আপনি কি মাধ্যমিকের বাংলা প্রশ্নপত্রের উত্তর খুঁজছেন? এই আর্টিকেলে আপনি পাবেন ২০২৩ সালের মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্নপত্রের সঠিক উত্তর।
নিচে ২০২৩ সালের প্রশ্নপত্রের প্রতিটি উত্তর সুন্দরভাবে সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য আগের বছরের প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
MadhyamikQuestionPapers.com ২০১৭ থেকে বর্তমান পর্যন্ত সব মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র এবং উত্তর বিনামূল্যে আপলোড করেছে।
Download 2017 to 2024 All Subject’s Madhyamik Question Papers
View All Answers of Last Year Madhyamik Question Papers
যদি দ্রুত প্রশ্ন ও তার উত্তর খুঁজতে চান, তাহলে নিচের Table of Contents এর পাশে থাকা [!!!] এই চিহ্নটিতে ক্লিক করুন। এই পেজে থাকা সমস্ত প্রশ্নের উত্তর Table of Contents এ ক্রমানুসারে দেওয়া আছে। যে প্রশ্নের ওপর ক্লিক করবেন, সরাসরি তার উত্তরে চলে যেতে পারবেন।
Table of Contents
Toggle১। সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো:
১.১ ইসাবের বাবা পাঠান কী বলে অমৃতের মাকে সম্বোধন করেছিলেন?
(ক) বাহালি কাকিমা বলে
(খ) বাহালি বৌদি বলে
(গ) বাহালি বহিন বলে
(ঘ) বাহালি দিদি বলে
উত্তর: (খ) বাহালি বৌদি বলে
১.২ “আশ্চর্য হয়েছি, একটু ভয়ও পেয়েছি।” হরিদার কোন রূপ দেখে বক্তার এমন দশা হয়েছিল?
(ক) কাপালিক রূপ দেখে
(খ) বাইজির রূপ দেখে
(গ) পুলিশের সাজ দেখে
(ঘ) বিরাগী রূপ দেখে
উত্তর: (ঘ) বিরাগী রূপ দেখে
১.৩ পুলিশ স্টেশনে বসে থাকা বাঙালিরা কোথায় কাজ করত?
(ক) বর্মা জাহাজঘাটে
(খ) বর্মা-অয়েল-কোম্পানিতে
(গ) বর্মা কয়লাখনিতে
(ঘ) বর্মা চটকলে
উত্তর: (খ) বর্মা-অয়েল-কোম্পানিতে
১.৪ ‘অসুখী একজন’ কবিতার কথক ঘুমিয়েছিলেন –
(ক) বারান্দায়
(খ) মেঝেতে
(গ) ঝুলন্ত বিছানায়
(ঘ) ঘাস জন্মানো রাস্তায়
উত্তর: (গ) ঝুলন্ত বিছানায়
১.৫ ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় কবি ‘অস্ত্র’ রাখতে বলেছেন –
(ক) ঋষি বালকের পায়ে
(খ) নদীতে
(গ) দেশগাঁয়ে
(ঘ) গানের দুটি পায়ে
উত্তর: (ঘ) গানের দুটি পায়ে
১.৬ “অভিষেক করিলা কুমারে।” কীভাবে রাজা কুমারকে অভিষেক করলেন? –
(ক) বিল্বপত্র দিয়ে
(খ) দধিদুগ্ধ দিয়ে
(গ) গঙ্গোদক দিয়ে
(ঘ) পাদোদক দিয়ে
উত্তর: (গ) গঙ্গোদক দিয়ে
১.৭ আদিতে ফাউন্টেন পেনের নাম ছিল –
(ক) ফাউন্টেন পেন
(খ) রিজার্ভার পেন
(গ) ঝরনা কলম
(ঘ) পার্কার পেন
উত্তর: (খ) রিজার্ভার পেন
১.৮ ‘Sensitized paper’-এর বাংলা অনুবাদ কী লিখলে ঠিক বলে মনে করেন লেখক?
(ক) স্পর্শকাতর কাগজ
(খ) সুগ্রাহী কাগজ
(গ) সুবেদী কাগজ
(ঘ) ব্যথাপ্রবণ কাগজ
উত্তর: (খ) সুগ্রাহী কাগজ
১.৯ “সম্ভবত শেষ পর্যন্ত নিবের কলমের মান মর্যাদা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন একমাত্র”
(ক) অন্নদাশঙ্কর রায়
(খ) শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়
(গ) ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়
(ঘ) সত্যজিৎ রায়
উত্তর: (ঘ) সত্যজিৎ রায়
১.১০ অন্যের পরিচালনায় যে কর্তা কাজ করে, তাকে বলে
(ক) প্রযোজক কর্তা
(খ) প্রযোজ্য কর্তা
(গ) সহযোগী কর্তা
(ঘ) উহ্য কর্তা
উত্তর: (খ) প্রযোজ্য কর্তা
১.১১ ‘আমাদের ইতিহাস নেই’ নিম্নরেখ পদটি –
(ক) কর্তৃকারক
(খ) কর্মকারক
(গ) সম্বন্ধ পদ
(ঘ) অধিকরণ কারক
উত্তর: (খ) কর্মকারক
১.১২ উপমান ও উপমেয় পদের অভেদ কল্পনা করা হয় যে সমাসে, তার নাম
(ক) উপমিত কর্মধারয়
(খ) উপমান কর্মধারয়
(গ) রূপক কর্মধারয়
(ঘ) সাধারণ কর্মধারয়
উত্তর: (গ) রূপক কর্মধারয়
১.১৩ ‘চিরসুখী’ পদটি হল
(ক) করণ তৎপুরুষ
(খ) কর্ম তৎপুরুষ
(গ) ব্যাপ্তি তৎপুরুষ
(ঘ) সম্বন্ধ তৎপুরুষ
উত্তর: (গ) ব্যাপ্তি তৎপুরুষ
১.১৪ ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর।’ এটা কী জাতীয় বাক্য?
(ক) নির্দেশক বাক্য
(খ) অনুজ্ঞাসূচক বাক্য
(গ) আবেগসূচক বাক্য
(ঘ) প্রার্থনাসূচক বাক্য
উত্তর: (খ) অনুজ্ঞাসূচক বাক্য
১.১৫ আজকের সকালটা বেশ কাটল। গঠনগত দিক দিয়ে বাক্যটি হল
(ক) সরল বাক্য
(খ) জটিল বাক্য
(গ) যৌগিক বাক্য
(ঘ) মিশ্র বাক্য
উত্তর: (ক) সরল বাক্য
১.১৬ ‘মহাশয়ের কী করা হয়?’ এটি কোন্ বাচ্যের দৃষ্টান্ত?
(ক) কর্তৃবাচ্য
(খ) কর্মবাচ্য
(গ) ভাববাচ্য
(ঘ) কর্মকর্তৃবাচ্য
উত্তর: (খ) কর্মবাচ্য
১.১৭ যে বাক্যে কর্তা অনুপস্থিত থাকে এবং কর্মই কর্তারূপে প্রতীয়মান হয়, তাকে বলে –
(ক) কর্মবাচ্য
(খ) কর্তৃবাচ্য
(গ) কর্মকর্তৃবাচ্য
(ঘ) ভাববাচ্য
উত্তর: (গ) কর্মকর্তৃবাচ্য
২। কমবেশি ২০টি শব্দে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:
২.১ নীচের যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
২.১.১ “হঠাৎ অমৃতের মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল,” ‘বুদ্ধি’টা কী ছিল?
উত্তর: ইসাবের জামা ছেঁড়ার ব্যাপারটা যাতে কেউ বুঝতে না পারে তাই নিজের অক্ষত জামাটা ইসাবের সঙ্গে বদলে নেওয়ার বুদ্ধি খেলে যায় অমৃতের মাথায় ।
২.১.২ “বড়ো ভয় করিতে লাগিল নদেরচাঁদের।” নদেরচাঁদের ভয় করার কারণ কী?
উত্তর: বর্ষার জলে পুষ্ট বিদ্রোহিনী নদীকে দেখে নদের চাঁদের ভয় লাগার কথা বলা হয়েছে। প্রবল বৃষ্টিতে নদী আরও উত্তাল হয়ে ওঠে। উপলব্ধি করে ক্ষোভে-রোষে উন্মত্ত জলরাশির দিকে দৃষ্টিপাত করে তার ভয় করতে লাগল।
২.১.৩ “অপূর্ব মুগ্ধ হইয়া সেইদিকে চাহিয়া ছিল,” অপূর্ব কী দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিল?
উত্তর: গিরীশ মহাপাত্রের পোষক পরিচ্ছদ হাস্যকর হলেও, তার চোখের দীপ্ততা ছিল উজ্জ্বল ও গভীর, অপূর্ব তা দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিল।
২.১.৪ “আক্ষেপ করেন হরিদা” হরিদার আক্ষেপের কারণ কী?
উত্তর: জগদীশ বাবুর বাড়িতে আগত সন্ন্যাসী চলে যাওয়ায় হরিদা আক্ষেপ করেন।
২.১.৫ “রত্বের মূল্য জহুরির কাছেই।” কথাটির অর্থ কী?
উত্তর: রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই’-মন্তব্যটির অর্থ হল প্রকৃত সমঝদার ব্যক্তিই শুধুমাত্র গুণীর সমাদর করতে পারে।
২.২ নীচের যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
২.২.১ “যেখানে ছিল শহর” সেখানকার কী অবস্থা হল?
উত্তর: যেখানে শহর ছিল সেখানে এখন চারদিকে ছড়িয়ে কাঠকয়লা, দোমড়ানো লোহা, পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা, আর রক্তের একটা কালো দাগ ।
২.২.২ “বলো ‘ক্ষমা করো’-” কীসের জন্য এই ক্ষমা প্রার্থনা?
উত্তর: সাম্রাজ্যবাদী শক্তিসহ সভ্য দুনিয়া যুগ যুগ ধরে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য আফ্রিকার সংস্কৃতি ও জনজাতির ওপর বর্বরোচিত শোষণ চালিয়েছে । তার জন্য মানবসভ্যতার প্রতিনিধি হয়ে যুগান্তের কবির এই ক্ষমাপ্রার্থনা ।
২.২.৩ “হা ধিক্ মোরে।” বস্তা নিজেকে ধিক্কার দিচ্ছেন কেন?
উত্তর: শত্রুসৈন্য যখন লঙ্কাকে ঘিরে ফেলেছে তখন তিনি প্রসোদকাননে সময় কাটাচ্ছেন এই ভেবেই ইন্দ্রজিৎ নিজেকে ধিক্কার দিয়েছিল।
২.২.৪ “তথা কন্যা থাকে সর্বক্ষণ।” কন্যা কোথায় থাকে?
উত্তর: কন্যা’ অর্থাৎ সমুদ্রদুহিতা পদ্মা সমুদ্রতীরের পাশেই এক দিব্যস্থানে বহুরত্নশোভিত প্রাসাদে থাকত।
২.২.৫ “ধ্বংস দেখে ভয় কেন তোর?-“- কবি ধ্বংসকে ভয় পেতে নিষেধ করেছেন কেন?
উত্তর: কবি যে ধ্বংসের কথা বলেছেন, সেই মহাকালের ভয়ংকর ধ্বংসলীলার মধ্যেও নবসৃষ্টির বীজ নিহিত থাকে। সেইজন্যই কবি এই ধ্বংস দেখে তাকে ভয় না-করার কথা বলেছেন।
২.৩ নীচের যে-কোনো তিনটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
২.৩.১ ‘কুইল’ কাকে বলে?
উত্তর: রাজহাঁস বা বড়সড় পাখির পালকেরতৈরি কলমকে কুইল বলে।
২.৩.২. বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের উদ্যোগে কী ত্রুটি ছিল?
উত্তর: বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের উদ্যোগে ত্রুটি ছিল তাঁরা একসঙ্গে কাজ না করে পৃথকভাবে কাজ করেছিলেন ।
২.৩.৩ “আশ্চর্য, সবই আজ অবলুপ্তির পথে।” আজ কী অবলুপ্তির পথে?
উত্তর: আশ্চর্য, সবই আজ অবলুপ্তির পথে, আজ নানা ধরনের ফাউনটেন পেন, কালি, দোয়াত, কলমদানি এ সবই আজ অবলুপ্তির পথে ।
২.৩.৪ “বাংলায় বিজ্ঞান শেখা তাদের সংস্কারের বিরোধী নয়।” কাদের পক্ষে এই শিক্ষা সংস্কার বিরোধী নয়?
উত্তর: বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক বলেছেন, যাদের বিজ্ঞান ও ইংরেজি ভাষা সম্পর্কে জ্ঞান অতি নগণ্য, তাদের পক্ষে এই শিক্ষা সংস্কারবিরোধী নয়।
২.৪ নীচের যে-কোনো আটটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
২.৪.১ বিভক্তি কাকে বলে?
উত্তর: বাক্যের মধ্যে অন্য শব্দের সাথে বিশেষ্য ও সর্বনাম পদের সম্পর্ক বোঝাতে অর্থহীন কিছু লগ্নক যুক্ত হয়, এই লগ্নকগুলোকে বিভক্তি বলে।
২.৪.২ নিরপেক্ষ কর্তার একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: নিরপেক্ষ কর্তার একটি উদাহরণ– সূর্য উঠলে পদ্ম ফুল ফুটবে।
২.৪.৩ ‘উপগ্রহ’ কথাটির ব্যাসবাক্যসহ সমাসের নাম লেখো।
উত্তর: উপগ্রহ= গ্রহের সদৃশ (অব্যয়ীভাব সমাস)।
২.৪.৪ ‘আলোপ সমাস’ কাকে বলে?
উত্তর: যে সমাসে সমস্যমান পদের বিভক্তি লোপ পায় না, তাকে অলোপ সমাস বলে।
২.৪.৫ বিমলবাবুর ছেলে হেঁটে হেঁটে স্কুল যায় বাক্যটির উদ্দেশ্য ও বিধেয় অংশ চিহ্নিত করো।
উত্তর: উদ্দেশ্য = বিমলবাবুর ছেলে, বিধেয় = হেঁটে হেঁটে স্কুল যায়।
২.৪.৬ খাঁটি গোরুর দুধ খেতে হবে। এটি বাক্য নয় কেন?
উত্তর: খাঁটি গোরুর দুধ খেতে হবে।- এটি বাক্য নয়, কারণ এখানে সুশৃঙ্খল পদ বিন্যাস বা আসত্তি নেই। বাক্যটি হত এরকম – গোরুর খাঁটি দুধ খেতে হবে।
২.৪.৭ ভাববাচ্যের একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: একটি ভাববাচ্যের উদাহরণ হলো – এবার মাছ ধরা যাক।
২.৪.৮ ‘কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল!’ জটিল বাক্যে পরিবর্তন করো।
উত্তর: যেই তপন কথাটা শুনল অমনি তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল। (জটিল বাক্য)
২.৪.৯ সিঁড়ি থেকে নামা হল। বাক্যটিকে কর্তৃবাচ্যে রূপান্তর করো।
উত্তর: সিঁড়ি থেকে নামল। (কর্তৃবাচ্য)
২.৪.১০ চাঁদের পাহাড়ের গল্প কখনও ভুলব না বাক্যটিকে প্রশ্নসূচক বাক্যে রূপান্তর করো।
উত্তর: চাঁদের পাহাড়ের গল্প কি কখনও ভুলব? (প্রশ্নসূচক বাক্যে)
৩। প্রসঙ্গ নির্দেশসহ কমবেশি ৬০ শব্দে নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:
৩.১ নীচের যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৩.১.১ “তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয়ে যায়।” ‘ঢং’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? কীসে ঢং নষ্ট হয়ে যাবে?
উত্তর: কথাসাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের লেখা ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে আলোচ্য কথাগুলি গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হরিদা আলোচ্য উক্তিটির বক্তা। গল্পে ‘ ঢং ‘ বলতে ‘ বহুরূপী ‘সেজে হরিদা যে অভিনয় করতেন সেটাই বোঝানো হয়েছে।
হরিদা বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়িতে উপস্থিত হন বেশ কিছু উপার্জনের আশা নিয় । হরিদাকে প্রকৃত বিরাগী মনে করে জগদীশবাবু তাকে আতিথ্য গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেন । হরিদা আতিথ্য প্রত্যাখ্যান করলে জগদীশবাবু হরিদাকে তীর্থ ভ্রমণের জন্য একশো এক টাকা প্রণামি দিতে চান । এই অর্থ গ্রহণ করলে হরিদার বহুরুপী পেশা নষ্ট হয়ে যাবে , তাই তিনি প্রকৃত সন্ন্যাসীর মতো এই অর্থ প্রত্যাখ্যান করেন।
৩.১.২ “ওরা ভয়ে কাঠ হয়ে গেল।” ‘ওরা’ কারা? তারা ভয়ে কাঠ হয়ে গেল কেন?
উত্তর: ওরা ভয়ে কাঠ হয়ে গেলো”- উদ্ধৃত অংশটিলেখক পান্নালাল প্যাটেলএর লেখা গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।
এখানে ওরা বলতে ইশাব ও অমৃত এর কথা বলা হয়েছে।
ওরা ভয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিল কারণ ঈশাব এর বাবা অনেক কষ্ট করে তাকে জমা কিনে দিয়েছিল একদিন হোলির পড়ন্ত বিকেলে অমৃত ও ইশাব বসে ছিল তখন কালিয়া ও তার কিছু বন্ধু তাদের জোর করে কুস্তি লড়তে রাজি করে তখন কালিয়ার সথে ইশাব কুস্তি লড়তে গিয়ে তার জামা ছিঁড়ে গিয়েছিল তখন ইশাব ভয় পাচ্ছিল যে তার বাবা তাকে মারবে তাই তারা ভয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিল।
৩.২ নীচের যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৩.২.১ “এল মানুষ-ধরার দল” ‘মানুষ-ধরার দল’ কোথায় এল? তাদের ‘মানুষ-ধরার দল’ বলার কারণ কী?
উত্তর: এল মানুষ-ধরার দল” মানুষ-ধরার দল” আফ্রিকায় এল।
মানুষ-ধরার দল বলার কারণ বলতে বোঝানো হয়েছে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শাসকদের, যারা আফ্রিকায় এসে তাদের শোষণের কাজ শুরু করেছিল। তারা আফ্রিকার শান্ত, সরল, এবং নিরীহ মানুষদের ধরে নিয়ে গিয়ে দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করত। এই শোষক দল শুধুমাত্র আফ্রিকার সম্পদ লুট করেনি, বরং তাদের সমাজ, সংস্কৃতি, এবং ঐতিহ্য ধ্বংস করে দিয়েছে।
এই মানুষ-ধরার দল আফ্রিকার মানুষদের ওপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালিয়েছিল। তাদের জীবনের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে অন্য দেশে বিক্রি করা হয়। আফ্রিকার মানুষরা নিজভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কষ্টকর দাসজীবন কাটাতে বাধ্য হয়েছিল। তাই তাদের ‘মানুষ-ধরার দল’ বলা হয়েছে ।
৩.২.২ “আমরা ভিখারি বারোমাস”- ‘আমরা’ বলতে কারা? ‘ভিখারি’ শব্দ বলে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: উদ্ধৃতিটি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতার অংশ বিশেষ । আমরা ভিখারি বারোমাস বলতে কবি মানুষের মানসিক দৈন্যের কথা বলেছেন ।
কবির মতে নানান প্রতিকূলতা ও যুগযন্ত্রণার ক্ষত নিয়ে মানুষ বেঁচে আছে । সে পথহারা , তার মানসিক দৃঢ়তা শিথিল হয়ে পড়েছে । তার প্রকৃত ইতিহাসের সঠিক প্রতিফলন হয়নি জেনেও সে নিশ্চুপ ও বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন । এভাবে আপাতদুর্বল ও ভীরু সাধারণ মানুষের অবহেলিত মানসিক দৈন্যের কথা বলতে গিয়ে কবি এমন মন্তব্য করেছেন ।
৪। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৪.১ “নিজের এই পাগলামিতে যেন আনন্দই উপভোগ করে।” কার ‘পাগলামির কথা বলা হয়েছে? তার পাগলামির পরিচয় দাও।
উত্তর: আলোচ্য অংশটি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ছোটগল্প ‘নদীর বিদ্রোহ’ থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে গল্পের প্রধান চরিত্র নদেরচাঁদ-এর ‘পাগলামির কথা কথা বলা হয়েছে।
গ্রামবাংলার ছেলে নদেরচাদের জন্ম , শৈশব , বেড়ে ওঠা , আশা – আকাঙ্ক্ষা সবই নদীকে কেন্দ্র করে । নদীর সঙ্গে তার আত্মিক সম্পর্ক । নদীর ক্ষীণধারা দেখে বর্ষণপষ্ট স্ফীতকায় নদী তার মনে পুলক জাগায় । নদীর প্রতি এইরূপ প্রেম তার যে সাজে না এ কথা সে বুঝলেও তার মনকে বোঝাতে পারে না । কোথাও যেন নিজের এই পাগলামিতে সে আনন্দ উপভোগ করে । নদীর প্রতি এই অস্বাভাবিক টানকে নদেরচাঁদের পাগলামি বলে মনে হয়, কিন্তু মনের অভ্যন্তরে নদেরচাঁদ এই ছেলেমানুষি থেকে আনন্দ অনুভব করে।
৪.২ “তপনের মনে হয় আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন।” কোন্ দিন তপনের এমন মনে হয়েছিল? তার এমন মনে হওয়ার কারণ কী?
উত্তর: আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে প্রধান চরিত্র কিশোর তপনের জীবনের কথা বলা হয়েছে ।
তপনের নতুন মেসোমশায় একজন লেখক । তিনি তপনের লেখা গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল । পত্রিকায় গল্পটি প্রকাশিত হয়েছিল । নিজের লেখা গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছেপে বের হওয়ার কথা শুনে তপনের মনে অদ্ভুত রকমের আনন্দও হয়েছিল ।
তার মা-এর কথায় তপন নিজের লেখা গল্পটি পড়ে সবাইকে শোনাতে গিয়েছিল । কিন্তু গল্পটি পড়তে গিয়ে সে দেখে যে, নতুন মেসো গল্পটা কারেকশান করার নামে সম্পূর্ণ নতুন করে লিখে দিয়েছেন । এই পরিবর্তনটা তপন কিছুতেই মেনে নিতে পারে নি । তার জীবনের প্রথম লেখা গল্প সম্পূর্ণ পরিবর্তিত রূপে প্রকাশিত হোক এটা সে কখনো চায়নি । এর জন্য সে অত্যন্ত দুঃখ পেয়েছে এবং ব্যথিত হয়েছে । অত্যন্ত দুঃখে তার চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরেছে । অব্যক্ত যন্ত্রণায় তার দিনটি কেটেছে বলে এই দিনটি তপনের কাছে তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন ।
৫। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৫.১ “হায়, বিধি বাম মম প্রতি।” বক্তা কে? তার এরূপ বক্তব্যের কারণ কী?
উত্তর: উদ্ধৃতাংশটি মধুসূদন দত্ত রচিত ‘ অভিষেক ‘ নামক পদ্যাংশ থেকে নেওয়া হয়েছে । এখানে বক্তা স্বয়ং রাবণ।
বীরবাহুর মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে ক্রদ্ধ ইন্দ্রজিৎ লঙ্কায় উপস্থিত হয়ে রাবণের কাছে যুদ্ধে যাওয়ার অনুমতি প্রার্থনা করেন । একবার পুত্রশোক পাওয়ার পর রামের বিরুদ্ধে এই ভয়ানক যুদ্ধে আর – এক প্রিয় পুত্রকে পাঠাতে চান না রাবণ । কিন্তু ভাগ্য তাঁর প্রতি এতটাই বিরূপ যে শেষ পর্যন্ত রক্ষকুলশেখর ইন্দ্রজিৎকেও যুদ্ধে পাঠাতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি ।
৫.২ জয় গোস্বামীর ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় কবির যে যুদ্ধ-বিরোধী মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যায় তার বর্ণনা দাও।
উত্তর: কবি জয় গোস্বামীর লেখা ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় বর্ণিত হয়েছে যুদ্ধের বিরুদ্ধে গানের প্রয়োগ কথা । মানুষের পীড়ন-আর্তনাদের কলরোল গানের সুরের প্রলেপ দিয়ে ঢেকে দিতে হবে । সমস্ত ক্ষমতা, হিংস্রতা ও দম্ভকে বশ করার জন্য গানই কবির বন্ধু হয়ে উঠেছে ।
অস্ত্রের উদ্ধত আক্রমণকে রুখতে কবি গানকে অবলম্বন করেছেন । কবি চান উদার মানবিকতার সুউচ্চ আদর্শের অনুরণনে সমাজের বুকে উদ্যত অস্ত্রের ঝংকার বন্ধ হোক। কবির বিশ্বাস গানের সুরে তাড়ানো যায় বুলেট । আর যুদ্ধ নয় এবার হোক মানবতার জয় । একমাত্র গানই পারে সেই জয়কে ঘোষিত করতে, কারণ গান মানুষের অনাবিল ভালোবাসার প্রকাশ । যারা রক্তচক্ষুর শাসন নিয়ে ঘুরে বেড়ায় তারাও একদিন গানের পায়ে অঞ্জলি দেবে সব অস্ত্র — এটাই কবির বিশ্বাস । তাই কবি দৃঢ় ভঙ্গিতে বলতে পেরেছেন
“অস্ত্র ফ্যালো,অস্ত্র রাখো পায়ে ।”
৬। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৬.১ বাংলা বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থের পাঠকদের লেখক যে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করেছেন, তাদের পরিচয় দাও।
উত্তর: রাজশেখর বসু তাঁর “বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান” গ্রন্থে পাঠকদের দুটি শ্রেণিতে ভাগ করেছেন। এই দুটি শ্রেণি হলো:
- প্রথম শ্রেণি – যারা ইংরেজি জানে না বা অতি অল্প জানে: এই শ্রেণির পাঠকরা সাধারণত অল্পবয়স্ক ছেলেমেয়ে এবং অল্পশিক্ষিত বয়স্ক লোকদের অন্তর্ভুক্ত। তাদের কাছে বিজ্ঞান সম্পর্কে খুব বেশি ধারণা নেই এবং তারা কিছু সাধারণ ইংরেজি শব্দ যেমন “টাইফয়েড”, “মোটর”, “ক্রোটন” ইত্যাদি শিখেছে। তাদের বিজ্ঞান সম্পর্কে অনেকটা প্রাথমিক ধারণা থাকে, যেমন কিছু সাধারণ বৈজ্ঞানিক তথ্য যেমন “পিতলের চাইতে আলিউমিনিয়াম হালকা”, “জল আর কপুর উবে যায়” ইত্যাদি। এই শ্রেণির পাঠকরা বাংলা পরিভাষা আয়ত্ত করতে বাধাহীনভাবে বিজ্ঞানের মৌলিক ধারণা শিখতে পারেন।
- দ্বিতীয় শ্রেণি – যারা ইংরেজি জানে এবং কিছুটা ইংরেজি ভাষায় বিজ্ঞান পড়েছে: এই শ্রেণির পাঠকরা সাধারণত ইংরেজি ভাষায় কিছুটা বিজ্ঞানের ধারণা অর্জন করেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই ইংরেজি ভাষার প্রতি একটি সংস্কার বা পক্ষপাতিত্ব রাখেন। এই শ্রেণির পাঠকদের জন্য বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান পড়তে কিছুটা চেষ্টা করতে হয়, কারণ তাদের মধ্যে ইংরেজি ভাষার শব্দাবলি এবং ধারণাগুলোর সঙ্গে বাংলা ভাষার সাথে সংযুক্ত হওয়ার সময় বাধা আসতে পারে। তাদের পক্ষে বাংলা ভাষায় বৈজ্ঞানিক পরিভাষা আয়ত্ত করা এবং পূর্বের ইংরেজি সংস্কার মেনে চলা কিছুটা কঠিন হতে পারে।
এই দুটি শ্রেণির পাঠকদের জন্য রাজশেখর বসু বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থ লেখার ক্ষেত্রে ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বাধা এবং তাদের প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন।
৬.২ “তাই নিয়ে আমাদের প্রথম লেখালেখি।” লেখকের প্রথম লেখালেখির আয়োজনের পরিচয় দাও।
উত্তর: লেখক তাঁর শৈশবে লেখালেখির যে আয়োজন করেছিলেন, তা ছিল একেবারে সৃজনশীল এবং গ্রামের সহজ জীবনধারার মধ্যে গড়া। গ্রামের পরিবেশে, যেখানে আধুনিক লেখার উপকরণ অনুপস্থিত ছিল, সেখানে লেখক এবং তাঁর বন্ধুরা নিজেদের উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে লেখালেখির সূচনা করেছিলেন। তাঁরা ছোট ছোট বাঁশের কঞ্চি কেটে কলম তৈরি করতেন। কলমের মাথা কেটে, কখনো বড়দের পরামর্শ নিয়ে, আবার কখনো নিজেরাই তার আকার ঠিক করতেন যাতে তা লেখার জন্য উপযুক্ত হয়।
লেখালেখির জন্য কাগজের অভাবে তারা কলাপাতা ব্যবহার করতেন। কলাপাতা ছোট ছোট টুকরো করে কেটে, তাতে নিজের লেখালেখি সমাপ্ত করার পর সেই পাতা পুকুরে ভাসিয়ে দিতেন। এতে ছিল শৈশবের সরলতা এবং গ্রামীণ পরিবেশের একটি বিশেষ ছোঁয়া।
কাগজ এবং কলম তৈরির পাশাপাশি কালি তৈরি করার পদ্ধতিও ছিল অত্যন্ত অভিনব। কাঠের উনুনে কড়াই বসিয়ে তার তলায় জমে থাকা কালিকে লাউপাতা দিয়ে ঘষে জল দিয়ে গুলে নিতেন। কখনো এই জলে হরীতকী মেশানো হত, আবার কখনো আতপ চাল পুড়িয়ে তার ব্যবহার করা হত। শেষপর্যন্ত, মাটির দোয়াতে সেই কালি ভরে রাখতেন।
লেখকের এই শৈশবের স্মৃতিগুলি গ্রামীণ জীবনের সৃজনশীলতা এবং সহজাত মেধার চমৎকার উদাহরণ। তাঁর প্রথম লেখালেখির আয়োজন ছিল তাঁর লেখালেখির প্রতি গভীর ভালোবাসার প্রথম প্রকাশ, যা পরবর্তীতে তাঁর লেখালেখি জীবনের শুরু হিসেবে পরিচিতি পায়।
৭। কমবেশি ১২৫ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৭.১ “বাংলার মান, বাংলার মর্যাদা, বাংলার স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়াসে আপনারা আপনাদের শক্তি দিয়ে, বুদ্ধি দিয়ে, সর্বরকমে আমাকে সাহায্য করুন। – “সিরাজ কাদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছিলেন? কেন তিনি এই সাহায্যের প্রত্যাশী হয়েছেন?
উত্তর: যাঁদের কাছে আবেদন: শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাট্যাংশে নবাব সিরাজদ্দৌলা উক্ত সাহায্যের আবেদন জানিয়েছিলেন রাজবল্লভ, জগৎশেঠ, মীরজাফর প্রমুখের কাছে।
সাহায্য প্রত্যাশী: মীরজাফর, জগৎশেঠরা ছিলেন নবাব সিরাজদ্দৌলার বিরোধী। তাঁরা মনে করতেন যে, নবাব তাঁদের অপমান করেছেন। অন্যদিকে নবাব এইসব ক্ষমতাবানরা যে স্বার্থপর এবং তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত, তা বুঝতে পেরেছিলেন। নবাবের বিরুদ্ধে মীরজাফরকে লেখা ওয়াটসের চিঠিটাই ছিল তার প্রমাণ। নবাৰ সিরাজ এসত্ত্বেও দেশের জন্য সমস্ত পুরোনো বিবাদ ভুলে যেতে চেয়েছিলেন। তাঁর মনে হয়েছিল যে, দেশের দুর্দিনে ঐক্যবদ্ধ থাকাটাই বেশি জরুরি। “আজ বিচারের দিন নয়, সৌহার্দ্য স্থাপনের দিন!”
তাই বাংলার দুর্দিনে কেউ যেন তাঁকে ত্যাগ না করে তার জন্য সিরাজ কাতর অনুনয় করেন এবং বাংলার মর্যাদা ও স্বাধীনতারক্ষার জন্য শক্তি ও বুদ্ধি দিয়েও সকলকে তাঁর পাশে থাকতে বলেন। এমনকি যুদ্ধশেষে বিচারের মুখোমুখি তিনি নিজে দাঁড়াতে রাজি বলেও জানান। কিন্তু তার আগে সকলের ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই-ই তিনি প্রত্যাশা করেছেন।
৭.২ “এই মুহূর্তে তুমি আমার দরবার ত্যাগ করো।” বস্তা কাকে দরবার ত্যাগ করতে বলেছেন? তাকে দরবার ত্যাগ করতে বলার কারণ কী?
উত্তর: শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের নাট্যাংশ ‘ সিরাজদ্দৌলা ‘ – র কেন্দ্রীয় চরিত্র নবাব সিরাজ তাঁর রাজদরবারে কোম্পানির নিয়োজিত ইংরেজ রাজকর্মচারী ওয়াটসকে উদ্দেশ্য বক্তার বক্তব্যের লক্ষা করে কথাগুলি বলেছিলেন ।
বাংলার মসনদে তরুণ নবাব সিরাজ আসীন হওয়া থেকেই ইংরেজরা নবাবের অন্য শত্রুদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাঁকে ব্যতিব্যস্ত করে তুলছিল । সহ্যের সীমা ছাড়ালে সিরাজ কলকাতা আক্রমণ করে জয়ী হন এবং কলকাতার নতুন নামকরণ করেন আলিনগর । কিছুদিনের মধ্যেই ইংরেজরা কলকাতা পুনরুদ্ধার করে আলিনগরের সন্ধি করে । তাৎপর্য বিশ্লেষণ সন্ধির শর্ত রক্ষার্থে কোম্পানি নবাবের দরবারে ওয়াটসকে নিযুক্ত করে ।
ওয়াটস নবাবের দরবারে থেকে নবাবের সভাসদদের তাঁর বিরুদ্ধে উত্তেজিত করেন এবং কলকাতায় ইংরেজদের নবাবের আদেশ লঙ্ঘনে উৎসাহ দেন । এ কথা নবাবের অজানা নয় । প্রমাণ হিসেবে নবাব ওয়াটস ও ওয়াটসের- চিঠি দরবারে পেশ করান — যেখানে ষড়যন্ত্রের ছবি স্পষ্ট । ওয়াটস নবাবের কাছে বলেন ‘ Punish me ‘ এবং I can only say that I have done my duty ‘ – এতেই নবাব উত্তেজিত হয়ে দরবার ত্যাগ করার কথা বলেন।
৮। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৮.১ ক্ষিদ্দা কীভাবে কোনির জীবনে প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছিল, সে সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।
উত্তর: বিশিষ্ট ক্রীড়া সাংবাদিক ও ঔপন্যাসিক মতি নন্দী রচিত ‘কোনি’ উপন্যাসে কোনির ক্ষিদ্দা ক্ষিতীশ সিংহ আগাগোড়া এক ব্যতিক্রমী মানুষ । সাধারণ এক দরিদ্র পরিবারের মেয়ে থেকে নিজের একগুঁয়েমি নিষ্ঠা ও অধ্যাবসায়কে পাথেয় করে কোনির কাঙ্খিত উচ্চতায় উত্তরনের পিছনে যে মানুষটির অবদান অনস্বীকার্য তিনি হলেন কোনির ক্ষিদ্দা অর্থাৎ ক্ষিতীশ সিংহ ।
প্রতিভাকে চিনে নিয়ে তাকে সুশৃংখল প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে চালনা করতে যে অভিজ্ঞতার প্রয়োজন, তা ক্ষিতীশের ছিল । ক্ষিতীশ দেশের জন্য গৌরব এনে দেওয়া একজন খেলোয়াড় তৈরি করতে জলের মতো অর্থ ব্যয় করেছেন । কোনিকে তিনি শিক্ষা দিয়েছেন কেবল একজন সুযোগ্য খেলোয়াড় তৈরির জন্য । নিজের রোজগার বা অন্য কোন স্বার্থের জন্য নয় । নিজের সংসারে অভাব থাকা সত্ত্বেও তিনি কোনির খাওয়া-দাওয়া ও ঘুমের দায়িত্ব নিয়েছেন । কোনিকে অনিচ্ছাকৃত হলেও তাকে দিয়ে প্রবল পরিশ্রম করিয়েছেন ।
আবার বড় দাদার মতো তাকে চিড়িয়াখানায় কুমীর দেখাতে নিয়ে গিয়েছেন । কোনি কেঁদে ফেললেও প্র্যাকটিস থেকে রেহাই দেন নি,
খাওয়ার টোপ দিয়ে সাঁতার কাটানোর মতো অমানবিক আচরণ করেছেন কোনির ক্ষিদ্দা অর্থাৎ ক্ষিতীশ সিংহ ।
তিনিই আবার কোনি ঘুমিয়ে পড়লে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছেন । ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে কোনি নিজেকে প্রমাণ করার পর তার মাথার উপর ঝরে পড়েছে তার আনন্দাশ্রু ।
৮.২ “অবশেষে কোনি বাংলা সাঁতার দলে জায়গা পেল।” কোনি কীভাবে বাংলা সাঁতার দলে জায়গা পেল, তা লেখো।
উত্তর: মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাসে বাস্তবে কোনির সাঁতার কাটা শুরু গঙ্গায় । সেখান থেকে বাংলা দলে জায়গা করে নেওয়া নেহাত সোজা ছিল না । দারিদ্রতা ও অশিক্ষার কারণে তাকে শিক্ষিত ও সভ্য সমাজের কাছে হেনস্থা হতে হয়েছে ।
কোনির নাম প্রথম বাংলা দলে তুলে ধরেন প্রণবেন্দু বিশ্বাস । তিনি কোনির প্রতিবন্ধী হিয়ার প্রশিক্ষক হওয়া সত্বেও বলেন “কনকচাঁপা পালকে বাংলা দলে রাখতে হবে ।” মাদ্রাজের BASA নির্বাচনী সভায় তাই কোনির কথা বলেন । কিন্তু জুপিটারের ক্ষিতীশ বিরোধিতার জন্য তারা কোনিকে দলে রাখতে অশিক্ষার করেন । এর আগে কম্পিটিশনে কোনিকে ডিসকোয়ালিফাই করা ও প্রথম হওয়া সত্ত্বেও দ্বিতীয় বলে ঘোষণা করেন । হরিচরণ, ধীরেন ঘোষ গোপন শলাপরামর্শে এসব করা হয় । তবে প্রণবেন্দু বাবু বুঝতে পারেন মহারাষ্ট্রের রমা যোশিকে হারানোর ক্ষমতা কারও থাকলে তা কোনির । তিনি এটাও বলেন যে কোনিকে বাদ দিলে বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবকে বাদ দিয়ে বাংলা সাঁতার দল গঠিত হবে । তখন ধীরেন ঘোষ ভাবে একটা মেয়ের জন্য এত সমস্যা হলে তাকে নেওয়াই ভালো ।
এইভাবে নানাবিধ সমস্যার মধ্যে দিয়ে প্রতিবাদ সামলে প্রণবেন্দু বাবুর সুবিচারের মাধ্যমে কোনি বঙ্গবাসীর নয়ণের মনি হওয়ার সুযোগ পায় ।
৮.৩ “ঘাটে থই থই ভিড়।” কোন্ ঘাটে ‘থই থই ভিড়’? ভিড়ের কারণ কী? এই ভিড়ের বর্ণনা দাও।
উত্তর: ‘ঘাটে থই থই ভিড়’ এই কথাটি গঙ্গার ঘাটের বর্ণনা দিতে ব্যবহৃত হয়েছে, যা কোনি গল্পের এক উল্লেখযোগ্য অংশ। এই ঘাটটি একটি পুণ্যস্থল যেখানে প্রতিদিন অসংখ্য পুণ্যার্থী স্নান করতে আসেন।
ভিড়ের কারণ হলো বারুণী স্নান। এই দিনটি বিশেষ পুণ্যদায়ক দিন হিসেবে গণ্য হয়, যেখানে গঙ্গায় স্নান করতে আসা মানুষ বিশ্বাস করেন যে, এর মাধ্যমে তারা পাপমোচন করতে পারবেন এবং দেবতাদের আশীর্বাদ লাভ করবেন। তাই এই দিনে ঘাটে ভিড় জমে যায়।
এই ভিড় ছিল অত্যন্ত জমজমাট এবং অস্থির। বিশেষত, বয়স্ক মানুষদের মধ্যে বেশি ভিড় ছিল। তাঁরা গঙ্গায় স্নান করতে আসছিলেন এবং বেশিরভাগই সদ্য ওঠা কাঁচা আম মাথার উপর ধরে রাখছিলেন। সেই আম গঙ্গাস্নান করার সময় ভাসিয়ে দিচ্ছিলেন। কিছু ছেলে গঙ্গার জলে দারিয়ে সেই ভেসে আসা আম সংগ্রহ করছিলো, তাদের মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা ছিল। তারা একে অপরকে ঠেলে ঠেলে এগিয়ে যাচ্ছিল এবং আম দেখতে পেলেই হুড়োহুড়ি করছিল। যারা আম পেত, তারা পকেটে রেখে দিচ্ছিল এবং সেগুলি পরে বাজারে বিক্রি করবে।
ঘাটের তীরে অনেকেই স্নান করছিল, কিছু মানুষ কাদা মাড়িয়ে উঠছিল এবং গঙ্গার ধারে বসে বিভিন্ন কাজ করছিল। এছাড়া, কিছু মানুষ ঘাটের পাশের দোকানে বাজার করতে যাচ্ছিল, যেখানে তারা ছোট ছোট দেবতার মূর্তি এবং অন্যান্য সামগ্রী কিনছিল। সব মিলিয়ে, এই ভিড় ছিল পূর্ণ বিশ্বাস, ধর্মীয় অভ্যাস এবং দৈনন্দিন জীবনের একটি মিশ্রণ।
তবে, এত মানুষের ভিড়ে চলাচল করা ছিল বেশ কঠিন। পুণ্যার্থীরা তাদের কাজ দ্রুত শেষ করতে চাইছিল, কিন্তু এতটাই গা-ঘেঁষা ভিড় ছিল যে সেখানে চলাচল করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। পুরো পরিবেশটি ছিল এক ধরনের অস্থিরতা এবং পুরনো ঐতিহ্যের প্রতিফলন, যেখানে মানুষ তাদের ধর্মীয় কর্তব্য পালন করতে এসেছিল, কিন্তু তাদের মধ্যেই একটা সামাজিক মেলবন্ধন এবং কিছুটা বাণিজ্যিক কাজও চলছিল।
৯। চলিত গদ্যে বঙ্গানুবাদ করো:
It is very difficult to get rid of bad habits. So, we should be very careful that we do not get into bad habits in our childhood. Idleness is one such bad habit. Every boy and girl should be diligent.
উত্তর: খারাপ অভ্যাসগুলো ত্যাগ করা খুবই কঠিন। তাই আমাদের খুব সতর্ক থাকতে হবে যাতে শৈশবে আমরা কোনো খারাপ অভ্যাসের মধ্যে না জড়াই। অলসতা এমন একটি খারাপ অভ্যাস। প্রত্যেক ছেলে এবং মেয়েকে পরিশ্রমী হওয়া উচিত।
১০। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
১০.১ প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে একটি কাল্পনিক সংলাপ রচনা করো।
উত্তর:
দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ: প্লাস্টিকের ব্যবহার
রহান: দেখো তো, প্রতিদিন দোকান থেকে কেনাকাটা করার সময় কত প্লাস্টিকের ব্যাগ জমে যাচ্ছে!
বিকি: হ্যাঁ রহান, প্লাস্টিক আমাদের জীবনের একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তুমি জানো, এসব প্লাস্টিক পরিবেশে থেকে যায় শত শত বছর ধরে।
রহান: সত্যি? তাহলে তো আমাদের এই অভ্যাস বদলাতে হবে। কিন্তু বিকল্প কী?
বিকি: অনেক সহজ উপায় আছে। কাপড়ের ব্যাগ বা জুটের ব্যাগ ব্যবহার করতে পারো। এগুলো বারবার ব্যবহার করা যায়।
রহান: সেটা ঠিক, কিন্তু প্লাস্টিক তো এখন সব জায়গায়! বোতল, প্যাকেট—সব কিছুতেই।
বিকি: এজন্যই সচেতনতা জরুরি। আমাদের প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে পুনর্ব্যবহারযোগ্য জিনিস ব্যবহার করতে হবে।
রহান: ঠিক বলেছো। এখন থেকে আমি কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার করব।
বিকি: দারুণ সিদ্ধান্ত! ছোট ছোট পরিবর্তন থেকেই বড় পরিবর্তন আসে।
১০.২ ‘নিজস্বী (সেলফি) তুলতে গিয়ে দুর্ঘটনা’ এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।
উত্তর:
নিজস্ব সংবাদদাতা: কলকাতা, ১১ ডিসেম্বর: নিজস্বী বা সেলফি তোলার প্রবণতা বর্তমানে এক ধরণের সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। প্রযুক্তির সহজলভ্যতার ফলে সবার হাতে এখন স্মার্টফোন, আর তার সঙ্গে সেলফি তোলার আসক্তি। কিন্তু এই সামান্য বিনোদন কখনও কখনও ভয়াবহ দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
সম্প্রতি একাধিক ঘটনায় দেখা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় সেলফি তোলার সময় প্রাণহানি ঘটছে। উদাহরণস্বরূপ, উচ্চ পাহাড়, রেললাইন, নদীর ধারে বা চলন্ত গাড়ির মধ্যে সেলফি তোলার সময় ভারসাম্য হারিয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটেছে। ২০১৯ সালের এক সমীক্ষা অনুযায়ী, সেলফি তুলতে গিয়ে ঘটে যাওয়া মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সেলফি তুলতে গিয়ে অসতর্কতার কারণেই এ ধরনের ঘটনা ঘটে। এর প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা এবং ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে সেলফি তোলায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করাই হতে পারে সমস্যার সমাধান।
১১। কমবেশি ৪০০ শব্দে যে-কোনো একটি বিষয় অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা করো।
১১.১ বর্তমান যুগ ও কুসংস্কার
উত্তর:
বর্তমান যুগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ। এই যুগে মানুষ চাঁদে পা রেখেছে, মহাকাশ জয় করেছে, এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে জীবনকে সহজ ও গতিশীল করেছে। কিন্তু এই অগ্রগতির মধ্যেও কুসংস্কার আমাদের সমাজের এক অন্ধকার দিক হিসেবে বিদ্যমান।
কুসংস্কার হলো সেই অন্ধবিশ্বাস যা যুক্তি বা বিজ্ঞানকে উপেক্ষা করে প্রচলিত ধ্যানধারণা বা প্রথাকে মেনে চলে। এর মধ্যে রয়েছে অমঙ্গল আশঙ্কা, অলৌকিক ক্ষমতার প্রতি বিশ্বাস, কিংবা অজ্ঞতার ফলে গড়ে ওঠা ভ্রান্ত ধারণা। যদিও সমাজ শিক্ষা ও বিজ্ঞানের আলোয় এগিয়ে যাচ্ছে, তবুও কুসংস্কার মানুষের চিন্তা ও কর্মকাণ্ডে বাধা সৃষ্টি করে চলেছে।
বাংলার এই দেশের সমাজেও বিভিন্ন রকম কুসংস্কারের প্রচলন দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, অনেকেই বিশ্বাস করেন যে নির্দিষ্ট দিনে নখ কাটা, রাতের বেলা দুধ দেওয়া, বা বিড়াল রাস্তা পার হলে যাত্রা অশুভ হয়। এমনকি কোনো বিশেষ রোগ হলে চিকিৎসার পরিবর্তে ঝাড়ফুঁক বা তাবিজ-কবচের ওপর নির্ভর করে মানুষ। গ্রামের মানুষ থেকে শহরের শিক্ষিত মানুষের মধ্যেও এই ধরনের বিশ্বাস বিদ্যমান।
কুসংস্কারের প্রধান কারণ হলো অজ্ঞতা, শিক্ষার অভাব, এবং যুক্তির প্রতি উদাসীনতা। বিশেষত, গ্রামীণ সমাজে এখনও শিক্ষার অভাবে মানুষ কুসংস্কারের শিকার হয়। এই অন্ধবিশ্বাস একদিকে যেমন সময় এবং অর্থের অপচয় ঘটায়, অন্যদিকে সমাজের অগ্রগতিকে ব্যাহত করে।
তবে আশার বিষয় হলো, কুসংস্কার দূর করার জন্য বর্তমানে বিভিন্ন প্রচেষ্টা চলছে। গণমাধ্যম, সামাজিক সংগঠন, এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করছে। প্রযুক্তির প্রসার এবং ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা মানুষের মধ্যে যুক্তি ও বিজ্ঞানমনস্কতা বৃদ্ধি করছে।
বর্তমান যুগে আমাদের দায়িত্ব হলো কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করা। বিজ্ঞানমনস্ক দৃষ্টিভঙ্গি এবং শিক্ষা আমাদের মুক্তি দিতে পারে এই অন্ধকার থেকে। প্রতিটি নাগরিক যদি যুক্তির আলোকে চিন্তা করে এবং অন্যদেরও সেই পথে উদ্বুদ্ধ করে, তবে সমাজ থেকে কুসংস্কার চিরতরে দূর করা সম্ভব।
কুসংস্কার মুক্ত সমাজই আমাদের প্রকৃত অগ্রগতির প্রতিচ্ছবি হতে পারে। এজন্য প্রয়োজন শিক্ষার প্রসার, যুক্তিবাদী মনোভাবের চর্চা, এবং কুসংস্কারমুক্ত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার একনিষ্ঠ প্রচেষ্টা।
১১.২ বন ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ
উত্তর:
বন ও বন্যপ্রাণ প্রকৃতির অপরিহার্য অংশ। এটি শুধু পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে না, বরং জীবজগতের টিকে থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু মানুষের অতিরিক্ত চাহিদা ও অপরিকল্পিত কার্যকলাপের ফলে বনাঞ্চল ধ্বংস এবং বন্যপ্রাণীর সংখ্যা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। তাই বন ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আজকের পৃথিবীর এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বন আমাদের পৃথিবীর ‘ফুসফুস’। এটি বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে। বনাঞ্চল মাটির ক্ষয় রোধ করে এবং জলবায়ুর ভারসাম্য বজায় রাখে। বন্যপ্রাণী বনের অংশ হিসেবে প্রকৃতির খাদ্য শৃঙ্খল রক্ষা করে। কিন্তু নির্বিচারে বন উজাড়, কৃষিজমি সম্প্রসারণ, শিল্পায়ন, এবং নগরায়নের ফলে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে। এর ফলে অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং অনেক প্রজাতি বিলুপ্তির পথে।
বাংলাদেশেও বনাঞ্চল ও বন্যপ্রাণীর অবস্থা সংকটাপন্ন। সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে পরিচিত। এটি শুধু পরিবেশগত দিক থেকে নয়, অর্থনৈতিক দিক থেকেও আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কাঠের চাহিদা, চিংড়ি চাষ, এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সুন্দরবনের পরিবেশ হুমকির মুখে। এছাড়াও চিরিয়াখানা ও শিকারিদের অত্যাচারের ফলে হরিণ, বাঘ, গন্ধগোকুলসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর সংখ্যা ক্রমেই কমছে।
বন ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। প্রথমত, বন উজাড় বন্ধ করতে হবে এবং সামাজিক বনায়ন কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে। নতুন বন সৃষ্টির পাশাপাশি পুরনো বন সংরক্ষণে কঠোর আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। দ্বিতীয়ত, বন্যপ্রাণীর শিকার ও পাচার বন্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তৃতীয়ত, শিক্ষার মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে। গণমাধ্যম ও পরিবেশবান্ধব সংগঠনগুলোকে এই বিষয়ে কাজ করতে হবে।
আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বন ও বন্যপ্রাণীর ওপর নজরদারি বাড়ানো যেতে পারে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সহযোগিতা করে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি সংরক্ষণের জন্য কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
বন ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ শুধু পরিবেশ নয়, মানবজাতির টিকে থাকার জন্য অপরিহার্য। প্রকৃতির এই অমূল্য সম্পদ সংরক্ষণ করতে আমরা যদি এখনই সচেতন না হই, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এর ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে। সুতরাং, আমাদের দায়িত্ব হলো বন ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা।
১১.৩ বাংলার ঋতুবৈচিত্র্য
উত্তর:
এই বাংলাদেশ প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে ঘেরা একটি দেশ। এ দেশের ভূপ্রকৃতি ও জলবায়ুতে ছয়টি ঋতুর পালাবদল প্রকৃতিকে করেছে অনন্য। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত—এই ছয় ঋতুর বৈচিত্র্য বাংলার প্রকৃতিকে নান্দনিক রূপে সজ্জিত করে তোলে।
গ্রীষ্ম ঋতু শুরু হয় বৈশাখ মাসে। এই সময় তাপমাত্রা বেড়ে যায়, কিন্তু প্রকৃতির প্রাণচাঞ্চল্যও বৃদ্ধি পায়। আম, কাঁঠাল, লিচু, তরমুজসহ বিভিন্ন ফলের সমারোহে গ্রীষ্মকাল হয় সমৃদ্ধ। তবে প্রচণ্ড গরম ও খরার কারণে মানুষ কিছুটা কষ্ট পায়।
গ্রীষ্মের পর আসে বর্ষাকাল। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে বর্ষার আগমনে সারা দেশ জলপ্লাবিত হয়। খাল-বিল, নদী-নালা পানিতে ভরে ওঠে। বর্ষা শুধু কৃষকের জন্য কল্যাণকর নয়, এটি প্রকৃতির সৌন্দর্যও বৃদ্ধি করে। কদম ফুল ফুটে ওঠে, নদীতে নৌকার সারি দেখা যায়। তবে অতিবৃষ্টি এবং বন্যা মানুষের দুর্ভোগও সৃষ্টি করে।
বর্ষার পর শরৎকাল আসে ভাদ্র-আশ্বিন মাসে। এ সময় আকাশে সাদা মেঘের ভেলা, কাশফুলের দোল, এবং নির্মল পরিবেশ মানুষের মনে প্রশান্তি আনে। শরৎ প্রকৃতিকে এক অনন্য সৌন্দর্যে সাজায়।
হেমন্ত ঋতু কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে আসে। এটি কৃষকের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঋতু, কারণ এ সময় ফসল তোলা হয়। ধানের সুবাসে ম-ম করে সারা মাঠ। শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে হেমন্ত প্রকৃতিকে শীতলতা প্রদান করে।
শীতকাল আসে পৌষ-মাঘ মাসে। এটি বছরের সবচেয়ে শীতল ঋতু। খেজুর রস, পিঠাপুলি এবং সরিষা ফুলে শীতের অনন্যতা প্রকাশ পায়। শীতের সকালের কুয়াশা ও শিশিরবিন্দু প্রকৃতিকে মোহনীয় করে তোলে।
সবশেষে আসে বসন্ত, ফাল্গুন-চৈত্র মাসে। এটি ঋতুরাজ নামে পরিচিত। পলাশ, শিমুল, কৃষ্ণচূড়া ফুলের রঙে প্রকৃতি সেজে ওঠে। বসন্তে গাছের নতুন পাতা, কোকিলের কুহুতান, এবং হালকা বাতাস মানুষের মনকে উজ্জীবিত করে।
বাংলার ঋতুবৈচিত্র্য প্রকৃতিকে যেমন সৌন্দর্যমণ্ডিত করেছে, তেমনি মানুষের জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি এবং অর্থনীতিতে রেখেছে গভীর প্রভাব। প্রতিটি ঋতু তার নিজস্ব রূপ, রঙ, ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে বাঙালির জীবনে আলাদা মাত্রা যোগ করে। এই ঋতুবৈচিত্র্যই বাংলার প্রকৃতিকে অনন্য ও অপরূপ করে তুলেছে।
১১.৪ একটি পথের আত্মকথা
উত্তর:
আমি একটি পথ। যুগের পর যুগ ধরে আমি দাঁড়িয়ে আছি মানুষের চলার সঙ্গী হয়ে। আমার বুক চিরে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাচল করে, কেউ আনন্দে, কেউ ব্যস্ততায়, কেউবা দুঃখের ভারে। আমার জন্ম কবে, কে আমাকে প্রথম তৈরি করেছিল, তা আমি জানি না। তবে জানি, আমি মানুষের জীবনযাত্রার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছি।
প্রথম দিকে আমি ছিলাম কাঁচা মাটির পথ। তখন আমার গায়ে ঘাস গজাতো, বর্ষার কাদায় মানুষ হোঁচট খেত। গ্রামীণ জীবনের সরলতায় আমি ছিলাম নিস্তরঙ্গ। বালক-বালিকারা আমার ওপর দিয়ে ছুটে যেতো, গরুর গাড়ির চাকার শব্দে আমার বুকে দাগ কাটতো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমি বদলে গেলাম। পিচঢালা পথ হয়ে উঠলাম, আমার গায়ে এল আলোর ঝলকানি, দ্রুতগামী যানবাহনের চাকা আমার বুক চিরে যেতে লাগল।
কত সুখ-দুঃখের সাক্ষী আমি। নতুন দম্পতির বিয়ের গাড়ি যেমন আমার ওপর দিয়ে যায়, তেমনি শোকযাত্রার কফিনও। উৎসবের কোলাহল, মিছিলের গর্জন, কিংবা কোনো বিপদের সময় মানুষের আতঙ্কিত দৌড়—সবই আমি প্রত্যক্ষ করেছি। কখনো শিশুর আনন্দময় পায়ে হাঁটার শব্দ শুনি, আবার কখনো বৃদ্ধের ক্লান্ত পায়ের ভারও টের পাই।
আমার বুকে সবসময় শান্তি থাকে না। মানুষ আমার ওপর ঝগড়া করে, দুর্ঘটনা ঘটায়। কেউ কেউ আমার গায়ে ময়লা ফেলে, আমার সৌন্দর্য নষ্ট করে। তবুও আমি কোনো অভিযোগ করি না। কারণ আমি জানি, তাদের জীবনের প্রতিটি ধাপে আমি তাদের প্রয়োজন।
আজ আমি আধুনিক প্রযুক্তির স্পর্শে বদলে গেছি। আমার পাশে বড় বড় ভবন, শপিংমল, আর আলো ঝলমলে সড়কবাতি স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু মাঝে মাঝে আমার সেই পুরনো দিনগুলোর কথা মনে পড়ে। তখন মানুষ ছিল সরল, আমার ওপর ছিল তাদের নির্ভরতার এক গভীর বন্ধন।
আমি একটি পথ। আমার কোনো ইচ্ছা নেই, কিন্তু মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজতর করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। যতদিন মানুষ থাকবে, ততদিন আমি তাদের চলার সঙ্গী হয়ে থাকব। মানুষ যখন ক্লান্ত হবে, সুখ-দুঃখের ভারে ভারাক্রান্ত হবে, আমি নীরবে তাদের চলার পথ হয়ে পাশে দাঁড়িয়ে থাকব।
MadhyamikQuestionPapers.com এ আপনি আরও বিভিন্ন বছরের প্রশ্নপত্রের উত্তরও পেয়ে যাবেন। আপনার মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতিতে এই গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ কেমন লাগলো, তা আমাদের কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আরও পড়ার জন্য, জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য এবং পরীক্ষায় ভালো ফল করার জন্য MadhyamikQuestionPapers.com এর সাথেই থাকুন।