করে একটি নতুন শব্দ গঠন করে।

২.৪.৫ বৃথা আশা মরিতে মরিতেও মরে না। (যৌগিক বাক্যে)

উত্তর: নিরর্থক এবং আশা কখনও মরে না।

২.৪.৬ নির্দেশক বাক্য কয় প্রকার ও কী কী?

উত্তর: নির্দেশক বাক্য দুই প্রকার হতে পারে- হ্যাঁ বাচক ও না বাচক। 

২.৪.৭ ‘নদীর ধারে তার জন্ম হইয়াছে’ কর্তৃবাচ্যে পরিণত করো।

উত্তর: তিনি নদীর ধারে জন্মাইয়াছেন। (কর্তৃবাচ্য)

২.৪.৮ অ-কারক পদ কয় প্রকার ও কী কী?

উত্তর: অ-কারক পদ দুই প্রকার— (১) সম্বন্ধ পদ ও (২) সম্মোধন পদ

২.৪.৯ একটি অকর্মক কর্তৃবাচ্যের উদাহরণ দাও।

উত্তর: অকর্মক কর্তৃবাচ্যের একটি উদাহরণ হলো, “আমি হাসছি।” 

এই বাক্যে “হাসছি” ক্রিয়াটি অকর্মক, কারণ এর কোনো কর্ম নেই। বাক্যে শুধু কর্তা (আমি) এবং ক্রিয়ার অর্থ প্রকাশ পেয়েছে। 

২.৪.১০ ‘সেখানে ছড়িয়ে রইল কাঠকয়লা’- নিম্নরেখ পদটির ব্যাসবাক্যসহ সমাসের নাম লেখো।

উত্তর: কাঠকয়লা-কাঠ ও কয়লা (দ্বন্দ্ব সমাস)

৩। প্রসঙ্গ নির্দেশসহ কমবেশি ৬০ শব্দে উত্তর দাও:

৩.১ যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৩.১.১ বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের।’ কেন তার এমন পরিস্থিতি হয়েছিল?

উত্তর: যখন মাসি-মেসােকে ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকা হাতে নিয়ে বাড়িতে আসতে দেখে তপনের বুকের রক্ত ছলকে উঠেছিল।

৩.১.২ “তা ছাড়া এত বড়ো বন্ধু।” কাকে, কেন এত বড়ো বন্ধু বলা হয়েছে?

উত্তর: চাকরি সূত্রে রেঙ্গুন প্রবাসী অপূর্বের ঘরের টাকা করি চোরের হাত থেকে বাঁচিয়েছিল যে খ্রিস্টান মেয়েটি তাকে বন্ধু বলা হয়েছে।

৩.২ যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৩.২.১ ‘উল্টে পড়ল মন্দির থেকে টুকরো টুকরো হয়ে’ মন্দির থেকে কী উলটে পড়ল? কী কারণে উলটে পড়েছিল?

উত্তর: ‘উল্টে পড়ল মন্দির থেকে টুকরো টুকরো হয়ে’ মন্দির থেকে শান্ত হলুদ দেবতারা’ উল্টে পড়ল।

‘অসুখী একজন’ কবিতায় হাজার বছর ধরে ধ্যানমগ্ন, শান্ত হলুদ দেবতারা যুদ্ধের আঘাতে মন্দির থেকে টুকরো টুকরো হয়ে উলটে পড়েছিল।

৩.২.২ “ওরে ওই স্তব্ধ চরাচর।” ‘চরাচর’ শব্দের অর্থ কী? সেখানে স্তব্ধতা বিরাজমান কেন?

উত্তর: উদ্ধৃতাংশটি বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম রচিত ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতা থেকে গৃহীত হয়েছে।

‘চরাচর’ শব্দের অর্থ হলো- সমগ্র বিশ্বজগত তথা পৃথিবী।

কবি ধ্বংসকে বা প্রলয় ফুটিয়ে তুলতে কখনও শিব, কখনও আবার সর্বনাশী জ্বালামুখী স্বরূপ চণ্ডীমূর্তির রুদ্রতাণ্ডবের উপমা টেনে এনেছেন। বিনাশের অট্টহাসির গভীর ব্যঞ্জনা যেন সমগ্র জগতে সৃষ্টি করেছে এক রুদ্ধশ্বাস পরিবেশ। প্রলয়ের ভয়াবহ বিস্ফোরণের অজানা আশঙ্কায় এ পৃথিবী নিষ্কম্প- নিস্তব্ধ। সেখানে স্তব্ধতা বিরাজমান, প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে কবির এ ভাবনাই প্রকাশ পেয়েছে।

৪। কমরেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৪.১ ‘খুবই গরিব মানুষ হরিদা’ হরিদা চরিত্রের বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।

উত্তর: হরিদা ছিলেন গরিব মানুষ। শহরের সবচেয়ে একটা ছোট্ট গলির মধ্যে তাঁর ছোটো ঘরটি ছিল। এই ঘরে বসত কথকদের চায়ের আড্ডা। যদিও চা, চিনি, দুধ, কথকরা নিজেরাই আনতেন। হরিদা শুধু জল ফুটিয়ে দিতেন তাঁর উনুনের আগুনের আঁচে। হরিদার জীবনের ছিল একটা নাটকীয় বৈচিত্র্য। হরিদা মাঝে মাঝেই বহুরূপী সেজে বেরিয়ে পড়তেন রাস্তায় । কখনও পাগল, কখনও কাবুলিওয়ালা বাইজি, ফিরিঙ্গি সাহেব, আবার কখনও বা পুলিশ সেজে তাঁকে দেখা যেত। যারা তাঁকে চিনতে পারতেন তারা এক দু আনা বকশিশ দিতন। আর যারা চিনতে পারত না তারা কিছুই দিত না কিংবা বিরক্ত হয়ে দুটো – একটা পয়সা দিয়েদিতো। এইভাবে শহরের জীবনের মাঝে মাঝে চমৎকার সব ঘটনা ঘটিয়ে, বহুরূপী বেশে কিছু রোজগার করে হরিদার জীবন চলত।

৪.২ জাত-ধর্মের তুচ্ছতা অতিক্রমী মানবধর্মের শাশ্বত রূপটি ‘অদল বদল’ গল্পের কাহিনির মধ্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে আলোচনা করো।

উত্তর: পান্নালাল প্যাটেল রচিত ‘অদল বদল’ গল্পে মানবধর্মের শাশ্বত রূপ স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছে। গল্পটির মূল বক্তব্য—মানুষের প্রকৃত পরিচয় জাত, ধর্ম বা সমাজের ভিত্তিতে নয়, বরং তার মানবিক গুণ, সহানুভূতি ও ভালোবাসার মাধ্যমে নির্ধারিত হয়।

গল্পে দুটি দরিদ্র পরিবারের মধ্যে বন্ধুত্ব, পারস্পরিক সহানুভূতি ও আত্মত্যাগের অনুপম দৃষ্টান্ত দেখতে পাওয়া যায়। কেহ হিন্দু, কেহ মুসলমান—এই বিভাজন গল্পে গুরুত্ব পায় না; বরং মানুষের প্রতি মানুষের টানই বড় হয়ে ওঠে। যখন এক পরিবার বিপদে পড়ে, অন্য পরিবার তাদের সর্বস্ব দিয়ে সাহায্য করে, বিনিময়ে কিছু প্রত্যাশা না রেখেই।

এখানে ধর্মীয় বিভেদের চেয়ে অনেক বড় হয়ে ওঠে সহানুভূতি, পরোপকার, এবং নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। গল্পটি এই বার্তা দেয় যে, জাত-ধর্মের সীমা পেরিয়ে মানবতাই হল প্রকৃত ধর্ম—যা চিরকাল প্রাসঙ্গিক ও অনন্য।

এইভাবেই ‘অদল বদল’ গল্পটি মানবধর্মের চিরন্তন মাহাত্ম্যকে তুলে ধরে, যা আজকের সমাজেও সমানভাবে প্রয়োজনীয়।

৫। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৫.১ ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতায় পদ্মার চরিত্রটি যেভাবে পাওয়া যায়, তা নিজের ভাষায় আলোচনা করো।

উত্তর: সৈয়দ আলাওলের অনূদিত পদ্মাবতী কাব্যের ‘পদ্মাসমুদ্রখণ্ড’ থেকে সংকলিত ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতায় পদ্মা সবচেয়ে সক্রিয় চরিত্র। কাহিনিতে তাঁর কিছু বিশেষত্ব লক্ষ করা যায়।

পদ্মার পরিচয় – পদ্মা ছিলেন সমুদ্রকন্যা, সখীদের নিয়ে হাসিখেলায় প্রাণচঞ্চল রূপেই পদ্মাকে কবিতায় পাওয়া যায়।

সমুদ্রতীরে তাঁর যে সুরম্য উদ্যান আছে এবং সোনায় মোড়া যে প্রাসাদ তিনি তৈরি করেছেন, তা পদ্মার সৌন্দর্যপ্রিয়তার অসামান্য উদাহরণ।

সৌন্দর্য – সৌন্দর্যপ্রিয়তা ছিল পদ্মার মধ্যে, যে উদ্যান তিনি তৈরি করেছেন, সেখানে সুগন্ধ বিস্তার করেছে নানা মনোহর ফুল, গাছে নানা ফল ধরেছে। তাঁর প্রাসাদটিও ছিল সোনায় মোড়া। তার ওপর নানান রত্নের সজ্জা সেই প্রাসাদের সৌন্দর্যও বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।

মানবিক পদ্মা চরিত্রটি বিশিষ্ট হয়ে উঠেছে তাঁর মানবিকতায়। অপরিচিতা পদ্মাবতীকে সমুদ্রতীরের মান্দাসে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাঁর উৎকণ্ঠা, ঈশ্বরের কাছে তাঁর কাতর প্রার্থনা যেন আত্মীয়ের সঙ্গে আত্মীয়তার সেতু তৈরি করেছে। তাঁর নির্দেশে পদ্মার সখীরা তন্ত্র-মন্ত্র-মহৌষধি সহযোগে আগুনের সেঁক দিয়ে পদ্মাবতীর চেতনা ফিরিয়েছে। মধ্যযুগের কবিতায় আলাওলের সৃষ্ট এই চরিত্রটিতে মানবিকতা এক অসামান্য বিশেষত্ব। এভাবেই সমুদ্রকন্যা পদ্মা হয়ে উঠেছেন অনন্যা।

প্রাণচঞ্চল সখীদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও ছিল অত্যন্ত মধুর। রাত্রি শেষ হতেই দেখা যায়, সকালবেলা সখীদের সঙ্গে হাসিখেলায় মেতে উঠে তিনি।

৫.২ “সেই হোক তোমার সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী।।”- ‘শেষ পুণ্যবাণী’টি কী? কবির এমন বলার কারণ কী?

উত্তর: কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘আফ্রিকা’ কবিতায় সভ্যতার চরম সংকটকালে ক্ষমা প্রার্থনাকেই সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী বলে উল্লেখ করেছেন।

কারণ- শুধু লোভের বশবর্তী হয়ে ঔপনিবেশিকরা আফ্রিকায় যে হত্যা, লুণ্ঠন, শোষণ-উৎপীড়নের পরিচয় দিয়েছিল, যেভাবে লাঞ্ছিত, অপমানিত করেছিল মানুষদের তা ছিল সভ্যতার পাপ। এই পাপের ফলশ্রুতিতে বিশ্বে ভয়ংকর সংকটকাল ঘনিয়ে এসেছিল। এই অবস্থায় বিশ্বকে রক্ষা করার একমাত্র উপায় ছিল মানহারা মানবীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। ক্ষমা সবচেয়ে বড়ো গুণ। তাই সভ্যতার চরম সংকটকালে ক্ষমা প্রার্থনাই সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী।

৬। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৬.১ ‘কলমকে বলা হয় তলোয়ারের চেয়েও শক্তিধর’ সপ্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: শ্রীপান্থ লিখিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধ থেকে উদ্ধৃত উক্তিটি একটি প্রবাদপ্রতিম বাক্য ।

কারণ, ফাউন্টেন পেনের বিভিন্ন অংশগুলিকে ‘ব্যারেল’, ‘কার্টিজ’ ইত্যাদি নামে ডাকা হয় । এই শব্দগুলির সঙ্গে গোলা – বন্দুকের যোগাযোগের কথা কে না জানে । তবে বারুদের সঙ্গে কলমের কোনো সম্পর্ক নেই ।

ইতিহাসে এমন অনেক লেখকের উল্লেখ পাওয়া যায়, যাঁদের তলোয়ারের চেয়েও বেশি লেখনীর ধার,। আর সেই ক্ষুরধার কলমকে হাতিয়ার করে তাঁরা অনেক মিথ্যেবাদী, কুর প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াই চালিয়েছেন।

এখানে কলমের শক্তির অন্তর্নিহিত অর্থ হল, মানুষের লেখনীর ক্ষমতা বা লিখন-দক্ষতা। তলোয়ার প্রয়োগ করে মানুষকে আহত করা যায় কিন্তু মানুষের চিন্তাশক্তি তথা লেখনীর শক্তি শত সহস্র মানুষের ভাবনা, আদর্শ কিংবা দর্শনকে কেবল প্রভাবিতই করে না, সম্পূর্ণ বদলেও দিতে পারে ।

আর লেখার এই প্রভাব বা প্রতিক্রিয়া যুগযুগান্তরব্যাপী স্থায়ী হয় তাই কলমকে তলোয়ারের চেয়েও বেশি শক্তিধর বলে বিবেচনা করা হয়েছে। তাই এক্ষেত্রে বলা চলে মে তলোয়ারের চেয়েও শক্তিধর, কলমই সর্বশ্রেষ্ঠ অস্ত্র ।

৬.২ ‘বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান’ রচনাটি অনুসরণে পরিভাষা প্রণয়নে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ ও কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা আলোচনা করো।

উত্তর: রাজশেখর বসু রচিত ‘বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান’ প্রবন্ধে বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান শিক্ষার প্রয়োজনে সুনির্দিষ্ট ও গ্রহণযোগ্য পরিভাষা গঠনের কথা বলা হয়েছে। এই পরিভাষা প্রণয়নের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিয়েছিল বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ ও কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।

বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ প্রথমে বাংলায় বৈজ্ঞানিক পরিভাষা গঠনের প্রয়াস নেয়। তারা ইংরেজি বা ল্যাটিন পরিভাষার বাংলা প্রতিশব্দ নির্মাণে চেষ্টা করেন, যাতে বাংলাভাষী ছাত্রছাত্রীরা বিজ্ঞান শিক্ষায় সহায়তা পায়।

পরবর্তীকালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়-এর উদ্যোগে বিজ্ঞান পরিভাষা প্রণয়নের কাজ আরও সংগঠিত ও পরিকল্পিতভাবে শুরু হয়। রাজশেখর বসু নিজে এই কাজে জড়িত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা পরিভাষা কমিটির সদস্যরূপে তিনি যুক্ত হন এবং বিজ্ঞান, গণিত, রসায়ন, পদার্থবিদ্যা প্রভৃতি বিষয়ের বহু শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ তৈরি করেন।

এই দুই প্রতিষ্ঠানের যৌথ প্রচেষ্টায় বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান চর্চা সহজ ও সুগম হয়, যা শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

৭। কমবেশি ১২৫ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৭.১ “দরবার ত্যাগ করতে আমরা বাধ্য হচ্ছি জাঁহপনা।” বস্তা কে? তাঁরা কেন দরবার ত্যাগ করতে চান?

উত্তর: শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাট্যাংশে “দরবার ত্যাগ করতে আমরা বাধ্য হচ্ছি জাঁহপনা” বস্তা হলেন মীরজাফর।

ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্ররোচনায় সিরাজের সভাসদদের একাংশ রাজদ্রোহে লিপ্ত হয়ে পড়েছিল। সেই দলে লিপ্ত ছিলেন মীরজাফর, রায়দুর্লভ, রাজবল্লভ, জগতশেঠ প্রমুখ। আলোচ্য অংশে ‘আমরা’ বলতে এই সভাসদদের কথা বোঝানো হয়েছে। তারা নবাবের দরবার ত্যাগ করতে চেয়েছেন।

নবাব-বিরোধী সভাসদদের প্রধান মন্ত্রনাদাতা ছিলেন জনৈক ইংরেজ কর্মচারি ওয়াটস। এই ওয়াটস ছিল নবাবের দরবারে নিযুক্ত ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একজন প্রতিনিধি। রাজদ্রোহে লিপ্ত থাকার অপরাধে সিরাজ তাকে দরবার থেকে বিতাড়িত করেন। রাজা রাজবল্লভ এই ঘটনার প্রতিবাদ করলে নবাব রাজদ্রোহী সভাসদদের সতর্ক করে বলেন সকলের সব কুকীর্তির খবর তিনি রাখেন। এই প্রসঙ্গে নবাব-অনুগামী মীরমদন এবং মোহনলাল নবাবের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থনের কথাটি জানায়। তারা বলেন, “আমরা নবাবের নিমক বৃথাই খাই না”। 

তাদের কথায় নবাবের প্রধান সেনাপতি মীরজাফর অপমানিত বোধ করেন। সেই কারণে তিনি স্বপক্ষীয় সভাসদদের সঙ্গে দরবার ত্যাগ করতে চেয়েছিলেন।

৭.২ “ঘরে-বাইরে প্রতিনিয়ত এই বাক্যজ্বালা আমি আর সইতে পারি না লুৎফা।” ‘লুৎফা’ কে? বস্তুার কথায় ঘরে-বাইরের কী ধরনের বাকাজ্বালার প্রসঙ্গ নির্দেশিত হয়েছে।

উত্তর: ‘লুৎফা’ সিরাজদ্দৌলার স্ত্রী। তিনি ধৈর্যশীলা, বুদ্ধিমতী ও সহানুভূতিশীল একজন নারী, যিনি নবাবের দুঃসময়ে তার পাশে থেকে তাকে সাহস জুগিয়ে চলেছেন।

উদ্ধৃত অংশে কথক বস্তুা, যে সিরাজদ্দৌলার অনুগত দাসী। তার কথায় ‘বাক্যজ্বালা’ বলতে ঘর ও বাইরে থেকে সিরাজদ্দৌলার প্রতি আসা কটুকথা, অপবাদ ও মানসিক নির্যাতনের ইঙ্গিত করা হয়েছে। ঘরের মধ্যে ঘসেটি বেগম, ইমতিয়াজ, রায়দুর্লভ প্রমুখ ষড়যন্ত্রকারীরা নানা রকম অপবাদ ও বিরোধিতামূলক কথা বলে নবাবকে মানসিকভাবে আঘাত করছে। অপরদিকে, বাইরের জগতে ইংরেজরা এবং মীরজাফরের মত বিশ্বাসঘাতকেরা নবাবের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার চালিয়ে তার ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। এসব প্রতিনিয়ত বাক্যবাণ নবাবের মনে অসহ্য যন্ত্রণা দিচ্ছে, যার কথা বস্তুা লুৎফার সামনে তুলে ধরেছে।

এই বাক্যটির মাধ্যমে নাটকে সিরাজদৌলার একাকিত্ব, চাপা যন্ত্রণা ও মানসিক টানাপোড়েন ফুটে উঠেছে।

৮। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৮.১ “কম্পিটিশনে পড়লে মেয়েটা তো আমার পা ধোয়া জল খাবে।” বস্তা কে? কী প্রসঙ্গে তার এই উক্তি? এই উক্তিতে বক্তার কীরূপ মনোভাব ফুটে উঠেছে?

উত্তর: মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাসের সপ্তম পরিচ্ছেদে বাংলার চ্যাম্পিয়ন সাঁতারু অমিয়া তার সহ-সাঁতারু বেলাকে এই কথাগুলি বলেছে।

প্রসঙ্গ ক্ষিতীশ সিংহ কমলদিঘিতে কোনিকে সাঁতার শেখাচ্ছিলেন। সেইসময় অমিয়া এবং বেলা অ্যাপোলো ক্লাব থেকে বেরিয়ে আসে। তারা একসময় ক্ষিতীশের ছাত্রী ছিল, কিন্তু ক্ষিতীশকে তারা অপছন্দ করে। ক্ষিতীশের বর্তমান ছাত্রী সদ্য সাঁতার শিখতে আসা কোনির হাতের স্ট্রোক নিয়ে তারা কৌতুক করে। তখনই অহংকারী অমিয়া এই মন্তব্যটি করেছিলো।

বক্তার মনোভাব – 

দীর্ঘদিনের সাঁতারু অমিয়া বেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন। অপরদিকে কোনি সদ্য সাঁতার শিখতে শুরু করেছে। তুলনা করতে গেলে স্বাভাবিকভাবেই দেখা যায়, অমিয়া অনেক দক্ষ। একজন নবীন সাঁতারুর সাঁতার কাটার পদ্ধতি নিয়ে এমন মন্তব্য, তার ঔদ্ধত্য এবং অহংবোধেরই পরিচয় দেয়। 

অহংকার যে পতনের কারণ হতে পারে এটা হয়তো অমিয়ার জানা ছিল না। কাহিনির শেষে সেই পতন দেখা যাবে অমিয়ার। হরিচরণের মাধ্যমে খবর পায় যে “ক্ষিদ্দা নাকি ওই মেয়েটাকে দিয়ে জুপিটারকে ডাউন দেবে”। কোনিকে বিপক্ষ ধরে নিয়ে তাকে তুচ্ছ ও হেয় করতে চেয়েছে অমিয়া। 

তার এই আচরণ একদমই খেলোয়ারসুলভ নয়। এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অমিয়ার গর্ব ও অহংকারের চরম প্রকাশ ঘটেছে।

৮.২ “ক্ষিন্দ্দা, এবার আমরা কী খাব?”- বস্তা কে? উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কীভাবে তাদের সাহায্য করেছেন?

উত্তর: “ক্ষিদ্দা, এবার আমরা কী খাব?” উক্তিটি কোনি নামক মেয়েটির।

কোনি ছিলেন একজন প্রতিভাবান সাঁতারু। গঙ্গায় কোনির সাঁতার দেখে তিনি স্বেচ্ছায় তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। শুধু তাই নয়,

কোনি দরিদ্র পরিবারের মেয়ে হওয়ায় তার ভালো খাবার খাওয়ার সামর্থ্য ছিল না তিনি  (যিনি ক্ষিদ্দা নামেই পরিচিত) কোনির খাবারের ব্যবস্থাও করেছিলেন। তাকে নিজের বাড়িতেও নিয়ে যান । 

তারপর হঠাৎ একদিন কোনিদের পরিবারে দুর্যোগের কালো মেঘ নেমে আসে- টিবি রোগে পৃথিবী ছেড়ে চলে যায় কোনির বড় দাদা কমল। সেই ছিল পরিবারের মধ্যে একমাত্র উপার্জনকারী। তার মৃত্যুতে কোনিদের পরিবার সর্বস্বান্ত হয়। এইরকম পরিস্থিতিতে কোনি ক্ষিতীশকে জিজ্ঞেস করেছিল “ক্ষিদ্দা, এবার আমরা কী খাব?”

এরপর ক্ষিতীশ নিজের সাধ্যের মধ্যে না থাকলেও কোনির পরিবারের অন্নসংস্থানের বন্দোবস্ত দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ক্ষিদ্দা কোনির মাকে  কাপড়ের ছিট কাটার কাজে দিয়েছিলেন। ক্ষিতীশ নিজে এসে ছিট কাপড় পৌঁছে দিয়ে যেতেন এবং সেগুলি কাটা হলে কোনির দ্বারা পাঠিয়ে দেওয়া হতো। এর ফলে তাদের অল্প কিছু উপার্জন হয়ে যেতো। তাছাড়া, কোনিকেও লীলাবতীর দোকানে চল্লিশ টাকা মাস মাইনের কাজ জোগাড় করে দিয়েছিলেন। এছাড়াও ক্ষিতীশ নানাভাবে সাহায্য করতেন কোনির পরিবারকে।

ক্ষিতীশ সিংহ শুধু কোনির প্রশিক্ষক ছিলেন না, তিনি ছিলেন তার অভিভাবক এবং পথপ্রদর্শক। তিনি কোনিকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য কঠোর প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন।

৮.৩ “হঠাৎ তার চোখে ভেসে উঠল ‘৭০’ সংখ্যাটা।” – ‘৭০’ সংখ্যাটি কী? তা কোনির জীবনে কীভাবে তাৎপর্যমন্ডিত হয়ে উঠেছিল, বুঝিয়ে দাও।

উত্তর: হঠাৎ তার চোখে ভেসে উঠল ‘৭০’ সংখ্যাটা” ‘৭০’ সংখ্যাটি হলো কোনি যখন একা সুইমিং পুলে নিজের ইচ্ছেমতো অনুশীলন করে পর উঠে আসার সময় কোনি

একটি মেয়ের সাথে মুখোমুখি হয়। পরিচয় হলে কোনি জানতে পারে মেয়েটির নাম রমা যোশি। কোনির চোখে সেই সময়েই ‘৭০’সংখ্যাটা ভেসে ওঠে। এই সংখ্যাটা আসলে ‘৭০’ সেকেন্ড। 

রমা যোশি ‘৭০’সেকেন্ডে মহারাষ্ট্রের সাঁতারু সাঁতার শেষ করে রেকর্ড তৈরি করেছিল। কোনির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল এই রমা যোশিই।

কোনির প্রতিদিনের অনুশীলনের পাশাপাশি তার বিশ্রাম,খাওয়া, রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা সব কিছুতে নজর রাখা শুরু করেছিলেন ক্ষিতীশ সিংহ । কোনির অনুশীলনের বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক, হিসেবি এবং কঠোর হয়ে উঠেছিলেন তিনি। 

কোনিকে উৎসাহিত করতে ক্ষিতীশ ‘৭০’ সংখ্যাটা বড়ো বড়ো করে লিখে রাখে ক্লাবের বারান্দার দেয়ালে। ক্ষিতীশ প্রতিদিন কোনির চোখের সামনে ওই সময়টি দেখিয়ে তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন, “এক মিনিট ১০ সেকেন্ডে কোনিকে এই বছরই সাঁতরাতে হবে।” অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখাতেই হবে। কোনির যে একমাত্র শত্রু সময় তা প্রতিমুহূর্তে ওই সংখ্যাটি সামনে রেখে তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন। চিপকে হঠাৎ  রমা যোশির সাথে পরিচয়ে কোনির মনে প্রথম ভেসে উঠল ‘৭০’ সংখ্যাটা, তখনই ক্ষিতীশ বুঝে যায়, তাঁর উদ্দেশ্যে কতোখানি সফল হয়েছেন।

৯। চলিত গদ্যে বঙ্গানুবাদ করো:

Honesty is a great virtue. If you do not deceive others, if you do not tell a lie, if you are strictly just and fair in your dealings with others, you are an honest man. Honesty is the best policy. An honest man is respected by all. Every man trusts an honest man. None can prosper in life if he is not honest.

উত্তর: সততা একটি মহান গুণ। যদি তুমি অন্যদের না ঠকাও, মিথ্যা কথা  না বলো এবং অন্যদের সঙ্গে ন্যায় ও সুবিচারপূর্ণ আচরণ করো, তাহলে তুমি একজন সৎ মানুষ। সততাই সর্বোত্তম নীতি। একজন সৎ মানুষ সকলের সম্মান পায়। সবাই একজন সৎ মানুষকে বিশ্বাস করে। কেউ জীবনে সত্যিকারের উন্নতি করতে পারে না, যদি সে সৎ না হয়।

১০। কমবেশি ১৫০ শব্দে নীচের যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

১০.১ ‘ফেসবুক’ ব্যবহারের সতর্কতা বিষয়ে দুই ছাত্রের মধ্যে একটি সংলাপ রচনা করো।

উত্তর: ‘ফেসবুক’ ব্যবহারের সতর্কতা বিষয়ে দুই ছাত্রের মধ্যে একটি সংলাপ

রাহুল: সোমিক, তুমি কি ফেসবুক ব্যবহার করো?

সোমিক: হ্যাঁ, করি। তবে এখন একটু কম ব্যবহার করছি। 

কেন বলো তো?

রাহুল: না আমি দেখেছি, অনেকে ফেসবুকে অনেক সময় নষ্ট করে। এতে পড়াশোনার ক্ষতি হয়।

সোমিক: একদম ঠিক বলেছো। আবার অনেক সময় ভুয়া খবর ছড়ায়, আর মাথার উপরও খারাপ প্রভাব পড়ে।

রাহুল: হ্যাঁ, আর অপরিচিত লোকের সঙ্গে কথা বলা অনেক সময় বিপদ ডেকে আনতে পারে।

সোমিক: তাই ফেসবুক ব্যবহার করতে হলে অনেক সাবধানে থাকতে হয়। ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়া একেবারেই উচিত নয়।

রাহুল: আমি ভাবছি, দিনে মাত্র আধা ঘণ্টা ফেসবুক ব্যবহার করব, বাকি সময় পড়াশোনায় মনোযোগ দেব।

সোমিক: সেটাই ভালো। ফেসবুক যতটা দরকার ততটুকু ব্যবহার করলেই হবে।

রাহুল: হ্যাঁ, প্রযুক্তি যেন আমাদের সাহায্য করে, ক্ষতি না করে — সেদিকেই খেয়াল রাখতে হবে।

১০.২ ‘নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী’ এ বিষয়ে সংবাদপত্রের জন্য একটি প্রতিবেদন রচনা করো।

উত্তর: নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী

লালবাগ, ২২ এপ্রিল: দেশের বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য দিনে দিনে ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে। চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, আলু,—প্রায় সব জিনিসের দাম বেড়েছে হঠাৎ করেই। সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, বর্তমান বাজারে টিকে থাকা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো চরম সংকটে পড়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, পরিবহন খরচ বৃদ্ধি, পণ্য আমদানির জটিলতা ও প্রাকৃতিক কারণে উৎপাদন হ্রাস—এই মূল্যবৃদ্ধির পেছনে মূল কারণ। তবে ক্রেতারা বলছেন, অনেক সময় অসাধু ব্যবসায়ীদের মুনাফালোভও মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায়ী। সরকারের পক্ষ থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাজারে সুশৃঙ্খলতা ফিরিয়ে আনতে কড়াভাবে মনিটরিং এবং প্রয়োজনীয় নীতিমালা গ্রহণ জরুরি।

১১। যে-কোনো একটি বিষয় অবলম্বনে রচনা লেখো: (কমবেশি ৪০০ শব্দে)

১১.১ দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান।

উত্তর: দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান

আজকের আধুনিক যুগে বিজ্ঞান মানব জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের প্রভাব সুস্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়। ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত আমরা নানাভাবে বিজ্ঞানের সেবা গ্রহণ করি।

সকালে ঘুম ভাঙার জন্য আমরা যে অ্যালার্ম ঘড়ির সাহায্য নেই, সেটিও বিজ্ঞানের অবদান। দাঁত মাজার ব্রাশ ও পেস্ট, গরম জলের জন্য গিজার, এমনকি রান্নার গ্যাস, চুলা – সবই বিজ্ঞানের উপহার। মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, রেডিও, টেলিভিশন, ফ্রিজ, মাইক্রোওয়েভ – এগুলো ছাড়া আধুনিক জীবন আজ কল্পনাও করা যায় না।

পরিবহন ব্যবস্থায় বিজ্ঞানের প্রভাব অপরিসীম। সাইকেল, মোটরবাইক, গাড়ি, বাস, ট্রেন, প্লেন – সবকিছুই বিজ্ঞানের কীর্তি। বিজ্ঞান আমাদের যাতায়াতকে করেছে সহজ ও দ্রুত। চিঠির পরিবর্তে আজ ইমেল, এসএমএস, ব্যবহার হচ্ছে, যা আমাদের যোগাযোগব্যবস্থাকে করে তুলেছে দ্রুত ও কার্যকর।

শিক্ষাক্ষেত্রেও বিজ্ঞানের প্রভাব অনস্বীকার্য। আজকের দিনে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইনে পড়াশোনা করা যায়। বিভিন্ন তথ্য খুঁজে পাওয়া, প্রজেক্ট তৈরি, সব কিছুই সম্ভব হয়েছে বিজ্ঞানের কল্যাণে।

চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অবদান সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। জটিল রোগের নিরাময়ের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি, ওষুধ, অস্ত্রোপচারের পদ্ধতি – সবই বিজ্ঞানের অবদান। কোভিড-১৯ এর টিকা বা বিভিন্ন রোগের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ফলে লক্ষ লক্ষ প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।

তবে বিজ্ঞানের অপব্যবহারও আমাদের জন্য ক্ষতিকর। পারমাণবিক অস্ত্র, দূষণ, প্রযুক্তিনির্ভরতা – এসব বিষয় আমাদের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই বিজ্ঞানের সদ্ব্যবহারই আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।

সবশেষে বলা যায়, বিজ্ঞান আমাদের জীবনকে করেছে সহজ, আরামদায়ক ও গতিশীল। দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান আমাদের বন্ধু এবং পথপ্রদর্শক। এর সঠিক ব্যবহার আমাদের ভবিষ্যৎকে আরও উজ্জ্বল করে তুলতে পারে।

১১.২ শিক্ষাবিস্তারে গণমাধ্যমের ভূমিকা।

উত্তর: শিক্ষাবিস্তারে গণমাধ্যমের ভূমিকা

একবিংশ শতাব্দীতে গণমাধ্যম সমাজের অন্যতম শক্তিশালী উপাদানে পরিণত হয়েছে। শুধু খবর পরিবেশনের মাধ্যম হিসেবে নয়, শিক্ষাবিস্তারের ক্ষেত্রেও গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আজকের দিনে সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন, ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদি নানা রকম গণমাধ্যম মানুষের শিক্ষাগ্রহণকে করেছে সহজ, গতিশীল ও সর্বজনগ্রাহ্য।

প্রথমত, সংবাদপত্র প্রতিদিনের দেশ-বিদেশের খবরের পাশাপাশি শিক্ষামূলক নানা প্রতিবেদন, প্রবন্ধ, প্রশ্নোত্তর ইত্যাদি প্রকাশ করে। এতে সাধারণ পাঠকের জ্ঞান বাড়ে এবং শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সহায়তা হয়। বিশেষ করে বোর্ড পরীক্ষার প্রস্তুতির সময় অনেক সংবাদপত্র শিক্ষামূলক পরিশিষ্ট প্রকাশ করে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই উপকারী।

দ্বিতীয়ত, টেলিভিশন বর্তমানে শিক্ষার এক শক্তিশালী মাধ্যম। বিভিন্ন চ্যানেলে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান, ডকুমেন্টারি, বিজ্ঞানচিত্র, ইতিহাসভিত্তিক সিরিজ, শিক্ষকদের মাধ্যমে সরাসরি পাঠদান – এসবই শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়ায় ও সহায়তা করে।

তৃতীয়ত, ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম শিক্ষাক্ষেত্রে এক বিপ্লব এনেছে। গুগল, অনলাইন লাইব্রেরি, ডিজিটাল ক্লাসরুম ইত্যাদির মাধ্যমে যে কেউ যেকোনো সময়ে শিক্ষালাভ করতে পারে। করোনা মহামারির সময় অনলাইন শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে কোটি কোটি শিক্ষার্থী ঘরে বসেই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পেরেছে – এটি গণমাধ্যমের অবদান।

এছাড়া, বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রশিক্ষণ কোর্স, ভাষা শিক্ষা, প্রোগ্রামিং, বিজ্ঞান, সাহিত্য ইত্যাদি বিষয়ে বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে শেখার সুযোগ রয়েছে। শিক্ষার গণ্ডি এখন শুধু বিদ্যালয়-কলেজের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বরং গণমাধ্যমের মাধ্যমে তা পৌঁছে গেছে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও।

তবে এর পাশাপাশি কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। অনলাইন ও সামাজিক মাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ানো, বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট বা সময়ের অপচয় শিক্ষার্থীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই সচেতনভাবে গণমাধ্যম ব্যবহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

শিক্ষাবিস্তারে গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য। সঠিকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে গণমাধ্যম হতে পারে একটি কার্যকর শিক্ষার হাতিয়ার, যা দেশ ও সমাজের উন্নয়নে বিশাল ভূমিকা রাখতে পারে।

১১.৩ একটি শহরের আত্মকথা।

উত্তর: একটি শহরের আত্মকথা

আমি একটি শহর। নাম আমার আলাদা নয়, তবে সবার হৃদয়ে আমি একেক রকম চিহ্ন এঁকে রেখেছি। কেউ আমাকে দেখে স্বপ্নের ঠিকানা, কেউবা ক্লান্তির আবরণ। কিন্তু আজ আমি নিজেই বলি আমার কথা, আমার আত্মকথা।

কখনো আমি ছিলাম নিস্তব্ধ এক জনপদ—নির্জন গাছগাছালি, পাখির কূজন আর একটুকরো শান্তি। একদিন হঠাৎ মানুষ এলো, তাদের কল্পনা ও কষ্ট নিয়ে। তারা গড়ল ঘর, আঁকল পথ, আমার হৃদয়ে বুনল ব্যস্ততার নকশা। ধীরে ধীরে আমি শহরে রূপ নিলাম—নতুন মুখ, নতুন ভাষা, নতুন জীবনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠলাম।

আজ আমার বুকে জেগে ওঠে হাজারো স্বপ্ন, আমার রাস্তায় দৌড়ায় জীবনের ইচ্ছেরা। শিশুরা স্কুলে যায়, কর্মীরা অফিসে ছুটে চলে। সন্ধ্যায় বাতিগুলো জ্বলে ওঠে যেন তারা আমার চোখের পলক। আমার বুকের ওপর দিয়ে চলে যায় যান্ত্রিক স্রোত, আর আমি চুপচাপ দেখি, অনুভব করি।

তবু সবটা সুখের নয়। আমার নিঃশ্বাস ভারী হয়ে উঠেছে কালো ধোঁয়ায়, আমার বুকের সবুজ আজ হারিয়ে যাচ্ছে কংক্রিটের কোলাহলে। নদীর পাশে যে শিশুরা হাসতো, সে নদী আজ কাঁদে। পাখিরা ডাকে না আর ভোরে, তারা জায়গা হারিয়েছে। মানুষ যেন আমায় ভালোবেসেই ভুলে যাচ্ছে আমাকে।

তবু আমি অভিমান করি না। কারণ আমি জানি, ভালোবাসা আবার ফিরে আসবে। কোনো একদিন আবার আমার আকাশ হবে নীল, আমার বুক জুড়ে গড়ে উঠবে সবুজের ছায়া। মানুষ জানবে, আমি কেবল একখণ্ড জমি নই, আমি তাদের গল্প, তাদের শেকড়।

আমি শহর। আমি সাক্ষ্য রাখি সময়ের, আমি আগলে রাখি স্মৃতি। আমি এক নীরব কবিতা—যার প্রতিটি ছত্রে লেখা মানুষের জীবন।

১১.৪ বিবেকানন্দ ও যুবসমাজ

উত্তর: বিবেকানন্দ ও যুবসমাজ

স্বামী বিবেকানন্দ ছিলেন একজন মহান চিন্তাবিদ, আধ্যাত্মিক গুরু এবং মানবতার পথপ্রদর্শক। তাঁর জীবন, আদর্শ ও বাণী আজও যুবসমাজের জন্য এক আলোকবর্তিকা। তিনি বিশ্বাস করতেন, যুবকরাই জাতির প্রকৃত ভবিষ্যৎ। তাই যুবসমাজকে জাগ্রত করাই ছিল তাঁর অন্যতম উদ্দেশ্য।

বিবেকানন্দ বলেছিলেন, “উঠো, জাগো, লক্ষ্য না পাওয়া পর্যন্ত থেমো না।” এই আহ্বান যেন তরুণদের রক্তে আগুন ধরিয়ে দেয়। তিনি সব সময় বলতেন, “তোমরা নিজেদের দুর্বল ভাববে না। তোমাদের মধ্যেই অগাধ শক্তি আছে।” যুবসমাজের মাঝে আত্মবিশ্বাস জাগাতে তাঁর এই বাণীগুলো আজও সমান প্রাসঙ্গিক।

তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে আমরা দেখি দেশপ্রেম, মানবতা ও আত্মোন্নয়নের বার্তা। তিনি কেবল ধর্মীয় ভাবধারাই প্রচার করেননি, বরং যুবকদের বলেছিলেন শারীরিক, মানসিক ও আত্মিকভাবে সুস্থ ও শক্তিশালী হতে। তিনি মনে করতেন, শিক্ষা হওয়া উচিত এমন যা মানুষকে আত্মনির্ভর করে তোলে এবং চরিত্র গঠনে সাহায্য করে।

আজকের দিনে, যখন যুবসমাজ বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি—বেকারত্ব, হতাশা, মাদকাসক্তি, আত্মবিশ্বাসের অভাব—তখন বিবেকানন্দের বাণী তাদের জন্য এক শক্তিশালী অনুপ্রেরণা হতে পারে। তিনি যেমন বলেছিলেন, “একটি আদর্শকে নিজের জীবনের অন্তরস্থলে গ্রহণ করো এবং সারাজীবন তা নিয়েই ভাবো, তা নিয়েই স্বপ্ন দেখো, তা নিয়েই বাঁচো।”

যুবসমাজ যদি তাঁর আদর্শ অনুসরণ করে, তবে তারা শুধু নিজেদের নয়, পুরো জাতিকেই আলোকিত করতে পারবে। সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ, দেশের প্রতি ভালোবাসা, এবং আত্মশক্তির জাগরণ—এই তিনটি বিষয়কে তিনি যুবকদের মনের গভীরে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন।

বিবেকানন্দ আজ নেই, কিন্তু তাঁর বাণী ও আদর্শ চিরজীবী। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন কীভাবে একজন তরুণও বিশ্বমঞ্চে নিজের জাতির গৌরব বৃদ্ধি করতে পারে। তাঁর জীবনই প্রমাণ করে, সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি ও অটল সংকল্প থাকলে সব কিছুই সম্ভব।

অতএব, বিবেকানন্দের চিন্তা ও আদর্শ আজকের যুবসমাজের জন্য এক উজ্জ্বল দিশারী। তাঁকে অনুসরণ করলেই গড়ে উঠবে এক আত্মপ্রত্যয়ী, সচেতন ও সৃজনশীল জাতি।


MadhyamikQuestionPapers.com এ আপনি অন্যান্য বছরের প্রশ্নপত্রের ও Model Question Paper-এর উত্তরও সহজেই পেয়ে যাবেন। আপনার মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতিতে এই গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ কেমন লাগলো, তা আমাদের কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আরও পড়ার জন্য, জ্ঞান অর্জনের জন্য এবং পরীক্ষায় ভালো ফল করার জন্য MadhyamikQuestionPapers.com এর সাথে যুক্ত থাকুন।

Tag Post :
Share This :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *