Madhyamik Question Papers

বাংলা Model Question Paper 6 (2025) এর উত্তর – Class 10 WBBSE

Bengali
Bengali Model Question Paper 6 2025 Answer Thumbnail

আপনি কি ২০২৫ সালের মাধ্যমিক বাংলা Model Question Paper 6 (2025)-এর সঠিক উত্তর খুঁজছেন? তাহলে আপনি একদম সঠিক জায়গায় এসেছেন। এই প্রতিবেদনে আমরা WBBSE এর বাংলা Model Question Paper 6 (2025)-এর প্রতিটি প্রশ্নের নিখুঁত ও বিস্তারিত উত্তর তুলে ধরেছি।

নিচে প্রশ্নোত্তরগুলো পরপর সাজানো হয়েছে, যাতে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা সহজেই পড়ে বুঝতে পারে এবং প্রস্তুতিতে কাজে লাগাতে পারে। বাংলা মডেল প্রশ্নপত্র ও তার উত্তর মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত সহায়ক ও গুরুত্বপূর্ণ।

MadhyamikQuestionPapers.com ২০১৭ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সমস্ত মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও উত্তর একেবারে বিনামূল্যে সরবরাহ করে আসছে। ২০২৫ সালের সমস্ত মডেল প্রশ্নপত্র ও তার সমাধান এখানেই সবার আগে আপডেট করা হয়েছে।

আপনার প্রস্তুতিকে আরও শক্তিশালী করতে সম্পূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তরগুলো এখনই দেখে নিন!

Download 2017 to 2024 All Subject’s Madhyamik Question Papers

View All Answers of Last Year Madhyamik Question Papers

যদি দ্রুত প্রশ্ন ও উত্তর খুঁজতে চান, তাহলে নিচের Table of Contents এর পাশে থাকা [!!!] চিহ্নে ক্লিক করুন। এই পেজে থাকা সমস্ত প্রশ্নের উত্তর Table of Contents-এ ধারাবাহিকভাবে সাজানো আছে। যে প্রশ্নে ক্লিক করবেন, সরাসরি তার উত্তরে পৌঁছে যাবেন।

Table of Contents

১। সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো:

১.১ ‘রাত্রের মেল ট্রেনটার প্রতি একটু দৃষ্টি রেখো, সে যে বর্মায় এসেছে এ খবর সত্য।’ 

(ক) জগদীশবাবু, 
(খ) নিমাইবাবু,
(গ) রামদাস তলওয়ারকর,
(ঘ) অপূর্ব। বস্তা 

উত্তর: (ক) জগদীশবাবু

১.২ ‘আর বৃষ্টি হবে না, কী বলো?’ এই উক্তিটির বস্তা হলেন 

(ক) নদেরচাঁদ, 
(খ) হরিদা, 
(গ) ভবতোষ, 
(ঘ) অপূর্ব।

উত্তর: (ক) নদেরচাঁদ

১.৩ গল্পকার পান্নালাল প্যাটেল কোন ভাষার প্রসিদ্ধ লেখক? 

(ক) কন্নড় ভাষার, 
(খ) মালয়ালম্ ভাষার, 
(গ) গুজরাতি ভাষার,
(ঘ) হিন্দি ভাষার।

উত্তর: (গ) গুজরাতি ভাষার

১.৪ “সে জানত না” উদ্ধৃতাংশে ‘সে’ বলতে বোঝানো হয়েছে 

(ক) গির্জার এক সন্ন্যাসিনীকে, 
(খ) একটি শিশুকে, 
(গ) একজন সাধারণ নারীকে, 
(ঘ) ঈশ্বরকে।

উত্তর: (গ) একজন সাধারণ নারীকে

১.৫ ‘কবির সংগীতে বেজে উঠেছিল’ কী বেজে উঠেছিল? 

(ক) সংগীতের মূর্ছনা, 
(খ) সুন্দরের আরাধনা, 
(গ) সুরের ঝংকার,
(ঘ) রাগরাগিণী।

উত্তর: (খ) সুন্দরের আরাধনা

১.৬ ‘অভিষেক’ শীর্ষক কাব্যাংশটি ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ এর কোন্ সর্গ থেকে নেওয়া হয়েছে?

(ক) প্রথম সর্গ, 
(খ) তৃতীয় সর্গ,
(গ) নবম সর্গ, 
(ঘ) পঞ্চম সর্গ।

উত্তর: (ক) প্রথম সর্গ

১.৭ সিজার যে কলমটি দিয়ে কাসকাকে আঘাত করেছিলেন, তার পোশাকি নাম 

(ক) রিজার্ভার, 
(খ) স্টাইলাস, 
(গ) পার্কার, 
(ঘ) পাইলট।

উত্তর: (খ) স্টাইলাস

১.৮ অল্পবিদ্যা যে ভয়ংকরী তার প্রমাণ পাওয়া যায়

(ক) বিজ্ঞান রচনায়, 
(খ) গবেষণা গ্রন্থে, 
(গ) অনেকের বক্তব্যে, 
(ঘ) সাময়িক পত্রাদিতে।

উত্তর: (ঘ) সাময়িক পত্রাদিতে

১.৯ বিজ্ঞানের সঙ্গে পূর্বপরিচয় নেই যে শ্রেণির পাঠকের 

(ক) প্রথম শ্রেণির, 
(খ) দ্বিতীয় শ্রেণির, 
(গ) তৃতীয় শ্রেণির, 
(ঘ) মধ্যম শ্রেণির।

উত্তর: (ক) প্রথম শ্রেণির

১.১০ ‘সকলের তরে সকলে আমরা’ রেখাঙ্কিত অংশটি হল 

(ক) সম্বন্ধপদ, 
(খ) সম্বোধন পদ, 
(গ) কর্তৃকারক, 
(ঘ) নিমিত্ত কারক।

উত্তর: (ঘ) নিমিত্ত কারক

১.১১ যে কর্তা অন্যকে দিয়ে কাজ করায়, সে হল 

(ক) প্রযোজ্য কর্তা, 
(খ) প্রযোজক কর্তা, 
(গ) উহ্য কর্তা, 
(ঘ) অনুক্ত কর্তা। কারক।

উত্তর: (খ) প্রযোজক কর্তা

১.১২ ‘সমাস’ শব্দের ব্যুৎপত্তি হল 

(ক) সম্+অ+ আস, 
(খ) সম্ + অস্ + অ, 
(গ) সম্ + আস্, 
(ঘ) সম্ + আ + স্।

উত্তর: (খ) সম্ + অস্ + অ

১.১৩ ‘অবধানের সহিত বিদ্যমান’ সমস্তপদটি হবে 

(ক) সাবধান, 
(খ) অবধান, 
(গ) সমাধান, 
(ঘ) সহবাধান।

উত্তর: (ক) সাবধান

১.১৪ সরল, যৌগিক, জটিল, মিশ্র বাক্যের এই চার প্রকার কোন দিক থেকে? 

(ক) গঠনভঙ্গির দিক থেকে, 
(খ) বাচনভঙ্গির দিক থেকে, 
(গ) উক্তি বিন্যাসের দিক থেকে, 
(ঘ) কোনোটিই নয়।

উত্তর: (ক) গঠনভঙ্গির দিক থেকে

১.১৫ ‘এই কথাটি সকল লেখকেরই মনে রাখা উচিত।’ বাক্যটি 

(ক) নির্দেশমূলক বাক্য, 
(খ) অনুজ্ঞাবাচক বাক্য, 
(গ) সন্দেহমূলক বাক্য, 
(ঘ) প্রশ্নমূলক বাক্য।

উত্তর: (ক) নির্দেশমূলক বাক্য

১.১৬ যে বাক্যে কর্ম কর্তা রূপে প্রতীয়মান হয়, তাকে বলে- 

(ক) কর্মবাচ্য, 
(খ) কর্তৃবাচ্য, 
(গ) ভাববাচ্য, 
(ঘ) কর্মকর্তৃবাচ্য।

উত্তর: (ঘ) কর্মকর্তৃবাচ্য

১.১৭ আমার বাড়ি যাওয়া হল না > আমি বাড়ি যাইনি-এই যে বাচ্যান্তরটি ঘটেছে তা হল- 

(ক) কর্তৃবাচ্য থেকে কর্মবাচ্য, 
(খ) কর্তৃবাচ্যথেকে ভাববাচ্য, 
(গ) ভাববাচ্য থেকে কর্তৃবাচ্য, 
(ঘ) ভাববাচ্য থেকে কর্মবাচ্য।

উত্তর: (গ) ভাববাচ্য থেকে কর্তৃবাচ্য

২। কমবেশি ২০টি শব্দে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:

২.১ যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

২.১.১ ‘মিথ্যেবাদী কোথাকার!’- কথাটি কে, কাকে, কোন পরিস্থিতিতে বলেছে?

উত্তর: মিথ্যেবাদী কোথাকার!’ – কথাটি গিরীশ মহাপাত্র, রমাচরণকে, একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে বলেছে।

এই পরিস্থিতিতে গিরীশ রমাচরণকে মিথ্যেবাদী বলার কারণ ছিল রমাচরণের মিথ্যা বলার অভ্যাস। 

২.১.২ ‘নদীকে এভাবে ভালোবাসিবার একটা কৈফিয়ত নদেরচাঁদ দিতে পারে।’ নদেরচাঁদের কৈফিয়তটি কী?

উত্তর: নদীকে এভাবে ভালোবাসিবার একটা কৈফিয়ত সে দিতে পারে। নদেরচাঁদের কৈফিয়ত হলো—

নদেরচাঁদের নদীর ধারে জন্ম হয়েছে, নদীর ধারে সে মানুষ হয়েছে এবং চিরদিন নদীকে সে ভালোবেসেছে। যদিও তার দেশের নদীটি হয়তো এত বড়ো ছিল না, তবুও শৈশব, কৈশোর এবং প্রথম যৌবনে বড়ো বা ছোটো নদীর হিসাব কেউ করে না।

দেশের সেই ক্ষীণস্রোতা, নির্জীব নদীটি তার কাছে অসুস্থ দুর্বল কোনো আত্মীয়ার মতোই মমতা পেয়েছিল। একবার অনাবৃষ্টির বছরে সেই নদীটি যখন প্রায় শুকিয়ে যেতে বসেছিল, তখন নদেরচাঁদ দুঃখে প্রায় কেঁদে ফেলেছিল— যেমন কেউ কোনো পরম আত্মীয়ার মৃত্যুযন্ত্রণা দেখে কাঁদে।

এই‌ ছিল‌ ‘নদীকে এভাবে ভালোবাসিবার একটা কৈফিয়ত। 

২.১.৩ ‘অত সহজে হাল ছাড়ার পাত্রও সে নয়।’ হাল না ছাড়ার জন্য সে কী করেছিল?

উত্তর: অমৃত জানত জামা কেনার ব্যাপারে বাবা নয় মায়ের রাজি হওয়াটাই আসল । তাই সে স্কুলে যাওয়া , খাওয়া বন্ধ করে রাত্রে বাড়ি পর্যন্ত ফিরতে রাজি হল না ।

২.১.৪ “বিকেলে চায়ের টেবিলে ওঠে কথাটা।” কোন কথা?

উত্তর: “বিকেলের চায়ের আসরে তপনের ছোটমেসো তপনের একটি লেখা ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন—সেই কথাই আলোচনার বিষয় ছিল।”

২.১.৫ ‘গল্প শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গেলেন হরিদা।’ হরিদার শোনা গল্পটি কী?

উত্তর: হরিদাকে জানিয়েছিলেন যে, জগদীশবাবুর বাড়িতে এক সন্ন্যাসী সাত দিন ধরে ছিলেন। তিনি সারাবছরে একটি হরীতকী খান। তাঁর বয়স হাজার বছরেরও বেশি। সন্ন্যাসী কাউকেই তাঁর পায়ের ধুলো দেন না। জগদীশবাবু কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে তাঁর পায়ের কাছে ধরতেই সন্ন্যাসী সেই খড়ম পড়তে গেলে জগদীশবাবু তাঁর পায়ের ধুলো নিয়েছিলেন। সন্ন্যাসীর এই গল্প শুনে হরিদা গম্ভীর হয়ে গিয়েছিলেন।

২.২ যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

২.২.১ ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় কবি ‘পায়ে পায়ে হিমানীর বাঁধ’ বলতে কী নির্দেশ করেছেন?

উত্তর: আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতায় পায়ে পায়ে হিমানীর বাঁধ বলতে বোঝানো হয়েছে সাধারণ মানুষের জীবনের চলার পথে প্রতিটি পদক্ষেপে নানান বাধা ও প্রতিকূলতা প্রতিমুহূর্তে বরফের দেয়ালের মতোই বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে এবং সাধারণ মানুষের জীবনে চলার পথে এসব বাধা, বিপত্তি ও প্রতিকূলতাকে হিমানীর বাঁধের সঙ্গে তুলনা করে বোঝানো হয়েছে।

২.২.২ ‘সেখানে নিভৃত অবকাশে তুমি’ নিভৃত অবকাশে আফ্রিকা কী করেছিল?

উত্তর: সমুদ্র যখন পূর্বাঞ্চলীয় ভূখণ্ড থেকে আফ্রিকাকে বিচ্ছিন্ন করেছিল তখন অরণ্যের অন্ধকারে আফ্রিকা দুর্গমের রহস্য সংগ্রহে ব্যস্ত ছিল।

২.২.৩ ‘বিস্মিত হইল বালা’ তার বিস্ময়ের কারণ কী?

উত্তর: বিস্ময়ের কারণ- পদ্মা একদিন সকালে তাঁর সখীদের সাথে উদ্যানে ভ্রমণ করতে এসে সমুদ্রতীরে একটি ভেলা দেখে কৌতূহলবশত সেখানে উপস্থিত হন। তিনি দেখেন যে, চার সখীর মাঝখানে এক অপরূপা কন্যা মাটিতে পড়ে আছেন। তাঁরা সকলেই সংজ্ঞাহীন । কন্যাটি অসামান্য রূপবতী।

২.২.৪ “রক্ত মুছি শুধু গানের গায়ে” কথাটির অর্থ কী?

উত্তর: রক্ত মুছি শুধু গানের গায়ে” কথাটির অর্থ হলো- কবি মনে করেন হিংসা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও রক্তপাত থেকে মুক্তির খোঁজ রয়েছে গানে । 

২.২.৫ ‘সেই মিষ্টি বাড়ি, সেই বারান্দা’ সেই বারান্দাটির পরিচয় দাও।

উত্তর: অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির মিষ্টি বাড়ির বারান্দাটিতে ছিল একটি ঝুলন্ত বিছানা, যেখানে কবি সেই ঝুলন্ত বিছানায় ঘুমাতেন  ।

২.৩ যে-কোনো তিনটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

২.৩.১ বাবু কুইল ড্রাইভারস্’ বক্তা কেন একথা বলেছেন?

উত্তর: পালকের কলমের ইংরেজি নাম ‘কুইল’; লর্ড কার্জন বাঙালি সাংবাদিকদের গরম গরম ইংরেজি দেখে বক্তা তাঁদের বলছেন ‘বাবু কুইল ড্রাইভারস’।

২.৩.২ ‘এর মানে বুঝতে বাধা হয়নি।’ কীসের মানে বুঝতে অসুবিধা হয়নি?

উত্তর: প্রাবন্ধিকের ভাষায় কোনো ভাষাগত বিরোধী সংস্কার না-থাকায়, ব্ৰত্মমোহন মল্লিকের জ্যামিতিতে লেখা— “এক নির্দিষ্ট সীমাবিশিষ্ট সরলরেখার ওপর এক সমবাহু ত্রিভুজ অঙ্কন করতে হবে”— এই কথাটির অর্থ বোঝার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা হয়নি।

২.৩.৩ রাজশেখর বসু রচিত বাংলা অভিধানের নাম কী?

উত্তর: রাজশেখর বসু রচিত বাংলা অভিধানের নাম “চলন্তিকা”।

২.৩.৪ ‘হোম-টাস্ক’ দেখা হয়ে গেলে সেগুলো নিয়ে লেখক কী করতেন?

উত্তর: ‘হোম-টাস্ক’ দেখা হয়ে গেলে সেগুলো নিয়ে লেখক ফেরার পথে কোনও পুকুরে তা ফেলে দিয়ে আসতেন।

২.৪ যে-কোনো আটটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

২.৪.১ ‘রূপে তোমায় ভোলাবো না’ চিহ্নিত পদটির কারক ও বিভক্তি নির্ণয় করো।

উত্তর: এখানে চিহ্নিত পদটি হল — ‘রূপে’।

কারক: অধিকরণ কারক

বিভক্তি: সপ্তমী

২.৪.২ অধিকরণে বীপ্সার উদাহরণ দাও।

উত্তর: মাঠে মাঠে ধান ধরে নাকো আর

২.৪.৩ সমাসের দেহ গঠনের অঙ্গগুলি কী কী?

উত্তর: সমাসের দেহ গঠনের প্রধান অঙ্গগুলি হল পূর্বপদ, মধ্যপদ, পরপদ এবং সমস্তপদ। 

২.৪.৪ ‘দাদাঠাকুর’ শব্দটির ব্যাসবাক্যসহ সমাসের নাম লেখো।

উত্তর: ব্যাসবাক্য: দাদা ও ঠাকুর

সমাসের নাম: কর্মধারয় সমাস।

২.৪.৫ নির্দেশক বাক্য কাকে বলে?

উত্তর: নির্দেশক বাক্য:

যে বাক্য দ্বারা কোনো ব্যক্তি, বস্তুর অবস্থান, দিক, সংখ্যা বা পরিচয় নির্দেশ করা হয়, তাকে নির্দেশক বাক্য বলে।

উদাহরণ:

ওখানে একটা গাছ আছে।

২.৪.৬ ‘গল্প শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গেলেন হরিদা।’ যৌগিক বাক্যে পরিণত করো

উত্তর: বাক্য: গল্প শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গেলেন হরিদা।

যৌগিক বাক্যে পরিণত:

হরিদা গল্প শুনলেন এবং খুব গম্ভীর হয়ে গেলেন।

২.৪.৭ ভাববাচ্যে পরিবর্তন করো: আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি।

উত্তর: ভাববাচ্যে পরিবর্তন:

আরো বেঁধে বেঁধে থাকা হোক।

২.৪.৮ সরল বাক্যের বৈশিষ্ট্য কী?

উত্তর: সরল বাক্যের বৈশিষ্ট্যসমূহ:

1. একটি মাত্র কাজ বা ভাব বোঝায়।

2. একটি মাত্র প্রধান কর্তা ও ক্রিয়া থাকে।

3. বাক্যটি ছোট ও সহজ গঠনবিশিষ্ট হয়।

4. অতিরিক্ত উপবাক্য থাকে না, অর্থাৎ এটি একটি স্বতন্ত্র ভাব প্রকাশ করে।

5. সাধারণত এই বাক্যে জটিলতা থাকে না, বোঝা সহজ হয়।

২.৪.৯ বাচ্য পরিবর্তন কী?

উত্তর: বাচ্য পরিবর্তন হলো একটি বাক্যে ক্রিয়ার রূপ ও পদবিন্যাস পরিবর্তন করে তা কর্তৃবাচ্য, কর্মবাচ্য, বা ভাববাচ্যে রূপান্তর করার প্রক্রিয়া।

২.৪.১০ ‘এসব মনগড়া গল্প রাখো।’ সমাসবদ্ধ পদটি চিহ্নিত করে সমাসের নাম লেখো।

উত্তর: সমাসবদ্ধ পদটি হল ‘মনগড়া’। এটি একটি তৎপুরুষ সমাস, বিশেষ করে তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস।

৩। প্রসজ্ঞা নির্দেশসহ কমবেশি ৬০ শব্দে উত্তর দাও:

৩.১ যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৩.১.১ ‘এতকাল নদেরচাঁদ গর্ব অনুভব করিয়াছে।’ কী নিয়ে নদেরচাঁদ গর্ব অনুভব করত? তাঁর কোন্ উপলব্ধি সেই গর্বকে ক্ষুণ্ণ করেছে, তা লেখো।

উত্তর: নতুন রং করা ব্রিজটির জন্য’ এতকাল নদেরচাঁদ গর্ব অনুভব করিয়াছে।’ 

যখন নদীর প্রচণ্ড রুদ্ররূপ বাঁধ ভেঙে ফেলে, তখন তার উপলব্ধি হয় -প্রকৃতির শক্তির সামনে মানুষের চেষ্টাই যথেষ্ট নয়। এই উপলব্ধি তার সেই অহঙ্কারকে ভেঙে দেয় ও গর্বকে ক্ষুণ্ণ করে।

৩.১.২ ‘কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল।’ কথাটি কী? মার্বেল হওয়ার কারণ কী?

উত্তর: নতুন মেসোমশাই, মানে যাঁর সঙ্গে এই কদিন আগে তপনের ছোটোমাসির বিয়ে হয়ে গেল দেদার ঘটাপটা করে, সেই তিনি নাকি বই লেখেন। সে সব বই নাকি ছাপাও হয়। অনেক বই ছাপা হয়েছে মেসোর। তপনের নতুন মেসোমশাই একজন লেখক। সত্যিকার লেখক।

এই ‘কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল।

৩.২ যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৩.২.১ “সে জানত না আমি আর কখনো ফিরে আসব না।” ‘সে’ কে? ‘আমি আর কখনো ফিরে আসব না’ বলার কারণ কী?

উত্তর: পাবলো নেরুদা রচিত ‘অসুখী একজন’ কবিতার শুরুতেই একটি মেয়ের উল্লেখ রয়েছে। এখানে ‘সে’ বলতে কথকের প্রিয় সেই নারীর কথা বোঝানো হয়েছে।

যদিও কবিতার কথক সম্পর্কে সরাসরি ভাবে কিছু বলেননি, তবুও অনুমান করা যায় তিনি একজন যোদ্ধা বা বিপ্লবী। দেশের প্রয়োজনে তাকে তার পরিবার ও প্রিয় নারীকে ছেড়ে যেতে হয়েছে। যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সৈনিকদের ফিরে আসার সম্ভাবনা না বললেই চলে ,  তাই কথকও তার ফিরে না আসার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেছেন।

৩.২.২ “অতি মনোহর দেশ” এই ‘মনোহর দেশের সৌন্দর্যের পরিচয় দাও।

উত্তর: মুসলমান কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘পদ্মাবতী’ কাব্য থেকে ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতাটি গৃহীত হয়েছে। আলোচ্য অংশে বর্ণিত হয়েছে, সমুদ্রের ঢেউ পদ্মাবতীর ভেলাকে যেখানেই নিয়ে যায়, সেখানেই জলের মধ্যে এক অপূর্ব সুন্দর নগরীর দেখা মেলে। এই নগরীর নামই ‘দিব্যপুরি’।

দিব্যপুরি নগরীর বিশেষত্ব হলো এর অনন্য সামাজিক পরিবেশ। সেখানে কোনো দুঃখ-কষ্ট বা দুর্দশার চিহ্নমাত্র নেই। বরং এই নগরীতে বিরাজমান সত্য ধর্ম, সৎ আচরণ ও শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবনব্যবস্থা।

এইভাবে কবি এক স্বপ্নময়, শান্তিময়, আদর্শ সমাজের চিত্র তুলে ধরেছেন।

৪। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৪.১ ‘যাঁকে খুঁজছেন তাঁর কালচরের কথাটা একবার ভেবে দেখুন।’ কাকে খোঁজার কথা বলা হয়েছে? তার কালচরের বর্ণনা দাও।

উত্তর: উক্তিটি বলেছেন অপূর্ব, তিনি বলেন দারোগা নিমাইবাবুকে, যখন তিনি বিপ্লবী সব্যসাচীকে খুঁজছিলেন।

সব্যসাচী একজন উচ্চশিক্ষিত, জার্মান ও আমেরিকা প্রবাসী যুবক, যিনি চিকিৎসাবিদ্যা ও নানা বিষয়ে পারদর্শী। বিপ্লববাদে বিশ্বাসী হলেও তিনি এক সুশিক্ষিত ও মার্জিত ব্যক্তিত্বের অধিকারী।

অপূর্ব দারোগাকে বোঝাতে চান যে, সব্যসাচীর মতো ‘সংস্কৃত মনস্ক’ ও ‘উন্নত কালচারের’ মানুষ সাধারণ অপরাধীর মতো নয়। তাঁর আচরণ, চিন্তাভাবনা ও বিপ্লবের পথ একেবারে সুনির্দিষ্ট ও আদর্শিক।

এই উক্তির মাধ্যমে লেখক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় দেখাতে চেয়েছেন, কেবল উচ্চশিক্ষাই নয়, একটি উন্নত মনন ও আদর্শ বিপ্লবীর মধ্যে থাকা উচিত, যা সব্যসাচীর মধ্যে বর্তমান।

৪.২ “‘অদল বদল’ গল্পে ইসাবের বাবার চরিত্রটি একদিকে যেমন চিরন্তন পিতৃহৃদয়ের প্রতীক, তেমনি সাম্প্রদায়িক মিলনের দূতও বটে” – মন্তব্যটির সার্থকতা বুঝিয়ে দাও।

উত্তর: পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’ গল্পে ইসাবের বাবা হাসান পাঠান একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্শ্বচরিত্র। তাঁর চরিত্রটি নিছক একজন দরিদ্র মুসলমান কৃষকের গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে একদিকে যেমন চিরন্তন পিতৃস্নেহের প্রতীক হয়ে উঠেছে, তেমনই অন্যদিকে তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল নিদর্শন।

চিরন্তন পিতৃহৃদয়ের প্রতীক হিসেবে, আমরা দেখতে পাই যে, হাসান অত্যন্ত দরিদ্র হলেও হোলির সময় ছেলে ইসাবের জন্য নতুন জামা তৈরি করিয়ে দেন। অভাবের সংসারে ছেলেকে কাজেও লাগালেও, তাঁর ভিতরে ছিল অপার স্নেহ ও দায়িত্ববোধ। তিনি একা হাতে ছেলে মানুষ করার চেষ্টা করেন। যখন ছোট্ট অমৃত বলে ওঠে, “কিন্তু আমাকে বাঁচানোর জন্য তো আমার মা আছে”, তখন ইসাবের মা-হীন অবস্থার কথা মনে করে হাসানের মনে এক গভীর আবেগের সৃষ্টি হয়। এখানেই আমরা দেখি এক সংবেদনশীল ও হৃদয়বান পিতার মুখচ্ছবি।

আবার, সাম্প্রদায়িক মিলনের দূত হিসেবেও হাসান পাঠানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। হিন্দু বালক অমৃত ও মুসলমান বালক ইসাবের মধ্যে জামা বদলের ছোট্ট ঘটনাকে তিনি কেবল বাহ্যিক দৃষ্টিতে দেখেন না, বরং সেই ঘটনার অন্তর্নিহিত প্রেম, বন্ধুত্ব ও মমত্ববোধকে অনুভব করেন। তিনি বুঝতে পারেন, শিশুদের মন বিভাজনের ধার ধারে না। তাই তিনি অমৃতের মাতৃভক্তি ও বন্ধুত্বের খাঁটি রূপ দেখে মুগ্ধ হন এবং গ্রামের সকলকে এই ঘটনা বলেন। এভাবেই তাঁর মাধ্যমে গল্পটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল বার্তা বহন করে।

সবশেষে বলা যায়, ইসাবের বাবা কেবল একজন দরিদ্র পিতা নন, বরং তিনি এক আদর্শ পিতার প্রতীক এবং একই সঙ্গে উদার ও অসাম্প্রদায়িক মননসম্পন্ন একজন চরিত্র। তাঁর আবেগ, মমতা ও উদারতা এই মন্তব্যটিকে যথার্থ প্রমাণ করে—

“তিনি একদিকে যেমন চিরন্তন পিতৃহৃদয়ের প্রতীক, তেমনি সাম্প্রদায়িক মিলনের দূতও বটে।”

৫। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৫.১ ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কোন্ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত কবিতা? কবিতায় এই আহ্বান ধ্বনিত হয়েছে কেন?

উত্তর: ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতাটি শঙ্খ ঘোষের ‘জলই পাষাণ হয়ে আছে’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।

এই কবিতায় কবি যুদ্ধবিধ্বস্ত, বিপন্ন, আশ্রয়হীন সাধারণ মানুষের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে একত্রিত হয়ে বেঁচে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। সমাজে যখন ধ্বংস, হিংসা, শোষণ ও অবিচার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে, তখন মানুষের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে ওঠে। এই পরিস্থিতিতে কবি বলেন, “আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি”—অর্থাৎ, একে অপরের পাশে থেকে, হাতে হাত রেখে, ঐক্যবদ্ধভাবে এই সংকট মোকাবিলা করতে হবে। এই আহ্বানে মানবিকতা, সহমর্মিতা ও সংগ্রামী চেতনার প্রকাশ ঘটেছে।

৫.২ “তোরা সব জয়ধ্বনি কর।” কবির এই কথা বলার কারণ সংক্ষেপে লেখো।

উত্তর: কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর কবিতা “প্রলয়োল্লাস”-এ “তোরা সব জয়ধ্বনি কর” বলে একটি গুরুত্বপূর্ণ আহ্বান জানিয়েছেন। এই বাক্যের মাধ্যমে কবি সমাজের সকল মানুষকে প্রলয়ের মহিমা উপলব্ধি করতে বলেছেন।

কবি মনে করেন, সমাজে অন্যায়, অবিচার, শোষণ, এবং কুসংস্কারের যে শিকল মানুষকে বেঁধে রেখেছে, তা ভাঙার জন্য প্রলয় অপরিহার্য। প্রলয় মানে শুধু ধ্বংস নয়, এটি এক নতুন সৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি করে। পুরনো এবং পচাগলা সমাজব্যবস্থাকে ভেঙে তছনছ করে দেওয়ার মাধ্যমে নতুন দিনের সূচনা হয়। তাই কবি প্রলয়ের ধ্বংসাত্মক দিকের মধ্যে আনন্দ খুঁজে পান।

“তোরা সব জয়ধ্বনি কর” এই আহ্বানের মাধ্যমে কবি সবাইকে উৎসাহিত করছেন নতুন দিনের আগমনে উল্লাস প্রকাশ করতে। প্রলয় যেমন ভয়ংকর, তেমনই তা নতুন আলোর প্রতীক। কবির দৃষ্টিতে, এই প্রলয় মানবজাতির মুক্তি ও পুনর্জাগরণের প্রতীক, যা এক নতুন পৃথিবী গড়ার পথ দেখাবে।

৬। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৬.১ ‘সেই আঘাতেরই পরিণতি নাকি তাঁর মৃত্যু।’ কে, কোন প্রসঙ্গে এই উক্তি করেছেন? লেখকের এই সংশয় প্রকাশের কারণ কী?

উত্তর: এই উক্তিটি লেখক শ্রীপর্ণার। তিনি এটি বলেছেন ফুটপাথে বসে থাকা এক বৃদ্ধ কলম মেরামতকারীর প্রসঙ্গে। লেখক তাঁর শৈশবে বাবার সঙ্গে এক বৃদ্ধের কাছে কলম মেরামত করাতে যেতেন। সেই বৃদ্ধ ছিলেন অত্যন্ত দক্ষ এবং আন্তরিক। পরবর্তীকালে লেখিকা তাঁকে বহু বছর পর আবার ফুটপাথে দেখেন — কালি কলম, টাইপ রিবনের দোকানের পাশে এক কোণে বসে কলম সারাই করছেন।

একদিন লেখিকা নিজের চোখে দেখেন, এক ব্যক্তি কাগজের বান্ডিলের ধাক্কায় বৃদ্ধকে আঘাত করে এবং তাঁকে গালাগালি করে। বৃদ্ধ চুপচাপ সহ্য করেন। এরপর থেকে আর কখনোই তাঁকে সেই জায়গায় দেখা যায়নি। লেখিকার মনে হয়, হয়তো সেই ঘটনাটিই তাঁর অসুস্থতার বা মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই সন্দেহ বা সংশয়ের পিছনে রয়েছে লেখিকার দুঃখ, অপরাধবোধ ও সমাজের প্রতি হতাশা। তিনি উপলব্ধি করেন, সমাজ এখন আর শ্রম, নিষ্ঠা ও সততার মর্যাদা দেয় না। ফলে এমন একজন পরিশ্রমী মানুষের অশ্রদ্ধা ও অবহেলায় হারিয়ে যাওয়া তাঁর মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে। এই কারণেই তিনি বলেন — “সেই আঘাতেরই পরিণতি নাকি তাঁর মৃত্যু।”

৬.২ “বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চায় এখনও নানা রকম বাধা আছে।”এই বাধা দূর করতে লেখক কী পরামর্শ দিয়েছেন, তা আলোচনা করো।

উত্তর: বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে নানা রকম বাধা এখনও বর্তমান। এই বাধাগুলি দূর করতে লেখক কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন:

১. বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানপাঠের অভ্যাস গড়ে তোলা: লেখক মনে করেন, বিজ্ঞানচর্চায় বাংলা ভাষাকে আরও কার্যকর করতে হলে ইংরেজি-নির্ভর পাঠকের মানসিকতা পরিবর্তন করে বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানপাঠের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

২. সাধারণ মানুষের বিজ্ঞানবোধ জাগানো: সাধারণ মানুষের মধ্যে বিজ্ঞানবোধের অভাব থাকায় অনেকেই বিজ্ঞানভিত্তিক রচনার মূল বক্তব্য ধরতে পারেন না। তাই লেখকের মতে, গণবিজ্ঞান আন্দোলনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিজ্ঞানমনস্কতা গড়ে তুলতে হবে।

৩. উপযুক্ত পারিভাষিক শব্দ গঠন: লেখক মনে করেন, বিজ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে পারিভাষিক শব্দের অভাব একটি বড় বাধা। তাই বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চাকে গতিশীল করতে হলে উপযুক্ত ও সঠিক পারিভাষিক শব্দ গঠন ও প্রয়োগ করা জরুরি।

৪. সহজীকরণে ভারসাম্য বজায় রাখা: লেখক পরামর্শ দেন, রচনাকে সহজ করার সময় ভাবের গভীরতা যেন নষ্ট না হয়। অতিরিক্ত সহজীকরণে অনেক সময় তথ্য ও চিন্তার নির্ভুলতা নষ্ট হয়, যা পরিহার করতে হবে।

৫. অনুবাদে সাবলীলতা বজায় রাখা: বাংলা বা সংস্কৃত ভাষার বিজ্ঞানভিত্তিক রচনাগুলি ইংরেজিতে অনুবাদ করার সময় যথাযথ সাবলীলতা বজায় রাখতে হবে, যাতে মূল ভাব অক্ষুণ্ন থাকে।

৬. অলংকারের যথাযথ ব্যবহার: লেখকের মতে, বিজ্ঞানভিত্তিক রচনায় অলংকারের অতিরিক্ত বা ভুল ব্যবহার না করে বিষয়বস্তুর গুরুত্ব বজায় রাখতে হবে।

৭. নির্ভুল তথ্য পরিবেশন: বিজ্ঞানচর্চায় ভুল তথ্য যেন পরিবেশিত না হয়, সে বিষয়ে বিশেষ সতর্ক থাকতে লেখক পরামর্শ দিয়েছেন।

উপসংহার:

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো — লেখকের মতে, উপরোক্ত বাধাগুলি দূর না করা পর্যন্ত বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চা কখনোই সঠিক পথে এগোতে পারবে না। তাই বাংলা ভাষাকে বিজ্ঞান-উপযোগী করে তোলার জন্য একটি সুসংহত ও সচেতন প্রয়াস প্রয়োজন।

৭। কমবেশি ১২৫ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৭.১ ‘তোমার কথা আমার চিরদিনই মনে থাকবে।’ কার কথা বলা হয়েছে? কেন তার কথা মনে থাকবে?

উত্তর: নবাব সিরাজদ্দৌলার দরবারে উপস্থিত ফরাসি প্রতিনিধি মঁসিয়ে লার সঙ্গে নবাব সিরাজের সম্পর্কের ওপর কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিম্নরূপ:

নবাব সিরাজদ্দৌলার ফরাসিদের প্রতি বিশেষ দুর্বলতা ছিল। মঁসিয়ে লার কাছে তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে এটি স্বীকার করেছেন। তিনি বাংলা দেশের ফরাসিদের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের কথাও স্মরণ করেছেন। নবাব কৃতজ্ঞতার সঙ্গে উল্লেখ করেছেন যে, ফরাসিরা কখনো তার সঙ্গে অসদ্ব্যবহার করেননি। ইংরেজরা চন্দননগর দখল করার পর ফরাসিরা নবাবের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছিল, কিন্তু নবাব অসহায় হয়ে তাদের ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হন। তিনি মঁসিয়ে লার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনাও করেন।

মঁসিয়ে লা-ও এই বন্ধুত্বের কারণে দেশ ছেড়ে যাওয়া অনিবার্য হলেও নবাবকে তাঁর বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করেন। সিরাজ মঁসিয়ে লার আন্তরিকতার পরিচয় দেখতে পান। তাই চিরবিচ্ছেদের সময় নবাব সিরাজ মঁসিয়ে লাকে বলেন, তাঁর কথাগুলো তিনি চিরকাল মনে রাখবেন।

৭.২ ‘আজ কার রক্ত সে চায়। পলাশি, রাক্ষসী পলাশি।’ কার লেখা নাটকের সংলাপ? নাট্যাংশের সংলাপ রচনায় নাট্যকারের কৃতিত্ব আলোচনা করো।

উত্তর: সংলাপ: শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘সিরাজদৌল্লা’ নাট্যাংশ

নাটকের ছয়টি মূল উপাদানের মধ্যে চতুর্থটি হল সংলাপ। একটি নাট্যকাহিনীর সফল উপস্থাপনায় সংলাপের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘সিরাজদৌল্লা’ নাটকের সূচনা হয়েছে সিরাজ ও ওয়াটসের সংলাপ দিয়ে।

ওয়াটস একজন ইংরেজ চরিত্র; তাই তাঁর সংলাপ ইংরেজি ভাষায় রচিত। তিনি যে বাংলা ভাষায় কথা বলেছেন, তা অন্বয়গত দিক থেকে ত্রুটিযুক্ত হলেও সেটি তাঁর বিদেশি পরিচয়কে বাস্তবসম্মত করে তুলেছে। অপরদিকে মঁসিয়ে লা সম্পূর্ণ ইংরেজিতে সংলাপ বলেছে—এতে তাঁর চরিত্রের বাস্তবতা অক্ষুণ্ন থাকে।

নাটকে সিরাজের সংলাপসমূহে তাঁর সম্রাটসুলভ গাম্ভীর্য ও ব্যক্তিত্ব প্রতিফলিত হয়েছে। আবার মীরজাফর ও ঘসেটি বেগমের সঙ্গে সংলাপ পর্বে তাঁর অন্তর্দ্বন্দ্ব ও ক্ষোভ স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছে।

এ নাটকে অপ্রধান চরিত্রগুলিও সংলাপের গুণে স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। নাটকটি ঐতিহাসিক হওয়ার দরুন এর গাম্ভীর্য রক্ষা করতে নাট্যকার সংলাপ রচনায় বিশেষ শিল্পকৌশল প্রয়োগ করেছেন।

৮। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৮.১ ‘আমার বিরুদ্ধে চার্জগুলো স্পষ্ট করে চিঠিতে বলা নেই। সেগুলো জানতে চাই।’ বস্তা কে? তাঁর বিরুদ্ধে চার্জ এবং তার জবাব তিনি কীভাবে দিয়েছিলেন?

উত্তর: উক্তিটির বক্তা হলেন ‌ক্ষিতীশ সিংহ (খিদ্দা), যিনি “কোনি” উপন্যাসে একজন নিষ্ঠাবান সাঁতার প্রশিক্ষক।

তিনি ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটি চিঠি পান, যেখানে তাঁর বিরুদ্ধে কিছু অস্পষ্ট অভিযোগ তোলা হয়। চিঠিতে চার্জগুলি নির্দিষ্টভাবে লেখা ছিল না। তাই ক্ষিতীশ বলেন,

“আমার বিরুদ্ধে চার্জগুলো স্পষ্ট করে চিঠিতে বলা নেই। সেগুলো জানতে চাই।”

তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল —

১. ক্লাবের নিয়ম ভেঙে একজন দরিদ্র বস্তিবাসী মেয়েকে (কোনিকে) প্রশিক্ষণ ও প্রতিযোগিতার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

২. অনভিজ্ঞ মেয়েকে তুলে ধরা হয়েছে একজন প্রতিযোগী হিসেবে।

ক্ষিতীশ এইসব অভিযোগের যুক্তিপূর্ণ জবাব দেন। তিনি বলেন, সাঁতারু নির্বাচনের একমাত্র মাপকাঠি প্রতিভা, সাহস ও পরিশ্রম। তিনি কোনো ভেদাভেদ মানেন না।

এইভাবে তিনি সততা, আত্মবিশ্বাস ও সামাজিক ন্যায়বোধের পরিচয় দেন এবং বোঝান— চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অধিকার সবার আছে।

৮.২ “হঠাৎ কোনির দু’চোখ জলে ভরে এলো।” কোনির দু’চোখ জলে ভরে এল কেন? এরপর কী হয়েছিল?

উত্তর: ‘কোনি’ উপন্যাসে জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতার সময় ক্ষিতীশ সিংহকে ‌দর্শকাসন থেকে উঠে যেতে বলা হয়। কারণ, তাঁর বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ উঠেছিল এবং তাঁকে ক্লাব থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।

যখন ক্ষিতীশ দর্শকাসন থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন ‌তিনি কোনিকে ধীরে ধীরে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান।

এই মুহূর্তে ‌কোনির মনের মধ্যে আবেগের স্রোত বয়ে যায়।

তাঁর প্রিয় খিদ্দা, যিনি তাঁকে গড়েছেন, আজ তাঁর সঙ্গে নেই; এই যন্ত্রণায় ও ভালোবাসায় ‌“হঠাৎ কোনির দু’চোখ জলে ভরে এলো।”

কিন্তু কোনি খুব দ্রুত নিজের আবেগকে সংবরণ করে নেয়। কারণ খিদ্দা তাঁকে শিখিয়েছেন— মাঠে আবেগ নয়, কাজই মুখ্য।

এরপর কোনি অত্যন্ত সাহসিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় এবং বিস্তর ব্যবধানে জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়।

এইভাবে কোনি তাঁর পরিশ্রম, অধ্যবসায় ও কোচের শিক্ষা দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ওঠে।

৮.৩ ‘জোচ্চুরি করে আমাকে বসিয়ে রেখে এখন ঠেকায় পড়ে এসেছ আমার কাছে” কোনির এই অভিমানের কারণ কী? এর পরবর্তী ঘটনা সংক্ষেপে বর্ণনা করো।

উত্তর: জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে কোনি মাদ্রাজে এলেও, তাকে বিভিন্ন অজুহাতে প্রতিযোগিতার বাইরে রাখা হয়। প্রতিযোগীদের তালিকায় কোনির নাম ছিল না, তাই সে কোনো ইভেন্টে অংশ নিতে পারেনি। শুধু তাই নয়, কোনিকে ‘চোর’ অপবাদও দেওয়া হয় এবং তাকে চড় মারা হয়। এই সমস্ত অন্যায় ও অপমানজনক ঘটনার ফলে কোনি ভীষণভাবে অভিমানী ও ক্রুদ্ধ হয়ে পড়ে এবং বাংলার হয়ে প্রতিযোগিতায় নামতে রাজি হয় না।

যদিও খিদ্দার প্রশিক্ষণে কোনি সেরা সাঁতারুদের একজন ছিল। এতে কোনি দুঃখ ও ক্ষোভে ভেঙে পড়ে। কিন্তু প্রতিযোগিতা শুরুর ঠিক আগে একজন নির্বাচিত প্রতিযোগী অসুস্থ হয়ে পড়লে, ‌প্রণবেন্দু বিপাকে পড়ে কোনিকেই ডাকতে বাধ্য হন।

এই সময় অভিমানে কোনি বলে— 

“জোচ্চুরি করে আমাকে বসিয়ে রেখে এখন ঠেকায় পড়ে এসেছ আমার কাছে।”

এই কথায় তার মনের কষ্ট, অবহেলার যন্ত্রণা ও আত্মবিশ্বাস প্রকাশ পায়।

পরে ‌হিয়া মিত্রের অনুরোধে ও অতিরিক্ত কস্টিউম দেওয়ায় কোনি রেসে অংশ নিতে রাজি হয়।

রেস শুরু হলে বাংলার হয়ে প্রথম জলে নামে হিয়া, তারপর পুষ্পিতা, তারপর বেলা। বেলা ‌দীপ্তি কারমারকারের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে।

এরপর রমা যোশীর থেকে তিন সেকেন্ড পরে জলে নামে কোনি।

জলে নামার আগে কোনি দেখতে পায় তার প্রিয় প্রশিক্ষক ‌ক্ষিতীশ সিংহ (খিদ্দা) তাকে বলছেন —“ফাইট কোনি, ফাইট।”

দীর্ঘদিন পর খিদ্দাকে দেখে কোনির ‌মনোবল বেড়ে যায়।

সে সমস্ত অভিমান, অপমান ও কষ্ট ভুলে ‌নিজেকে উজাড় করে দেয়।

লেখক এই দৃশ্যকে বর্ণনা করেছেন।

“জলের বদলে যদি মাটি থাকত, তাহলে মনে হত, একটি কালো প্যান্থার শিকার তাড়া করছে।”

শেষ পর্যন্ত কোনি ‌রমাকে হারিয়ে সবার আগে বোর্ড স্পর্শ করে এবং ‌বাংলার দলকে জাতীয় সাঁতারে চ্যাম্পিয়ন করে তোলে।

এর ফলে ‌হিয়া মিত্র সর্বোচ্চ সোনার পদকপ্রাপ্ত সাঁতারু হয়।

উপসংহার:

সকল ‌বাধা, অপমান ও কষ্টকে জয় করে কোনি ‌সাফল্যের শিখরে পৌঁছায়।

তার ‌সংগ্রাম, অধ্যবসায় ও আত্মবিশ্বাস আজও ‌অনুপ্রেরণার প্রতীক।

৯। চলিত গদ্যে মঙ্গানুবাদ করো:

The child shows the man as morning shows the day. He is the budding flower. He is the citizen of tomorrow. He is the future bread earner of the family.

উত্তর: শিশুই মানুষের ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দেয়, যেমন সকালে বোঝা যায় দিনের অবস্থা। সে একটি কুঁড়ি, যা ভবিষ্যতে ফুল হয়ে ফুটবে। সে আগামী দিনের নাগরিক। সে-ই ভবিষ্যতে পরিবারের উপার্জনকারী হবে।

১০। কমবেশি ১৫০ শব্দে নীচের যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

১০.১ বৃক্ষরোপণের উপযোগিতা বিষয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ রচনা করো।

উত্তর:

বিষয়: বৃক্ষরোপণের উপযোগিতা বিষয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ

মিম: সায়ন, আগামী রবিবার স্কুল থেকে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তুই যাবি তো?

সায়ন: নিশ্চয়ই যাব। গাছ না থাকলে তো আমাদের জীবনই বিপন্ন হয়ে যাবে।

মিম: একদম ঠিক বলেছিস। গাছ কার্বন ডাই–অক্সাইড শোষণ করে, অক্সিজেন দেয়। পরিবেশ বিশুদ্ধ রাখতে গাছের গুরুত্ব অপরিসীম।

সায়ন: শুধু তাই নয়, গাছ ভূমিক্ষয় রোধ করে, বৃষ্টি আনে এবং বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করে।

মিম: এখন তো জলবায়ু পরিবর্তন, গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর মতো সমস্যাও বাড়ছে। এর থেকে মুক্তি পেতে বেশি করে গাছ লাগানো জরুরি।

সায়ন: আর পশুপাখিরাও গাছের উপর নির্ভরশীল। তাই গাছ কাটার বদলে গাছ লাগাতে হবে।

মিম: চল, আমরা শুধু স্কুল নয়, পাড়াতেও বৃক্ষরোপণ করব।

সায়ন: দারুণ ভাবনা! পরিবেশ বাঁচলে আমরাও বাঁচব।

১০.২ টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত গ্রামের জনজীবন-এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।

উত্তর:

টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত গ্রামের জনজীবন

শুরেশ, কলকাতা, ৩১ মে: গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে আমাদের গ্রামের জনজীবন চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে। অবিরাম বর্ষণে গ্রামাঞ্চলের রাস্তাঘাট কাদা ও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে বহু জায়গায়। নিম্নাঞ্চলে জমে থাকা জল নিকাশি ব্যবস্থার অভাবে এখনও বের হয়নি। ফলে অনেকেই গৃহছাড়া হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন স্কুলঘর বা পঞ্চায়েত কার্যালয়ে।

চাষের জমিতে অতিরিক্ত জল জমে যাওয়ায় ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় মানুষ পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। ছোট ছোট বাচ্চাদের পায়ে হেঁটে স্কুলে যাওয়াও হয়ে উঠেছে কঠিন।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। গ্রামবাসীরা সরকারের কাছে দ্রুত সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন, যাতে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়।

১১। যে-কোনো একটি বিষয় অবলম্বনে প্ররচনা লেখো: (কমবেশি ৪০০ শব্দে)

১১.১ পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা।

উত্তর:

পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা

বর্তমান বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হলো পরিবেশ দূষণ। জলবায়ু পরিবর্তন, বায়ুদূষণ, বৃক্ষনিধন, প্লাস্টিক ব্যবহারের মতো নানা কারণে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। পরিবেশ রক্ষা এখন শুধু সরকারি দায়িত্ব নয়, আমাদের সকলের, বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদেরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। কেননা তারাই ভবিষ্যতের নাগরিক, এবং তারাই পারে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ও বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলতে।

ছাত্রছাত্রীরা যদি পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হয়, তবে তারা সমাজের অন্যদের মধ্যেও এই সচেতনতা গড়ে তুলতে পারবে। স্কুল, কলেজে পরিবেশ বিষয়ক শিক্ষা ও কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে তারা পরিবেশ রক্ষার মৌলিক ধারণাগুলি রপ্ত করতে পারে। যেমন—বৃক্ষরোপণ অভিযান, নদী ও পুকুর পরিষ্কারকরণ কর্মসূচি, প্লাস্টিকবিরোধী প্রচার অভিযান ইত্যাদিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করা যেতে পারে।

ছাত্রছাত্রীরা পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন করতে পারে। যেমন—প্লাস্টিকের বদলে কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার, বিদ্যুৎ ও পানির অপচয় না করা, যতটা সম্ভব সাইকেল বা গণপরিবহন ব্যবহার করা ইত্যাদি। তাছাড়া, পুনর্ব্যবহারযোগ্য দ্রব্য ব্যবহারে অভ্যস্ত হলে অনেকটাই দূষণ কমানো সম্ভব।

আজকের ছাত্রছাত্রীরা প্রযুক্তির সাথে সহজে মানিয়ে নিতে পারে। তাই তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিবেশ রক্ষার বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারে। ছোট ছোট ভিডিও, পোস্টার, কবিতা বা প্রবন্ধের মাধ্যমে পরিবেশ সচেতনতা গড়ে তুলতে পারে সমাজে।

স্কুল বা কলেজে ‘ইকো ক্লাব’ গঠন করে তারা নিয়মিত বিভিন্ন পরিবেশ সংরক্ষণমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। এতে যেমন তাদের মধ্যে দলবদ্ধভাবে কাজ করার অভ্যাস তৈরি হবে, তেমনি সামাজিক দায়িত্ববোধও গড়ে উঠবে।

সবশেষে বলা যায়, ছাত্রছাত্রীরা যদি ছোটবেলা থেকেই পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব বোঝে এবং তা পালন করে, তাহলে ভবিষ্যতের পৃথিবী হবে আরও সবুজ, নির্মল ও সুন্দর। কারণ, সুস্থ পরিবেশ ছাড়া জীবনের অস্তিত্ব কল্পনাও করা যায় না। অতএব, পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের জ্ঞান, উদ্যোগ এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।

১১.২ খেলাধুলার মাধ্যমে শরীরচর্চা।

উত্তর:

খেলাধুলার মাধ্যমে শরীরচর্চা

খেলাধুলা কেবল আনন্দদায়ক সময় কাটানোর উপায় নয়, এটি শরীরচর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী মাধ্যম। মানবদেহের সুস্থতা ও সক্রিয়তা বজায় রাখার জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা প্রয়োজন। খেলাধুলা সেই কাজটিই করে সজীবভাবে, সহজে এবং আনন্দের সঙ্গে।

আজকের যান্ত্রিক জীবনে মানুষ দিনদিন অলস হয়ে পড়ছে। কম্পিউটার, মোবাইল, টেলিভিশনের প্রতি আসক্তি শরীরকে বসন্ত রোগে আক্রান্ত করছে। শিশুরা মাঠে না গিয়ে ঘরের মধ্যে বসে ভিডিও গেম বা মোবাইল খেলায় ব্যস্ত। এর ফলে তাদের শরীরে স্থূলতা, মানসিক চাপ ও একাকীত্ব তৈরি হচ্ছে। অথচ নিয়মিত খেলাধুলা করলে শরীর যেমন ফিট থাকে, তেমনি মনও সতেজ ও আনন্দময় হয়।

খেলাধুলার মাধ্যমে দেহের পেশি সুগঠিত হয়, হাড় মজবুত হয় এবং রক্তসঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে। প্রতিদিন দৌড়ানো, সাঁতার কাটা, ফুটবল বা ক্রিকেট খেলা আমাদের শরীরকে সক্রিয় রাখে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পাশাপাশি ঘাম ঝরার মাধ্যমে দেহের বিষাক্ত উপাদান বেরিয়ে যায়।

খেলাধুলা শুধু শারীরিক দিক দিয়েই নয়, মানসিক ও নৈতিক উন্নয়নের দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। খেলাধুলা আমাদের শৃঙ্খলা শেখায়, দলগতভাবে কাজ করার মনোভাব গড়ে তোলে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। একজন খেলোয়াড় পরাজয়কে গ্রহণ করতে শেখে, যা জীবনের নানা ওঠানামা মোকাবিলার শিক্ষা দেয়।

বিদ্যালয় ও সমাজের উচিত খেলাধুলাকে শিক্ষার অপরিহার্য অংশ হিসেবে বিবেচনা করা। প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা ও খেলাধুলার সুযোগ থাকা জরুরি। স্কুলে খেলাধুলার জন্য পর্যাপ্ত সময়, প্রশিক্ষক ও মাঠ থাকা উচিত।

সবশেষে বলা যায়, সুস্থ জীবন যাপন করতে হলে খেলাধুলার মাধ্যমে শরীরচর্চাকে অভ্যাসে পরিণত করা আবশ্যক। “স্বাস্থ্যই সম্পদ”—এই প্রবাদ যথার্থভাবে সত্যি হয়, যদি আমরা নিয়মিত খেলাধুলার মাধ্যমে শরীর ও মনকে সুস্থ ও সতেজ রাখতে পারি।

১১.৩ একটি শীতের সকাল।

উত্তর:

একটি শীতের সকাল

শীত ঋতু প্রকৃতির এক অনন্য উপহার। তার মধ্যেও একটি শীতের সকাল যেন প্রকৃতির এক স্বপ্নময় রূপের আবির্ভাব। ঘন কুয়াশায় ঢাকা একটি শীতের সকাল আমাদের হৃদয়ে এক বিশেষ অনুভূতির সৃষ্টি করে।

শীতের সকালে ঘুম থেকে ওঠা অনেকটাই কষ্টকর। ঘরের বাইরে ঘন কুয়াশা, শীতল হাওয়ার কামড়ে যেন শরীর জমে আসে। দূরে কোথাও সূর্যের দেখা নেই, আকাশ ঢাকা সাদা কুয়াশার চাদরে। গাছের পাতায় জমে থাকা শিশিরবিন্দু সূর্যের আলো পড়লে মুক্তার মতো ঝলমল করে। চুপচাপ পরিবেশ, পাখিরা এখনও নীড়ে, কেবল মাঝে মাঝে শোনা যায় কাক বা শালিকের ডাক।

একটি শীতের সকাল মানেই গরম কম্বলের আরাম ছেড়ে উঠে পড়া একপ্রকার চ্যালেঞ্জ। তবে যাঁরা খুব সকালে হাঁটতে বের হন বা কাজের তাগিদে রাস্তায় নামেন, তাঁদের জন্য সকালটি একেবারেই অন্যরকম অভিজ্ঞতা। রাস্তাঘাটে লোকজন কম, চা-ওয়ালার স্টলে ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপে উষ্ণতার আমন্ত্রণ থাকে। কিছু মানুষ আগুন জ্বেলে চারপাশে বসে গা গরম করছেন – সে এক ঘরোয়া দৃশ্য।

গ্রামের শীতের সকাল শহরের থেকে অনেক বেশি মনোরম। মাঠে শিশিরভেজা ঘাসের ওপর দিয়ে কৃষকরা যাচ্ছেন খেতে, গরুদের গলায় ঘণ্টার শব্দ দূর থেকে শোনা যায়। কুয়াশার পর্দা সরে গেলে রোদ ঝলমলে দিন আসতে শুরু করে। ধীরে ধীরে চারপাশ প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে।

শীতের সকালে গৃহিণীরা খেজুরের রস দিয়ে পিঠে-পুলি তৈরিতে ব্যস্ত থাকেন। স্কুলগামী শিশুরা মোটা জামাকাপড়ে আবৃত হয়ে ব্যাগ পিঠে নিয়ে বেরোয়। কেউ আবার অলস ঘুমে সকালে দেরি করে উঠে গরম চায়ে চুমুক দিয়ে শীত উপভোগ করে।

একটি শীতের সকাল কেবল প্রকৃতির রূপেরই বহিঃপ্রকাশ নয়, তা আমাদের জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতির সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। এই সকালে প্রকৃতি যেমন শান্ত, তেমনি মানুষের জীবনেও আসে ধীর গতি ও নিরব আনন্দের ছোঁয়া। শীতের সকাল তাই আমাদের মনে চিরকাল এক কোমল অনুভূতি জাগিয়ে রাখে।

১১.৪ বইমেলা।

উত্তর:

বইমেলা

বইমেলা মানেই বাঙালির আবেগ, সংস্কৃতি আর সাহিত্যচর্চার এক অনন্য উৎসব। প্রতি বছর শীতের শেষে বা বসন্তের আগমনে বইপ্রেমীদের হৃদয়ে এক নতুন রঙ ছড়িয়ে দেয় এই মেলা। শুধু বই কেনাবেচার স্থান নয়, বইমেলা হয়ে ওঠে জ্ঞানের আদান-প্রদান, সাহিত্যিক-প্রকাশক-পাঠকের এক মিলনক্ষেত্র।

বইমেলার ইতিহাস বেশ পুরনো। বাংলায় আন্তর্জাতিক বইমেলার সূচনা ঘটে কলকাতা বইমেলার মাধ্যমে, ১৯৭৬ সালে। এরপর বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময় বইমেলা অনুষ্ঠিত হতে থাকে।কলকাতার আন্তর্জাতিক বইমেলা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

বইমেলায় বাংলা ও ইংরেজি ভাষার সাহিত্যের বিশাল সম্ভার পাওয়া যায়। বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থার স্টল সাজানো থাকে নতুন বই নিয়ে। এখানে উপন্যাস, গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, জীবনী, রম্যরচনা, বিজ্ঞানচর্চা ইত্যাদি নানা বিষয়ের বই পাওয়া যায়। শিশুসাহিত্যের জন্য থাকে আলাদা কর্নার, যা শিশুদের মন কাড়ে সহজেই। বইমেলায় লেখক-পাঠক সরাসরি দেখা করে মতবিনিময় করতে পারেন, যা বইয়ের প্রতি পাঠকের আগ্রহ বাড়ায়।

বইমেলার আরেকটি বড় দিক হলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কবিতা পাঠ, গান, নাটক, আলোচনাসভা ইত্যাদির মাধ্যমে এক সাহিত্যিক পরিবেশ তৈরি হয়। এতে সাহিত্যপ্রেমীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও আকৃষ্ট হন। অনেক স্কুল-কলেজ থেকে ছাত্রছাত্রীরা দলবেঁধে আসে বইমেলায়, ফলে ছোটবেলা থেকেই বইয়ের প্রতি ভালোবাসা গড়ে ওঠে।

তবে কিছু সমস্যা রয়েছে। অতিরিক্ত ভিড়, অপ্রতুল নিরাপত্তা, হকারদের ভিড় এবং অস্থায়ী বইচোরদের দৌরাত্ম্য কখনো কখনো মেলার আনন্দকে ম্লান করে দেয়। অনেক সময় উচ্চমূল্যের কারণে অনেক পাঠক কাঙ্ক্ষিত বই কিনতে পারেন না। এসব সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের সক্রিয় হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

আজকের ডিজিটাল যুগে ই-বুক ও মোবাইল অ্যাপের প্রসার ঘটলেও বইমেলার আবেদন কিন্তু কমেনি। বইয়ের গন্ধ, পৃষ্ঠার শব্দ, লেখকের স্বাক্ষর নেওয়ার আনন্দ—এসব কিছুই বইমেলাকে করে তোলে অনন্য।

সুতরাং, বইমেলা শুধু একটি মেলা নয়, এটি একটি আন্দোলন, একটি উৎসব, যা পাঠ্যাভ্যাস গড়তে, মননশীলতা বাড়াতে ও জাতিকে আলোকিত করতে সহায়তা করে। আমাদের উচিত, বইমেলায় অংশগ্রহণ করে এই ঐতিহ্যকে আরো সমৃদ্ধ করা।


MadhyamikQuestionPapers.com এ আপনি অন্যান্য বছরের প্রশ্নপত্রের ও Model Question Paper-এর উত্তরও সহজেই পেয়ে যাবেন। আপনার মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতিতে এই গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ কেমন লাগলো, তা আমাদের কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আরও পড়ার জন্য, জ্ঞান অর্জনের জন্য এবং পরীক্ষায় ভালো ফল করার জন্য MadhyamikQuestionPapers.com এর সাথে যুক্ত থাকুন।

Tag Post :
Share This :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *