আপনি কি ২০২৫ সালের মাধ্যমিক Model Question Paper 7 (2025) এর সমাধান খুঁজছেন? তাহলে আপনি একদম সঠিক জায়গায় এসেছেন। এই আর্টিকেলে আমরা WBBSE-এর বাংলা Model Question Paper 7 (2025)-এর প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক ও বিস্তৃত সমাধান উপস্থাপন করেছি।
প্রশ্নোত্তরগুলো ধারাবাহিকভাবে সাজানো হয়েছে, যাতে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা সহজেই পড়ে বুঝতে পারে এবং পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ব্যবহার করতে পারে। বাংলা মডেল প্রশ্নপত্র ও তার সমাধান মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত মূল্যবান ও সহায়ক।
MadhyamikQuestionPapers.com, ২০১৭ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে মাধ্যমিক পরীক্ষার সমস্ত প্রশ্নপত্র ও সমাধান সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রদান করে আসছে। ২০২৫ সালের সমস্ত মডেল প্রশ্নপত্র ও তার সঠিক সমাধান এখানে সবার আগে আপডেট করা হয়েছে।
আপনার প্রস্তুতিকে আরও শক্তিশালী করতে এখনই পুরো প্রশ্নপত্র ও উত্তর দেখে নিন!
Download 2017 to 2024 All Subject’s Madhyamik Question Papers
View All Answers of Last Year Madhyamik Question Papers
যদি দ্রুত প্রশ্ন ও উত্তর খুঁজতে চান, তাহলে নিচের Table of Contents এর পাশে থাকা [!!!] চিহ্নে ক্লিক করুন। এই পেজে থাকা সমস্ত প্রশ্নের উত্তর Table of Contents-এ ধারাবাহিকভাবে সাজানো আছে। যে প্রশ্নে ক্লিক করবেন, সরাসরি তার উত্তরে পৌঁছে যাবেন।
Table of Contents
Toggle১। সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো:
১.১ ছোটোমাসি তপনের থেকে কত বছরের বড়ো?
(ক) বছর পাঁচেকের,
(খ) বছর আষ্টেকের,
(গ) বছর দশেকের,
(ঘ) বছর বারোর।
উত্তর: (খ) বছর আষ্টেকের
১.২ ‘খুব হয়েছে হরি, এই বার সরে পড়ো। অন্যদিকে যাও।’ একথা বলেছে
(ক) ভবতোষ,
(খ) অনাদি,
(গ) কাশীনাথ,
(ঘ) জনৈক বাসযাত্রী।
উত্তর: (গ) কাশীনাথ
১.৩ নদেরচাঁদ নদীকে দেখেনি
(ক) তিনদিন,
(খ) পাঁচদিন,
(গ) সাতদিন,
(ঘ) একদিন।
উত্তর: (খ) পাঁচদিন
১.৪ “আমাদের বাঁয়ে “(শূন্যস্থান পূরণ করো)
(ক) পাহাড়,
(খ) ধ্বস,
(গ) গিরিখাদ,
(ঘ) জঙ্গল।
উত্তর: (গ) গিরিখাদ
১.৫ ‘দিগম্বরের জটায় হাসে’ বহিজ্বালা।
(ক) সর্বনাশী জ্বালামুখী ধুমকেতু,
(খ) শিশু-চাঁদের কর,
(গ) সপ্ত মহাসিন্ধু,
(ঘ) দ্বাদশ রবির
উত্তর: (খ) শিশু-চাঁদের কর
১.৬ “গান বাঁধবে সহস্র উপায়ে”কে গান বাঁধবে?
(ক) চিল,
(খ) শকুন,
(গ) কোকিল,
(ঘ) ময়ূর।
উত্তর: (গ) কোকিল
১.৭ ‘শ্রীপান্থ’ ছদ্মনামে লিখেছেন সরকার।
(ক) অন্নদাশঙ্কর রায়,
(খ) বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়,
(গ) সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়,
(ঘ) নিখিল সরকার
উত্তর: (ঘ) নিখিল সরকার
১.৮ যখন গন্ধক হাওয়ায় পোড়ে তখন কোন্ গ্যাসের পরিবর্তন হয় না বলে প্রাবন্ধিক উল্লেখ করেছেন?
(ক) অক্সিজেন,
(খ) কার্বনডাইঅক্সাইড
(গ) নাইট্রোজেন,
(ঘ) আর্গন।
উত্তর: (গ) নাইট্রোজেন
১.৯ “তাঁরও ছিল ফাউন্টেন পেনের নেশা।”-কার?-
(ক) মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়,
(খ) রাজশেখর বসু,
(গ)সুবোধ ঘোষ,
(ঘ) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়-এর।
উত্তর: (ঘ) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়-এর
১.১০ রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয় এই বাক্যের কর্তাটি হল
(ক) প্রযোজ্য কর্তা,
(খ) সহযোগী কর্তা,
(গ) ব্যতিহার কর্তা,
(ঘ) সমধাতুজ কর্তা।
উত্তর: (গ) ব্যতিহার কর্তা
১.১১ ‘কারক’ শব্দটির ব্যুৎপত্তি নির্ণয় করলে হবে
(ক) √কৃ+অক,
(খ) √কৃ+ রক,
(গ) কার রক,
(ঘ) সবগুলি।
উত্তর: (ক) √কৃ+অক
১.১২ পূর্বপদ প্রাধান্য পায়
(ক) অব্যয়ীভাব সমাসে,
(খ) দ্বন্দু সমাসে,
(গ) কর্মধারয় সমাসে,
(ঘ) বহুব্রীহি সমাসে।
উত্তর: (ক) অব্যয়ীভাব সমাসে
১.১৩ ‘অনশন’ শব্দটির ব্যাসবাক্য হবে
(ক) নেই অশন,
(খ) অশনহীন,
(গ) নয় অশন,
(ঘ) না ও অশন।
উত্তর: (গ) নয় অশন
১.১৪ ‘বাক্যের অন্বয় অনুযায়ী পদগুলির যথাস্থানে সংস্থাপনকে বলে
(ক) আসক্তি,
(খ) যোগ্যতা,
(গ)আসত্তি,
(ঘ) আকাঙ্ক্ষা।
উত্তর: (গ)আসত্তি
১.১৫ “আমরা কালিও তৈরি করতাম নিজেরাই।” কী জাতীয় বাক্য?
(ক) সরল,
(খ) জটিল,
(গ) যৌগিক,
(ঘ) মিশ্র।
উত্তর: (ক) সরল
১.১৬ ‘জন্ম নিল ফাউন্টেন পেন’ উদাহরণটি হল
(ক) ভাববাচ্য,
(খ) কর্মবাচ্য,
(গ) কর্তৃবাচ্য,
(ঘ) কর্মকর্তৃবাচ্য।
উত্তর: (ঘ) কর্মকর্তৃবাচ্য
১.১৭ ভাববাচ্যে প্রাধান্য পায় যে ভাব
(ক) কর্তা,
(খ) কর্ম,
(গ) ক্রিয়া,
(ঘ) কর্তৃকর্ম।
উত্তর: (গ) ক্রিয়া
২। কমবেশি ২০টি শব্দে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:
২.১ যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
২.১.১ ‘বড়োবাবু হাসিতে লাগিলেন।’ বড়োবাবুর হাসির কারণ কী?
উত্তর: গিরীশ মহাপাত্রের অদ্ভুত পোশাক এবং আচরণ দেখে জগদীশবাবু তাকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বললে বড়োবাবু হাসতে লাগলেন।
২.১.২ ‘আজও সে সেইখানে গিয়া বসিল।’ কে, কোথায় গিয়ে বসলো?
উত্তর: ‘আজও সে সেইখানে গিয়া বসিল” সে অর্থাৎ নদেরচাঁদ।
প্রতিদিনের মতো সেদিনও ব্রিজের ধারকস্তম্ভের শেষ প্রান্তে গিয়ে বসেছিল।
২.১.৩ ‘বলতে গেলে ছেলেদুটোর সবই একরকম, তফাত শুধু এই যে,’ তফাতটা কী?
উত্তর: পান্নালাল প্যাটেল রচিত এবং অর্থকুসুম দত্তগুপ্ত অনুদিত ‘অদল বদল’ গল্পে দুই বন্ধুর আচার-আচরণ, পোশাক পরিচ্ছদ ইত্যাদির মধ্যে মিল থাকলেও তফাত শুধু এই যে, অমৃতের মা, বাবা থাকলেও,, বাবা ছাড়া ইসাবের আর কেউ ছিল না।
২.১.৪ ‘বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের।’ কখন তপনের এমন পরিস্থিতি হয়েছিল?
উত্তর: তপন তার লেখা গল্পটি ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপা দেখে হতাশ হয়ে পড়ে। কারণ, গল্পটিতে তার লেখা প্রায় বদলে গিয়ে অপরিচিত হয়ে গেছে। এতে তপনের নিজের লেখার ছোঁয়া আর ছিল না। নতুন মেসো তার গল্পে অনেক পরিবর্তন করায় তপনের আত্মসম্মান ও আবেগ আঘাত পায়। সে দুঃখে আর পড়তে পারে না এবং বোবার মতো বসে থাকে।
২.১.৫ ‘অদৃষ্ট কখনও হরিদার এই ভুল ক্ষমা করবে না।’ হরিদার কোন ভুলের কথা এখানে বলা হয়েছে?
উত্তর: বহুরূপী গল্পে হরিদা অর্থ উপার্জনের জন্য বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়িতে যান। তার বেশভূষা ও কথাবার্তায় মুগ্ধ হয়ে জগদীশবাবু তাকে আতিথ্য গ্রহণের অনুরোধ জানান এবং বিদায়ের সময় একশো টাকা প্রণামী দিতে চান। কিন্তু হরিদা উদাসীনভাবে সেই টাকা প্রত্যাখ্যান করেন এবং বলেন, “আমি যেমন অনায়াসে ধুলো মাড়িয়ে চলে যেতে পারি, তেমনিই অনায়াসে সোনাও মাড়িয়ে চলে যেতে পারি।” তিনি সন্ন্যাসী চরিত্রের সঙ্গে এতটাই একাত্ম হয়ে গিয়েছিলেন যে, চরিত্রের ঢং নষ্ট হবে এই কারণে টাকা গ্রহণ করেননি। এই ঘটনাকে গল্পকথক বিস্ময়ের সঙ্গে ‘হরিদার ভুল’ বলেছেন।
২.২ যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
২.২.১ ‘কহিলা কাঁদিয়া ধনি;’ ধনি কেঁদে কী বলেছিল?
উত্তর: ‘কহিলা কাঁদিয়া ধনি;’ ধনি কেঁদে বলেছিল—
যুদ্ধে যেতে প্রস্তুত স্বামী ইন্দ্রজিতের কাছে প্রমীলা জানতে চায়, তাকে ফেলে রেখে তিনি কোথায় চলেছেন। ইন্দ্রজিতের বিরহে তার পক্ষে বাঁচা অসম্ভব — এমন কথাও প্রমীলা জানান।
তিনি হাতির উপমা দিয়ে বলেন, “গভীর অরণ্যে কোনো লতা যদি একবার হাতির পা-কে জড়িয়ে ধরে, তবে হাতি তার প্রতি মনোযোগী না হলেও সেই লতাকে ফেলে দেয় না।”
এই প্রসঙ্গ তুলে প্রমীলা ইন্দ্রজিৎকে প্রশ্ন করেন, “তবে কীভাবে আপনি, রাজকুমারী প্রমীলাকে দাসীর মতো ত্যাগ করে যাচ্ছেন?”
২.২.২ “ওরে ওই স্বপ্ন চরাচর!”‘চরাচর’ স্বপ্ন কেন?
উত্তর: বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় ধ্বংসের দেবতা প্রলংকর শিবের অট্টহাসির ভয়ংকর শব্দে বিশ্বচরাচর স্তব্ধ হয়ে যায়।
এই স্তব্ধতা যেন মুক্তিকামী মানুষের মনে এক আসন্ন বিপ্লবী ঝড়ের বার্তা নিয়ে আসে। তাই ওরে ওই স্বপ্ন
চরাচর বলা হয়েছে।
২.২.৩ ‘তার পাশে রচিল উদ্যান।’ কে, কীসের পাশে উদ্যান রচনা করল?
উত্তর: ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতার আলোকে দেখা যায়, সমুদ্রের তীরে অবস্থিত এক সৌন্দর্যময় ও মনোরম নগরীতে একটি সুউচ্চ পর্বত রয়েছে।
সেই পর্বতের পাশে সমুদ্রকন্যা পদ্মা এক মনোরম উদ্যান রচনা করেছিলেন।
২.২.৪ “গানের বর্ম আজ পরেছি গায়ে” ‘গানের বর্ম’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: ‘গানের বর্ম’ বলতে কবি বুঝিয়েছেন— কবির মতে, অশুভ শক্তির সঙ্গে অসহায় মানুষ ও মানবতার যে সংগ্রাম, সেই সংগ্রামে অসহায় মানুষের একমাত্র অঙ্গাবরণ হল গান। এই গানই অমঙ্গলের হাত থেকে মানবতাকে রক্ষা করতে সক্ষম।
২.২.৫ ‘তারপর যুদ্ধ এল’ যুদ্ধ কেমনভাবে এল?
উত্তর: কবি পাবলো নেরুদা রচিত ‘অসুখী একজন’ কবিতায় কবির বিবরণ অনুযায়ী, যুদ্ধ এসেছিল রক্তের এক আগ্নেয় পাহাড়ের মতো ভয়ংকর ও বীভৎস রূপ নিয়ে।
২.৩ যে-কোনো তিনটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
২.৩.১ ‘সেই আমার কলম’ কলমটি কী দিয়ে নির্মিত?
উত্তর: ‘সেই আমার কলম’ কথাটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে, কবি যদি ফিনিসীয় হতেন, তবে তিনি বনপ্রান্ত থেকে একটি হাড় কুড়িয়ে এনে তা দিয়েই কলম তৈরি করতেন। অর্থাৎ, এখানে কলমটি হাড় দিয়ে নির্মিত।
২.৩.২ কালিদাসের কোন্ উক্তি ভূগোলের উপযুক্ত নয়?
উত্তর: হিমালয় যেন পৃথিবীর মানদণ্ড”—কালিদাসের এই উক্তি ভূগােলের উপযুক্ত নয়।।
২.৩.৩ ‘আমাদের সরকার ক্রমে ক্রমে রাজকার্যে দেশি পরিভাষা চালাচ্ছেন,’ তাতে অনেকে মুশকিলে পড়েছেন কেন?
উত্তর: আমাদের সরকার রাজকার্যে দেশি পরিভাষার ব্যবহার ক্রমশ বাড়িয়ে চলেছেন, ফলে অনেকেই মুশকিলে পড়ছেন, কারণ তাদের সেগুলি নতুন করে শিখতে হচ্ছে।
২.৩.৪ “আমরা ফেরার পথে কোনো পুকুরে তা ফেলে দিয়ে আসতাম।” বক্তা কেন তা পুকুরে ফেলে দিতেন?
উত্তর: প্রশ্নের উদ্ধৃত অংশের প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ হোমটাস্কের জন্য ব্যবহৃত কলাপাতা পুকুরে ফেলে দিয়ে আসতেন কারণ তা গোরুতে খেয়ে নিলে অমঙ্গল হয়।
তাই কবি ঘুমাতেন ফেরার পথে কোনো পুকুরে তা ফেলে দিয়ে আসতাম।
২.৪ যে-কোনো আটটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
২.৪.১ ‘বেলা যে পড়ে এল, জলকে চল’ নিম্নরেখ পদটির কারক ও বিভক্তি নির্দেশ করো।
উত্তর: জলকে’ শব্দটি কর্মকারকে দ্বিতীয় বিভক্তি।
২.৪.২ বাংলায় বিভক্তি প্রধান কারক কোনগুলি?
উত্তর: বাংলায় বিভক্তি প্রধান কারক—
কর্মকারক, করণকারক, সমাপাদান কারক, অধিকরণ কারক:, অপাদান কারক, ।
২.৪.৩ বাক্যাশ্রয়ী সমাসের নাম বাক্যাশ্রয়ী কেন?
উত্তর: বাক্যাশ্রয়ী সমাসকে বাক্যাশ্রয়ী বলা হয় কারণ এই সমাসে একটি বাক্যের অংশ বা সম্পূর্ণ বাক্য একত্রিত হয়ে একটি শব্দ বা শব্দ-সমষ্টি তৈরি করে, যা মূল বাক্যের অর্থকে সংক্ষেপে প্রকাশ করে।
২.৪.৪ সমাসবদ্ধ পদটি শনাক্ত করে ব্যাসবাক্যসহ সমাস নির্ণয় করো। “অতি মনোহর দেশ”।
উত্তর: সমাসবদ্ধ পদটি হল “অতি মনোহর দেশ”। এর ব্যাসবাক্য হলো “অতি সুন্দর মনোহর দেশ”। এটি কর্মধারয় সমাস
২.৪.৫ ‘পাঁচদিনের আকাশ ভাঙা বৃষ্টি না জানি নদীকে আজ কী অপরূপ রূপ দিয়াছে?’ সংশয়সূচক বাক্যে পরিণত করো।
উত্তর: বাক্য: “পাঁচদিনের আকাশ ভাঙা বৃষ্টি না জানি নদীকে আজ কী অপরূপ রূপ দিয়াছে?”
সংশয়সূচক বাক্য:
“পাঁচদিনের আকাশ ভাঙা বৃষ্টিতে নদীকে আজ কোনো অপরূপ রূপ দিয়েছে কি?”
২.৪.৬ যৌগিক বাক্য ও জটিল বাক্যের মূল পার্থক্য কী?
উত্তর: যৌগিক বাক্য: দুটি বা ততোধিক স্বাধীন উপবাক্য (যেগুলোর নিজ নিজ অর্থ সম্পূর্ণ) সমন্বয়ে গঠিত বাক্য।
উপবাক্যগুলোর সম্পর্ক: উপবাক্যগুলো পরস্পরে সমান মর্যাদাসম্পন্ন।
জটিল বাক্যে: একটি মুখ্য (মূল) উপবাক্য ও এক বা একাধিক অনুজীব (নির্ভরশীল) উপবাক্য দ্বারা গঠিত বাক্য
উপবাক্যগুলোর সম্পর্ক: উপবাক্যগুলোর মধ্যে নির্ভরতা থাকে।
২.৪.৭ ‘নামটা রবীন্দ্রনাথের দেওয়াও হতে পারে।’ (কর্তৃবাচ্যে)
উত্তর: কর্তৃবাচ্যে রূপান্তর:
“রবীন্দ্রনাথই নামটা দিতে পারেন।”
২.৪.৮ ‘অনুক্ত কর্তা’ বলতে কী বোঝো?
উত্তর: অনুক্ত কর্তা বলতে বোঝায়—
বাক্যে ক্রিয়াপদের কর্তা বা কাজটি যিনি সম্পন্ন করছেন, তাকে স্পষ্টভাবে বলা না হলেও, ক্রিয়ার রূপ দেখে কর্তার উপস্থিতি বোঝা যায়।
অর্থাৎ, বাক্যে কর্তা না থাকলেও তার অস্তিত্ব অনুমেয় হয় — তখন তাকে অনুক্ত কর্তা বলা হয়।
উদাহরণ:
খাবার খেয়ে ফেলেছি।
→ এখানে “আমি” কর্তা, কিন্তু বলা হয়নি — এটি অনুক্ত কর্তা।
২.৪.৯ কর্মবাচ্য এবং ভাববাচ্যের প্রধান পার্থক্য কী?
উত্তর: কর্মবাচ্য:
যে বাক্যে ক্রিয়াপদ কর্মকে অনুসরণ করে এবং কর্মটি বাক্যের মুখ্য বিষয় হিসেবে উঠে আসে, তাকে কর্মবাচ্য বলে।
এখানে কর্তা গৌণ থাকে বা অনুল্লেখিতও হতে পারে।
ভাববাচ্য:
যে বাক্যে কর্তা বা কর্মের উল্লেখ না করে কেবল কাজের ভাব বা ঘটনার অস্তিত্ব বোঝানো হয়, তাকে ভাববাচ্য বলে।
এখানে ক্রিয়ার মাধ্যমে শুধু ঘটনার ধারণা প্রকাশ পায়।
২.৪.১০ কর্তৃবাচ্যের কর্তা কর্মবাচ্যে কোন ধরনের কর্তার ভূমিকা পালন করে?
উত্তর: কর্তৃবাচ্যের কর্তা, কর্মবাচ্যে ‘দ্বারা’ বা ‘কর্তৃক’ শব্দে প্রকাশিত হয় এবং সে আর বাক্যের প্রধান হয় না। কর্মবাচ্যে মূল গুরুত্ব দেওয়া হয় ‘কর্ম’ বা কাজের উপরে। সেই কারণে কর্তৃবাচ্যের কর্তা, কর্মবাচ্যে ‘করণকারক’-এর ভূমিকা পালন করে, কিন্তু প্রধান বিষয় থাকে না।
৩। প্রসঙ্গ নির্দেশসহ কমবেশি ৬০ শব্দে উত্তর দাও:
৩.১ যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৩.১.১ “তপনের হাত আছে।” কথাটি কার? কোন প্রসঙ্গে বলেছেন?
উত্তর: “তপনের হাত আছে।” — কথাটি নতুন মেসোর।
তিনি এই কথাটি বলেছেন তপনের লেখা গল্প পড়ে। যদিও সবাই তপনের গল্প শুনে হাসছিল, কিন্তু মেসো তপনের লেখার মধ্যে সম্ভাবনা দেখেছিলেন। তাই তিনি বলেছিলেন যে, তপনের লেখায় হাত আছে, অর্থাৎ তপনের লেখার দক্ষতা বা প্রতিভা আছে।
এই কথাটি তিনি বলেন, তপনের উৎসাহ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে, এবং পরবর্তীতে তিনি তপনের গল্পটি ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার আশ্বাসও দেন।
৩.১.২. ‘দেখি তোমার ট্যাকে এবং পকেটে কী আছে?’ উদ্দিষ্ট ব্যক্তির ট্যাক এবং পকেট থেকে কী কী পাওয়া গিয়েছিল?
উত্তর: গিরীশ মহাপাত্রের ট্যাঁক থেকে পাওয়া যায় একটি টাকা ও গণ্ডার ছয়েক পয়সা। পকেট থেকে বেরিয়ে আসে একটি লোহার কম্পাস ও একটি ফুটরুল।
এ ছাড়াও তার কাছে বিড়ি, দেশলাই ও গাঁজার একটি কলকেরও সন্ধান মেলে।
৩.২ যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৩.২.১ “অস্ত্র ফ্যালো, অস্ত্র রাখো…” কবি কোথায় অস্ত্র রাখতে বলেছেন? তাঁর একথা বলার কারণ কী?
উত্তর: কবি জয় গোস্বামী তাঁর ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় যুদ্ধবাজ মানুষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন—তারা যেন গানের দুটি পায়ে অস্ত্র রেখে দেয়।
ক্ষমতার নেশায় মানুষ যখন নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হাতে তুলে নেয় অস্ত্র, তখন তা হয়ে ওঠে হিংসার প্রতীক। কবির মতে, মানুষের পৃথিবীতে অস্ত্রের কোনো প্রয়োজন নেই, কারণ অস্ত্র কখনোই সভ্যতার শেষ কথা হতে পারে না।
তাই তিনি গানকেই জীবনযুদ্ধের হাতিয়ার করতে বলেছেন। এর মাধ্যমে কবির মানবদরদী মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে।
৩.২.২ ‘এ মায়া, পিতঃ, বুঝিতে না পারি।’ বক্তা কে? কোন্ মায়া তার বোধের অগম্য?
উত্তর: কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘মেঘনাদবধ’ কাব্যের অন্তর্গত ‘অভিষেক’ অংশ থেকে গৃহীত উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা হলেন রাবণপুত্র ইন্দ্রজিৎ বা মেঘনাদ।
এই অংশে দেখা যায়, প্রমোদউদ্যান থেকে ফিরে এসে মেঘনাদ আক্ষেপের সুরে পিতা রাবণকে জানান যে, তিনি রাত্রিকালীন যুদ্ধে রামচন্দ্রকে দু’বার পরাজিত ও বধ করেছেন। তবুও সেই রাম দৈবশক্তির সাহায্যে পুনরায় জীবিত হয়ে যুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন এবং বীরবাহুর মতো বীরদের হত্যা করছেন।
এই অদ্ভুত, অলৌকিক ঘটনাগুলি মেঘনাদের কাছে রহস্যময় ও মানববোধের অতীত বলে মনে হয়। তাই তিনি একে “মায়া” বলে আখ্যা দেন।
৪। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৪.১ ‘যাকে খুঁজছেন সে যে এ নয়, তার আমি জামিন হতে পারি।’ কে, কাকে একথা বলেছে? বক্তার এরূপ উক্তির কারণ কী?
উত্তর: অমর কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ উপন্যাসে উক্তিটি করেছিলেন অপূর্ব।
উপন্যাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে দেখা যায়, বর্মা মুলুকে সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে গিরীশ মহাপাত্রকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তবে পুলিশের এই সন্দেহ যে ভিত্তিহীন, তা পরে স্পষ্ট হয়ে যায়। বিলেতফেরত, চিকিৎসাবিজ্ঞানে পারদর্শী, বুদ্ধিমান ও সাহসী রাজদ্রোহী সব্যসাচী মল্লিকের সঙ্গে সাধারণ ও সহজ-সরল গিরীশ মহাপাত্রের কোনো রকম মিল ছিল না — না চেহারায়, না আচরণে, না যোগ্যতায়। এই বৈসাদৃশ্য দেখে অপূর্ব পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে জানায় যে ধৃত ব্যক্তি সব্যসাচী মল্লিক হতে পারেন না। এই বক্তব্যে অপূর্বর যুক্তিবোধ, পর্যবেক্ষণক্ষমতা এবং সততার পরিচয় মেলে। লেখক এখানে একদিকে যেমন চরিত্রগুলোর পারস্পরিক সম্পর্ক তুলে ধরেছেন, তেমনি উপন্যাসের রহস্যঘন ও বিপ্লবী আবহকেও আরও দৃঢ় করেছেন।
৪.২ ‘বহুরূপী’ গল্প অবলম্বনে হরিদা চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো।
উত্তর: হরিদা – চরিত্র বিশ্লেষণ
হরিদা একজন দক্ষ বহুরূপী, যিনি তাঁর প্রতিটি অভিনয়ে নিখুঁত শিল্পীসত্তার পরিচয় দেন। বাইজী, পাগল বা পুলিশ সেজে তিনি বারবার মানুষকে বিস্মিত করেছেন। দারিদ্র্যের মধ্যেও তাঁর সততা ও পেশার প্রতি নিষ্ঠা অপরিসীম। পুলিশের ছদ্মবেশে মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার পর তিনি ক্ষমা চান। হরিদা তাঁর পেশাকে শুধু ভালোবাসেন তা-ই নয়, এই পেশার প্রতি রয়েছে তাঁর গভীর দায়বদ্ধতা।
বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর দেওয়া টাকা ফেরত দেন—এগুলো তাঁর সততার প্রমাণ।
হরিদার মধ্যে বাস্তববোধের অভাব রয়েছে। তাঁর উনানে হাঁড়িতে জল ফোটে, ভাত নয়—তবুও তিনি নির্বিকার। অভাবকে মেনে নিতে তাঁর আপত্তি নেই, একঘেয়ে জীবনযাপন করতে তিনি নারাজ। তিনি একঘেয়ে চাকরিতে আগ্রহ নেই। কল্পনায় বাঁচা তাঁর স্বভাব, বাস্তব কষ্ট থাকলেও তা তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারে না। জীবনে সাফল্য আসুক বা না-আসুক, হরিদা তাঁর রূপসাধনার মাধ্যমে নিজেকে একজন সত্যিকারের শিল্পী হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
সব মিলিয়ে, হরিদা একজন সংগ্রামী, নিষ্ঠাবান ও একনিষ্ঠ শিল্পীর প্রতিচ্ছবি।
৫। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৫.১ “তন্ত্রে মন্ত্রে মহৌষধি দিয়া।।” সমুদ্র রাজার কন্যা পদ্মা তার সখীদের নিয়ে কার পরিচর্যা করেছিলেন? কাব্যাংশ অনুসরণে সেই পরিচর্যার পরিচয় দাও।
উত্তর: কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যে দেখা যায়, সমুদ্ররাজের কন্যা পদ্মা তাঁর সখীদের নিয়ে অচেতন পদ্মাবতী ও তাঁর চার সখীর (চন্দ্রকলা, বিজয়া, রোহিণী, বিধুন্নলা) পরিচর্যা করেন।
প্রথমে পদ্মা বিধাতার কাছে অচেতন পদ্মাবতীর জন্য প্রার্থনা করেন এবং তাঁর উপযুক্ত চিকিৎসার চেষ্টা করেন।
পদ্মার আদেশে সখীরা পঞ্চকন্যার দেহ বসনে ঢেকে উদ্যানের মধ্যে নিয়ে যান। সেখানে তন্ত্র-মন্ত্র, মহৌষধি এবং আগুনের সাহায্যে মাথা ও পায়ে সেঁক দেওয়া হয়।
এইভাবে চার দণ্ড ধরে বহু যত্ন ও চিকিৎসার ফলে পঞ্চকন্যার চেতনা ফিরে আসে।
৫.২ “গর্বে যারা অন্ধ তোমার সূর্যহারা অরণ্যের চেয়ে।” গর্বে কারা অন্ধ? ‘তোমার’ বলতে কবি কাকে বুঝিয়েছেন? উদ্ধৃত অংশটির মধ্য দিয়ে কবির অভিপ্রেত বক্তব্যটি বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর: গর্বে অন্ধ কারা—
গর্বে অন্ধ হল ঔপনিবেশিক শ্বেতাঙ্গ শাসকেরা, যারা নিজেদের জাতি, সভ্যতা ও ক্ষমতাকে শ্রেষ্ঠ মনে করে।
‘তোমার’ বলতে কবি কাকে বুঝিয়েছেন—
এখানে ‘তোমার’ বলতে কবি আফ্রিকা মহাদেশকে বুঝিয়েছেন, যাকে তিনি পুরো কবিতায় এক প্রাকৃতিক, নির্যাতিত ও গৌরবময় চরিত্র হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।
কবির অভিপ্রেত বক্তব্য—
এই পংক্তির মাধ্যমে কবি বলতে চেয়েছেন যে, আফ্রিকার নির্জন, সূর্যহীন অরণ্যও সেই ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও অহংকারী ঔপনিবেশিকদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। কারণ তারা গর্বে অন্ধ হয়ে অন্য জাতিকে দাস বানিয়েছে, তাদের শোষণ করেছে এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে। কবি এখানেই আফ্রিকার প্রকৃতিকে নিপীড়কদের থেকে বেশি মর্যাদার আসনে বসিয়েছেন।
৬। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৬.১ প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ কলমের বিবর্তনকে যেভাবে প্রকাশ করেছেন, তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর: প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ তাঁর শৈশবের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কলমের বিবর্তনের কথা তুলে ধরেছেন। ছোটবেলায় তিনি বাঁশের কলম ব্যবহার করতেন। সেই কলম কেটে নিব তৈরি করতে হতো, আর সেটিতে কালি ডুবিয়ে লিখতে হতো। প্রথম দিকে লেখার জন্য ব্যবহৃত হতো কালো কাঁচের শিশিতে রাখা কালি, যেমন—‘শক্তি কালি’। পরে আসে ‘ভিকটোরিয়া’ ও ‘রেডিয়ম’ কালি।
পরে বাঁশের কলমের জায়গায় আসে প্লাস্টিকের কলম। সেই নতুন কলমে লিখতে সুবিধা হলেও, আগের মতো যত্ন, আবেগ ও ভালোবাসা আর থাকেনি। লেখক তাঁর প্রিয় একটি লাল রঙের কলমের কথাও বলেন, যেটি তাঁর শৈশবের স্মৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে।
এইভাবে লেখক কলমের বিবর্তনের মধ্য দিয়ে সময়ের পরিবর্তন, শিক্ষার পদ্ধতির রূপান্তর এবং অনুভবের পরিবর্তনকে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছেন।
৬.২ “পাশ্চাত্য দেশের তুলনায় এদেশের জনসাধারণের বৈজ্ঞানিক জ্ঞান নগণ্য।” লেখকের এমন মন্তব্যের কারণ কী?
উত্তর: বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার প্রসঙ্গে লেখক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধের পাঠকদের দুইটি শ্রেণিতে ভাগ করেছেন।
প্রথম শ্রেণিতে রয়েছেন, যাঁরা ইংরেজি জানেন না বা খুব সামান্য জানেন।
দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠক হলেন, যাঁরা ইংরেজি জানেন এবং ইংরেজি ভাষায় কিছু বিজ্ঞান বই পড়েছেন।
পাশ্চাত্যের সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে লেখক এ দেশের মানুষের বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কথা বলেছেন।
তাঁর মতে, যদি প্রাথমিক বিজ্ঞানের বিষয়গুলির সঙ্গে কারো পরিচয় না থাকে, তবে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ বোঝা সম্ভব নয়।
ইউরোপ ও আমেরিকায় জনপ্রিয় বিজ্ঞান (পপুলার সায়েন্স) লেখা সহজ, কারণ সাধারণ মানুষ সেসব সহজেই বোঝে।
কিন্তু আমাদের দেশের সামাজিক পরিস্থিতি ততটা সহজ নয়।
এখানে বয়স্কদের জন্য লেখা হলে, তা প্রাথমিক বিজ্ঞানের মতো গোড়া থেকে না লিখলে বোঝা কঠিন হয়।
বাংলা ভাষায় যারা বিজ্ঞানভিত্তিক লেখালেখি করেন, তাঁদের জনপ্রিয়তা অর্জন করতে গেলে এই বাস্তবতা মাথায় রাখতে হবে।
প্রাবন্ধিক মনে করেন, বিজ্ঞানশিক্ষার যথাযথ প্রসার না ঘটলে বিজ্ঞানসাহিত্যেরও সঠিক বিকাশ ঘটানো সম্ভব নয়।
বিজ্ঞানশিক্ষার বিস্তার ঘটানোর প্রয়োজনীয়তা বোঝাতেই তিনি এই বক্তব্য রেখেছেন।
৭। কমবেশি ১২৫ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৭.১ “তোমাদের কাছে আমি লজ্জিত।” কে, কাদের কাছে লজ্জিত? লজ্জা পাওয়ার কারণটি পরিস্ফুট করো।
উত্তর: নবাব সিরাজদ্দৌলা ও ফরাসি বণিকদের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা উদ্ধৃত উক্তিটি নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাটকের প্রধান চরিত্র নবাব সিরাজদ্দৌলার। এই উক্তিতে নবাব নিজেই স্বীকার করেছেন যে, তিনি ফরাসি প্রতিনিধি মঁসিয়ে লা ও সমস্ত ফরাসি বণিকদের কাছে লজ্জিত।
সুদূর ফ্রান্স থেকে বহুদিন আগে ফরাসিরা বাংলায় এসে বাণিজ্য শুরু করে। নবাব সিরাজদ্দৌলার সঙ্গে ফরাসিদের কোনো বিরোধ ছিল না। উভয়ের সম্পর্ক ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ।
কিন্তু অনেক পরে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলায় আসে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল শুধুমাত্র বাণিজ্য নয়, বরং পুরো বাংলা দখল করে কায়েমি শাসন কায়েম করা। তাই ফরাসিদের বাংলা থেকে বিতাড়িত করতে তারা নবাবের অনুমতি না নিয়েই চন্দননগরে আক্রমণ চালায় এবং তা দখল করে নেয়। এ ঘটনা ছিল সম্পূর্ণ অন্যায়।
ফরাসি প্রতিনিধি মঁসিয়ে লা নবাবের কাছে অনুরোধ জানান যে, ইংরেজরা যেন তাদের বাণিজ্যে কোনো বাধা না সৃষ্টি করে। নবাব ইংরেজদের নির্দেশ দেন শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য। কিন্তু ইংরেজরা নবাবের আদেশ অমান্য করে চন্দননগর দখল করে নেয়।
এই অবস্থায় নবাব সিরাজদ্দৌলা ফরাসিদের কোনো সাহায্য করতে পারেননি। কারণ, কিছুদিন আগে তিনি ইংরেজ ও পূর্ণিয়ার শওকত জঙ্গের সঙ্গে যুদ্ধ করে সৈন্য ও অর্থ দুই দিক থেকেই দুর্বল হয়ে পড়েন। তাঁর মন্ত্রীমন্ডলিও যুদ্ধ করতে রাজি ছিলেন না।
এই সমস্ত কারণে তিনি নিজেকে অক্ষম মনে করে ফরাসিদের কাছে লজ্জিত বলে প্রকাশ করেন।
৭.২ ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাট্যাংশে সিরাজের মধ্যে যে দেশপ্রেমের পরিচয় পাওয়া যায়, তা উল্লেখ করো।
উত্তর: বাংলার নবাব সিরাজদ্দৌলার উদ্ধৃত উক্তিটির মধ্য দিয়ে যে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠিয়েছেন তা হল তিনি একজন উদার মনের একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক । বিচক্ষণ নবাব বুঝতে পেরেছিলেন যে বাংলা শুধু মুসলমানের নয় বা হিন্দুর নয়, বাংলা হিন্দু-মুসলমানের সম্মিলিত শান্তিপূর্ণ অবস্থানেই বাংলার ঐক্যের সূত্র-এ গাঁথা । তিনি ঘনিয়ে আসার দুর্দিনকে ঠেকাতে তিনি হিন্দু-মুসলমান উভয়ের সম্মিলিত প্রয়াসের উপর আস্থা রেখেছিলেন। তিনি বুঝেছিলেন বহিরাগত ইংরেজ শত্রুকে এই বাংলা থেকে দূর করতে হলে সমস্ত ধর্মীয় সংকীর্ণতার উপরে উঠে বাংলার মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে । ধর্মীয় সংকীর্ণতা শুধূ মানুষে মানুষে ভেদাভেদ সৃষ্টি করে, বহিরাগত আক্রমণকে ঠেকাতে পারে না । হিন্দু-মুসলমানের সম্মিলিত চেষ্টায় এবং লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে বিদেশি শত্রু ইংরেজকে এই বাংলা থেকে দূর করা যেতে পারে । নবাব সিরাজদ্দৌলা একথা বুঝেছিলেন এবং তিনি এই রকমভাবে কাতর অনুরোধ জানিয়ে ছিলেন।
উপরিউক্ত উক্তির মধ্যে দিয়ে নবাব সিরাজদ্দৌলাকে একজন ধর্মনিরপেক্ষ উদার মনের মানুষ ও প্রকৃত দেশপ্রেমিক হিসেবে জানা যায় ।
৮। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৮.১ ক্ষিতীশ সিংহ কেন জুপিটার ক্লাব ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন, তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর: ক্ষিতীশ সিংহ জুপিটার ক্লাবের একজন নিষ্ঠাবান, সৎ ও আদর্শবাদী কোচ ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, যোগ্যতা ও পরিশ্রমই একজন খেলোয়াড়কে চ্যাম্পিয়ন করে তোলে, জন্মসূত্রে নয়। তাই সামাজিক ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা প্রতিভাবান সাঁতারুদের সুযোগ দেওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন তিনি।
এই কারণে কোনির মতো বস্তির মেয়েকে প্রশিক্ষণ দিতে চাইলে ক্লাবের কয়েকজন প্রভাবশালী ও উচ্চবিত্ত সদস্য তাঁর ওপর অসন্তুষ্ট হন। তাঁরা ক্ষিতীশবাবুর নীতি ও আদর্শে বাধা হয়ে দাঁড়ান এবং তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে কোনো নির্দিষ্ট কারণ না দেখিয়ে ক্লাব ছাড়তে বাধ্য করেন।
তবে ক্লাব থেকে বিতাড়িত হয়েও ক্ষিতীশ সিংহ হতাশ না হয়ে কোনির প্রশিক্ষণ ব্যক্তিগতভাবে চালিয়ে যান।
তিনি তাঁর অধ্যবসায় ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে প্রমাণ করেন, সত্য ও নিষ্ঠাই শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়।
৮.২ “কম্পিটিশনে পড়লে মেয়েটা তো আমার পা ধোয়া জল খাবে।” বক্তা কে? কী প্রসঙ্গে তার এই উক্তি? এই উক্তিতে বস্তার কীরূপ মনোভাব ফুটে উঠেছে?
উত্তর: ‘ট্যালেন্ট’ শব্দের অর্থ হলো জন্মগত প্রতিভা বা সহজাত দক্ষতা। অনেকের মধ্যে এই প্রতিভা প্রকৃতিগতভাবে উপস্থিত থাকে, যা সঠিকভাবে বিকশিত হলে তারা নিজেদের দক্ষতাকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে।
কিন্তু “কোনি” উপন্যাসে ক্ষিতীশ সিংহ ট্যালেন্ট সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ মত প্রকাশ করেন। তিনি মনে করেন, শুধু ঈশ্বরপ্রদত্ত প্রতিভা থাকলেই একজন ব্যক্তি চ্যাম্পিয়ন হয়ে ওঠে না। প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম, সুশৃঙ্খল অনুশীলন ও মানসিক দৃঢ়তা।
ক্ষিতীশবাবু চোখ-কান খোলা রেখে খাঁটি প্রতিভা খুঁজে বের করেন, যেমন তিনি কোনির মধ্যে সম্ভাবনা দেখে তাকে গড়ে তোলেন। তাঁর মতে, সঠিক প্রশিক্ষণ ও প্রেরণা পেলে একজন সাধারণ মানুষও অসাধারণ হয়ে উঠতে পারে।
৮.৩ ‘ট্যালেন্ট ঈশ্বরের দান।” ‘ট্যালেন্ট’ কী? ট্যালেন্ট’ সম্পর্কে ক্ষিতীশের মতামত কী ছিল?
উত্তর: ‘ট্যালেন্ট’ শব্দের অর্থ হলো জন্মগত প্রতিভা বা সহজাত দক্ষতা। অনেকের মধ্যে এই প্রতিভা প্রকৃতিগতভাবে উপস্থিত থাকে, যা সঠিকভাবে বিকশিত হলে তারা নিজেদের দক্ষতাকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে।
কিন্তু “কোনি” উপন্যাসে ক্ষিতীশ সিংহ ট্যালেন্ট সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ মত প্রকাশ করেন। তিনি মনে করেন, শুধু ঈশ্বরপ্রদত্ত প্রতিভা থাকলেই একজন ব্যক্তি চ্যাম্পিয়ন হয়ে ওঠে না। প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম, সুশৃঙ্খল অনুশীলন ও মানসিক দৃঢ়তা।
ক্ষিতীশবাবু চোখ-কান খোলা রেখে খাঁটি প্রতিভা খুঁজে বের করেন, যেমন তিনি কোনির মধ্যে সম্ভাবনা দেখে তাকে গড়ে তোলেন। তাঁর মতে, সঠিক প্রশিক্ষণ ও প্রেরণা পেলে একজন সাধারণ মানুষও অসাধারণ হয়ে উঠতে পারে।
৯। চলিত গদ্যে বঙ্গানুবাদ করো:
Discipline has great importance in students life. Student should be taught to realise that the observance of discipline is a sacred duty of theirs. They should respect their superiors. They should also punctuality and good manners.
উত্তর: শৃঙ্খলা ছাত্রজীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ছাত্রদের শেখানো উচিত যে শৃঙ্খলা পালন করা তাদের একটি পবিত্র দায়িত্ব। তারা যেন বয়োজ্যেষ্ঠদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়। তাদের সময়নিষ্ঠা ও ভদ্র আচরণও শেখা উচিত।
১০। কমবেশি ১৫০ শব্দে নীচের যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
১০.১ মাধ্যমিকের পর কী বিষয় নিয়ে পড়বে এ বিষয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে একটি কাল্পনিক সংলাপ রচনা করো।
উত্তর:
মাধ্যমিকের পর পড়ার বিষয় নির্বাচন
দিপ: আরে সুমন, মাধ্যমিক তো শেষ। এখন কী ভাবছিস, কোন বিষয়ে পড়বি?
সুমন: ভাবছি বিজ্ঞান নেব। আমার জীববিজ্ঞান আর রসায়নে খুব আগ্রহ। ডাক্তার হতে চাই।
দিপ: বাহ! খুব ভালো সিদ্ধান্ত। আমি কিন্তু মানবিক নেব ভাবছি। ইতিহাস আর রাষ্ট্রবিজ্ঞানে আমার খুব মনোযোগ।
সুমন: দারুণ তো! মানবিক নিয়েও অনেক ভালো ক্যারিয়ার তৈরি করা যায়।
দিপ: হ্যাঁ, আমি চাই ভবিষ্যতে শিক্ষকতা বা গবেষণার সঙ্গে যুক্ত হতে। তাই মানবিকই ভালো হবে বলে মনে করি।
সুমন: ঠিকই বলেছিস। আসলে যার যেটা ভালো লাগে, সেটা নিয়েই পড়া উচিত। তাহলেই মনোযোগও থাকবে।
দিপ: একদম ঠিক। ভালোভাবে পড়াশোনা করলে সব বিভাগেই সফল হওয়া যায়।
সুমন: তাই তো! চল, নতুন যাত্রার জন্য শুভকামনা একে অপরকে!
দিপ: হ্যাঁ, তোর জন্যও অনেক শুভকামনা!
১০.২ তোমার এলাকায় একটি পাঠাগার উদ্বোধন হল এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।
উত্তর:
আমাদের এলাকায় পাঠাগার উদ্বোধন
নিজেস্ব সংবাদদাতা, বারুইপাড়া, জুন ৫: গতকাল আমাদের এলাকায় একটি নতুন পাঠাগারের উদ্বোধন হয়েছে। এটি “বিদ্যা গণপাঠাগার” নামে পরিচিত হবে। পাঠাগারটি স্থানীয় পৌরসভার উদ্যোগে ও কিছু সমাজসেবীর আর্থিক সহায়তায় নির্মিত হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. নিরুদ্ধ সেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এলাকার স্কুল-কলেজের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী এবং সাধারণ মানুষ।
প্রধান অতিথি তার বক্তৃতায় পাঠাগারের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “একটি পাঠাগার কেবল বই পড়ার জায়গা নয়, এটি একটি সমাজ গঠনের কারখানা।” অনুষ্ঠানে শেষে ফিতা কেটে পাঠাগারটি উদ্বোধন করা হয় এবং উপস্থিত অতিথিরা ঘুরে ঘুরে পাঠাগারটি পরিদর্শন করেন।
এই পাঠাগার এলাকার ছাত্রছাত্রী ও পাঠকদের জ্ঞানচর্চায় বিশেষ সহায়ক হবে বলে সকলেই আশা প্রকাশ করেন।
১১। যে-কোনো একটি বিষয় অবলম্বনে রচনা লেখো: (কমবেশি ৪০০ শব্দে)
১১.১ বিজ্ঞান ও বিজ্ঞান মানসিকতা।
উত্তর:
বিজ্ঞান ও বিজ্ঞান মানসিকতা: আধুনিক সমাজের চালিকাশক্তি
বর্তমান যুগকে আমরা বিজ্ঞানের যুগ বলি, কারণ মানবজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিজ্ঞানের ব্যাপক প্রভাব ও প্রয়োগ লক্ষ করা যায়। বিজ্ঞান কেবলমাত্র কিছু তত্ত্ব ও আবিষ্কারের সীমায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি একটি জীবনদর্শন ও চিন্তাধারা, যা যুক্তিবাদ, কৌতূহল ও পরীক্ষণের মাধ্যমে সত্যকে জানার চেষ্টা করে। এই দৃষ্টিভঙ্গিই “বিজ্ঞান মানসিকতা” নামে পরিচিত।
বিজ্ঞান হল প্রকৃতিকে জানার ও বোঝার একটি পদ্ধতি। এটি পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষা, বিশ্লেষণ ও যুক্তির মাধ্যমে সত্যকে অন্বেষণ করে। বিজ্ঞানের আবিষ্কার যেমন বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন, চিকিৎসাবিজ্ঞান, পরিবহন ব্যবস্থা প্রভৃতি আমাদের জীবনযাত্রাকে সহজ, দ্রুত ও আরামদায়ক করেছে, তেমনি বিজ্ঞান মানসিকতা আমাদের চিন্তাভাবনায় এনেছে যুক্তিবাদ ও কুসংস্কারমুক্ত দৃষ্টিভঙ্গি।
একজন বিজ্ঞানমনস্ক ব্যক্তি কোনও কিছুকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করেন না। তিনি প্রশ্ন করেন, যুক্তি খোঁজেন এবং প্রমাণ চেয়ে থাকেন। ফলে সমাজে প্রচলিত কুসংস্কার, গুজব ও অন্ধবিশ্বাস থেকে মানুষ মুক্তি পায়। উদাহরণস্বরূপ, পূর্বে অনেকেই মনে করত সূর্যগ্রহণ অশুভ, বা কোনো রোগ দেবতার রোষে হয়ে থাকে। কিন্তু বিজ্ঞান মানুষকে জানিয়ে দিয়েছে এগুলো প্রকৃতির নিয়ম ও জীববিজ্ঞানের ব্যাখ্যা।
বিজ্ঞান মানসিকতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিকাশ ঘটানো খুবই জরুরি। কারণ এই মানসিকতা শিশুদের অনুসন্ধানী, যুক্তিনির্ভর ও সমস্যা সমাধানে সক্ষম করে তোলে। সমাজে বিজ্ঞানমনস্কতা যত বেশি ছড়াবে, তত কমবে গুজব, অপপ্রচার ও অন্ধবিশ্বাস। ফলে গড়ে উঠবে একটি উন্নত, সচেতন ও প্রগতিশীল সমাজ।
বিজ্ঞান ও বিজ্ঞান মানসিকতার গুরুত্ব শুধু প্রযুক্তিগত উন্নয়নেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি মানুষের আচরণ, নৈতিকতা ও সমাজ ব্যবস্থাকেও প্রভাবিত করে। একটি বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ কেবল উন্নতই নয়, তা মানবিক ও শান্তিপূর্ণও হতে পারে।
সুতরাং বলা যায়, বিজ্ঞানের জ্ঞান ও বিজ্ঞান মানসিকতা আমাদের ব্যক্তি, সমাজ ও জাতিকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে পারে। বিজ্ঞানকে কেবল পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে আমাদের জীবনের চালিকাশক্তি হিসেবে গ্রহণ করাই হবে আধুনিক ও যুক্তিবাদী সমাজের সঠিক দিকনির্দেশনা।
১১.২ জাতীয় সংহতি প্রসারে ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা।
উত্তর:
জাতীয় সংহতি গঠনে ছাত্রছাত্রীদের দায়িত্ব ও ভূমিকা
জাতীয় সংহতি অর্থ হলো জাতির মধ্যে ঐক্য, সহমর্মিতা ও সৌহার্দ্য বজায় রাখা। একটি দেশের অগ্রগতি, শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রধান ভিত্তি হলো জাতীয় সংহতি। ভিন্ন ধর্ম, ভাষা, জাতি ও সংস্কৃতির মানুষকে এক সুতোয় বেঁধে রাখার কাজটি যতটা না রাজনৈতিক নেতৃত্বের, তার চেয়ে অনেক বেশি সামাজিক সচেতনতার বিষয়। এই জায়গাতেই ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা হয়ে ওঠে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ছাত্রছাত্রীরা জাতির ভবিষ্যৎ। তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে একত্রে শিক্ষা অর্জন করে, যার ফলে তাদের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত বৈচিত্র্য থাকলেও, সেই ভিন্নতা তাদের ঐক্য গঠনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। একজন শিক্ষার্থী যখন অন্য ধর্ম, জাতি বা ভাষাভাষীর সহপাঠীর সঙ্গে সহমর্মিতা ও সহযোগিতার মনোভাব রাখে, তখন সেটিই জাতীয় সংহতির ভিত্তি গড়ে তোলে।
ছাত্রজীবনেই যদি শ্রদ্ধা, সহনশীলতা ও ঐক্যের শিক্ষা দেওয়া হয়, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি সুন্দর ও সংহত জাতি হিসেবে গড়ে উঠবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, জাতীয় দিবস উদযাপন, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, সহপাঠ কার্যক্রম প্রভৃতি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া, সহানুভূতি ও সহযোগিতা বাড়ায়।
আজকের বিশ্বে বিভেদের রাজনীতি, গুজব, হিংসা ও কুসংস্কারের মাধ্যমে জাতির মধ্যে বিভাজন তৈরির অপচেষ্টা চলছে। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে ছাত্রসমাজই। তারা সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারে, সামাজিক মাধ্যমে গঠনমূলক বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারে, এবং একে অপরকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করতে পারে।
এছাড়াও, ছাত্রছাত্রীরা যদি সমাজসেবামূলক কাজে অংশ নেয়, যেমন—রক্তদান, বৃক্ষরোপণ, দুঃস্থদের সহায়তা, তখন তারা কেবল শিক্ষার্থী নয়, বরং জাতি গঠনের এক শক্তিশালী কারিগর হয়ে ওঠে।
সুতরাং, জাতীয় সংহতি গড়ার পথে ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা যদি ঐক্য, সহনশীলতা ও দায়িত্ববোধের শিক্ষা নিয়ে বেড়ে ওঠে, তবে বাংলাদেশ হয়ে উঠবে একটি ঐক্যবদ্ধ, শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল জাতি। তাই আজকের ছাত্রসমাজকে শুধু পাঠ্যপুস্তকে সীমাবদ্ধ না রেখে, একটি দায়িত্বশীল, সচেতন ও মানবিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
১১.৩ তোমার জীবনে একটি খুশির দিন।
উত্তর:
আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় দিন
মানুষের জীবনে কিছু কিছু দিন থাকে, যা চিরকাল স্মৃতিতে অমলিনভাবে জেগে থাকে। এমনই একটি খুশির দিনের কথা আজ আমি লিখতে চাই, যেদিন আমার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছিল। সেই দিনটি আমার জীবনের এক আনন্দঘন, গর্বের এবং স্মরণীয় দিন।
সকাল থেকেই আমার মনে ছিল এক ধরনের উত্তেজনা ও উদ্বেগ। স্কুলে গিয়ে দেখলাম, অনেকেই ফলাফল জানার জন্য ভিড় করেছে। শিক্ষকদের মুখেও ছিল হাসি। কিছুক্ষণ পর আমাদের প্রধান শিক্ষক ফলাফল ঘোষণা করলেন। তিনি বললেন, “এই বছর আমাদের স্কুল থেকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে — [তোমার নাম]!” আমি তখন নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমি শ্রেণিতে প্রথম হয়েছি, এবং সকল বিষয়ে ‘A+’ পেয়েছি।
আমার বন্ধুরা এসে আমাকে জড়িয়ে ধরল। শিক্ষকরা আমাকে আশীর্বাদ করলেন। আমি যে এত ভালো করব, সেটা আশাও করিনি। সেই মুহূর্তে আমার চোখে আনন্দের অশ্রু চলে এসেছিল। বাড়ি ফিরে খবরটি দেওয়ার পর মা–বাবা খুব খুশি হন। মা আমাকে জড়িয়ে ধরেন, আর বাবা আমার মাথায় হাত রেখে বলেন, “তুই আমাদের গর্ব।”
সেদিন সন্ধ্যায় বাবা আমার প্রিয় খাবার রান্নার ব্যবস্থা করেন। প্রতিবেশীরাও এসে শুভেচ্ছা জানান। আমার এক আত্মীয় আমাকে একটি বই উপহার দেন। আমি অনুভব করলাম— এই আনন্দ কেবল আমার নয়, আমার পরিবারের, আমার স্কুলের এবং আমার শিক্ষকদেরও।
সেই খুশির দিনটি আমাকে একটি বড় শিক্ষা দিয়েছিল— পরিশ্রম কখনো বিফলে যায় না। আমি বুঝেছিলাম, ইচ্ছাশক্তি ও অধ্যবসায় থাকলে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। সেই দিন আমাকে আরও আত্মবিশ্বাসী করে তোলে এবং ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু করার অনুপ্রেরণা জোগায়।
আজও যখন আমি মন খারাপ করি বা হতাশ হই, তখন সেই খুশির দিনের কথা মনে করি। তা আমাকে আবার নতুন উদ্যমে কাজ করতে উৎসাহ দেয়।
সত্যিই, জীবনে এমন কিছু মুহূর্ত থাকে, যা মানুষের হৃদয়ে চিরকাল বেঁচে থাকে। আমার জীবনের সেই খুশির দিনটি তেমনই একটি অমূল্য স্মৃতি।
১১.৪ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
উত্তর:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর: বাংলা সাহিত্যের বিশ্বদূত
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র, যিনি কেবলমাত্র একজন কবি নন, বরং তিনি একাধারে সাহিত্যিক, সুরস্রষ্টা, শিক্ষাবিদ, সমাজচিন্তক ও চিত্রশিল্পী। তিনি বাংলা ভাষাকে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করে তুলেছেন এবং বাংলা সংস্কৃতিকে দিয়েছিলেন এক নতুন রূপ ও দিশা।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম ১৮৬১ সালের ৭ই মে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে। তিনি ছোটবেলা থেকেই সাহিত্য ও সঙ্গীতের প্রতি গভীর অনুরাগী ছিলেন। মাত্র আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন এবং অল্প বয়সেই সাহিত্যজগতে নিজের পরিচিতি গড়ে তোলেন।
রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যকর্মের পরিধি অসাধারণ বিস্তৃত। তিনি রচনা করেছেন অসংখ্য কবিতা, গান, ছোটগল্প, নাটক, উপন্যাস, প্রবন্ধ ও চিঠিপত্র। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে—”সোনার তরী”, “গীতাঞ্জলি”, “ক্ষণিকা” ইত্যাদি। “গীতাঞ্জলি” গ্রন্থের জন্য তিনি ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন, যা ছিল এশিয়ার পক্ষে প্রথম নোবেল জয়। তাঁর রচিত “জনগণমন” গানটি ভারতের জাতীয় সঙ্গীত এবং “আমার সোনার বাংলা” গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতে পরিণত হয়েছে, যা তাঁর আন্তর্জাতিক মর্যাদা ও দেশপ্রেমের প্রমাণ বহন করে।
শিক্ষাক্ষেত্রেও রবীন্দ্রনাথ অনন্য অবদান রেখেছেন। তিনি শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে তিনি পাশ্চাত্য ও প্রাচ্য শিক্ষার সমন্বয়ে একটি মানবিক শিক্ষাব্যবস্থার স্বপ্ন দেখেছিলেন।
রবীন্দ্রনাথ কেবল সাহিত্যস্রষ্টা নন, তিনি ছিলেন এক মানবতাবাদী ও সমাজচিন্তক। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থান ছিল স্পষ্ট। জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি ব্রিটিশ সরকার প্রদত্ত ‘নাইট’ উপাধি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
তিনি বিশ্বাস করতেন, মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব ও নৈতিকতা জাগ্রত করাই হলো শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য। তাঁর জীবন ও সাহিত্য মানবপ্রেম, প্রকৃতিপ্রেম এবং আত্মার মুক্তির আহ্বান।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আজও আমাদের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও জাতীয় চেতনার উৎস। তাঁর চিন্তা ও কাব্য আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে চিরকাল বেঁচে থাকবে। তাই তিনি শুধু একজন কবি নন, তিনি বাংলা জাতির প্রাণ, গৌরব ও অহংকার।
MadhyamikQuestionPapers.com এ আপনি অন্যান্য বছরের প্রশ্নপত্রের ও Model Question Paper-এর উত্তরও সহজেই পেয়ে যাবেন। আপনার মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতিতে এই গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ কেমন লাগলো, তা আমাদের কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আরও পড়ার জন্য, জ্ঞান অর্জনের জন্য এবং পরীক্ষায় ভালো ফল করার জন্য MadhyamikQuestionPapers.com এর সাথে যুক্ত থাকুন।