আপনি কি মাধ্যমিকের বাংলা Model Question Paper 12 প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন? দেখে নিন 2026 WBBSE বাংলা Model Paper 12-এর সঠিক উত্তর ও বিশ্লেষণ। এই আর্টিকেলে আমরা WBBSE-এর বাংলা ২০২৬ মাধ্যমিক Model Question Paper 12-এর প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক ও বিস্তৃত সমাধান উপস্থাপন করেছি।
প্রশ্নোত্তরগুলো ধারাবাহিকভাবে সাজানো হয়েছে, যাতে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা সহজেই পড়ে বুঝতে পারে এবং পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ব্যবহার করতে পারে। বাংলা মডেল প্রশ্নপত্র ও তার সমাধান মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত মূল্যবান ও সহায়ক।
MadhyamikQuestionPapers.com, ২০১৭ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে মাধ্যমিক পরীক্ষার সমস্ত প্রশ্নপত্র ও সমাধান সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রদান করে আসছে। ২০২৬ সালের সমস্ত মডেল প্রশ্নপত্র ও তার সঠিক সমাধান এখানে সবার আগে আপডেট করা হয়েছে।
আপনার প্রস্তুতিকে আরও শক্তিশালী করতে এখনই পুরো প্রশ্নপত্র ও উত্তর দেখে নিন!
Download 2017 to 2024 All Subject’s Madhyamik Question Papers
View All Answers of Last Year Madhyamik Question Papers
যদি দ্রুত প্রশ্ন ও উত্তর খুঁজতে চান, তাহলে নিচের Table of Contents এর পাশে থাকা [!!!] চিহ্নে ক্লিক করুন। এই পেজে থাকা সমস্ত প্রশ্নের উত্তর Table of Contents-এ ধারাবাহিকভাবে সাজানো আছে। যে প্রশ্নে ক্লিক করবেন, সরাসরি তার উত্তরে পৌঁছে যাবেন।
Table of Contents
Toggle১। সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো:
১.১ সপ্তাহে হরিদা বহুরুপী সেজে বাইরে যান
(ক) পাঁচদিন
(খ) চারদিন
(গ) একদিন
(ঘ) দু’দিন
উত্তর: (গ) একদিন
১.২ ‘কেবল আশ্চর্য’ আশ্চর্য বিষয়টি কী? –
(ক) শক্ত সবল শরীর
(খ) দুই হাতের শক্তি
(গ) দুটি চোখের দৃষ্টি
(ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তর: (গ) দুটি চোখের দৃষ্টি
১.৩ অমৃতের মতো ছেলে পেলে ইসাবের বাবা হাসান পালন করতে রাজি-
(ক) কুড়িজনকে
(খ) একুশজনকে
(গ) বাইশজনকে
(ঘ) তেইশজনকে
উত্তর: (খ) একুশজনকে
১.৪ ‘তোরা সব কর।’ শূন্যস্থানে বসবে
(ক) বিদ্রোহ
(খ) প্রলয় নাচন
(গ) জয়ধ্বনি
(ঘ) সৃজন-বেদন
উত্তর: (গ) জয়ধ্বনি
১.৫ ‘বহু যত্নে চিকিৎসিতে’ কতক্ষণ চিকিৎসা করা হয়েছে?
(ক) দুই দণ্ড
(খ) তিন দণ্ড
(গ) চার দন্ড
(ঘ) পাঁচ দণ্ড
উত্তর: (গ) চার দন্ড
১.৬ কোল্টিন্ট জয় গোস্বামীর লেখা কাব্যগ্রন্থ?-
(ক) ‘বাবরের প্রার্থনা’
(খ) ‘অগ্নিবীণা’
(গ) ‘রূপসী বাংলা’
(ঘ) ‘পাতার পোষাক’
উত্তর: (ঘ) ‘পাতার পোষাক’
১.৭ খাগের কলম কখন দেখা যায়?
(ক) হাতেখড়ির সময়
(খ) সরস্বতী পূজার সময়
(গ) হালখাতার সময়
(ঘ) নববর্ষের সময়
উত্তর: (খ) সরস্বতী পূজার সময়
১.৮ লাউ, কুমড়ো জাতীয় গাছে ফুল হয়
(ক) দু’রকম
(খ) একরকম
(গ) পাঁচরকম
(ঘ) তিনরকম
উত্তর: (ক) দু’রকম
১.৯ ‘Connotation’ শব্দের বাংলা অর্থ
(ক) অর্থ পরিবর্তন
(খ) অর্থব্যাপ্তি
(গ) অর্থের বৈপরীত্য
(ঘ) অর্থের সংকোচন
উত্তর: (খ) অর্থব্যাপ্তি
১.১০ ধাতু বিভক্তির আর একটি নাম হল
(ক) উপসর্গ
(খ) অনুসর্গ
(গ) ক্রিয়া বিভক্তি
(ঘ) শব্দ বিভক্তি
উত্তর: (গ) ক্রিয়া বিভক্তি
১.১১ ‘বাঘের ডাক শোনা যাচ্ছে।’ নিম্নরেখ অংশটি
(ক) সম্বোধন পদ
(খ) সম্বন্ধপদ
(গ) ক্রিয়াপদ
(ঘ) অব্যয়পদ
উত্তর: (খ) সম্বন্ধপদ
১.১২ ব্যাসবাক্যের অপর নাম-
(ক) সমস্যমান বাক্য
(খ) বিগ্রহ বাক্য
(গ) সমাসবদ্ধ বাক্য
(ঘ) সরল বাক্য
উত্তর: (খ) বিগ্রহ বাক্য
১.১৩ “শিশুর শরীর কুসুমের মতো কোমল।” এই বাক্যে ‘কোমল’ হল-
(ক) উপমান
(খ) উপমেয়
(গ) উপমিত
(ঘ) সাধারণ ধর্ম
উত্তর: (ঘ) সাধারণ ধর্ম
১.১৪ ‘সে সারাদিন খুব পরিশ্রম করে গভীর রাতে ফিরল।’- এই বাক্যের নিম্নরেখ অংশটি হল-
(ক) উদ্দেশ্য
(খ) বিধেয়
(গ) উদ্দেশ্যের সম্প্রসারক
(ঘ) বিধেয়ের সম্প্রসারক
উত্তর: (ঘ) বিধেয়ের সম্প্রসারক
১.১৫ ‘বিশেষ্যখণ্ড’, ‘ক্রিয়াবিশেষণখণ্ড’, ‘ক্রিয়াখণ্ড’- এগুলি যার শ্রেণিবিভাগ, তা হল-
(ক) প্রধান খণ্ডবাক্য
(খ) প্রধান বাক্য
(গ) সরল বাক্য
(ঘ) অপ্রধান খণ্ডবাক্য
উত্তর: (ঘ) অপ্রধান খণ্ডবাক্য
১.১৬ ‘বাঁশি বাজে।’ এটি একটি–
(ক) ঘটক বা সম্পাদক কর্তৃবাচ্য
(খ) অসম্পাদক কর্তা কর্তৃবাচ্য
(গ) লুপ্ত কর্তা ভাববাচ্য
(ঘ) গৌণ কর্মকর্তা ভাববাচ্য
উত্তর: (খ) অসম্পাদক কর্তা কর্তৃবাচ্য
১.১৭ বাচ্য পরিবর্তনের সময়–
(ক) ক্রিয়ার কালের পরিবর্তন হয়
(খ) ক্রিয়ার কালের পরিবর্তন হয় না
(গ) ক্রিয়ার কালের পরিবর্তন হওয়া আবশ্যক
(ঘ) ক্রিয়ার কালের পরিবর্তন হতে পারে
উত্তর: (খ) ক্রিয়ার কালের পরিবর্তন হয় না
২। কমবেশি ২০টি শব্দে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:
২.১ যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
২.১.১ তপন মামার বাড়িতে কেন এসেছিল?
উত্তর: ছোটোমাসির বিয়ে উপলক্ষ্যে তপন মামার বাড়িতে এসেছিল।
২.১.২ ‘চমকে উঠলেন জগদীশবাবু।’ জগদীশবাবুর চমকে ওঠার কারণ কী?
উত্তর: সুবোধ ঘোষ রচিত ‘বহুরূপী’ গল্পের জগদীশবাবু চমকে উঠেছিলেন যখন তিনি দেখলেন বিরাগীর বেশধারী হরিদা – আদুড় গা, গায়ে সাদা উত্তরীয়, আর পরনে ছোট বহরের সাদা থান।
২.১.৩ “নিমাইবাবু চুপ করিয়া রহিলেন।” নিমাইবাবুর চুপ করে থাকার কারণ কী?
উত্তর: অপূর্ব গিরীশ মহাপাত্রের পরিহিত পোশাক দেখে নিমাইবাবুকে তার মুক্তির জন্য অনুরোধ করলেন। কিন্তু নিমাইবাবু এতে কোনো উত্তর না দিয়ে চুপ করে রইলেন।
২.১.৪ ‘আমার সঙ্গে আয়।’ অমৃত ইসাবকে এমন নির্দেশ দিল কেন?
উত্তর: অমৃতকে কালিয়া ফেলে দেয়ায় ইসাব রেগে গিয়ে কালিয়ার সাথে কুস্তি করে এবং তাকেও ফেলে দেয়। কিন্তু কুস্তি করতে গিয়ে ইসাবের নতুন জামা ছিড়ে যায়। অমৃত জানত যে এই ছেড়া জামা দেখলে ইসাবের বাবা তাকে খুব মারবেন, কিন্তু জামাটি যদি সে পরে নেই তাহলে তাঁর মা তাকে বাবার হাত থেকে রক্ষা করবেন। তাই সে ইসাবকে তাদের জামা বদল করে নেওয়ার জন্য এ পরামর্শ দিয়েছিল।
২.১.৫ “সে প্রতিদিন নদীকে দেখে।” কে, কোন্ নদীকে দেখে?
উত্তর: আলোচ্য অংশে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পের প্রধান চরিত্র নদেরচাঁদকে বোঝানো হয়েছে।
এখানে নদীটি হল তাঁর জীবন ও কর্মক্ষেত্রের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া এক বড় নদী, যার ওপর রেলের ব্রিজ তৈরি হয়েছিল।
২.২ যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
২.২.১ ‘সে জানত না’ তার অজানা বিষয়টি কী?
উত্তর: প্রদত্ত উদ্ধৃতিতে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, প্রেমিকাটি এই সত্য বিষয়ে অজ্ঞাত যে, কবি আর কখনোই তাঁর কাছে ফিরে আসবেন না।
২.২.২ “আমাদের পথ নেই আর” তাহলে আমাদের করণীয় কী?
উত্তর: সব পথ যখন রুদ্ধ, তখনই কবি ডাক দিয়েছেন হাত ধরাধরি করে একসাথে থাকার।
২.২.৩ ‘বাঁধলে তোমাকে’ কাকে, কীভাবে বেঁধেছিল?
উত্তর: আফ্রিকাকে যেন চিরদিনের জন্য আটকে রেখেছিল এক গভীর অরণ্যের রহস্যময় জগৎ—যেখানে প্রকাণ্ড বনস্পতিরা নিবিড় ছায়ায় ঢেকে রেখেছে সবকিছু, তৈরি করেছে এক দুর্গম, গভীর পরিবেশ।
২.২.৪ রাজা রত্নসেন কার মুখে পদ্মাবতীর রূপের কথা শুনেছিলেন?
উত্তর: চিতোরের রাজা রত্নসেন এক শুকপাখির মুখে পদ্মাবতীর রূপের কথা শুনেছিলেন।
২.২.৫ ‘গানের বর্ম আজ পরেছি গায়ে’ আজ কবির গানের বর্ম প্রয়োজন কেন?
উত্তর: ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতা অবলম্বনে হাত নাড়িয়ে বুলেট তাড়ানোর জন্য আজ কবির গানের বর্ম প্রয়োজন।
২.৩ যে-কোনো তিনটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
২.৩.১ “আমাকে দেখিয়েছিলেন তাঁর ফাউন্টেন সংগ্রহ।” কে, কাকে ফাউন্টেন সংগ্রহ দেখান?
উত্তর: ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে সাহিত্যিক শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় প্রবন্ধকার শ্রীপান্থকে তাঁর ফাউন্টেন পেনের সংগ্রহ দেখান।
২.৩.২ ‘কুইল’ কাকে বলে?
উত্তর: কুইল হলো এক ধরনের লেখার কলম, যা তৈরি হয় বড় কোন পাখির পালক দিয়ে।
২.৩.৩ ‘মাছিমারা নকল’ শব্দটি ‘বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান’ প্রবন্ধে কেন ব্যবহৃত হয়েছে?
উত্তর: ‘মাছি মারা নকল’ শব্দগুচ্ছটি ‘বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান’ শীর্ষক রচনায় একটি রূপক হিসাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান চর্চা বা বিজ্ঞান বিষয়ক সাহিত্য অত্যন্ত দুর্বল ও তুচ্ছ পর্যায়ের।
২.৩.৪ প্রয়োজনমতো বাংলা শব্দ পাওয়া না গেলে কী করা উচিত বলে লেখক মনে করেছেন?
উত্তর: ‘বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান’ প্রবন্ধে লেখক বলেছেন, সঠিক বাংলা পরিভাষা না থাকলে ইংরেজি শব্দই বাংলা হরফে লিখতে হবে।
২.৪ যে-কোনো আটটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
২.৪.১ ‘কেশে গলা পরিষ্কার করে পাঠান বললেন’ নিম্নরেখ পদটির কারক ও বিভক্তি নির্ণয় করো।
উত্তর: ‘কেশে গলা পরিষ্কার করে পাঠান বললেন’ এখানে ‘কেশে’ পদটির কারক হল করণ কারক এবং বিভক্তি হল ‘এ’ বিভক্তি।
২.৪.২ বাংলায় কী দেখে কারক নির্ণয় করা হয়?
উত্তর: বাংলা ভাষায় কারক নির্ণয় করতে হলে বাক্যের গঠনপরিকল্পনা এবং বাক্যে ব্যবহৃত বিশেষ্য ও ক্রিয়াপদের মধ্যকার সম্পর্ক বিশ্লেষণ করতে হয়। মূলত, বিশেষ্য বা সর্বনাম পদ ক্রিয়াপদের সাথে কী ধরনের সম্পর্ক স্থাপন করছে, সেটিই কারক নির্ধারণের মূল ভিত্তি।
২.৪.৩ প্রদত্ত ব্যাসবাক্যটিকে সমাসবদ্ধ করে তার শ্রেণি নির্ণয় করো শশ অঙ্কে যার।
উত্তর: “শশাঙ্ক” পদটি “শশ অঙ্কে যার” এই ব্যাসবাক্যটির সমাসবদ্ধ রূপ। এটি একটি বহুব্রীহি সমাস।
২.৪.৪ ‘সমাস’ শব্দটির ব্যুৎপত্তি লেখো।
উত্তর: “সমাস” শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায় – সম্ + অস্। এখানে “সম্” একটি উপসর্গ এবং “অস্” একটি ধাতু।
২.৪.৫ একটি অনুজ্ঞাসূচক বাক্যের উদাহরণ দাও।
উত্তর: অনুজ্ঞাসূচক বাক্য হলো এমন বাক্য যা দ্বারা আদেশ, অনুরোধ, উপদেশ বা নির্দেশ প্রকাশ পায়। একটি অনুজ্ঞাসূচক বাক্যের উদাহরণ হলো – দয়া করে আমাকে একটি কলম দিন।
২.৪.৬ ‘যতদূর সাধ্য হয়, ততদূর পরিশ্রম করো।’ বাক্যটিকে সরল বাক্যে রূপান্তরিত করো।
উত্তর: ‘যতদূর সাধ্য হয়, ততদূর পরিশ্রম করো।’ বাক্যটিকে সরল বাক্যে রূপান্তরিত করলে হবে সাধ্যমতো পরিশ্রম করো।
২.৪.৭ ‘আমরা পা দিয়ে ভাত খাই।’ বাক্য নির্মাণের কোন্ শর্ত এখানে লঙ্ঘন করা হয়েছে?
উত্তর: আমরা পা দিয়ে ভাত খাই। এই বাক্যটি বাক্য নির্মাণের যুক্তিসঙ্গততা বা বাস্তব সঙ্গতি-এর শর্ত লঙ্ঘন করেছে।
২.৪.৮ বাক্যে ব্যবহার করে একটি কর্তৃবাচ্যের উদাহরণ দাও।
উত্তর: বাক্যে ব্যবহার করে একটি কর্তৃবাচ্যের উদাহরণ হল মা রান্না করছেন।
২.৪.৯ ‘বুড়োমানুষের কথাটা শুনো।’ কর্মবাচ্যে পরিণত করো।
উত্তর: ‘বুড়োমানুষের কথাটা শুনো।’ এটিকে কর্মবাচ্যে পরিণত করলে হবে বুড়োমানুষের কথাটা শোনা হচ্ছে।
২.৪.১০ ‘বাচ্য’ শব্দটির ব্যুৎপত্তি নির্ণয় করো।
উত্তর: “বাচ্য” শব্দটির উদ্ভব হয়েছে “বচ্” ধাতু থেকে, যার অর্থ “বলা” বা “কথা বলা”, এবং এটির সাথে “যৎ” প্রত্যয় যুক্ত হয়েছে।
৩। প্রসঙ্গ নির্দেশসহ কমবেশি ৬০ শব্দে উত্তর দাও:
৩.১ যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৩.১.১ “ইচ্ছা করিলে আমি তোমাকে টানিয়া নীচে নামাইতে পারি।” উক্তিটি কে, কার প্রতি, কখন করেছিল?
উত্তর: উক্তিটি করেছিল একজন বর্মা সাব-ইন্সপেক্টর(পুলিশ কর্মকর্তা)।
উক্তিটি করা হয় অপূর্ব নামক একজন ব্রাহ্মণ যাত্রীর প্রতি।
কারণ – ঘটনাটি ঘটেছিল রাত্রিবেলা, ট্রেনের একটি প্রথম শ্রেণির কামরায়, যখন অপূর্ব ঘুমাচ্ছিল। স্টেশন পার হওয়ার সময় পুলিশ বারবার তার ঘুম ভেঙে নাম, ধাম, ঠিকানা জিজ্ঞাসা করছিল। অপূর্ব যখন তার প্রথম শ্রেণির যাত্রী হওয়ার সুযোগ দিয়ে প্রতিবাদ করে, তখন পুলিশ কর্মকর্তা এই উক্তি করে।
৩.১.২ “নদীর বিদ্রোহের কারণ সে বুঝিতে পারিয়াছে।” কে বুঝতে পেরেছে? নদীর বিদ্রোহ বলতে সে কী বোঝাতে চেয়েছে?
উত্তর: উদ্ধৃত অংশে নদেরচাঁদের বোঝার ক্ষমতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রবল বর্ষণের পর পাঁচ দিন লুকিয়ে থাকার পর নদীর উন্মত্ত রূপ দেখে নদেরচাঁদ হতবাক হয়ে যায়। তার মনে হয়, নদী যেন খেপে উঠেছে। নদেরচাঁদ উপলব্ধি করে, নদীর উপর নির্মিত রঙ-বেরঙের নতুন সেতু ও বাঁধগুলো যেন নদীর স্বাভাবিক গতিপথে বিশাল বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নদী যেন সেগুলোকে ভেঙে চুরমার করে দিতে চায়। এই উদ্দাম তাণ্ডবের মধ্য দিয়েই নদী যেন তার বিদ্রোহকে প্রকাশ করছে।
৩.২ যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৩.২.১ “অতি মনোহর দেশ” এই ‘মনোহর দেশ’ -এর সৌন্দর্যের পরিচয় দাও।
উত্তর: কবির বর্ণনা অনুযায়ী, এই দিব্যপুরী অত্যন্ত মনোরম। কারণ সেখানে কোনও দুঃখ-কষ্ট নেই; আছে কেবল সত্যধর্ম ও সদাচার। সেখানে একটি পর্বত এবং নানা রকম ফুলে শোভিত এক অপূর্ব উদ্যান রয়েছে। সেই উদ্যানের গাছগুলোয় ফল ও ফুলের প্রাচুর্য দেখা যায়। একদিকে যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, অন্যদিকে সুস্থ জীবনবোধ—এই দুই মিলিয়ে পুরোটাই ছিল মোহনীয়।
৩.২.২ “তোমায় নিয়ে বেড়াবে গান / নদীতে, দেশগাঁয়ে” – অস্ত্রধারীদের নিয়ে গানের নদীতে, দেশগাঁয়ে বেড়াতে যাওয়ার তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।
উত্তর: অস্ত্রধারীদের নিয়ে গানের নদীতে, দেশগাঁয়ে বেড়ানোর তাৎপর্য হলো ধ্বংসের পথ ছেড়ে সৃষ্টির পথে ফিরে আসার আহ্বান। এটি একটি রূপক অভিব্যক্তি, যেখানে গান হল জীবন, শান্তি, সংস্কৃতি ও মানবতার বিজয়ের বাহন। কবি অস্ত্রধারীদের বলছেন, তাদের ধ্বংসের উপকরণ ত্যাগ করে সৃষ্টিশীলতার এই মহাযাত্রায় শরিক হতে। কারণ, গানই শেষ পর্যন্ত জয়ী হবে এবং সেটিই সকলকে নিয়ে এগিয়ে যাবে একটি সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে।
৪। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৪.১ “পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে?” কোন্ ঘটনাকে ‘অলৌকিক’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে? সেই ঘটনার প্রতিক্রিয়া কী হয়েছিল, ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প অনুসরণে বুঝিয়ে দাও।
উত্তর: সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় তপনের প্রথম গল্পটি প্রকাশ হওয়াটাই ছিল এক অলৌকিক ঘটনা।
তপন যে গল্প লিখেছে তা পত্রিকায় ছাপা হওয়ায় গোটা বাড়িতে আনন্দ ও কৌতূহলের সৃষ্টি হয়। পত্রিকাটি সবার হাতে হাতে ঘুরতে থাকে এবং সবাই তপনের লেখার প্রশংসা করে। মেসোকে এই সাফল্যের মূল কারিগর হিসেবে দেখা হয়। তিনি নিজেও মৃদু হেসে স্বীকার করেন যে তপনের লেখায় কিছুটা “কারেকশান” করতে হয়েছে, কারণ লেখাটি “নেহাত কাঁচা” ছিল। ছোটমাসি লেখার মান নিয়ে মেসোর আপত্তিকে পাত্তা দেন না। তার মতে, নতুন লেখকের লেখা এমনই হয়। তপনের বাবা মনে করেন যে শুধু তপনের লেখার গুণে নয়, বরং মেসোর সংশোধনেই গল্পটি ছাপার মতো হয়েছে। তপনের মেজোকাকু ঈর্ষান্বিত হয়ে মন্তব্য করেন যে তাদেরও যদি মেসোর মতো কেউ থাকত, তাহলে তারাও লিখতে পারতেন। ছোটমাসি গর্ব ও তৃপ্তি নিয়ে ডিম ভাজা ও চা খান, আর মেসো কফি পান করেন। তাদের আচরণে গল্প প্রকাশের সাফল্যে নিজেদের অবদানের জন্য আত্মতুষ্টি প্রকাশ পায়। সবমিলিয়ে, তপনের এই সাফল্য পরিবারে এক আলোড়ন সৃষ্টি করে, কিন্তু তপনের নিজের প্রতিভার চেয়ে মেসোর “কারেকশান” ও মহত্ত্বের কথাই বেশি আলোচিত হয়।
৪.২ “অদৃষ্ট কখনও হরিদার এই ভুল ক্ষমা করবে না।” হরিদা কী ভুল করেছিলেন? অদৃষ্ট ক্ষমা না করার পরিণাম কী?
উত্তর: “বহুরূপী” গল্পে হরিদা অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে জগদীশবাবুর বাড়িতে একজন বিরাগ সন্ন্যাসীর ছদ্মবেশে উপস্থিত হন। হরিদার পোশাক-পরিচ্ছদ ও কথাবার্তার ধরণ জগদীশবাবুকে এতটাই মুগ্ধ করে যে, তিনি এই ‘বিরাগী’ কে তার বাড়িতে অবস্থান করার আমন্ত্রণ জানান। এমনকি বিদায়ের মুহূর্তে তিনি তাকে একশত টাকা প্রণামী হিসেবে দিতে চান। কিন্তু হরিদা নিরাসক্ত ভাবে সেই টাকা প্রত্যাখ্যান করে চলে যান। প্রস্থানকালে তিনি বলেন, “আমি যেমন অনায়াসে ধুলো মাড়িয়ে চলতে পারি, তেমনই অনায়াসে সোনাকেও মাড়িয়ে যেতে পারি।” তিনি সন্ন্যাসীর চরিত্রটির সাথে এতোটাই একাত্ম হয়ে উঠেছিলেন যে, চরিত্রের ‘ঢং নষ্ট হবে’ এই বিবেচনায় হরিদা টাকা গ্রহণ করেননি। এই ঘটনাটিকেই বিস্মিত গল্পকথক হরিদার ‘ভুল’ বলে উল্লেখ করেছেন।
অভাবগ্রস্ত হরিদার ভাগ্য তাকে সঙ্গ দিতে চেয়েছিল। কিন্তু ব্যক্তিগত সততা ও নীতিবোধের কারণে হরিদা ভাগ্যের সেই সহায়তাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এই সিদ্ধান্তই যেন নিশ্চিত করে দিয়েছে যে, দারিদ্র্য চিরকাল হরিদার সঙ্গী হয়ে থাকবে। তার ভাতের হাঁড়িতে কেবলই জল ফুটবে, কিন্তু চাল জুটবে না কখনো। আমার মনে হয়েছে, ভাগ্য কখনো হরিদার এই ভুল ক্ষমা করবে না।
৫। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৫.১ ‘সেই মেয়েটির মৃত্যু হলো না।’ কোন্ মেয়েটির, কেন মৃত্যু হল না?
উত্তর: আলোচ্য অংশটি পাবলো নেরুদা রচিত ‘অসুখী একজন’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে সেই যুবতীর কথা বলা হয়েছে, যিনি কবি বিপ্লবের যুদ্ধক্ষেত্র বা অন্য কোনো অভিযানে বের হওয়ার সময় দরজায় তাঁর জন্য অপেক্ষা করেছিলেন।
বিপ্লবের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষ যখন যুদ্ধের পথে পা রাখে, তখন সংসার ও প্রিয়জন—সবই পিছনে ফেলে আসতে হয়। কিন্তু তার প্রিয়তমা মেয়েটি এই কঠোর বাস্তবতা মেনে নিতে পারে না। প্রিয় মানুষটির ফিরে আসার আশায় তার অপেক্ষার প্রক্রিয়া চলতেই থাকে। যুদ্ধে অসংখ্য ধ্বংস ও মৃত্যু ঘটলেও, মেয়েটির মৃত্যু হয় না। চিরজীবী ভালোবাসার এক জীবন্ত প্রতীক হিসেবেই সে বেঁচে থাকে।
৫.২ “হায় ছায়াবৃতা,” ‘ছায়াবৃতা’ বলার কারণ কী? তার সম্পর্কে কবি কী বলেছেন সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর: আফ্রিকার অবস্থান গভীর অরণ্যবেষ্টিত এক পরিবেশ, যেখানে সূর্যের আলো ঠিকরে পড়তে পারে না। এই কারণেই আফ্রিকাকে অন্ধকার মহাদেশ বা ‘ছায়াবৃত’ নামে অভিহিত করা হয়।
কবির বক্তব্য – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আফ্রিকা’ কবিতার উদ্ধৃত অংশটিতে মহাদেশটির জন্মলগ্নের ভৌগোলিক ও প্রাকৃতিক ইতিহাসের এক চিত্রময় পরিচয় ফুটে উঠেছে। কবির বর্ণনায়, আফ্রিকার জন্ম হয়েছিল ঘন অরণ্যবেষ্টিত এক ভূখণ্ডে, যেখানে গাছপালা ছিল এক দুর্ভেদ্য প্রহরার মতো। এজন্যই তিনি ‘বনস্পতির নিবিড় পাহারা’ বলেছেন। অরণ্য এতটাই নিবিড় ছিল যে সূর্যের আলো সেখানে সহজে পৌঁছাতে পারত না; সেই আবদ্ধ পরিবেশই কবির ভাষায় ‘কৃপণ আলোর অন্তঃপুর’। আফ্রিকার সৃষ্টিকালীন ভৌগোলিক পরিস্থিতি ছিল অত্যন্ত বন্ধুর ও বৈরী। কবির দৃষ্টিতে, স্রষ্টা তাঁর ইচ্ছানুযায়ী সৃষ্টি ও ধ্বংসের খেলায় মত্ত—তাঁর সন্তুষ্টির উপরই নির্ভর করে কোনো সৃষ্টির স্থায়িত্ব। তিনি অস্থির মনে হলে ভেঙে ফেলেন, আবার গড়েন নতুন কিছু। এমনই এক সৃষ্টি-উন্মাদনার মুহূর্তে, ভয়ংকর সমুদ্রের তরঙ্গমুখ প্রাচীন পৃথিবীর বক্ষ থেকে আফ্রিকাকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে যায়। এইভাবেই জন্ম নেয় নতুন মহাদেশ আফ্রিকা। ভূগোলের বিচারে আফ্রিকা অবস্থান করছে নিরক্ষীয় অঞ্চলে, যে কারণে এর প্রাকৃতিক গড়ন হয়ে উঠেছে অরণ্যঘন ও দুর্গম।
৬। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৬.১ “কালগুণে বুঝিবা আজ আমরাও তা-ই।” উক্তিটির নিরিখে প্রাবন্ধিক যা বলতে চেয়েছেন, তা তোমার নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর: ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে লেখক শ্রীপান্থ বলেছেন—’কালি নেই, কলম নেই, বলে আমি মুনশি।’ বর্তমান যুগে কম্পিউটারের আধিপত্যে কলম তার গুরুত্ব হারিয়েছে। লেখক এখানে কলম থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সেই বাস্তবতার কথাই বলেছেন। ‘কালি কলম মন, লেখে তিন জন’—লেখক কথাটি অন্তর থেকে বিশ্বাস করতেন। কিন্তু বাস্তবে কলমের অনুপস্থিতি তাকে ব্যথিত করেছে। তাঁর কর্মক্ষেত্র সংবাদপত্র অফিস। কিন্তু প্রবন্ধকার ছাড়া সেখানে কারও কাছে কলম নেই। সবার সামনেই কম্পিউটারের পর্দা, আর হাতের নাগালে কীবোর্ড। সেখানে বোতামে আঁটা থাকে একেকটি অক্ষর, যার সাহায্যে সহকর্মীরা টাইপ করে চলেছেন আর তাকিয়ে আছেন স্ক্রিনের দিকে। এমন পরিস্থিতিতে লেখক যদি কোনোদিন ভুলে কলম নিয়ে না আসেন, তাহলে মহাবিপদ! কারণ কারও কাছ থেকে কলম ধার পাওয়া যায় না। পাওয়া গেলেও তা বেশিরভাগ সময় ব্যবহারের অযোগ্য—কোনোভাবে কাজ চালিয়ে নিতে হয়। অথচ তাদের অফিসটি পরিচিত ‘লেখালেখির অফিস’ হিসেবেই। এ যেন এক ধরনের ‘লেখকের কারখানা’। এই পরিবেশে লেখক নিজেকে তুলনা করেছেন ‘কলমহীন মুনশি’র সঙ্গে। বর্তমান সময়ে মানুষের যন্ত্রনির্ভরতা তাকে পুরোনো অভ্যাস ও গৌরব থেকে সরিয়ে দিয়েছে। তাই গভীর চিন্তা ও হতাশা থেকেই শ্রীপান্থ “কালগুণে বুঝিবা আজ আমরাও তা-ই” এই প্রশ্নসূচক মন্তব্যটি করেছেন।
৬.২ বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান রচনার সমস্যাগুলি আলোচনা করো।
উত্তর: প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসু ‘বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান’ রচনার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন। যেমন —
পারিভাষিক শব্দের অভাব – প্রথম সমস্যা হিসেবে তিনি পারিভাষিক শব্দের অভাবের কথা বলেছেন। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এই সমস্যার পূর্ণ সমাধান হয়নি।
বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের স্বল্পতা – পাশ্চাত্যের সাধারণ মানুষের তুলনায় এদেশের মানুষের বৈজ্ঞানিক জ্ঞান কম। বিজ্ঞানের মৌলিক ধারণাগুলোর সঙ্গে পরিচয় না থাকলে বৈজ্ঞানিক রচনা বোঝা কঠিন। বিজ্ঞানশিক্ষার প্রসার ঘটলে এই সমস্যা অনেকটা লাঘব হবে।
রচনাপদ্ধতির অস্বচ্ছন্দতা – বিজ্ঞান রচনার জন্য প্রয়োজনীয় শৈলী আমাদের অনেক লেখক এখনও আয়ত্ত করতে পারেননি। ফলে লেখায় কৃত্রিমতা থেকে যায় এবং তা ইংরেজি রচনার আক্ষরিক অনুবাদে পরিণত হয়, যা দুর্বোধ্য ও উৎকট হয়ে ওঠে। এই সমস্যা কাটাতে বাংলা ভাষার নিজস্ব গতিপ্রকৃতি অনুযায়ী রচনাশৈলী রপ্ত করতে হবে।
লেখকের অল্পবিদ্যা – বিজ্ঞান সম্পর্কে লেখকের জ্ঞান যদি অগভীর হয়, তাহলে তাঁর রচনায় ভুল বা অস্পষ্ট তথ্য সাধারণ পাঠকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই প্রাবন্ধিকের পরামর্শ হলো, কোনো বৈজ্ঞানিক রচনা প্রকাশ করার আগে অভিজ্ঞ ব্যক্তির মাধ্যমে তা যাচাই করে নেওয়া আবশ্যক।
৭। কমবেশি ১২৫ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৭.১ ‘আমার এই অক্ষমতার জন্যে তোমরা আমাকে ক্ষমা করো।’ বক্তা কাদের কাছে, কোন্ অক্ষমতা প্রকাশ করেছেন?
উত্তর: শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাটকে নবাব সিরাজউদ্দৌলা ফরাসি প্রতিনিধি মঁসিয়ে লা-কে উদ্দেশ্য করে উক্ত কথাটি বলেন। ইংরেজরা যখন ফরাসি উপনিবেশ চন্দননগর দখল করে নেয়, তখন মঁসিয়ে লা নবাবের সাহায্য প্রার্থনা করে তার দরবারে উপস্থিত হন। সিরাজ ফরাসিদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন বটে, কিন্তু তিনি ব্যাখ্যা করেন যে কলকাতা জয় করতে গিয়ে এবং পূর্ণিয়ায় শওকত জঙ্গের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তার বিপুল সৈন্যক্ষয় ও অর্থব্যয় হয়েছে। ফলে, তার মন্ত্রীপরিষদও নতুন কোনো যুদ্ধের পক্ষে নন। এমন পরিস্থিতিতে ফরাসিদের প্রতি সহানুভূতি সত্ত্বেও তাদের সাহায্য করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। ‘আমার এই অক্ষমতার জন্যে তোমরা আমাকে ক্ষমা করো’ এই মন্তব্যটির মধ্যে দিয়েই সিরাজ তাঁর অক্ষমতা প্রকাশ করেছেন।
৭.২ “মনে হয়, ওর নিশ্বাসে বিষ, ওর দৃষ্টিতে আগুন, ওর অঙ্গ-সঞ্চালনে ভূমিকম্প।”- ‘ওর’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? বক্তার উদ্দিষ্টের প্রতি এমন মন্তব্যের কারণ আলোচনা করো।
উত্তর: শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাটকে, নবাব সিরাজদ্দৌলার স্ত্রী লুৎফুন্নেসা ঘসেটি বেগম সম্পর্কে এমন কথা বলেছেন।
এই ধরনের মন্তব্যের পটভূমি হলো – ঘরে ও বাইরে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে সিরাজ যখন অস্থির, ঠিক সেই মুহূর্তে নবাবের মাসি ঘসেটি বেগম দরবারে উপস্থিত হন। এরপর একের পর এক ধারালো ও বিষাক্ত বাক্য দিয়ে তিনি সিরাজকে আঘাত করতে থাকেন। ঘসেটির প্রতিটি কথা যেন বিষলিপ্ত তীরের মতো শুধু সিরাজের হৃদয়ই বিদ্ধ করেনি, সেখানে উপস্থিত সিরাজের স্ত্রী লুৎফুন্নেসার হৃদয়ও ক্ষতবিক্ষত করেছে। তিনি উপলব্ধি করেন যে ঘসেটি হচ্ছেন প্রতিহিংসার জীবন্ত মূর্তি, যিনি লুৎফার স্বামী সিরাজেরও শওকত জঙ্গের মতোই করুণ পরিণতি কামনা করেন। ঘসেটি বলেন, “চোখের জলে নবাব তাঁর পথ দেখতে পারবেন না। বেগমকে আজীবন আমার মতো করেই কাঁদতে হবে।” লুৎফা বুঝতে পারেন যে ঘসেটির সমস্ত শরীরজুড়ে রয়েছে তীব্র অতৃপ্তির যন্ত্রণা, তাঁর নিশ্বাসে বিষ, দৃষ্টিতে আগুন আর অঙ্গভঙ্গিতে ভূমিকম্পের মতো কম্পন। ঘসেটিকে আর সহ্য করতে না পেরে লুৎফুন্নেসা তাকে অবিলম্বে মতিঝিলে পাঠিয়ে দেবার আবেদন জানান। এই উক্তির মধ্য দিয়ে ঘসেটি সম্পর্কে লুৎফুন্নেসার ভয় ও আশঙ্কাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
৮। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৮.১ “জোচ্চুরি করে আমাকে বসিয়ে রেখে এখন ঠেকায় পড়ে এসেছ আমার কাছে” কোনির এই অভিমানের কারণ কী? এর পরবর্তী ঘটনার সংক্ষেপে বর্ণনা করো।’
উত্তর: মাদ্রাজে জাতীয় সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপে কোনিকে বাংলা দলে জায়গা দেওয়া হলেও, শেষ মুহূর্তে তাকে চক্রান্ত করে দলের বাইরে রাখা হয়। ট্রেনের যাত্রা থেকে শুরু করে হোটেল পর্যন্ত সবাই কোনিকে অবহেলা আর উপেক্ষার চোখে দেখেছে। বাংলার সম্মান রক্ষার জন্য মরিয়া হয়ে দল কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত ৪০০ (৪ × ১০০মি.) মিটার রিলে ইভেন্টে কোনিকে নামতে বলে। তখনই অভিমান ও ক্ষোভে ভরা মন নিয়ে কোনি ওই মন্তব্যটি করেছিলেন।
পরবর্তী ঘটনার সংক্ষেপ বর্ণনা – মাদ্রাজে প্রতিযোগিতার শেষ ইভেন্ট৪০০ ( ৪ × ১০০মি.) মিটার রিলে। তখন মহারাষ্ট্র তিন পয়েন্টে এগিয়ে। বাংলাকে এখন জিততেই হবে অন্তত দশ পয়েন্ট, নইলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন ভেঙে যাবে। অমিয়ার অসুস্থতার কারণে বিকল্প সাঁতারু হিসেবে কোনিকে নেওয়া হয়। বাংলার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার শেষ আশা কোনির উপরই ভর করে থাকে। কিন্তু অবহেলা আর বঞ্চনায় অভিমানী কোনি আর জলে নামতে চায় না। এমন সময় হিয়া কোনিকে ‘আনস্পোর্টিং’ বলে অপমান করতেই কোনির জেদ চেপে বসে। দাঁত দিয়ে দাঁত চেপে, চোয়াল শক্ত করে কোনি জলে নেমে পড়ে। মহারাষ্ট্রের খ্যাতনামা সাঁতারু রমা যোশির জাম্পের তিন সেকেন্ড পর জলে ঝাঁপ দেয় কোনি। তবুও তীব্র মনোবল আর বুকের গভীরে পুষে রাখা অভিমানকে শক্তি করে কোনি রমা যোশিকে পিছনে ফেলে দেয়। ক্ষিতীশের মরিয়া চিৎকার “ফাইট, কোনি, ফাইট!” শেষ পর্যন্ত সত্যি হয়ে ওঠে। কোনির গলায় ঝুলে সোনার মেডেল, যেন সব অপমানের উত্তর।
৮.২ ক্ষিতীশ যজ্ঞিবাড়ির নিমন্ত্রণে যায় না কেন? বাঙালির খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে ক্ষিতীশের মনোভাব ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ক্ষিতীশ নিজের শারীরিক সক্ষমতা ও সুস্থতা বজায় রাখার ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন ছিলেন। নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করতেন তিনি। পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সেও যজ্ঞবাড়ির নিমন্ত্রণ এড়িয়ে নিজেকে সুস্থ ও সবল রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। সংযত জীবনযাপনই ছিল তাঁর জীবনের মূল লক্ষ্য, তাই খাদ্যাভ্যাসেও তাঁর এই সংযম স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যেত। তাঁর মতে, পরম শ্রদ্ধেয় ড. বিধানচন্দ্র রায় বলেছিলেন, “একটি করে যজ্ঞবাড়ির নিমন্ত্রণে খাওয়া মানে এক বছর করে আয়ু কমে যাওয়া।” ক্ষিতীশ এই কথাটিকে অত্যন্ত সত্য বলে মানতেন। তাঁর ক্লাবে সাঁতার শিখতে আসা শিক্ষার্থীদেরও তিনি নিয়মিত এ কথা স্মরণ করিয়ে দিতেন। তাঁর বিশ্বাস ছিল, “শরীরের নাম মহাশয়, যা সহাবে তাই সয়।” এই কারণে তিনি স্ত্রীর সাথে কেবল সেদ্ধ খাবার খেয়েই জীবনযাপন করতেন এবং কখনোই যজ্ঞবাড়ির নিমন্ত্রণে যোগ দিতেন না।
ক্ষিতীশের ধারণা ছিল, বাঙালি রান্নায় তেল-ঝাল-মশলার ব্যবহারে স্বাস্থ্য ভালো থাকে না। তার মতে, এতে পেটেরও ক্ষতি হয়। আর এ কারণেই বাঙালিরা শরীরে জোর পায় না, কোনো খেলাতেই বিশেষ সাফল্য দেখাতে পারে না। তার মতে, এমন খাবার খাওয়া উচিত যেখানে সর্বোচ্চ প্রোটিন ও ভিটামিন সংরক্ষিত থাকে। সে জন্যই ক্ষিতীশ সমস্ত খাবার সেদ্ধ করে খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।
৮.৩ ‘রবীন্দ্র সরোবরে এক মাইল সাঁতার প্রতিযোগিতা।’ ‘কোনি’ উপন্যাস অবলম্বনে সেই প্রতিযোগিতার বিবরণ দাও।
উত্তর: ঢাকুরিয়া স্পোর্টস ক্লাব -এর উদ্যোগে রবীন্দ্র সরোবর লেকে এক মাইল সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এতে মোট পঁচিশজন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে – বাইশজন ছেলে এবং তিনজন মেয়ে। মেয়েদের মধ্যে একজন ছিলেন ফর্সা ও লাল সাঁতারের পোশাক পরিহিতা, অন্যজন ছিলেন কোনি। প্রতিযোগিতার একটি উল্লেখযোগ্য দিক ছিল সুবীরের অংশগ্রহণ। সে ছিল ন্যাশনাল রেকর্ডধারী, তাই ক্ষিতীশের মনে হয়েছিল এ ধরনের একটি ছোটখাটো প্রতিযোগিতায় তার অংশগ্রহণ ঠিক নয়। বন্দুকের আওয়াজের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। শুরুতেই সুবীর এবং আরও প্রায় দশজন ছেলে এগিয়ে যায়। তারপর আসে আরেক দল, এবং সবশেষে থাকে তিনজন মেয়ে ও দুটি ছোট ছেলে। প্রথম ৫০ মিটার পর্যন্ত সবাই প্রায় একসাথে সাঁতার কাটে। তারপর লাল পোশাক পরা মেয়েটি ধীরে ধীরে এগোতে শুরু করে। সামনের দলের কিছু সাঁতারু মন্থর গতিতে পিছিয়ে পড়তে থাকে। ক্ষিতীশ পিছনে ফিরে তাকায় এবং দেখে যে ছোট ছেলেদের সাথে কোনি আসছে। সে বৈঠার মতো হাত চালিয়ে দু’পাশে মাথা নাড়াতে নাড়াতে সাঁতার কাটছে। তাদের থেকে প্রায় কুড়ি মিটার সামনে আরেকটি মেয়ে সমান গতিতে সাঁতরে চলেছে। লাল পোশাকের মেয়েটি তার থেকেও প্রায় ত্রিশ মিটার সামনে এবং একজন ছেলের মাত্র হাত দশেক পিছনে রয়েছে।
৯। চলিত বাংলায় অনুবাদ করো:
A real friend is he who remains true to us long as he lives. He will share our sorrows as well as our joys. He will stand by us in our hard times and is always ready to help us. He will risk everything, even life for the sake of his friends.
উত্তর: একজন সত্যিকারের বন্ধু সে-ই, যে যতদিন বেঁচে থাকে আমাদের প্রতি সত্যনিষ্ঠ থাকে। সে আমাদের আনন্দের পাশাপাশি দুঃখেও ভাগ নেবে। সে কঠিন সময়ে আমাদের পাশে দাঁড়াবে এবং সবসময় সাহায্য করতে প্রস্তুত থাকবে। সে বন্ধুর জন্য নিজের সবকিছু, এমনকি প্রাণ পর্যন্ত ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
১০। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
১০.১ সোশ্যাল মিডিয়ায় অত্যধিক আসক্তি ছাত্রছাত্রীদের সফলতায় অন্তরায় এই বিষয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে কাল্পনিক সংলাপ রচনা করো।
উত্তর:
সোশ্যাল মিডিয়ায় অত্যধিক আসক্তি ছাত্রছাত্রীদের সফলতায় অন্তরায়
রবি: অমিত, আজকাল দেখছি তুই সবসময় মোবাইলে ব্যস্ত থাকছিস পড়াশোনায় মন দিচ্ছিস না কেন?
অমিত: জানিস রবি, আমি ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম আর ইউটিউবে এত সময় কাটাই যে পড়ার সময়ই পাই না।
রবি: এটাই তো সমস্যা! সোশ্যাল মিডিয়ায় অতিরিক্ত আসক্তি পড়াশোনার বড় বাধা। এতে মনোযোগ নষ্ট হয়।
অমিত: ঠিক বলছিস। আমি পড়তে বসলে মন চলে যায় মোবাইলে।
রবি: শুধু মনোযোগ নষ্ট নয়, সময়ও অপচয় হয়। ফলে ভালো ফলাফল করা কঠিন হয়ে পড়ে।
অমিত: হ্যাঁ, আমি এখন বুঝতে পারছি, সোশ্যাল মিডিয়া বিনোদনের জন্য ভালো, কিন্তু অতিরিক্ত ব্যবহার ক্ষতিকর।
রবি: ঠিক তাই। নির্দিষ্ট সময় রেখে ব্যবহার করলেই ভালো হয়। পড়াশোনাকে প্রাধান্য দে।
অমিত: ধন্যবাদ রবি, আমি আজ থেকেই সময় বেঁধে মোবাইল ব্যবহার করব।
রবি: এই তো ঠিক সিদ্ধান্ত! তবেই তুই সফল হতে পারবি।
১০.২ কোনো গ্রামীণ এলাকায় একটি সরকারি হাসপাতাল উদ্বোধন হল এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।
উত্তর:
গ্রামীণ এলাকায় সরকারি হাসপাতালের উদ্বোধন
নিজস্ব সংবাদদাতা, নবগ্রাম, ২৬মে ২০২৬: পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল ব্লকের ঝরিয়া গ্রামে গতকাল এক নতুন সরকারি হাসপাতালের উদ্বোধন হলো। দীর্ঘদিন ধরেই এলাকার মানুষ একটি আধুনিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। অবশেষে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালটি নির্মিত হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক, ব্লক প্রশাসনের আধিকারিক এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মীরা। ফিতে কেটে হাসপাতালের শুভ উদ্বোধন করেন বিধায়ক মহাশয়। তিনি বলেন, “এই হাসপাতাল চালু হলে গ্রামের মানুষদের আর শহরে ছুটতে হবে না, এখানেই তারা প্রাথমিক ও বিশেষ চিকিৎসা পাবেন।”
এলাকার মানুষ এই উদ্যোগে খুবই আনন্দিত। তারা জানিয়েছেন, এই হাসপাতাল চালু হওয়ায় জরুরি সময়ে চিকিৎসা পাওয়া সহজ হবে। শিশু ও মাতৃসেবা, টিকা, ওষুধ বিতরণসহ নানা পরিষেবা এখান থেকে দেওয়া হবে।
গ্রামবাসীর মতে, এই হাসপাতাল গ্রামীণ জনজীবনে এক নতুন আশার আলো জ্বালালো।
১১। কমবেশি ৪০০ শব্দে যে-কোনো একটি বিষয় অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা করো:
১১.১ মানুষের বিজ্ঞান নির্ভরতা ও তার সংকট।
উত্তর:
মানুষের বিজ্ঞান নির্ভরতা ও তার সংকট
বর্তমান যুগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ। মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আজ বিজ্ঞানের প্রভাব স্পষ্টভাবে দেখা যায়। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান থেকে শুরু করে যোগাযোগ, শিক্ষা, চিকিৎসা—সব ক্ষেত্রেই বিজ্ঞান আমাদের জীবনকে সহজ ও আরামদায়ক করে তুলেছে। মানুষ আজ বিজ্ঞাননির্ভর জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে।
বিজ্ঞান মানুষের দৈনন্দিন জীবনে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন, টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটর ইত্যাদি যন্ত্রের মাধ্যমে মানুষ আজ আরাম ও সুবিধার জগতে প্রবেশ করেছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে মানুষ আজ অনেক মরণব্যাধিরও প্রতিকার পাচ্ছে। শিক্ষা ও গবেষণায় প্রযুক্তির ব্যবহার মানুষকে নতুন নতুন জ্ঞানের দ্বার উন্মোচন করেছে। পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে পৃথিবী আজ হাতের মুঠোয় চলে এসেছে।
কিন্তু এই বিজ্ঞাননির্ভর জীবনের সঙ্গে এসেছে নানা সংকট। অতিরিক্ত যান্ত্রিক জীবনে মানুষ আজ নিজের মানবিক মূল্যবোধ ও অনুভূতি হারাতে বসেছে। পারস্পরিক সম্পর্কের উষ্ণতা কমে গিয়ে মানুষ একাকীত্বে ভুগছে। বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে পরমাণু অস্ত্র, জৈব অস্ত্রের মতো ভয়ংকর আবিষ্কার মানবসভ্যতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রযুক্তির অপব্যবহার পরিবেশ দূষণ, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, বন উজাড়, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতির মতো ভয়াবহ সমস্যার জন্ম দিয়েছে।
এছাড়া বিজ্ঞাননির্ভরতার ফলে মানুষ ক্রমে অলস ও নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও যন্ত্রের দখলে চলে যাচ্ছে মানুষের কাজ, ফলে কর্মসংস্থানের সংকটও তৈরি হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আসক্তি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
তাই বলা যায়, বিজ্ঞান যেমন মানবজীবনে আশীর্বাদ, তেমনই এর অতি-নির্ভরতা অভিশাপের রূপ নিতে পারে। বিজ্ঞানের সঠিক ও নৈতিক ব্যবহারই পারে এই সংকট থেকে মানবসভ্যতাকে রক্ষা করতে। বিজ্ঞান যেন মানবকল্যাণের মাধ্যম হয়, ধ্বংসের অস্ত্র না হয়—এই লক্ষ্যেই আমাদের সচেতন হতে হবে।
বিজ্ঞান আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ, তবে তার উপর অতি-নির্ভরতা নয়, যুক্তিনির্ভর ব্যবহারই মানুষের সত্যিকার উন্নতির পথ।
১১.২ তোমার জীবনে রবীন্দ্রনাথ।
উত্তর:
আমার জীবনে রবীন্দ্রনাথ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুধুমাত্র একজন কবি নন, তিনি একজন বিশ্বমানব, এক অবিস্মরণীয় মহাপ্রাণ। তাঁর সাহিত্য, সংগীত, ভাবনা ও মানবতাবোধ আমার জীবনকে নানা দিক থেকে প্রভাবিত করেছে। ছোটবেলা থেকেই আমি তাঁর লেখা কবিতা ও গান শুনে বড় হয়েছি। তাই আমার চিন্তা, অনুভূতি ও জীবনের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।
প্রথম যখন “চাঁদের হাসি, বাতাসের খেলা” কবিতাটি পড়ি, তখন থেকেই তাঁর ভাষার মাধুর্য আমাকে মুগ্ধ করে। তাঁর রচনায় প্রকৃতি, ভালোবাসা ও মানবতার এমন সুন্দর প্রকাশ পাই, যা আমাকে গভীরভাবে স্পর্শ করে। রবীন্দ্রনাথের কবিতা আমার মনে সৌন্দর্যবোধ জাগিয়ে তোলে, মনকে করে তোলে সংবেদনশীল ও কোমল।
তাঁর গান আমার জীবনের প্রেরণার উৎস। “একলা চলো রে” গানটি আমাকে সাহস দেয় একা পথ চলার, নিজের লক্ষ্যে দৃঢ় থাকার। আবার “আমার সোনার বাংলা” গানটি আমাকে দেশপ্রেমের শিক্ষা দেয়। তাঁর গান শুনে আমি শিখেছি আনন্দে-দুঃখে, সাফল্যে-বিফলতায় কেমন করে জীবনকে গ্রহণ করতে হয়।
রবীন্দ্রনাথের মানবতাবাদী চিন্তা আমার নৈতিক বোধ গঠনে সাহায্য করেছে। তিনি শিখিয়েছেন মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে ভালোবাসতে। তাঁর রচনা আমাকে শিখিয়েছে স্বাধীন চিন্তা ও আত্মবিশ্বাসের মূল্য।
শিক্ষাজীবনেও রবীন্দ্রনাথ আমার পথপ্রদর্শক। তাঁর লেখা প্রবন্ধ, গল্প ও উপন্যাস আমাকে সাহিত্য জগতের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। তাঁর ‘ছুটি’, ‘পোস্টমাস্টার’ বা ‘গোরা’ গল্পগুলো থেকে আমি জীবনের মূল্যবোধ ও মানবিকতার পাঠ পেয়েছি।
রবীন্দ্রনাথের ভাবনা শুধু সাহিত্যেই সীমাবদ্ধ নয়, তাঁর শিক্ষা ও সমাজ ভাবনা আজও সমান প্রাসঙ্গিক। তাঁর শান্তিনিকেতন আমার কাছে আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতীক, যেখানে স্বাধীন চিন্তা ও সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটে।
সব মিলিয়ে, রবীন্দ্রনাথ আমার জীবনে এক অনন্ত আলোর দিশারি। তিনি আমার চিন্তা, অনুভূতি ও জীবনের পথে পথপ্রদর্শক হয়ে আছেন। তাঁর গান, কবিতা ও জীবনদর্শন আমার মনকে আলোকিত করে, জীবনকে করে তোলে সুন্দর, শান্ত ও আশাব্যঞ্জক। — রবীন্দ্রনাথ আমার জীবনের অনুপ্রেরণা, আমার অন্তরের কবি।
১১.৩ বই মানুষের শ্রেষ্ঠ সঙ্গী।
উত্তর:
বই মানুষের শ্রেষ্ঠ সঙ্গী
মানুষ সামাজিক জীব। জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে মানুষ কোনো না কোনো সঙ্গীর প্রয়োজন অনুভব করে। কিন্তু সব সঙ্গী সব সময় পাশে থাকে না। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব অনেক সময় সুখে পাশে থাকলেও দুঃখে দূরে সরে যায়। অথচ একটি সঙ্গী আছে, যে কখনো প্রতারণা করে না, কখনো দূরে সরে যায় না—সে হলো বই। তাই বইকে যথার্থই মানুষের শ্রেষ্ঠ সঙ্গী বলা হয়।
বই আমাদের জ্ঞানের ভাণ্ডার। বই পড়ার মাধ্যমে আমরা অজানাকে জানতে পারি, অদেখাকে চোখের সামনে কল্পনা করতে পারি। ইতিহাসের বই পড়ে আমরা অতীতের শিক্ষা লাভ করি, সাহিত্যের বই পড়ে মানুষের মন ও জীবনের গভীর রহস্য জানতে পারি। বিজ্ঞানবিষয়ক বই আমাদের সামনে আধুনিক যুগের নতুন নতুন আবিষ্কারের দুয়ার খুলে দেয়। ফলে বই মানুষকে আলোকিত করে, জ্ঞানের আলোয় ভরে তোলে।
বই শুধু জ্ঞান দেয় না, আনন্দও দেয়। গল্প, কবিতা, উপন্যাস আমাদের মনকে প্রশান্তি দেয়। দুঃখ-দুর্দশার দিনে বই আমাদের মন থেকে দুঃখ ভুলিয়ে আনন্দ এনে দেয়। বই আমাদের কল্পনার জগতে ভ্রমণ করায়, নতুন অভিজ্ঞতার স্বাদ দেয়। নিঃসঙ্গ মুহূর্তে বই-ই হয়ে ওঠে প্রকৃত বন্ধু।
বই মানুষের চরিত্র গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নীতিশিক্ষার বই আমাদের সৎ, পরিশ্রমী ও ন্যায়পরায়ণ হতে শেখায়। মহাপুরুষদের জীবনী আমাদের অনুপ্রেরণা যোগায়, জীবনের লক্ষ্য স্থির করতে সাহায্য করে। বই আমাদের মানসিক উন্নতি ঘটায়, হৃদয়কে করে কোমল ও উদার।
তবে বই পড়ার ক্ষেত্রে সঠিক বই নির্বাচন করা জরুরি। ভালো বই আমাদের জীবন গঠনে সহায়তা করে, আর খারাপ বই বিপথে ঠেলে দিতে পারে। তাই পাঠককে বাছাই করে বই পড়তে হবে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, বই মানুষের অমূল্য সম্পদ। বই-ই আমাদের সত্যিকার সঙ্গী, যে জীবনের প্রতিটি ধাপে পাশে থাকে। তাই মহামানবেরা যথার্থই বলেছেন—“বই মানুষের শ্রেষ্ঠ বন্ধু।”
১১.৪ মৌলানা আবুল কালাম আজাদ।
উত্তর:
মৌলানা আবুল কালাম আজাদ
মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের এক বিশিষ্ট নেতা, শিক্ষাবিদ, চিন্তাবিদ ও দেশপ্রেমিক। তিনি ছিলেন একাধারে রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। তাঁর অবদান ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং স্বাধীনোত্তর ভারতের শিক্ষা ও সংস্কৃতি গঠনে অনন্য।
মৌলানা আবুল কালাম আজাদের জন্ম ১৮৮৮ সালের ১১ নভেম্বর মক্কায়। তাঁর পিতা মৌলানা খৈরুদ্দিন ছিলেন একজন ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি। শৈশবে তিনি আরবি, ফারসি ও ইসলাম ধর্মের পাশাপাশি ইতিহাস, দর্শন ও রাজনীতি বিষয়ে গভীর জ্ঞান অর্জন করেন। অল্প বয়সেই তিনি লেখালেখি শুরু করেন এবং পরে “আল-হিলাল” নামক পত্রিকা প্রকাশ করে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।
আজাদ মহাশয় ছিলেন মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে অনুপ্রাণিত এবং অহিংস সংগ্রামের একজন দৃঢ় সমর্থক। তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৪২ সালের ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনে তাঁর অবদান বিশেষভাবে স্মরণীয়। স্বাধীন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে তিনি জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপন করেন। তাঁর প্রচেষ্টায় ১৯৫০ সালে ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্টস কমিশন (UGC) গঠিত হয়, এবং ভারতের সর্বত্র প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
তিনি বিশ্বাস করতেন, শিক্ষা ছাড়া দেশের প্রকৃত উন্নতি সম্ভব নয়। তাই তিনি প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে বিশেষ গুরুত্ব দেন। তাঁর অনুপ্রেরণায় দিল্লি, বোম্বে ও খড়গপুরে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়।
মৌলানা আজাদ ছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ চিন্তার এক অনন্য প্রতিভা। তিনি হিন্দু-মুসলমান ঐক্যের পক্ষে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নিয়েছিলেন এবং ভারতকে একটি ঐক্যবদ্ধ, ধর্মনিরপেক্ষ জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন।
১৯৫৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি এই মহান নেতা পরলোকগমন করেন। তাঁর অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তাঁকে ভারতরত্ন উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ছিলেন আধুনিক ভারতের এক মহান নির্মাতা। তাঁর শিক্ষা, চিন্তা ও দেশপ্রেম আজও আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়। ভারতের ইতিহাসে তাঁর নাম চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
MadhyamikQuestionPapers.com এ আপনি অন্যান্য বছরের প্রশ্নপত্রের ও Model Question Paper-এর উত্তরও সহজেই পেয়ে যাবেন। আপনার মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতিতে এই গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ কেমন লাগলো, তা আমাদের কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আরও পড়ার জন্য, জ্ঞান অর্জনের জন্য এবং পরীক্ষায় ভালো ফল করার জন্য MadhyamikQuestionPapers.com এর সাথে যুক্ত থাকুন।
