আপনি কি মাধ্যমিকের জীবনবিজ্ঞান প্রশ্নপত্রের উত্তর খুঁজছেন? এই আর্টিকেলে আপনি পাবেন ২০২৫ সালের মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান প্রশ্নপত্রের সঠিক উত্তর।
নিচে ২০২৫ সালের প্রশ্নপত্রের প্রতিটি উত্তর সুন্দরভাবে সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য আগের বছরের প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
MadhyamikQuestionPapers.com ২০১৭ থেকে বর্তমান পর্যন্ত সব মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র এবং উত্তর বিনামূল্যে আপলোড করেছে।
Download 2017 to 2024 All Subject’s Madhyamik Question Papers
View All Answers of Last Year Madhyamik Question Papers
যদি দ্রুত প্রশ্ন ও তার উত্তর খুঁজতে চান, তাহলে নিচের Table of Contents এর পাশে থাকা [!!!] এই চিহ্নটিতে ক্লিক করুন। এই পেজে থাকা সমস্ত প্রশ্নের উত্তর Table of Contents এ ক্রমানুসারে দেওয়া আছে। যে প্রশ্নের ওপর ক্লিক করবেন, সরাসরি তার উত্তরে চলে যেতে পারবেন।
Table of Contents
Toggleবিভাগ ‘ক’
১। প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে তার ক্রমিক সংখ্যাসহ লেখো।
১.১ নীচের কোন্টি সঠিক প্রতিবর্ত পথের ক্রম?
(ক) গ্রাহক— বহির্বাহী স্নায়ু— কারক— স্নায়ুকেন্দ্র— অন্তর্বাহী স্নায়ু
(খ) গ্রাহক— স্নায়ুকেন্দ্র— অন্তর্বাহী স্নায়ু— বহির্বাহী স্নায়ু— কারক
(গ) গ্রাহক— অন্তর্বাহী স্নায়ু— স্নায়ুকেন্দ্র— বহির্বাহী স্নায়ু— কারক
(ঘ) গ্রাহক— কারক— স্নায়ুকেন্দ্র— অন্তর্বাহী স্নায়ু— বহির্বাহী স্নায়ু
উত্তর: (গ) গ্রাহক— অন্তর্বাহী স্নায়ু— স্নায়ুকেন্দ্র— বহির্বাহী স্নায়ু— কারক
১.২ নীচের কোন বাক্যটি সঠিক নয়?
(ক) থাইরক্সিন দেহের বিপাক নিয়ন্ত্রণ করে।
(খ) প্রোজেস্টেরন গর্ভাবস্থায় জরায়ুর বৃদ্ধি, অমরার গঠন ও সন্তান প্রসব নিয়ন্ত্রণ করে।
(গ) ইনসুলিন গ্লাইকোজেনেসিসের হার বাড়ায়।
(ঘ) অ্যাড্রেনালিন হার্দ-উৎপাদ হ্রাস করে।
উত্তর: (ঘ) অ্যাড্রেনালিন হার্দ-উৎপাদ হ্রাস করে।
১.৩ চোখের প্রতিসারক মাধ্যমগুলো হলো-
(ক) কর্নিয়া, অ্যাকুয়াস হিউমর, লেন্স, ভিট্রিয়াস হিউমর
(খ) ক্লেরা, কোরয়েড, আইরিস, রেটিনা
(গ) কর্নিয়া, কোরয়েড, লেন্স, রেটিনা
(ঘ) অ্যাকুয়াস হিউমর, আইরিস, ভিট্রিয়াস হিউমর, কোরয়েড
উত্তর: (ক) কর্নিয়া, অ্যাকুয়াস হিউমর, লেন্স, ভিট্রিয়াস হিউমর
১.৪ উদ্ভিদকোশের মাইটোসিস ও প্রাণীকোশের মাইটোসিস সংক্রান্ত নীচের পার্থক্যগুলো বিবেচনা করো এবং কোনগুলি সঠিক তা বেছে নাও
উদ্ভিদকোশের মাইটোসিস | প্রাণীকোশের মাইটোসিস |
---|---|
I. সেন্ট্রিওল থেকে বেমতত্ত্ব গঠিত হয়। | অনুনালিকা থেকে বেমতত্ত্ব গঠিত হয়। |
II. কোশপাত গঠনের মাধ্যমে সাইটোকাইনেসিস সম্পন্ন হয়। | ক্লিভেজ বা ফারোয়িং এর মাধ্যমে সাইটোকাইনেসিস সম্পন্ন হয়। |
III. উৎপন্ন অপত্য কোশগুলি পাশাপাশি যুক্ত থাকে। | উৎপন্ন অপত্য কোশগুলি পরস্পর থেকে পৃথক হয়ে যায়। |
IV. কোশের পরিধি থেকে কেন্দ্রের দিকে সাইটোকাইনেসিস ঘটে। | কোশের কেন্দ্র থেকে পরিধির দিকে সাইটোকাইনেসিস ঘটে। |
(ক) I, IV
(খ) II, III
(গ) II, IV
(ঘ) III, IV
উত্তর: (খ) II, III
১.৫ DNA তে নাইট্রোজেনযুক্ত ক্ষারক-যুগ্ম গঠনের বিন্যাসের ক্ষেত্রে কোনটি সঠিক?
(ক) AT
(খ) G = C
(গ) A-T
(ঘ) G = C
উত্তর: (ঘ) G = C
১.৬ মিলার ও উরের পরীক্ষায় নীচের কোন্ বিক্রিয়কটি ব্যবহৃত হয় নি?
(ক) CH4
(খ) H2S
(গ) NH3
(ঘ) H2
উত্তর: (খ) H2S
১.৭ কোনটি মৌমাছির ওয়াগল নৃত্যের বৈশিষ্ট্য নয়?
(ক) খাদ্যের উৎস মৌচাক থেকে 100 মিটারের বেশি হলে ওয়াগল নৃত্য দেখা যায়।
(খ) ওয়াগল নৃত্য ইংরেজি ‘৪’ সংখ্যার ন্যায়।
(গ) ওয়াগল নৃত্যে পর্যায়ক্রমে মৌমাছি একবার ঘড়ির কাঁটার দিকে এবং পরের বার বিপরীত দিকে ঘুরতে থাকে।
(ঘ) ওয়াগল নৃত্যটির অভিমুখ নিম্নগামী হলে খাদ্যের উৎস সূর্যের বিপরীত দিকে থাকে।
উত্তর: (ক) খাদ্যের উৎস মৌচাক থেকে 100 মিটারের বেশি হলে ওয়াগল নৃত্য দেখা যায়।
১.৮ বিপন্ন প্রজাতি ও তার বিপন্নতার কারণ সংক্রান্ত নীচের কোন্ জোড়টি সঠিক?
(ক) বহিরাগত প্রজাতির অনুপ্রবেশ — মৌরলা মাছ
(খ) দূষণ — একশৃংগ গণ্ডার
(গ) চোরাশিকার — শকুন
(ঘ) বিশ্ব উন্নায়ন এবং জলবায়ুর পরিবর্তন — আরশোলা
উত্তর: (ক) বহিরাগত প্রজাতির অনুপ্রবেশ — মৌরলা মাছ
১.৯ জীব বিবর্ধনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উপাদানটি হলো
(ক) পচা পাতা
(খ) ক্লোরিনযুক্ত কীটনাশক
(গ) জীবজন্তুর মলমূত্র
(ঘ) কাগজ
উত্তর: (খ) ক্লোরিনযুক্ত কীটনাশক
১.১০ নাইট্রোসোমোনাস, রাইজোবিয়াম, নাইট্রোব্যাক্টর, সিউডোমোনাস এই অণুজীবগুলির মধ্যে কোনটি নাইট্রোজেন চক্রের চতুর্থ ধাপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট?
(ক) রাইজোবিয়াম
(খ) সিউডোমোনাস
(গ) নাইট্রোসোমোনাস
(ঘ) নাইট্রোব্যাক্টর
উত্তর: (খ) সিউডোমোনাস
১.১১ ইতর পরাগযোগ সম্পর্কিত নীচের কতগুলি বক্তব্য সঠিক?
- ইতর পরাগযোগে বাহকের প্রয়োজন হয়।
- ইতর পরাগযোগের ফলে উৎপন্ন অপত্য উদ্ভিদে নতুন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের আবির্ভাব ঘটে।
- ইতর পরাগযোগ বাহক নির্ভরশীল না হওয়ায় পরাগরেণুর অপচয় কম হয়।
- ইতর পরাগযোগ বাহক নির্ভরশীল হওয়ায় পরাগরেণুর অপচয় বেশি হয়।
(ক) 3
(খ) 1
(গ) 4
(ঘ) 2
উত্তর: (ক) 3
১.১২ কোনো এক দম্পতির পর পর তিনটি সন্তান যদি পুত্র হয় তবে চতুর্থ সন্তানটি কন্যা হওয়ার সম্ভাবনা কত শতাংশ?
(ক) 100%
(খ) 0%
(গ) 50%
(ঘ) 75%
উত্তর: (গ) 50%
১.১৩ YyRR ও YYRr জিনোটাইপযুক্ত উদ্ভিদ থেকে প্রাপ্ত গ্যামেটের প্রকারভেদের অনুপাত নির্ধারণ করো
(ক) 2:1
(খ) 1:2
(গ) 2:2
(ঘ) 1:4
উত্তর: (গ) 2:2
১.১৪ নীচের কোন্ ক্রসটিতে F₁ জনুতে লম্বা ও বেঁটে বৈশিষ্ট্যের অনুপাতটি 1:1 হবে?
(ক) Tt × Tt
(খ) TTx Tt
(গ) TT × tt
(ঘ) Tt x tt
উত্তর: (ঘ) Tt x tt
১.১৫ প্রদত্ত কোন্ জোড়াটি সমসংস্থ অঙ্গ নয়?
(ক) মানুষের হাত ও ঘোড়ার অগ্রপদ
(খ) পাখির ডানা ও তিমির ফ্লিপার
(গ) পাখির ডানা ও পতঙ্গের ডানা
(ঘ) ঘোড়ার অগ্রপদ ও তিমির ফ্লিপার
উত্তর: (গ) পাখির ডানা ও পতঙ্গের ডানা
বিভাগ ‘খ’
২। নীচের ২৬টি প্রশ্ন থেকে ২১টি প্রশ্নের উত্তর নির্দেশ অনুসারে লেখো।
নীচের বাক্যগুলো সত্য অথবা মিথ্যা নিরূপণ করো (যে কোনো পাঁচটি):
২.১ দূরের বস্তু দেখার ক্ষেত্রে অক্ষিগোলকের লেন্সটির বক্রতা হ্রাস পেলে ফোকাস দৈর্ঘ্য বেড়ে যায়।
উত্তর: সত্য
২.২ প্রাণীকোশের মাইটোসিসের অ্যানাফেজ দশায় অপত্য ক্রোমোজোমের মেরুবর্তী চলন ঘটে।
উত্তর: সত্য
২.৩-একটি লোকাসের ক্ষেত্রে হোমোজাইগাস প্রকট ও অপর লোকাসের ক্ষেত্রে হেটেরোজাইগাস প্রকট— এরূপ একটি জেনোটাইপের উদাহরণ হলো BBrr ।
উত্তর: মিথ্যা
২.৪ ইক্যুয়াসের অগ্রপদে চারটি ও পশ্চাদে তিনটি আঙ্গুল উপস্থিত ছিল।
উত্তর: মিথ্যা
২.৫ রেডপান্ডা সংরক্ষণের একটি প্রচেষ্টা হল ক্যাপটিভ ব্রিডিং।
উত্তর: সত্য
২.৬ বিপাকক্রিয়ায় সাহায্যকারী থাইরক্সিন ব্যতীত অপর হরমোনটি হলো ইনসুলিন।
উত্তর: সত্য
একটি শব্দে বা একটি বাক্যে উত্তর দাও (যে কোনো ছয়টি):
২.৭ বিসদৃশ শব্দটি বেছে লেখো: হাইপোথ্যালামাস, পনস্, মেডালা অবলংগাটা, সেরিবেলাম
উত্তর: হাইপোথ্যালামাস
২.৮ সোয়ান কোশের কাজ কী?
উত্তর: সোয়ান কোষ অক্ষরেণুর চারপাশে মাইলিন শিথ তৈরি করে, যা স্নায়ু সংকেত দ্রুত পরিবাহনে সহায়তা করে।
২.৯ নীচের প্রথম শব্দজোড়াটির সম্পর্ক বুঝে দ্বিতীয় শব্দজোড়াটির শূন্যস্থানে উপযুক্ত শব্দ বসাও: খন্ডীভবন: স্পাইরোগাইরা:: কোরকোদাম:_______।
উত্তর: ইষ্ঠ
২.১০ YYRR, yyRR, YYRr এবং YyRR জিনোটাইপগুলির মধ্যে ফিনোটাইপগত ফলাফলের নিরিখে কোনটি সম্পূর্ণভাবে ভিন্ন?
উত্তর: yyRR
২.১১ বর্ণান্ধতার জিন বহনকারী মাতার জিনোটাইপ কী হতে পারে?
উত্তর: বর্ণান্ধতার জিন বহনকারী মাতার জিনোটাইপ XaXa (বর্ণান্ধ) অথবা XaXA (বহনকারী) হতে পারে।
২.১২ ডারউইনের অভিব্যক্তি সংক্রান্ত মতবাদের প্রথম পর্যবেক্ষণটি কী?
উত্তর: অত্যধিক বংশবৃদ্ধি।
২.১৩ নীচের চারটি বিষয়ের মধ্যে কোনো তিনটি অপর বিষয়টির অন্তর্গত, সেই বিষয়টি খুঁজে বার করো এবং লেখো — দ্বীপভূমির নিমজ্জন, লবণাম্বু উদ্ভিদ ধ্বংস, সুন্দরবনের পরিবেশগত সমস্যা, খাদ্য-খাদকের সংখ্যার ভারসাম্য ব্যাঘাত।
উত্তর: সুন্দরবনের পরিবেশগত সমস্যা।
২.১৪ JFM এর মূল ভূমিকা কী?
উত্তর: JFM (Joint Forest Management)-এর মূল ভূমিকা হলো স্থানীয় জনগণ ও বন বিভাগের যৌথ অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বনভূমি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা করা।
নীচের বাক্য গুলোর শূন্যস্থান গুলোতে উপযুক্ত শব্দ বসাও (যে কোনো পাঁচটি):
২.১৫ মানবদেহে মোট_____জোড়া করোটি স্নায়ু ও সুষুম্না স্নায়ু বর্তমান।
উত্তর: মানবদেহে মোট ৪৩ জোড়া করোটি স্নায়ু ও সুষুম্না স্নায়ু বর্তমান।
১.১৬ ______বিশেষ মেরুত্বযুক্ত হওয়ায় ক্রোমোজোমের প্রান্তদ্বয়কে ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করে।
উত্তর: টেলোমিয়ার বিশেষ মেরুত্বযুক্ত হওয়ায় ক্রোমোজোমের প্রান্তদ্বয়কে ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করে।
২.১৭ কালো বর্ণ ও অমসৃণ লোমযুক্ত গিনিপিগের জিনোটাইপ হলো______।
উত্তর: কালো বর্ণ ও অমসৃণ লোমযুক্ত গিনিপিগের জিনোটাইপ হলো BB RR / Bb Rr
২.১৮ ব্যক্তিজনি______কে পুনরাবৃত্তি করে।
উত্তর: ব্যক্তিজনি জাতিজনি কে পুনরাবৃত্তি করে।
২.১৯ প্রাণীর_____শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানুষের শ্বসনতন্ত্রে প্রবেশ করলে অ্যাজমার সৃষ্টি হয়।
উত্তর: প্রাণীর লোম শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানুষের শ্বসনতন্ত্রে প্রবেশ করলে অ্যাজমার সৃষ্টি হয়।
২.২০ চোরাশিকারের অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য হল প্রাণীর_____।
উত্তর: চোরাশিকারের অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য হল প্রাণীর বিক্সয় ।
A স্তম্ভে দেওয়া শব্দের সঙ্গে B স্তম্ভে দেওয়া সর্বাপেক্ষা উপযুক্ত শব্দটির সমতা বিধান করে উভয় স্তম্ভের ক্রমিক নং উল্লেখসহ জোড়টি পুনরায় লেখো (যে কোনো পাঁচটি):
A স্তম্ভ | B স্তম্ভে |
---|---|
২.২১ ADH | (ক) জলাভূমির হ্রাসপ্রাপ্তি |
২.২২ অ্যামাইটোসিস | (খ) অভিসারী বিবর্তন |
২.২৩ থ্যালাসেমিয়া | (গ) পলাশ |
২.২৪ সমবৃত্তি অঙ্গ | (ঘ) বেমতত্ত্ব গঠিত হয় না |
২.২৫ মানব জনসংখ্যা বৃদ্ধি | (ঙ) নেফ্রনের দূরবর্তী সংবর্তনালিকা থেকে জলের পুনঃশোষণ দ্বারা মূত্রের পরিমাণ হ্রাস করে |
২.২৬ পক্ষীপরাগী পুষ্প গ | (চ) ধান |
(ছ) অটোজোমে অবস্থিত প্রচ্ছন্ন মিউট্যান্ট জিন |
উত্তর:
A স্তম্ভ | B স্তম্ভ |
---|---|
২.২১ ADH | (ঙ) নেফ্রনের দূরবর্তী সংবর্তনালিকা থেকে জলের পুনঃশোষণ দ্বারা মূত্রের পরিমাণ হ্রাস করে |
২.২২ অ্যামাইটোসিস | (ঘ) বেমতত্ত্ব গঠিত হয় না |
২.২৩ থ্যালাসেমিয়া | (ছ) অটোজোমে অবস্থিত প্রচ্ছন্ন মিউট্যান্ট জিন |
২.২৪ সমবৃত্তি অঙ্গ | (খ) অভিসারী বিবর্তন |
২.২৫ মানব জনসংখ্যা বৃদ্ধি | (ক) জলাভূমির হ্রাসপ্রাপ্তি |
২.২৬ পক্ষীপরাগী পুষ্প গ | (গ) পলাশ |
বিভাগ ‘গ’
৩। নীচের ১৭টি প্রশ্ন থেকে যে কোনো ১২টি প্রশ্নের উত্তর দুই-তিনটি বাক্যে লেখো:
৩.১ কোশচক্রের G₁ ও G₂ দশার সংশ্লেষিত বস্তুর একটি তালিকা সারণির সাহায্যে দেখাও।
উত্তর: কোশচক্রের G₁ ও G₂ দশায় সংশ্লেষিত বস্তুর তালিকা:
দশা | সংশ্লেষিত বস্তু |
G₁ ( Growth 1) | প্রোটিন, RNA, এনজাইম, সেন্ট্রিওল |
G₂ ( Growth 2 ) | টিউবিউলিন প্রোটিন, মাইটোটিক স্পিন্ডল, কিছু DNA সংশ্লেষণ-সং ক্রান্ত প্রোটিন |
৩.২ নিম্নলিখিত অযৌন জনন পদ্ধতি দুটি ব্যাখ্যা করো
- কোরকোদ্গম
- পুনরুৎপাদন
উত্তর:
(১) কোরকোদ্গম (Budding):
কোরকোদ্গম একটি অযৌন জনন প্রক্রিয়া যেখানে মূল জীবের শরীর থেকে একটি ছোট কোরক (বাড) তৈরি হয়। এটি ধীরে ধীরে পরিণত হয়ে নতুন প্রাণীতে পরিণত হয়। কিছু ক্ষেত্রে, কোরক পিতা-মাতার শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বতন্ত্র জীব হিসেবে বেড়ে ওঠে, আবার কিছু ক্ষেত্রে এটি পিতা-মাতার সঙ্গেই যুক্ত থাকে।
উদাহরণ:
হাইড্রা: হাইড্রার দেহ থেকে ছোট কোরক গজায়, যা পরিণত হলে নতুন হাইড্রা তৈরি হয়।
ইস্ট (Yeast): এককোষী ছত্রাক ইস্টে কোরকোদ্গম ঘটে, যেখানে একটি নতুন কোষ প্রধান কোষের পাশে গজায় এবং ধীরে ধীরে পৃথক হয়।
(২) পুনরুৎপাদন (Regeneration):
পুনরুৎপাদন হল এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে একটি জীবের শরীরের কোনো অংশ কেটে গেলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা নতুনভাবে গজিয়ে ওঠে এবং কখনো কখনো পুরো নতুন প্রাণী গঠিত হয়।
উদাহরণ:
প্ল্যানারিয়া: এটি দ্বিখণ্ডিত হলে প্রতিটি অংশ থেকে সম্পূর্ণ নতুন প্ল্যানারিয়া তৈরি হয়।
তারামাছ (Starfish): তারামাছের একটি বাহু বিচ্ছিন্ন হলে, তা থেকে একটি সম্পূর্ণ নতুন তারামাছ তৈরি হতে পারে।
৩.৩ ক্রোমোজোমে ইউক্রোমাটিনের তুলনায় হেটেরোক্রোমাটিনের পরিমাণ বেড়ে গেলে কী কী পরিবর্তন ঘটতে পারে?
উত্তর: ক্রোমোজোমে ইউক্রোমাটিনের তুলনায় হেটেরোক্রোমাটিনের পরিমাণ বেড়ে গেলে নিম্নলিখিত পরিবর্তনগুলি ঘটতে পারে
জিন অভিব্যক্তি হ্রাস: হেটেরোক্রোমাটিন ঘনসন্নিবিষ্ট এবং জিন অভিব্যক্তিতে বাধা দেয়, যার ফলে জিন অভিব্যক্তি হ্রাস পায়1.
কোষের বিপাকীয় কার্যকলাপ পরিবর্তন: জিন অভিব্যক্তির পরিবর্তন কোষের বিপাকীয় কার্যকলাপকে প্রভাবিত করতে পারে।
ক্যান্সার বা অন্যান্য রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি: অতিরিক্ত হেটেরোক্রোমাটিন ক্যান্সার বা অন্যান্য জেনেটিক রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে2
বয়সজনিত পরিবর্তন:
বার্ধক্যের সঙ্গে হেটেরোক্রোমাটিনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, ফলে কোষের জিনের কার্যকারিতা হ্রাস পেতে থাকে।
এটি কোষের অপকৃতিজনিত পরিবর্তন (degeneration) ও বার্ধক্যজনিত রোগের কারণ হতে পারে।
উপসংহার:
ক্রোমোজোমে হেটেরোক্রোমাটিনের আধিক্য হলে জিনের কার্যকারিতা হ্রাস, কোষ বিভাজনের ব্যাঘাত, বার্ধক্য, ক্যান্সারের ঝুঁকি ও জিনগত রোগ দেখা দিতে পারে। সুতরাং, জীবের স্বাভাবিক বিকাশ ও স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ইউক্রোমাটিন ও হেটেরোক্রোমাটিনের ভারসাম্য থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৩.৪ বংশগতি সম্পর্কিত নীচের শব্দ দুটি ব্যাখ্যা করো
- জিনোটাইপ
- সংকরায়ণ
উত্তর:
(১) জিনোটাইপ (Genotype):
জিনোটাইপ হলো একটি জীবের জেনেটিক গঠন বা জিনের বিন্যাস, যা তার নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে। এটি বংশগত তথ্য ধারণ করে এবং DNA-তে উপস্থিত নির্দিষ্ট জিনের সংমিশ্রণকে বোঝায়।
উদাহরণ:
- মটরগাছের উচ্চতা নিয়ন্ত্রণকারী TT (উচ্চ), Tt (মধ্যম), tt (বামন)—এগুলোর প্রত্যেকটি একটি জিনোটাইপ।
- মানুষের রক্তের গ্রুপের জন্য AA, AO, BB, BO, AB, OO—এসব বিভিন্ন জিনোটাইপের উদাহরণ।
বিশেষ বৈশিষ্ট্য:
- জিনোটাইপ দৃশ্যমান নয়, এটি শুধু জিনগত উপাদানের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়।
- পরিবেশের প্রভাব ছাড়াই এটি অপরিবর্তিত থাকে।
(২) সংকরায়ণ (Hybridization):
সংকরায়ণ হল দুইটি ভিন্ন জিনোটাইপ বা জাতের অভিভাবকের মধ্যে প্রজনন প্রক্রিয়া, যার ফলে নতুন বৈশিষ্ট্যযুক্ত সন্তান উৎপন্ন হয়। এটি মূলত উন্নত গুণাবলীসম্পন্ন প্রাণী ও উদ্ভিদ সৃষ্টি করতে ব্যবহৃত হয়।
সংকরায়ণের ধরণ:
1. আন্তঃপ্রজাতি সংকরায়ণ (Interspecific Hybridization): দুইটি ভিন্ন প্রজাতির মধ্যে সংকরায়ণ।
উদাহরণ: খচ্চর (ঘোড়া × গাধা)।
2. আন্তঃজাতি সংকরায়ণ (Intraspecific Hybridization): একই প্রজাতির ভিন্ন জাতের মধ্যে সংকরায়ণ।
উদাহরণ: উন্নত জাতের ধান, গম বা গাভী তৈরি করা।
সংকরায়ণের উপকারিতা:
- রোগ প্রতিরোধী প্রজাতির উন্নয়ন।
- গৃহপালিত প্রাণীর দুধ ও মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি।
৩.৫ যদি একজন আপাত স্বাভাবিক মহিলা কোনো স্বাভাবিক পুরুষকে বিবাহ করেন এবং তাঁদের দুটি পুত্র সন্তান হয় তাহলে ওই পুত্রদের দেহে হিমোফিলিয়ার সম্ভাবনা কত একটি ব্রুসের মাধ্যমে দেখাও।
উত্তর:
সমস্যা বিশ্লেষণ:
হিমোফিলিয়া একটি X-লিংকড বিপর্যস্ত রোগ।
পুরুষদের (XY) ক্ষেত্রে একটি মাত্র আক্রান্ত X ক্রোমোজোম থাকলেই হিমোফিলিয়া হয়।
মহিলারা (XX) একটি আক্রান্ত (Xᴴ) এবং একটি সুস্থ (X) জিন বহন করলে বাহক হন।
একজন বাহক মহিলা (XᴴX) যদি স্বাভাবিক (XY) পুরুষের সঙ্গে বিবাহ করেন, তাহলে তাঁদের সন্তানদের হিমোফিলিয়ার সম্ভাবনা জানতে হবে।
দ্বি-বাহক (Punnett Square) বিশ্লেষণ:
মায়ের জিনোটাইপ → XᴴX (বাহক মহিলা)
বাবার জিনোটাইপ → XY (স্বাভাবিক পুরুষ)
Punnett Square (বংশগত ব্রুস):

ফলাফল:
২৫% (1/4) স্বাভাবিক মেয়ে (XX)
২৫% (1/4) বাহক মেয়ে (XᴴX)
২৫% (1/4) স্বাভাবিক ছেলে (XY)
২৫% (1/4) হিমোফিলিয়া আক্রান্ত ছেলে (XᴴY)
প্রশ্ন অনুযায়ী দুইটি পুত্র সন্তানের ক্ষেত্রে সম্ভাবনা:
প্রতিটি সন্তানের হিমোফিলিয়া হওয়ার সম্ভাবনা ৫০% (1/2)।
৩.৬ ইউট্রফিকেশন ও বায়োম্যাগনিফিকেশনের মধ্যে নিম্নলিখিত দুটি বিষয়ে তুলনা করো
- কারণ
- ফলাফল
উত্তর:
বিষয় | ইউট্রফিকেশন | বায়োম্যাগনিফিকেশন |
কারণ | অতিরিক্ত পুষ্টি উপাদান (যেমন নাইট্রেট ও ফসফেট) জলে জমা হলে এটি ঘটে। | পরিবেশে বিষাক্ত রাসায়নি ক (যেমন DDT, পারদ, PCBs) প্রবেশ করে এবং খাদ্য শৃঙ্খলে জমা হয়। |
ফলাফল | শৈবালের অত্যধিক বৃদ্ধি (Algal bloom) ঘটে, যা জলজ প্রাণীর অক্সিজে নের ঘাটতি ও মৃত্যু ঘটায়। | বিষাক্ত পদার্থ উচ্চ ট্রফিক স্তরে (শীর্ষভুক প্রাণীদের মধ্যে) সর্বাধিক পরিমাণে জমা হয়, যা মানুষসহ শিকারী প্রাণীদের ক্ষতিগ্রস্ত করে। |
উপসংহার:
ইউট্রফিকেশন মূলত জলজ বাস্তুতন্ত্রের সমস্যা সৃষ্টি করে, যেখানে বায়োম্যাগনিফিকেশন সম্পূর্ণ খাদ্য শৃঙ্খলকে প্রভাবিত করে এবং শীর্ষভোক্তাদের বেশি ক্ষতি করে।
৩.৭ নাইট্রোজেন চক্র ব্যাহত হলে কী কী পরিবেশগত সমস্যা সৃষ্টি হয়?
উত্তর:
নাইট্রোজেন চক্র ব্যাহত হলে পরিবেশগত সমস্যা:
নাইট্রোজেন চক্র হল জীবমণ্ডলে নাইট্রোজেনের চলাচল ও রূপান্তর প্রক্রিয়া। যদি এই চক্র ব্যাহত হয়, তাহলে বিভিন্ন পরিবেশগত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
(১) মৃত জোন বা ইউট্রফিকেশন:
- নাইট্রোজেনের অতিরিক্ত ব্যবহার (যেমন রাসায়নিক সার) নদী, হ্রদ ও সমুদ্রে প্রবাহিত হলে জলজ উদ্ভিদের অতিবৃদ্ধি ঘটে।
- শৈবাল মারা গিয়ে অক্সিজেনের ঘাটতি তৈরি করে, ফলে জলজ প্রাণী মারা যায় এবং মৃত জোন (Dead Zone) তৈরি হয়।
(২) মাটির উর্বরতা হ্রাস:
নাইট্রোজেন সংশ্লেষণকারী ব্যাকটেরিয়ার কার্যকারিতা কমে গেলে মাটিতে নাইট্রোজেনের অভাব হয়, যা ফসল উৎপাদন কমিয়ে দেয়।
(৩) বায়ু দূষণ ও অ্যাসিড বৃষ্টি:
- যানবাহন ও কলকারখানা থেকে নির্গত নাইট্রোজেন অক্সাইড (NO₂, NO₃) বায়ুমণ্ডলে গিয়ে অ্যাসিড বৃষ্টি (Acid Rain) সৃষ্টি করে।
- এটি মাটি, ফসল ও জলজ বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি করে।
(৪) গ্লোবাল ওয়ার্মিং বৃদ্ধি:
- নাইট্রোজেন সার বেশি ব্যবহারে নাইট্রাস অক্সাইড (N₂O) নির্গত হয়, যা একটি শক্তিশালী গ্রীনহাউস গ্যাস।
- এটি তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে।
(৫) বিশুদ্ধ পানির অভাব:
- ভূগর্ভস্থ জলে নাইট্রেট জমা হলে এটি পান করার অনুপযোগী হয়ে যায়।
- এটি নীল শিশু রোগ ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে।
৩.৮ ইন্দো-বার্মা হটস্পট ও সুন্দাল্যান্ড হটস্পটের বিপন্ন জীববৈচিত্র্যের একটি তালিকা প্রস্তুত করো।
উত্তর: ইন্দো-বার্মা হটস্পট ও সুন্দাল্যান্ড হটস্পট দুটি গুরুত্বপূর্ণ জীববৈচিত্র্য অঞ্চল, যেখানে অনেক বিপন্ন প্রজাতি পাওয়া যায়।
ইন্দো-বার্মা হটস্পটে বিপন্ন প্রাণীর মধ্যে রয়েছে – এশীয় হাতি, মালায়ান ট্যাপির, হুলক গিবন, বেঙ্গল ফ্লোরিকান এবং বেঙ্গল টাইগার। এই অঞ্চলে অনেক উভচর ও সরীসৃপও বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে।
অন্যদিকে, সুন্দাল্যান্ড হটস্পটে পাওয়া যায় – ওরাংওটান, সুমাত্রান রাইনো, মালায়ান সান বিয়ার, তাপির, ও সুমাত্রান টাইগার। এখানে বিরল গাছপালাও রয়েছে, যা বন উজাড়ের ফলে হুমকির মুখে। এই দুই হটস্পট বিশ্ব জীববৈচিত্র্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৩.৯ সমুদ্রের জলের তাপমাত্রা ও অম্লত্ব বাড়লে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের ওপর কী কী প্রভাব পড়তে পারে?
উত্তর:
সমুদ্রের জলের তাপমাত্রা ও অম্লত্ব বৃদ্ধির ফলে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের ওপর প্রভাব:
(১) সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রভাব:
(ক) প্রবালফলের (Coral Bleaching) ক্ষতি:
সমুদ্রের উচ্চ তাপমাত্রার কারণে প্রবাল থেকে জুওক্স্যানথেলি শৈবাল বেরিয়ে যায়, ফলে প্রবাল সাদা হয়ে যায়।
এর ফলে প্রবালফল ধ্বংস হয়ে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য সংকটে পড়ে।
(খ) সামুদ্রিক প্রাণীদের খাদ্যশৃঙ্খলে সমস্যা:
ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটনের বৃদ্ধির হার কমে গেলে জুপ্ল্যাঙ্কটন, মাছ ও অন্যান্য প্রাণীর খাদ্য সরবরাহ হ্রাস পায়।
এর ফলে মৎস্যশিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
(গ) সামুদ্রিক প্রাণীদের বাসস্থান পরিবর্তন:
অনেক সামুদ্রিক প্রাণী (যেমন শীতল পানির মাছ) উষ্ণতা সহ্য করতে না পেরে অন্য অঞ্চলে স্থানান্তরিত হয়, যা প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট করে।
(২) সমুদ্রের অম্লত্ব (pH হ্রাস) বৃদ্ধির প্রভাব:
(ক) মাছ ও অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীর বিপন্নতা:
কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে গেলে অনেক মাছের স্নায়ু ও আচরণগত সমস্যা দেখা দেয়, যা তাদের শিকার ও খাদ্য সংগ্রহে ব্যাঘাত ঘটায়।
সামুদ্রিক প্রজাতির বিলুপ্তির হার বাড়ে।
(খ) সামুদ্রিক খাদ্য শৃঙ্খল ধ্বংসের সম্ভাবনা:
প্রবালফল ও শামুক জাতীয় প্রাণী ক্ষতিগ্রস্ত হলে পুরো সামুদ্রিক খাদ্যশৃঙ্খলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
(ঘ) মৎস্যসম্পদ ও মানুষের ওপর প্রভাব:
মাছের উৎপাদন কমে গেলে মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের জীবিকা হুমকির মুখে পড়ে।
সামুদ্রিক খাদ্য উৎপাদন কমে গেলে মানুষের পুষ্টি ঘাটতির ঝুঁকি বাড়ে।
৩.১০ উদ্ভিদদেহের বৃদ্ধিতে অক্সিন হরমোনের দুইটি ভূমিকা উল্লেখ করো।
উত্তর:
উদ্ভিদদেহের বৃদ্ধিতে অক্সিন হরমোনের ভূমিকা
(১) কোষ প্রসারণ ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
অক্সিন কোষ প্রাচীর নমনীয় করে এবং কোষে পানি প্রবেশ বাড়িয়ে কোষের আয়তন বৃদ্ধি করে, ফলে উদ্ভিদের কান্ড ও মূল লম্বালম্বিভাবে বৃদ্ধি পায়।
(২) ফটোট্রপিজম ও গ্র্যাভিট্রপিজম নিয়ন্ত্রণ করে
অক্সিন আলো থেকে দূরের অংশে বেশি জমা হয়, ফলে ওই অংশ বেশি বৃদ্ধি পায় এবং উদ্ভিদ আলোর দিকে বাঁকতে থাকে (ফটোট্রপিজম)। মূলের ক্ষেত্রে, অক্সিন মাটির অভিমুখে বৃদ্ধিতে সাহায্য করে (গ্র্যাভিট্রপিজম)।
৩.১১ কোনো একজন ব্যক্তি রাস্তায় চলাচল করার সময় কীভাবে উপযোজন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন?
উত্তর:
রাস্তায় চলাচলের সময় একজন ব্যক্তির উপযোজন প্রক্রিয়া
(১) দৃষ্টি ও শ্রবণ ইন্দ্রিয় ব্যবহার
একজন ব্যক্তি চোখ ও কান ব্যবহার করে চারপাশের যানবাহন ও পথচারীদের উপস্থিতি বুঝতে পারেন, যা তাকে পথ চলার সময় নিরাপদ সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।
(২) পেশি ও স্নায়ুর সমন্বয়
ব্যক্তি চলার পথে সমতা বজায় রাখতে পেশি ও স্নায়ুর সমন্বয় ঘটান এবং প্রয়োজন হলে দ্রুত দিক পরিবর্তন করে বিপদ এড়ান।
৩.১২ একজন ব্যক্তির 24 ঘণ্টার প্রাত্যহিক জীবনে হাইপোথালামাস ও সুযুম্নাশীর্ষকের একটি করে ভূমিকা উল্লেখ করো।
উত্তর:
২৪ ঘণ্টার প্রাত্যহিক জীবনে হাইপোথালামাস ও সুযুম্নাশীর্ষকের ভূমিকা
(১) হাইপোথালামাসের ভূমিকা – দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ
হাইপোথালামাস দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। যেমন, শরীর বেশি গরম হলে এটি ঘাম উৎপন্ন করে তাপমাত্রা কমায় এবং ঠান্ডায় শরীর কাঁপিয়ে তাপ উৎপন্ন করে।
(২) সুযুম্নাশীর্ষকের ভূমিকা – প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন সুজুম্নাশীর্ষক দ্রুত প্রতিক্রিয়া প্রদানে সাহায্য করে। মস্তিষ্কের সঙ্গে দেহের অন্যান্য অংশের যোগাযোগ রক্ষা করা। যেমন, গরম বস্তু ছোঁয়ার সাথে সাথে হাত সরিয়ে নেওয়া, যা শরীরকে তাৎক্ষণিক বিপদ থেকে রক্ষা করে।
৩.১৩ স্নায়ুকোশ, স্নায়ুতত্ত্ব ও স্নায়ুর মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করো।
উত্তর:
স্নায়ুকোশ, স্নায়ুতত্ত্ব ও স্নায়ুর মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক
(১) স্নায়ুকোশ ও স্নায়ুর সম্পর্ক
স্নায়ুকোশ হল স্নায়ুর গঠন ও কার্যকরী একক। একাধিক স্নায়ুকোশ একত্রিত হয়ে স্নায়ু (Nerve) তৈরি করে, যা শরীরের বিভিন্ন অংশে সংকেত পরিবহন করে।
(২) স্নায়ুতত্ত্ব ও স্নায়ুর সম্পর্ক
স্নায়ুতত্ত্ব হল সেই বিজ্ঞান শাখা, যা স্নায়ুকোশ, স্নায়ু এবং তাদের কার্যপ্রণালী নিয়ে গবেষণা করে। এটি বোঝায় কিভাবে স্নায়ু সংকেত গ্রহণ ও প্রেরণ করে।
৩.১৪ বিশুদ্ধ গোল-হলুদ (RRYY) বীজ ধারণকারী মটরগাছের ফুলের সংগে বিশুদ্ধ কুঞ্চিত সবুজ (nyy) বীজ ধারণকারী মটরগাছের ফুলের ইতর পরাগযোগ ঘটলে F₂ জনুতে যে সকল জিনোটাইপের জিনোটাইপিক অনুপাত দুই (2) সেগুলি সারণির সাহায্যে দেখাও।
উত্তর: F₂ প্রজন্মের জিনোটাইপিক অনুপাত ২ (Two) সারণির সাহায্যে
প্রথমে পারেন্টাল (P) ক্রস:
গোল-হলুদ (RRYY) × কুঞ্চিত-সবুজ (rryy)
F₁ প্রজন্ম: সব হেটেরোজাইগাস (RrYy) হবে।
F₂ প্রজন্মে (RrYy × RrYy) পুন্নেট স্কোয়ার:
জিনোটাইপ | অনুপাত |
RRYy | 2 |
RrYY | 2 |
rrYy | 2 |
Rryy | 2 |
উপসংহার:
F₂ প্রজন্মে চারটি জিনোটাইপের অনুপাত ২ পাওয়া যায়: RRYy, RrYY, rrYy ও Rryy।
৩.১৫ একটি উঁচু কোটরযুক্ত গাছে যে সকল প্রাণী থাকতে পারে তাদের নিরিখে যে কোনো দুই প্রকার সম্ভাব্য জীবন-সংগ্রামের উদাহরণ দাও।
উত্তর:
উঁচু কোটরযুক্ত গাছে বসবাসকারী প্রাণীদের মধ্যে সম্ভাব্য জীবন-সংগ্রামের উদাহরণ
(১) খাদ্যের জন্য প্রতিযোগিতা
কাঠঠোকরা, কাঠবিড়ালি ও মৌমাছি একই গাছে বসবাস করতে পারে, তবে তারা একই খাদ্য উৎস (ফল, পোকামাকড়) সংগ্রহের জন্য প্রতিযোগিতা করতে পারে।
(২) আশ্রয়ের জন্য প্রতিযোগিতা
পেঁচা ও কাঠবিড়ালি একই কোটরে বাস করতে চাইতে পারে, ফলে তারা বাসস্থানের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে।
উপসংহার:
একই গাছে বসবাসকারী প্রাণীরা খাদ্য ও আশ্রয়ের জন্য জীবন-সংগ্রামে লিপ্ত হতে পারে, যা তাদের বেঁচে থাকার কৌশলের অংশ।
৩.১৬ উটের অতিরিক্ত জল ক্ষয় সহনের ক্ষমতার সঙ্গে RBC এর আকৃতির সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করো।
উত্তর:
উটের অতিরিক্ত জল ক্ষয় সহনক্ষমতা ও RBC-এর আকৃতির সম্পর্ক
(১) উটের RBC-এর অনন্য আকৃতি
উটের RBC ডিম্বাকৃতির যা সাধারণ গোলাকার RBC-এর তুলনায় জলশূন্যতার সময় বেশি স্থিতিস্থাপক থাকে এবং সহজে কাজ করতে পারে।
(২) জল সংরক্ষণ ও সঞ্চালনে সহায়তা
উটের RBC-এর মধ্যে একটি নিউক্লিয়াস থাকে। ডিম্বাকৃতির RBC জলের অভাবে সংকুচিত হলেও কার্যকর থাকে এবং জল পাওয়া মাত্র দ্রুত স্বাভাবিক আকার ধারণ করে, ফলে উট দীর্ঘ সময় জল ছাড়া বেঁচে থাকতে পারে।
৩.১৭ ঘোড়ার অভিব্যক্তির ইতিহাসে কীভাবে আঙ্গুলের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তিত হয়েছে ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
ঘোড়ার অভিব্যক্তির ইতিহাসে আঙুলের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন
(১) পূর্বপুরুষের বহু আঙুলযুক্ত পা → আধুনিক একক খুর
প্রাচীন ঘোড়ার পূর্বপুরুষ Eohippus-এর সামনের পায়ে চারটি এবং পেছনের পায়ে তিনটি আঙুল ছিল। বিবর্তনের ফলে ধীরে ধীরে ছোট আঙুলগুলো ক্ষুদ্রতর হয়ে হারিয়ে যায় এবং একটি প্রধান আঙুল (তৃতীয় অঙ্গুলি) খুরে রূপ নেয়।
(২) দ্রুত চলাচলের জন্য অভিযোজন
প্রাকৃতিক নির্বাচনের ফলে তৃণভূমিতে দ্রুত দৌড়ানোর সুবিধার্থে ঘোড়ার একক খুরযুক্ত শক্তিশালী পা গঠিত হয়, যা তাকে শিকারীদের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
বিভাগ ‘ঘ’
৪। নীচের ছয়টি বা তার বিকল্প প্রশ্নের উত্তর লেখো। দষ্টিহীন পরীক্ষার্থীদের ৪.১ নং প্রশ্নের পরিবর্তে ৪.১ (A) নং প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। প্রতিটি প্রশ্নের মান ৫ (প্রশ্নের মান বিভাজন বা ৫ হতে পারে)।
৪.১ মানুষের অক্ষিগোলকের লম্বচ্ছেদের একটি বিজ্ঞানসম্মত চিত্র অঙ্কন করো এবং নিম্নলিখিত অংশগুলো চিহ্নিত করো-
(ক) কর্নিয়া
(খ) লেন্স
(গ) ভিট্রিয়াস হিউমর
(ঘ) রেটিনা
উত্তর:

অথবা, প্রাণীকোশের মাইটোসিসের অ্যানাফেজ দশার একটি বিজ্ঞানসম্মত চিত্র অঙ্কন করে নিম্নলিখিত অংশগুলো চিহ্নিত করো
(ক) অপত্য ক্রোমোজোম
(খ) অবিচ্ছিন্ন তত্ত্ব
(গ) সেন্ট্রিওল
(ঘ) ক্রোমোজোমাল তত্ত্ব
উত্তর:
৪.২ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ক্রায়োসংরক্ষণের ভূমিকা কী? PBR থেকে সংরক্ষণ সংক্রান্ত কী কী তথ্য পাওয়া যায়?
উত্তর:
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ক্রায়োসংরক্ষণের ভূমিকা
ক্রায়োসংরক্ষণ হল অতি নিম্ন তাপমাত্রায় জীবন্ত কোষ, টিস্যু বা জিনগত উপাদান সংরক্ষণ করার একটি প্রক্রিয়া, যা জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ক্রায়োসংরক্ষণের ভূমিকা:
1. বিপন্ন ও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির সংরক্ষণ – বিরল উদ্ভিদ ও প্রাণীর কোষ বা বীজ সংরক্ষণ করে ভবিষ্যতে পুনরুজ্জীবিত করা যায়।
2. কৃষি ও ওষুধ গবেষণায় সহায়তা – মূল্যবান ফসল ও ওষুধি গাছের জিন সংরক্ষণ করে ভবিষ্যতে ব্যবহার করা সম্ভব।
3. গবেষণা ও পুনঃপ্রজনন – প্রাণীদের শুক্রাণু ও ডিম্বাণু সংরক্ষণ করে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম তৈরি করা যায়।
(২) PBR (People’s Biodiversity Register) থেকে সংরক্ষণ সংক্রান্ত তথ্য
PBR একটি নথি, যেখানে স্থানীয় জীববৈচিত্র্য, প্রজাতির বিলুপ্তি ঝুঁকি ও সংরক্ষণ পদ্ধতির তথ্য সংরক্ষিত থাকে।
PBR থেকে পাওয়া সংরক্ষণ সংক্রান্ত তথ্য:
1. স্থানীয় জীববৈচিত্র্যের তালিকা – নির্দিষ্ট অঞ্চলের উদ্ভিদ ও প্রাণীর প্রজাতির তথ্য সংরক্ষণ করা হয়।
2. সংরক্ষণ পদ্ধতি – ঐতিহ্যবাহী সংরক্ষণ কৌশল, স্থানীয় সম্প্রদায়ের ভূমিকা ও সরকারি উদ্যোগ সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।
অথবা, চোরাশিকারের ফলে কোন্ কোন্ প্রাণী বিপন্ন তার একটি তালিকা তৈরী করো। পরিবেশগত কী কী কারণে ক্যান্সারের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে?
উত্তর:
(১) চোরাশিকারের ফলে বিপন্ন প্রাণীর তালিকা
চোরাশিকারের কারণে অনেক প্রাণী বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিপন্ন প্রাণীর তালিকা দেওয়া হলো—
1. বেঙ্গল টাইগার (Panthera tigris tigris) – চামড়া, হাড় ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জন্য শিকার করা হয়।
2. এশীয় হাতি (Elephas maximus) – হাতির দাঁতের জন্য চোরাশিকার করা হয়।
3. গ্যান্ডার (Rhinoceros spp.) – শিং সংগ্রহের জন্য শিকার করা হয়।
4. তুষার চিতা (Panthera uncia) – চামড়া ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জন্য শিকার করা হয়।
5. প্যাঙ্গোলিন (Manis spp.) – আঁশ ও মাংসের জন্য অবৈধভাবে শিকার করা হয়।
(২) পরিবেশগত কারণে ক্যান্সারের সম্ভাবনা বৃদ্ধির কারণ
বিভিন্ন পরিবেশগত কারণে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ছে, যেমন—
1. দূষণ: বায়ু, জল ও মাটিতে বিষাক্ত রাসায়নিক যেমন বেনজিন, ডাইঅক্সিন ও ভারী ধাতু ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
2. তেজস্ক্রিয়তা: অতিবেগুনি (UV) রশ্মি ও পারমাণবিক বিকিরণ ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
3. কীটনাশক ও রাসায়নিক: খাদ্যে ব্যবহৃত কীটনাশক ও প্রক্রিয়াজাত খাবারে রাসায়নিক সংযোজন ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
4. ধূমপান ও বায়ু দূষণ: বায়ুতে থাকা ক্ষতিকর কণা ও ধূমপানের কারণে ফুসফুস ও অন্যান্য অঙ্গের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে।
৪.৩ ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন প্রজাতির উৎপত্তি তত্ত্বে উল্লিখিত পর্যবেক্ষণ থেকে প্রাপ্ত তিনটি সিদ্ধান্ত সারণির সাহায্যে লেখো। শিম্পাঞ্জির খাদ্য সংগ্রহ সংক্রান্ত সমস্যা-সমাধান দক্ষতা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচনের তত্ত্ব অনুযায়ী তিনটি সিদ্ধান্ত
চার্লস ডারউইনের পর্যবেক্ষণ থেকে নিম্নলিখিত তিনটি সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়—
1. সংগ্রামের ফলে যোগ্যতমের বেঁচে থাকা – যেসব জীব তাদের পরিবেশের সাথে ভালোভাবে খাপ খাইয়ে নিতে পারে, তারা বেঁচে থাকে এবং বংশবিস্তারের সুযোগ পায়।
2. উত্তরাধিকারসূত্রে বৈশিষ্ট্য প্রাপ্তি – উপযোগী জীবদের বৈশিষ্ট্য পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে প্রবাহিত হয়, ফলে তারা আরও উন্নত হয়।
3. নতুন প্রজাতির উদ্ভব – দীর্ঘ সময় ধরে অভিযোজন ঘটতে থাকলে নতুন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন জীব গঠিত হয়, যা নতুন প্রজাতির জন্ম দিতে পারে।
শিম্পাঞ্জির খাদ্য সংগ্রহ সংক্রান্ত সমস্যা-সমাধান দক্ষতা–
শিম্পাঞ্জিরা খাদ্য সংগ্রহের সময় বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে, যা তাদের বুদ্ধিমত্তা ও সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা প্রদর্শন করে।
1. সরঞ্জাম ব্যবহার: শিম্পাঞ্জিরা কাঠি, পাথর বা পাতা ব্যবহার করে পিঁপড়া বা মধু বের করে খায়।
2. পরিকল্পিত শিকার: তারা দলবদ্ধভাবে শিকার করে এবং কাজ ভাগ করে নেয়, যা দলগত বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক।
3. পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানো: নতুন ধরনের খাদ্য উৎস খুঁজে বের করা ও তা গ্রহণ করার ক্ষমতা তাদের অভিযোজন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
4. শিক্ষা ও পর্যবেক্ষণ: তারা অভিজ্ঞ শিম্পাঞ্জিদের পর্যবেক্ষণ করে এবং সেই অনুযায়ী নতুন কৌশল শেখে।
5. স্মৃতি ও অভিজ্ঞতা: পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে খাদ্য সংগ্রহের কৌশল পরিবর্তন করে।
এই দক্ষতাগুলো শিম্পাঞ্জিদের টিকে থাকার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে এবং তাদের বুদ্ধিমত্তার প্রমাণ দেয়।
অথবা, অভিব্যক্তির মুখ্য ঘটনাবলি একটি সারণির সাহায্যে দেখাও। পায়রার উড্ডয়নে বায়ুথলির ভূমিকা কী?
উত্তর:
অভিব্যক্তির মুখ্য ঘটনাবলি একটি সারণির মাধ্যমে নিচে তুলে ধরা হলোঃ
পর্যায় | প্রধান ঘটনা |
---|---|
১ | উদ্ভিদ পাতার স্টোমাটা ছিদ্র দিয়ে বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে। |
২ | সূর্যালোকের উপস্থিতিতে পাতার ক্লোরোফিল আলো শোষণ করে। |
৩ | ক্লোরোপ্লাস্টে আলোক ও কার্বন ডাই-অক্সাইডের বিক্রিয়ায় গ্লুকোজ তৈরি হয়। |
৪ | এই প্রক্রিয়ার উপজাত হিসেবে অক্সিজেন উৎপন্ন হয় ও পরিবেশে নিঃসরণ হয়। |
৫ | তৈরি হওয়া গ্লুকোজ উদ্ভিদের কোষে খাদ্য ও শক্তির উৎস হিসেবে জমা থাকে। |
পায়রার উড্ডয়নে বায়ুথলির ভূমিকা:
পায়রার দেহে বায়ুথলি (Air sac) একটি গুরুত্বপূর্ণ গঠন যা তাদের শ্বাসপ্রশ্বাস এবং উড্ডয়নে সহায়তা করে। উড়ার সময় প্রচুর শক্তির প্রয়োজন হয়, যা অক্সিজেনের মাধ্যমে কোষে পৌঁছায়। বায়ুথলি ফুসফুসের সাথে সংযুক্ত থাকে এবং অতিরিক্ত বাতাস ধরে রাখতে সাহায্য করে, ফলে পায়রা উড়ার সময় বেশি অক্সিজেন পায়।
এছাড়া বায়ুথলি দেহকে হালকা রাখে, যাতে পায়রা সহজে এবং দীর্ঘ সময় ধরে ক্লান্ত না হয়ে আকাশে উড়তে পারে। এটি দেহের অতিরিক্ত তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। এইভাবে বায়ুথলি পায়রার উড্ডয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক অঙ্গ হিসেবে কাজ করে।
৪.৪ একজন ডাক্তার সারাদিনে তার রোগীদের মধ্যে পরিবেশ দূষণজনিত কোন্ কোন্ রোগ লক্ষ্য করেন তার একটি তালিকা তৈরি করো। কোনো একটি জাতীয় উদ্যানে বাঘ ও একশৃংগ গণ্ডার উভয়েরই সংরক্ষণের সংগে কোন্ কোন্ ইন-সিটু ব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট?
উত্তর:
পরিবেশ দূষণজনিত রোগের তালিকা
একজন ডাক্তার সারাদিনে তার রোগীদের মধ্যে নিম্নলিখিত পরিবেশ দূষণজনিত রোগগুলো লক্ষ্য করতে পারেন—
1. বায়ুদূষণজনিত রোগ:
- অ্যাজমা (Asthma)
- ব্রঙ্কাইটিস (Bronchitis)
- ফুসফুসের ক্যান্সার (Lung Cancer)
2. জলদূষণজনিত রোগ:
- ডায়রিয়া (Diarrhea)
- হেপাটাইটিস (Hepatitis)
- টাইফয়েড (Typhoid)
3. মাটিদূষণজনিত রোগ:
- ত্বকের সমস্যা (Skin Diseases)
- খাদ্যে বিষক্রিয়া (Food Poisoning)
4. শব্দদূষণজনিত সমস্যা:
- শ্রবণশক্তি হ্রাস (Hearing Loss)
- মানসিক চাপ ও অনিদ্রা (Stress & Insomnia)
বাঘ ও একশৃঙ্গ গণ্ডার সংরক্ষণের ইন-সিটু ব্যবস্থা
একটি জাতীয় উদ্যানে বাঘ ও একশৃঙ্গ গণ্ডার সংরক্ষণের জন্য নিম্নলিখিত ইন-সিটু (In-situ) সংরক্ষণ ব্যবস্থা নেওয়া হয়—
1. জাতীয় উদ্যান ও সংরক্ষিত অঞ্চল স্থাপন: যেমন, কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান (একশৃঙ্গ গণ্ডার) ও সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান (বাঘ)।
2. শিকার ও পাচার রোধ: কঠোর আইন প্রয়োগ করে অবৈধ শিকার বন্ধ করা।
3. প্রাকৃতিক আবাসস্থল সংরক্ষণ: বনাঞ্চল ধ্বংস রোধ করে তাদের বাসস্থান রক্ষা করা।
4. সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও পর্যবেক্ষণ: সংরক্ষিত অঞ্চলে প্রাণীদের চলাচল ও স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করা।
5. স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা: সংরক্ষণ কার্যক্রমে স্থানীয় মানুষকে যুক্ত করা ও তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
এই পদক্ষেপগুলো গ্রহণের মাধ্যমে বাঘ ও একশৃঙ্গ গণ্ডার উভয়কেই প্রকৃতির মধ্যে সংরক্ষণ করা হয়।
অথবা, জীববৈচিত্র্যের সংখ্যাহ্রাসের সংগে অতিব্যবহারের সম্পর্ক দুটি উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করো। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার ফলে যে যে সমস্যার সৃষ্টি হয় তার একটি মানস মানচিত্র নির্মাণ করো।
উত্তর:
জীববৈচিত্র্যের সংখ্যাহ্রাসের সঙ্গে অতিব্যবহারের সম্পর্ক
অতিব্যবহার (Overexploitation) তখন ঘটে যখন কোনো প্রজাতিকে তার পুনরুৎপাদন ক্ষমতার তুলনায় বেশি ব্যবহার বা আহরণ করা হয়। এটি জীববৈচিত্র্যের হ্রাসের একটি প্রধান কারণ এবং অনেক প্রজাতির বিলুপ্তির জন্য দায়ী।
দুটি উদাহরণ:
1. বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা হ্রাস:
বেঙ্গল টাইগারকে (Royal Bengal Tiger) তার চামড়া, হাড় ও অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য অবৈধভাবে শিকার করা হয়েছে।
এর ফলে তাদের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে, এবং তারা বর্তমানে বিপন্ন (Endangered) প্রজাতির তালিকায় রয়েছে।
2. অতিমাত্রায় বন উজাড়ের ফলে অরণ্যবাসী প্রাণীর বিলুপ্তি:
অতিরিক্ত কাঠ আহরণ, কৃষিজমি তৈরির জন্য বন নিধন এবং নগরায়ণের ফলে হাতি, ওরাংওটাং, স্লথ বিয়ারসহ অনেক বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল নষ্ট হয়েছে।
বাসস্থান ধ্বংসের কারণে এই প্রজাতিগুলোর সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে এবং অনেকেই বিলুপ্তির পথে রয়েছে।
এই দুটি উদাহরণ দেখায় যে অতিব্যবহার ও অতিরিক্ত শোষণের ফলে জীববৈচিত্র্যের সংখ্যা কমে যায় এবং অনেক প্রজাতি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়ে।
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার ফলে সৃষ্ট সমস্যা মানস মানচিত্র নির্মাণ
জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধির ফলে বিভিন্ন অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত সমস্যা দেখা দেয়। এর ফলে মানুষের জীবনযাত্রার মানের অবনতি ঘটে এবং প্রাকৃতিক সম্পদের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে।
১. খাদ্য সংকট:
- খাদ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদিত খাদ্য পর্যাপ্ত হয় না।
- অপুষ্টি ও দুর্ভিক্ষের সমস্যা দেখা দেয়।
২. বাসস্থান সংকট:
- অধিক জনসংখ্যার কারণে শহরে বস্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
- জমির অভাব ও বাড়ি ভাড়ার দাম বেড়ে যায়।
৩. শিক্ষা সংকট:
- বিদ্যালয় ও কলেজে ছাত্রসংখ্যা বেশি হওয়ায় মানসম্মত শিক্ষা ব্যাহত হয়।
- শিক্ষার সুযোগ কমে গিয়ে নিরক্ষরতার হার বাড়ে।
৪. স্বাস্থ্য সমস্যা:
- হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্রের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে।
- পানির দূষণ ও অপুষ্টির কারণে বিভিন্ন রোগ বৃদ্ধি পায়।
৫. পরিবেশ দূষণ:
- অতিরিক্ত জনসংখ্যার কারণে বন নিধন, জলবায়ু পরিবর্তন ও বায়ুদূষণ বেড়ে যায়।
- বর্জ
৪.৫ জিন, DNA ও ক্রোমোজোমের আন্তঃসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করো। অংগজ বংশবিস্তারের সুবিধা কী কী?
উত্তর:
জিন, DNA ও ক্রোমোজোমের আন্তঃসম্পর্ক
জিন, ডিএনএ (DNA) ও ক্রোমোজোম একে অপরের সাথে সম্পর্কিত এবং জীবের বংশগত বৈশিষ্ট্য নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
1. ডিএনএ (DNA – Deoxyribonucleic Acid):
- এটি দ্বিগুণ সর্পিল (Double Helix) আকৃতির এক ধরনের জৈবিক অণু, যা জীবের বংশগত তথ্য ধারণ করে।
- ডিএনএ-র মধ্যে নিউক্লিওটাইড বিন্যাস অনুযায়ী জিন গঠিত হয়।
2. জিন (Gene):
- এটি ডিএনএ-র নির্দিষ্ট অংশ, যা কোনো নির্দিষ্ট প্রোটিন তৈরির জন্য দায়ী।
- জিনের মাধ্যমে জীবের বৈশিষ্ট্য, যেমন চুলের রং, উচ্চতা, রক্তের গ্রুপ ইত্যাদি নির্ধারিত হয়।
3. ক্রোমোজোম (Chromosome):
- এটি নিউক্লিয়াসের ভেতরে অবস্থিত ডিএনএ ও প্রোটিন দিয়ে গঠিত কাঠামো।
- প্রতিটি ক্রোমোজোম অনেকগুলো জিন ধারণ করে।
সম্পর্ক:
ক্রোমোজোমের মধ্যে ডিএনএ থাকে, এবং সেই ডিএনএ-র নির্দিষ্ট অংশ জিন হিসেবে কাজ করে।
অঙ্গজ বংশবিস্তারের সুবিধা
অঙ্গজ বংশবিস্তারের মাধ্যমে জীব নতুন প্রজন্ম সৃষ্টি করতে পারে, যা মূলত একক অভিভাবকের সাহায্যে ঘটে। এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা হলো—
1. দ্রুত বংশবৃদ্ধি: কম সময়ে বেশি সংখ্যক নতুন জীব উৎপন্ন করা সম্ভব।
2. একক অভিভাবকের প্রয়োজন: যৌন জননের মতো দুটি অভিভাবকের প্রয়োজন হয় না।
3. স্থিতিশীল বৈশিষ্ট্য: নতুন জীব সম্পূর্ণ অভিভাবকের অনুরূপ হয়, ফলে জিনগত বৈশিষ্ট্য অপরিবর্তিত থাকে।
4. প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার ক্ষমতা: কিছু অঙ্গজ জীব কঠিন পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে (যেমন ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস)।
5. শারীরিক অংশ থেকে পুনর্জন্ম: কিছু জীব (যেমন হাইড্রা, প্লানারিয়া) তাদের দেহের অংশ থেকে নতুন প্রাণী তৈরি করতে পারে।
এই সুবিধাগুলোর কারণে এককোষী ও কিছু বহুকোষী প্রাণীর জন্য অঙ্গজ বংশবিস্তার অত্যন্ত কার্যকর।
অথবা, মাইক্রোপ্রপাগেশন কীভাবে সম্পন্ন করা হয়? প্রাণীকোশের মাইটোসিস বিভাজনের টেলোফেজ দশায় কী কী ঘটনা ঘটে?
উত্তর: মাইক্রোপ্রপাগেশন হলো উদ্ভিদের দ্রুত বংশবিস্তার করার একটি কৃত্রিম পদ্ধতি, যা টিস্যু কালচার প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। এটি সাধারণত পাঁচটি ধাপে সম্পন্ন করা হয়—
১. এক্সপ্লান্ট সংগ্রহ ও জীবাণুমুক্তকরণ
- সুস্থ ও রোগমুক্ত উদ্ভিদের পাতা, কাণ্ড, মূল বা মেরিস্টেম টিস্যু থেকে এক্সপ্লান্ট সংগ্রহ করা হয়।
- এটি স্টেরাইল (জীবাণুমুক্ত) পরিবেশে হাইপোক্লোরাইট বা অ্যালকোহল দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা হয়।
২. সূচনা পর্যায় (Initiation Stage)
- জীবাণুমুক্ত এক্সপ্লান্ট নিউট্রিয়েন্ট মিডিয়ায় (যেমন: মুরাশিগে ও স্কুগ মিডিয়া) স্থাপন করা হয়।
- এটি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়, যাতে কোষ বিভাজন শুরু হয়।
৩. সংখ্যাবৃদ্ধি (Multiplication Stage)
- এক্সপ্লান্ট থেকে ক্যালাস বা শ্যুট উৎপন্ন হয়।
- হরমোন (যেমন: সাইটোকাইনিন ও অক্সিন) প্রয়োগের মাধ্যমে নতুন অঙ্কুরোদ্গম এবং শাখা বৃদ্ধি করা হয়।
৪. অভিযোজন ও রোপণ (Acclimatization & Transplantation)
- নতুন চারা উদ্ভিদ স্টেরাইল পরিবেশ থেকে বের করে মাটির সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য গ্রিনহাউসে রাখা হয়।
- পর্যাপ্ত পরিচর্যার পর এটি মাঠে রোপণ করা হয়।
উপসংহার:
এই পদ্ধতির মাধ্যমে দ্রুতসংখ্যায়ন, রোগমুক্ত ও জিনগতভাবে অভিন্ন উদ্ভিদ উৎপাদন করা সম্ভব হয়, যা কৃষি ও বনায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রাণীকোশের মাইটোসিস বিভাজনের টেলোফেজ দশায় ঘটনা
টেলোফেজ হলো মাইটোসিস বিভাজনের চতুর্থ ও শেষ ধাপ, যেখানে পূর্ববর্তী অ্যানাফেজে বিভাজিত ক্রোমোজোম দুটি নতুন নিউক্লিয়াস গঠনের জন্য প্রস্তুত হয়। এই পর্যায়ে নিম্নলিখিত ঘটনাগুলো ঘটে—
১. নিউক্লিয়ার এনভেলপ পুনর্গঠন ক্রোমোজোমের চারপাশে নতুন নিউক্লিয়ার এনভেলপ (পরমাণুর আবরণ) তৈরি হয়। ফলে দুটি কন্যা নিউক্লিয়াস গঠিত হয়।
২. ক্রোমোজোমের ডি-কন্ডেনসেশন ক্রোমোজোমগুলো আস্তে আস্তে সংকুচিত (condensed) অবস্থা থেকে প্রসারিত হয়ে ক্রোমাটিন রূপে ফিরে যায়। এর ফলে নিউক্লিয়াসের গঠন স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
৩. নিউক্লিওলাস পুনরায় দৃশ্যমান হয়। নিউক্লিওলাস (nucleolus) নতুন নিউক্লিয়াসের অভ্যন্তরে পুনর্গঠিত হয়। এটি পরবর্তী প্রোটিন সংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়।
৫. সাইটোকাইনেসিস শুরু হয়, সাইটোপ্লাজম বিভাজন (cytokinesis) শুরু হয়, যা দুটি পৃথক কন্যা কোষ তৈরির চূড়ান্ত ধাপ। প্রাণীকোষে এটি সেল মেমব্রেন সংকুচিত হয়ে (cleavage furrow) দুটি ভাগে বিভক্ত হওয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
উপসংহার:
টেলোফেজের মাধ্যমে দুটি পৃথক নিউক্লিয়াস বিশিষ্ট দুটি কন্যা কোষ তৈরি হয়, যা মূল কোষের মতোই একই সংখ্যক ক্রোমোজোম বহন করে। এটি মাইটোসিসের শেষ ধাপ, যা কোষ বিভাজন প্রক্রিয়াকে সম্পন্ন করে।
৪.৬ মটরগাছের বীজ সংক্রান্ত দুটি ও ফুল সংক্রান্ত একটি বৈশিষ্ট্যের প্রকট ও প্রচ্ছন্ন গুণগুলো উল্লেখ করো। অনেক সময় দেখা যায়, বাবা ও মা উভয়েই আপাতদৃষ্টিতে স্বাভাবিক কিন্তু তাদের একটি ছেলে বর্ণান্ধ হয়েছে। এটি কীভাবে ঘটে তা একটি ব্রুসের মাধ্যমে দেখাও।
উত্তর:
(ক) মটরগাছের বীজ ও ফুল সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্যের প্রকট ও প্রচ্ছন্ন গুণ:
মটরগাছের ক্ষেত্রে বীজ ও ফুল সংক্রান্ত কিছু বৈশিষ্ট্য প্রকট (Dominant) এবং কিছু প্রচ্ছন্ন (Recessive) হয়। নিচে দুটি বীজ সংক্রান্ত ও একটি ফুল সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্যের প্রকট ও প্রচ্ছন্ন গুণ উল্লেখ করা হলো:
বৈশিষ্ট্য | প্রকট গুণ | প্রচ্ছন্ন গুণ |
বীজের রঙ | হলুদ (YY) | সবুজ (yy) |
বীজের গঠন | মসৃণ (RR) | কুঁচকানো (rr) |
ফুলের অবস্থান | গাছের ধারে (Axial, AA) | শীর্ষে (Termin al, aa) |
(খ) বর্ণান্ধতা কীভাবে ঘটে তা ব্রুসের মাধ্যমে প্রদর্শন:
বর্ণান্ধতা (Color Blindness) একটি লিঙ্কড বংশগত রোগ, যা X-গুণক ধণী লিঙ্কড (X-linked recessive) গুণের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। পুরুষদের (XY) ক্ষেত্রে একটি মাত্র বিকৃত X-গুণক থাকলেই তারা বর্ণান্ধ হয়, কারণ তাদের কোনো দ্বিতীয় X-গুণক নেই যা সুস্থ জিন সরবরাহ করতে পারে।
নিচের ব্রুসটি বর্ণান্ধতা কীভাবে সন্তানের মধ্যে আসতে পারে
বাবা ও মা উভয়েই আপাতদৃষ্টিতে স্বাভাবিক, কিন্তু ছেলে বর্ণান্ধ:
ধরুন, মা বাহক (Carrier) XᴺXᶜ (যেখানে Xᴺ = স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি, Xᶜ = বর্ণান্ধতা সংক্রমিত জিন)।
বাবা স্বাভাবিক (XY)।
Punnett Square (বংশগতীয় চার্ট):

ফলাফল:
- ৫০% ছেলে স্বাভাবিক (XᴺY)
- ৫০% ছেলে বর্ণান্ধ (XᶜY)
- ৫০% মেয়ে স্বাভাবিক (XᴺXᴺ বা XᴺXᶜ বাহক)
অথবা, সমাজ থেকে বংশগত রোগ দূর করতে জেনেটিক কাউন্সেলিং এর ভূমিকা কী? বিশুদ্ধ কালো-অমসৃণ লোমযুক্ত গিনিপিগের (BBRR) সংগে বিভিন্ন সাদা-মসৃণ লোমযুক্ত (bbir) গিনিপিগের সংকরায়ণের ফলে F₂ জনুতে কালো-মসৃণ লোমযুক্ত ফিনোটাইপযুক্ত গিনিপিগ উৎপন্ন হয়। এদের সম্ভাব্য জিনোটাইপ ও জিনোটাইপিক অনুপাত সারণির সাহায্যে দেখাও।
উত্তর:
সমাজ থেকে বংশগত রোগ দূর করতে জেনেটিক কাউন্সেলিং এর ভূমিকা:
জেনেটিক কাউন্সেলিং হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে প্রশিক্ষিত বিশেষজ্ঞরা বংশগত রোগের ঝুঁকি নির্ধারণে পরিবার ও ব্যক্তিকে উপযুক্ত তথ্য, সহায়তা এবং দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। এর মাধ্যমে যেসব দম্পতির সন্তানদের মধ্যে বংশগত রোগের সম্ভাবনা থাকে, তারা আগে থেকেই সচেতন হতে পারেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারেন। যেমন: থ্যালাসেমিয়া, হেমোফিলিয়া, সিস্টিক ফাইব্রোসিস ইত্যাদি রোগ নির্ণয়ের জন্য জেনেটিক স্ক্রিনিং, ক্যারিয়ার টেস্ট এবং প্রি-ম্যারিটাল কাউন্সেলিং করা যায়।
এটি রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং সুস্থ প্রজন্ম গঠনে সাহায্য করে। সমাজে বংশগত রোগের হার হ্রাস পায় এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপর চাপ কমে। ফলে জনস্বাস্থ্য এবং জীবনের মান উন্নত হয়।
জেনেটিক সংকরায়ণের ফল ও সারণি বিশ্লেষণঃ
প্রথমে বিশুদ্ধ গিনিপিগদের জিনোটাইপ:
- কালো-অমসৃণ: BBRR
- সাদা-মসৃণ: bbrr
F₁ প্রজন্মের জিনোটাইপ:
- সকল F₁ গিনিপিগ হবে BbRr → কালো-অমসৃণ (কারণ কালো ও অমসৃণ জিন ডমিন্যান্ট)।
F₂ প্রজন্মে BbRr × BbRr ক্রস করালে সম্ভাব্য গ্যামেট:
- গ্যামেটসমূহ: BR, Br, bR, br
Punnett Square (F₂ জেনারেশনে):
BR | Br | bR | br | |
---|---|---|---|---|
BR | BBRR | BBRr | BbRR | BbRr |
Br | BBRr | BBrr | BbRr | Bbrr |
bR | BbRR | BbRr | bbRR | bbRr |
br | BbRr | Bbrr | bbRr | bbrr |
কালো-মসৃণ লোমযুক্ত ফিনোটাইপের জন্য:
- কালো = B_ (অন্তত একটি B),
- মসৃণ = rr (হোমোজাইগাস রিসেসিভ)
- তাই সম্ভাব্য জিনোটাইপ: BBrr, Bbrr
এই ধরনের কোষগুলি হলো:
- BBrr (1টি)
- Bbrr (2টি)
জিনোটাইপিক অনুপাত:
- BBRR : BBRr : BBrr : BbRR : BbRr : Bbrr : bbRR : bbRr : bbrr
- 1 : 2 : 1 : 2 : 4 : 2 : 1 : 2 : 1
কালো-মসৃণ (BBrr ও Bbrr) ফিনোটাইপের অনুপাত:
- BBrr + Bbrr = 1 + 2 = 3
সুতরাং, কালো-মসৃণ লোমযুক্ত গিনিপিগ F₂ প্রজন্মে ৩টি পাওয়া যাবে এবং তাদের সম্ভাব্য জিনোটাইপ BBrr ও Bbrr।
MadhyamikQuestionPapers.com এ আপনি আরও বিভিন্ন বছরের প্রশ্নপত্রের উত্তরও পেয়ে যাবেন। আপনার মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতিতে এই গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ কেমন লাগলো, তা আমাদের কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আরও পড়ার জন্য, জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য এবং পরীক্ষায় ভালো ফল করার জন্য MadhyamikQuestionPapers.com এর সাথেই থাকুন।