Madhyamik Question Papers

বাংলা Model Question Paper 15 (2026) এর উত্তর – Class 10 WBBSE

Bengali
Bengali Model Question Paper 15 2026 Answer Thumbnail

আপনি কি ২০২৬ সালের মাধ্যমিক Model Question Paper 15 এর সমাধান খুঁজছেন? তাহলে আপনি একদম সঠিক জায়গায় এসেছেন। এই আর্টিকেলে আমরা WBBSE-এর বাংলা ২০২৬ মাধ্যমিক Model Question Paper 15-এর প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক ও বিস্তৃত সমাধান উপস্থাপন করেছি।

প্রশ্নোত্তরগুলো ধারাবাহিকভাবে সাজানো হয়েছে, যাতে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা সহজেই পড়ে বুঝতে পারে এবং পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ব্যবহার করতে পারে। বাংলা মডেল প্রশ্নপত্র ও তার সমাধান মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত মূল্যবান ও সহায়ক।

MadhyamikQuestionPapers.com, ২০১৭ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে মাধ্যমিক পরীক্ষার সমস্ত প্রশ্নপত্র ও সমাধান সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রদান করে আসছে। ২০২৬ সালের সমস্ত মডেল প্রশ্নপত্র ও তার সঠিক সমাধান এখানে সবার আগে আপডেট করা হয়েছে।

আপনার প্রস্তুতিকে আরও শক্তিশালী করতে এখনই পুরো প্রশ্নপত্র ও উত্তর দেখে নিন!

Download 2017 to 2024 All Subject’s Madhyamik Question Papers

View All Answers of Last Year Madhyamik Question Papers

যদি দ্রুত প্রশ্ন ও উত্তর খুঁজতে চান, তাহলে নিচের Table of Contents এর পাশে থাকা [!!!] চিহ্নে ক্লিক করুন। এই পেজে থাকা সমস্ত প্রশ্নের উত্তর Table of Contents-এ ধারাবাহিকভাবে সাজানো আছে। যে প্রশ্নে ক্লিক করবেন, সরাসরি তার উত্তরে পৌঁছে যাবেন।

Table of Contents

১। সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো:

১.১ ‘ক্রমশ ও কথাটাও ছড়িয়ে পড়ে।’ কোন্ কথা? 

(ক) গল্প লেখার কথা, 
(খ) গল্প ছাপা হাওয়ার কথা, 
(গ) কারেকশানের কথা, 
(ঘ) মেসোর গল্প ছাপিয়ে দেওয়ার কথা

উত্তর: (গ) কারেকশানের কথা

১.২ ‘নইলে আমি শান্তি পাব না।’ বক্তা শান্তি পাবেন না কখন? 

(ক) বিরাগী পায়ের ধুলো না দিলে, 
(খ) বিরাগী একশো এক টাকা প্রণামি না নিলে, 
(গ) বিরাগী তার বাড়িতে কয়েকদিন না থাকলে, 
(ঘ) বিরাগী উপদেশ না শোনালে

উত্তর: (ঘ) বিরাগী উপদেশ না শোনালে

১.৩ পান্নালাল প্যাটেল কোন্ ভাষার লেখক ছিলেন? 

(ক) পাঞ্জাবি, 
(খ) মারাঠি, 
(গ) গুজরাতি, 
(ঘ) হিন্দি

উত্তর: (গ) গুজরাতি

১.৪ ‘বাষ্পাকুল অরণ্যপথে’- অরণ্যপথ বাষ্পাকুল হওয়ার কারণ হল

(ক) বর্ষার মেঘ, 
(খ) অত্যাচারীর ক্রন্দন, 
(গ) আবহাওয়ার জন্য, 
(ঘ) আফ্রিকার ভাষাহীন কান্না

উত্তর: (ঘ) আফ্রিকার ভাষাহীন কান্না

১.৫ “পক্ষীন্দ্র যথা নাদে মেঘ মাঝে” ‘পক্ষীন্দ্র’ হল-

(ক) ময়ূর, 
(খ) মৈনাক, 
(গ) ময়না, 
(ঘ) গরুড়

উত্তর: (ঘ) গরুড়

১.৬ ‘বাহুরক কন্যার জীবন।’ এক্ষেত্রে কন্যা কে? 

(ক) বিদ্যাধরী, 
(খ) পদ্মা, 
(গ) পদ্মাবতী, 
(ঘ) অপ্সরা

উত্তর: (গ) পদ্মাবতী

১.৭ ‘তাঁরও ছিল ফাউন্টেন পেনের নেশা।’ কার? 

(ক) মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের, 
(খ) শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের, 
(গ) সুবোধ ঘোষের, 
(ঘ) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের

উত্তর: (ঘ) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের

১.৮ আদিতে ফাউন্টেন পেনের নাম ছিল-

(ক) রিজার্ভার পেন, 
(খ) ঝরনা কলম, 
(গ) কুইল, 
(ঘ) বল পেন

উত্তর: (ক) রিজার্ভার পেন

১.৯ ‘Sensitive Person’ শব্দের প্রতিশব্দ হল-

(ক) স্পর্শকাতর মানুষ, 
(খ) সুবেদী মানুষ, 
(গ) অভিমানী মানুষ, 
(ঘ) উত্তেজী মানুষ

উত্তর: (গ) অভিমানী মানুষ

১.১০ ‘পাঁচদিন নদীকে দেখা হয় নাই।’ নিম্নরেখ পদটি যে কারকের দৃষ্টান্ত-

(ক) কর্তৃকারক, 
(খ)অধিকরণ কারক, 
(গ) করণ কারক, 
(ঘ) কর্মকারক

উত্তর: (ঘ) কর্মকারক

১.১১ ‘ক্রিয়ান্বয়ী কারকম্’ কথাটি বলেছেন- 

(ক) পাণিনি, 
(খ) পতঞ্জলি, 
(গ) বাণভট্ট, 
(ঘ) বিশ্বনাথ

উত্তর: (ক) পাণিনি

১.১২ “কথা অমৃতের ন্যায়” ব্যাসবাক্যে উপমেয় পদটি হল-

(ক) অমৃত, 
(খ) কথা, 
(গ) ন্যায়, 
(ঘ) কোনোটিই নয়

উত্তর: (খ) কথা

১.১৩ সমাসের মূল অর্থ 

(ক) বর্ণের সাথে বর্ণের মিলন, 
(খ) নামপদের সাথে ক্রিয়াপদের মিলন, 
(গ) একাধিক পদের একটি পদে পরিণতি লাভ, 
(ঘ) ক্রিয়াপদের সাথে ক্রিয়াপদের মিলন

উত্তর: (গ) একাধিক পদের একটি পদে পরিণতি লাভ

১.১৪ “আহা কী আনন্দ আকাশে-বাতাসে” এটি একটি-

(ক) সন্দেহবাচক বাক্য, 
(খ) ইচ্ছাসূচক বাক্য, 
(গ) প্রার্থনাসূচক বাক্য, 
(ঘ) আবেগসূচক বাক্য

উত্তর: (ঘ) আবেগসূচক বাক্য

১.১৫ “বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে, কিন্তু শখ ষোলোআনাই বজায় আছে” বাক্যটি কোন্ শ্রেণির?-

(ক) সরল বাক্য, 
(খ) জটিল বাক্য, 
(গ) যৌগিক বাক্য, 
(ঘ) নির্দেশক বাক্য

উত্তর: (গ) যৌগিক বাক্য

১.১৬ কর্তার উল্লেখ থাকে না- 

(ক) কর্মকর্তৃবাচ্যে, 
(খ) কর্মবাচ্যে, 
(গ) ভাববাচ্যে, 
(ঘ) কর্তৃবাচ্যে

উত্তর: (ক) কর্মকর্তৃবাচ্যে

১.১৭ ‘জগদীশবাবু সিঁড়ি ধরে নেমে যান’ বাক্যটির ভাববাচ্যের রূপ হল 

(ক) জগদীশবাবুর সিঁড়ি ধরে নামা হয়, 
(খ) জগদীশবাবুর দ্বারা সিঁড়ি ধরে নামা হয়, 
(গ) জগদীশবাবু সিঁড়ি ধরে নামেন, 
(ঘ)জগদীশবাবু সিঁড়ি ধরে নেমে আসেন

উত্তর: (ক) জগদীশবাবুর সিঁড়ি ধরে নামা হয়

২। কমবেশি ২০টি শব্দে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:

২.১ যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

২.১.১ এমন সময় ঘটল সেই ঘটনা।’ উদ্ধৃতাংশে কোন্ ঘটনার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: তপনদের বাড়িতে ছোটোমাসি আর মেসোমশাইয়ের সন্ধ্যাতারা পত্রিকা নিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে।

২.১.২ “এবার মারি তো হাতি, লুঠি তো ভাণ্ডার।” কথাগুলো কে, কাদের বলেছিলেন?

উত্তর: “এবার মারি তো হাতি, লুঠি তো ভাণ্ডার।” -কথাগুলো বলেছিলেন হরিদা; গল্পকার সুবোধ ঘোষ এবং তার দুই বন্ধু অনাদি ও ভবতোষকে।

২.১.৩ ‘অপূর্ব মুগ্ধ হইয়া সেইদিকে চাহিয়া ছিল,” অপূর্ব কী দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিল?

উত্তর: উদ্ধৃতাংশে অপূর্ব সব্যসাচী মল্লিকের চোখ দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিল।

২.১.৪ ‘ভয়ে অমৃতের বুক ঢিপঢিপ করছিল।’ কেন ঢিপঢিপ করছিল?

উত্তর: বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় মা অমৃতকে সাবধান করে দিয়েছিলেন, জামা যাতে না ছেঁড়ে। তাই ছেঁড়া জামা নিয়ে বাড়ি ফিরলে মায়ের হাতে মার খাওয়ার ভয়ে তার বুক ঢিপঢিপ করছিল।

২.১.৫ ‘তাহাকে বিশ্বাস নাই।’ কাকে, কেন বিশ্বাস নেই?

উত্তর: “তাহাকে বিশ্বাস নাই” নদেরচাঁদ নদীর উন্মত্ত রূপ দেখে তাকে আর বিশ্বাস করতে পারল না।

২.২ যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

২.২.১ ‘ঘাস জন্মালো রাস্তায়’ রাস্তায় কেন ঘাস জন্মেছিল?

উত্তর: কথক চলে যাওয়ার পর অনেকদিন কেটে যায়, বৃষ্টি নেমে তার পায়ের ছাপ ধুয়ে মুছে ফেলে। আর তখনই রাস্তায় জন্মাতে শুরু করে ঘাস।

২.২.২ “তব শরে মরিয়া বাঁচিল।” কার শরে, কে মরে বাঁচল?

উত্তর: “তাহাকে বিশ্বাস নাই”–  রাবণপুত্র মেঘনাদের বাণে আহত হয়ে মরণাপন্ন হয়েও, সীতার পতি রামচন্দ্র আবার বেঁচে ওঠেন।

২.২.৩ ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর।’ কবি কাদের জয়ধ্বনি করতে বলেছেন?

উত্তর: ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর” কাজী নজরুল ইসলামের ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় স্বদেশের মুক্তির জন্য অগ্রসর হওয়া যুব বিপ্লবীদের যারা ইংরেজদের হাতে অত্যাচারিত , অশিক্ষা , কুংস্কারের অন্ধকারে নিমজ্জিত এবং চেতনাহীন  জয়ধ্বনি করতে বলা হয়েছে।

২.২.৪ “তাহাতে বিচিত্র টঙ্গি” ‘টঙ্গি’ শব্দটির অর্থ কী?

উত্তর: কবি সৈয়দ আলাওলের ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতায় ব্যবহৃত ‘টঙ্গি’ শব্দটির অর্থ প্রাসাদ বা অট্টালিকা।

২.২.৫ “গান দাঁড়াল ঋষিবালক” ‘ঋষিবালক’ এখানে কীসের প্রতীক?

উত্তর: জয় গোস্বামী রচিত “অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান” কবিতায় ‘ঋষিবালক’ শব্দটি গানের তথা শান্তির বার্তার প্রতীক বা শ্রীকৃষ্ণের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

২.৩ যে-কোনো তিনটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

২.৩.১ “ফাউন্টেন পেনের এক বিপদ,” – বিপদটি কী?

উত্তর: প্রদত্ত গল্পাংশে “ফাউন্টেন পেনের এক বিপদ” বলতে ফাউন্টেন পেন সংগ্রহ করার নেশা বা আসক্তি-কে বোঝানো হয়েছে।

২.৩.২ একসময়ে বিদেশে উন্নত ধরনের নিব বের হয়েছিল কীভাবে?

উত্তর: পাঠ্যাংশ অনুযায়ী, বিদেশে উন্নত ধরনের নিব বের হয়েছিল মূলত পালকের কলমের ভোঁতা হয়ে যাওয়ার সমস্যা দূর করতে। এই নিবগুলো তৈরি হতো গোরুর শিং বা কচ্ছপের খোল কেটে, যা ছিল খুবই টেকসই। কখনও কখনও এই নিবের মুখে হিরে বসানো হতো। পরবর্তীতে ফাউন্টেন পেনের নিবকে আরও দামি ও পোক্ত করতে সেগুলো প্লাটিনাম বা সোনা দিয়ে মুড়ে দেওয়া হতো।

২.৩.৩ “তখন বৈজ্ঞানিক সাহিত্য রচনা সুসাধ্য হবে।” লেখকের মতে কখন বৈজ্ঞানিক সাহিত্য রচনা সুসাধ্য হবে?

উত্তর: দেশে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার ঘটলেই জনসাধারণ বিজ্ঞান-বিষয়ে অধিকতর জ্ঞানলাভ করতে সক্ষম হবেন; ফলস্বরূপ বৈজ্ঞানিক সাহিত্য রচনা ও উপলব্ধি—উভয়ই সহজসাধ্য হয়ে উঠবে।

২.৩.৪ ‘আমাদের সরকার ক্রমে ক্রমে রাজকার্যে দেশি পরিভাষা চালাচ্ছেন,’ তাতে অনেকে মুশকিলে পড়ছেন কেন?

উত্তর: রাজশেখর বসু রচিত ‘বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধে’ উদ্ধৃত অংশ থেকে স্পষ্ট হয় যে, যারা ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষিত এবং ইংরেজি পরিভাষা ও পদ্ধতিতে অভ্যস্ত, তাদের কাছে হঠাৎ করে সরকারি কাজে বা পড়াশোনায় দেশি পরিভাষা ব্যবহার করায় সমস্যা হচ্ছে।

২.৪ যে-কোনো আটটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

২.৪.১ প্রযোজক কর্তার একটি উদাহরণ দাও।

উত্তর: প্রযোজক কর্তার একটি উদাহরণ হল – ছাত্রটি বই পড়ে।

২.৪.২ সে অঙ্কে কাঁচা। রেখাঙ্কিত পদটির কারক ও বিভক্তি নির্ণয় করো।

উত্তর: সে অঙ্কে কাঁচা রেখাঙ্কিত পদটির কারক হল – অধিকরণ কারক এবং বিভক্তি হল – ‘এ’ বিভক্তি।

২.৪.৩ দ্বিকর্মক ক্রিয়ার উদাহরণসহ সংজ্ঞা দাও।

উত্তর: যে ক্রিয়ার দুইটি কর্মপদ থাকে, তাকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে। উদাহরণস্বরূপ, ‘মা স্নেহাকে ভাত দিচ্ছেন।’

২.৪.৪ ‘দাঁড়াও ওই মানহারা মানবীর দ্বারে;’ নিম্নরেখাঙ্কিত পদের ব্যাসবাক্যসহ সমাসের নাম লেখো।

উত্তর: ‘দাঁড়াও ওই মানহারা মানবীর দ্বারে;’ এখানে মানহারা পদটির ব্যাসবাক্য হল – মানকে হারিয়েছে যে এবং সমাসের নাম হল – বহুব্রীহি সমাস। 

২.৪.৫ ব্যাসবাক্যসহ একটি দ্বন্দ্ব সমাসের উদাহরণ দাও।

উত্তর: ব্যাসবাক্যসহ একটি দ্বন্দ্ব সমাসের উদাহরণ হল –পিতা-মাতা

২.৪.৬ ব্যাসবাক্যসহ সমাস নির্ণয় করো: ইন্দ্রজিৎ।

উত্তর: ইন্দ্রজিৎ শব্দটির ব্যাসবাক্য হল – ইন্দ্রকে জয় করেছেন যিনি এবং সমাসের নাম হল – বহুব্রীহি সমাস।

২.৪.৭ খাঁটি গোরুর দুধ খেতে হবে। – এটি বাক্য নয় কেন?

উত্তর: কারণ এটি বাক্য নয়:
এই বাক্যাংশে কর্তা অনুপস্থিত, ফলে এটি সম্পূর্ণ ভাব প্রকাশ করে না।
বাক্য হওয়ার জন্য কর্তা, ক্রিয়া ও সম্পূর্ণ ভাব থাকা প্রয়োজন।
অতএব “খাঁটি গোরুর দুধ খেতে হবে” অসম্পূর্ণ ভাব প্রকাশ করায় এটি সম্পূর্ণ বাক্য নয়।

২.৪.৮ গোলাপ ফুটেছে। বিধেয়ের সম্প্রসারণ করো।

উত্তর: “গোলাপ ফুটেছে”—এখানে বিধেয় ‘ফুটেছে’।
বিধেয়ের সম্প্রসারণ করলে হবে—
গোলাপ ধীরে ধীরে সুন্দরভাবে ফুটেছে।

২.৪.৯ ‘নদীর ধারে তার জন্ম হইয়াছে,’ কর্তৃবাচ্যে পরিণত করো।

উত্তর: ‘নদীর ধারে তার জন্ম হইয়াছে,’ এটিকে কর্তৃবাচ্যে পরিণত করলে হবে সে নদীর ধারে জন্মিয়াছে।

২.৪.১০ কর্মবাচ্য কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

উত্তর: কর্মবাচ্য হলো বাচ্যের এমন একটি রূপ যেখানে বাক্যে কর্মপদ প্রধান হয়ে প্রকাশ পায় এবং ক্রিয়া পদটি কর্মের অনুগামী হিসেবে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ – ‘পুলিশের হাতে চোর ধরা পড়েছে।’

৩। প্রসঙ্গ নির্দেশসহ কমবেশি ৬০ শব্দে উত্তর দাও:

৩.১ যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৩.১.১ ‘অ্যাঁ? ওটা কি একটা বহুরূপী?’ প্রশ্নটি কাদের মনে জেগেছে? তাদের মনে এমন প্রশ্ন জেগেছে কেন?

উত্তর: প্রশ্নটি বাসের যাত্রী ও দোকানদারদের মনে জেগেছে।

তাদের মনে এমন প্রশ্ন জাগার কারণ হলো – হরিদা যে বিভিন্ন চরিত্র সৃষ্টি করেন (যেমন – পাগল বা বাইজির সাজ), তা এতটাই জীবন্ত ও বাস্তবসম্মত যে প্রথম নজরে মানুষ ধাঁধায় পড়ে যায়। তার অভিনয়ের পারদর্শিতায় সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয় যে এটি সত্যিকারের ব্যক্তি নাকি কেউ ছদ্মবেশ ধারণ করেছে। শহরের নতুন লোকজন এই রূপ-খেলার সঙ্গে অপরিচিত হওয়ায় তারা বিস্মিত হয় এবং সন্দেহ করে। অন্যদিকে পুরনো বাসিন্দারা হরিদার অভিনয় চিনতে পেরে মুগ্ধতা ও হতাশা নিয়ে এই প্রশ্ন করে।

৩.১.২ “আজও সে সেইখানে গিয়া বসিল।” সে কোথায় গিয়ে বসিল? তার সেখানে বসার কারণ কী ছিল?

উত্তর: নদেরচাঁদ ব্রিজের মাঝামাঝি ইট, সুরকি আর সিমেন্টে গাঁথা ধারকস্তম্ভের শেষপ্রান্তে গিয়ে বসেছিল।

নদেরচাঁদ সেখানে বসার প্রধান কারণ ছিল তার চেনা নদীর আজকের অস্বাভাবিক ও ভয়ংকর রূপকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা। নদেরচাঁদ প্রতিদিনই এই স্থান থেকে নদী দেখত, কিন্তু আজ নদী ছিল খেপে উঠা, ফেনোচ্ছ্বাসিত ও ভয়ানক। তার মধ্যে এক ধরনের উন্মাদনা কাজ করছিল – সে নদীর এই প্রাণবন্ত, উন্মত্ত স্রোতের সাথে খেলার লোভ সামলাতে পারেনি। এজন্য সে তার বউকে লেখা একটি দীর্ঘ বিরহ-বেদনাপূর্ণ চিঠি টুকরো টুকরো করে নদীর স্রোতে ফেলে দিতে দিতে এই ভয়ংকর দৃশ্য অবলোকন করতে বসেছিল। পরে বৃষ্টি ও নদীর মিলিত ভীষণ মধুর শব্দে মগ্ন হয়ে সে সেখানেই বসে থাকল।

৩.২ যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৩.২.১ “ওই ভাঙা-গড়া খেলা যে তার কিসের তবে ডর?” কবির এই মন্তব্যের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: “ওই ভাঙা-গড়া খেলা যে তার কিসের তবে ডর”-  অংশটি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা “প্রলয়োল্লাস” কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে । 

কবির এই মন্তব্যের মূল বক্তব্য হলো – ধ্বংসই চূড়ান্ত সত্য নয়, বরং এটি নতুন সৃষ্টিরই অপরিহার্য পূর্বশর্ত। এই চিরন্তন নিয়মের কাছে আত্মসমর্পণ করাই হলো বুদ্ধিমানের কাজ। ভাঙনের মধ্যে সৃষ্টির বীজ নিহিত থাকে জেনেই কবি ভয়কে অতিক্রম করে প্রলয়ের জয়ধ্বনি করতে এবং বধূদের প্রদীপ তুলে ধরতে বলেন। এটি একটি গভীর আস্থা ও দার্শনিক অন্তদৃষ্টির প্রকাশ। তাই তিনি ধ্বংসের খেলা দেখে ভয় না পেয়ে সাহস নিয়ে সকলকে সামনের দিকে এগিয়ে চলতে বলেছেন। 

৩.২.২ ‘রক্ত মুছি শুধু গানের গায়ে’ এই উক্তির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: কবি গানের শক্তিতে অস্ত্রের ভয়কে দূর করতে চেয়েছেন। সন্ত্রাস, অরাজকতা ও হিংসার রক্তপাত যা সভ্যতাকে সংকটে ফেলে, তা থেকে মুক্তি পেতে কবি নির্ভর করেছেন কেবল গানের উপর। ‘গানের গায়ে’ রক্ত মোছার এই কথাটির মাধ্যমে তিনি গানের মাধ্যমেই জীবন থেকে সমস্ত হিংসা ও রক্তের দাগ মুছে ফেলার আকুতি ব্যক্ত করেন।

৪। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৪.১ “তা ছাড়া আমার বড়ো লজ্জা এই যে” অপূর্বের লজ্জার কারণটি কী ছিল? সেটি তার কাছে লজ্জার মনে হয়েছিল কেন?

উত্তর: প্রশ্নে উল্লিখিত অংশ অনুযায়ী, অপূর্বর লজ্জার প্রধান কারণ ছিল পুলিশ দলের কর্তা বা অধিকর্তার সঙ্গে তার পারিবারিক সম্পর্ক। তিনি ছিলেন অপূর্বর পিতার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং তাঁর উদ্যোগেই ওই ব্যক্তির চাকরিটি হয়েছিল। তাই পুলিশের যে হাস্যকর, বিশৃঙ্খল ও অদক্ষ আচরণ ঘটনাস্থলে প্রকাশ পেয়েছিল, তার সরাসরি দায় পড়ে সেই আত্মীয় ব্যক্তির ওপরই। এই অবস্থায় অপূর্বর মনে হয়েছিল, তাঁর পিতার সুপারিশে যিনি দায়িত্বপূর্ণ পদে এসেছেন, তাঁর এমন অপটু পরিচালনা সমাজে অপূর্বর পরিবারকেও পরোক্ষভাবে বদনাম করতে পারে। ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে অপূর্বর নিজের উপরও দায়িত্ববোধ তৈরি হয়—আত্মীয় ব্যক্তি ব্যর্থ হলে তাকেও লজ্জার মুখে পড়তে হয়। নিজের পরিবারের সম্মান, পিতার প্রভাব এবং পুলিশের আচরণের অযৌক্তিকতা—সব মিলিয়ে অপূর্বর কাছে ঘটনাটি অত্যন্ত লজ্জাজনক বলে মনে হয়েছিল। তাই তিনি মনে মনে অস্বস্তি, সংকোচ ও বিব্রতবোধে আক্রান্ত হন।

৪.২ “তপনের মনে হয় আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন।” কেন তপনের একথা মনে হয়েছিল?

উত্তর: আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে সেদিনের ঘটনার বর্ণনা রয়েছে, যেদিন তপনের ছোটোমাসি ও মেসোমশাই সন্ধ্যাতারা পত্রিকা নিয়ে তাদের বাড়িতে এসেছিলেন – যে পত্রিকায় তার প্রথম গল্প প্রকাশিত হয়েছিল। নতুন মেসোমশাইকে দেখে লেখকদের সম্পর্কে তপনের মনের সব কাল্পনিক ধারণা ভেঙে যায়। সে বিস্মিত হয় এটা জানতে পেরে যে, লেখকরাও সাধারণ মানুষের মতোই। তখনই তপনের মনে লেখক হওয়ার ইচ্ছা জাগে, এবং সে তার জীবনের প্রথম গল্পটি লিখে ফেলে। ছোটোমাসির হাত দিয়ে সে গল্পটি মেসোমশাইয়ের কাছে পৌঁছে দেয়। মেসোমশাই কিছু সংশোধনের কথা বললেও, তপনের চিন্তার মৌলিকতায় খুশি হয়ে গল্পটি ছাপানোর প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর শুরু হয় তপনের অপেক্ষার দিনগুলি। অবশেষে, সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ‘প্রথম দিন’ শিরোনামে তার গল্প প্রকাশিত হয়। কিন্তু যা তার জীবনের ‘সবচেয়ে সুখের দিন’ হওয়ার কথা ছিল, সেটিই হয়ে ওঠে তার ‘সবচেয়ে দুঃখের দিন’। ছাপার অক্ষরে নিজের লেখা দেখাকে সে এক ‘অলৌকিক’ ঘটনা বলে মনে করলেও, সেই অনুভূতিই তাকে প্রায় বাক্শূন্য করে দেয়। চারপাশে তার গল্পের প্রশংসার চেয়েও মেসোমশাইয়ের মহানুভবতাই বেশি আলোচিত হতে থাকে। গল্পটি পড়ার সময় তপনের অপমান তীব্রতর হয়। সে দেখে, গল্পের একটি লাইনও তার চেনা নয় – মেসোমশাই গল্পটিকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ সংশোধন করে দিয়েছেন। সেই গল্প থেকে লেখক তপন সম্পূর্ণ হারিয়ে গেছে। তপনের চোখ জলে ভরে ওঠে।

৫। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৫.১ “আমরা ভিখারি বারোমাস” কোন্ পরিস্থিতিতে ‘আমরা’ বারোমাস ভিখারি? এই অবস্থায় কী দরকার বলে কবি মনে করেন?

উত্তর: “আমরা ভিখারি বারোমাস” – এই পরিস্থিতিতে ‘আমরা’ অর্থাৎ সাধারণ মানুষ বারোমাস ভিখারি কারণ সমাজব্যবস্থায় তারা সবদিক থেকে উপেক্ষিত, বঞ্চিত ও ক্ষমতাহীন। তাদের ইতিহাস স্বীকৃতিহীন, অধিকার লাঞ্ছিত, এবং ক্ষমতাশালীদের অনুগ্রহের ওপর নির্ভর করে জীবনযাপন করতে হয়।

এই অবস্থায় কবি যা দরকার বলে মনে করেন –

১. সচেতনতা ও সংঘবদ্ধতা – “আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি” – কবি একত্রিত হয়ে সংঘবদ্ধভাবে থাকার আহ্বান জানান।

২. আত্মমর্যাদা ও আত্মনির্ভরশীলতা – ভিখারির মতো অন্যের দয়ার ওপর নির্ভরশীলতা পরিহার করে নিজেদের শক্তি ও অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।

৩. ক্ষমতাসীনদের বিকৃত ইতিহাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ – সাধারণ মানুষকে তাদের প্রকৃত ইতিহাস ও পরিচয় উদ্ধারে সক্রিয় হতে হবে।

৪. মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা – যারা সভ্যতার প্রকৃত ধারক, তাদের এই দুরবস্থা থেকে মুক্ত করে মানবিক লাঞ্ছনা দূর করা প্রয়োজন।

৫.২ ‘কৃপা কর নিরঞ্জন’ কে, কেন নিরঞ্জনের কৃপা প্রার্থনা করেছেন? কবিতা অবলম্বনে বক্তার চরিত্র আলোচনা করো।

উত্তর: “কৃপা কর নিরঞ্জন” – এই উক্তিটি করেছেন পদ্মা।

নিরঞ্জনের কাছে কৃপা প্রার্থনা করার কারণ – পদ্মা ও তার সখীরা সমুদ্রতীরে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকা এক অপরূপা কন্যাকে দেখতে পান। পদ্মাবতীকে মৃতপ্রায় দেখে পদ্মা মনে করেন, ইন্দ্রশাপে কোনো বিদ্যাধরি স্বর্গভ্রষ্ট হয়ে পৃথিবীতে পড়ে আছেন। জীবনরক্ষার জন্য চিকিৎসা করতে গিয়ে পদ্মা বুঝতে পারেন যে এটি মানুষের সাধ্যের বাইরে। তাই তিনি নিরঞ্জন এর কাছে কৃপা প্রার্থনা করেন, যাতে ঐ কন্যার জীবনরক্ষা হয়।

কবিতা অবলম্বনে বক্তার চরিত্র –

করুণাময়ী ও মানবদরদী – অচেনা কন্যাকে দেখে তিনি দয়ার্দ্র হৃদয়ে এগিয়ে আসেন এবং প্রাণপণ চেষ্টা করেন।

বিচক্ষণা ও বুদ্ধিমতী – তিনি ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করতে চান—অনুমান করেন ইন্দ্রশাপের ফলেই কন্যার এই দশা।

ধার্মিক ও ঈশ্বরভীরু – যখন মানবীয় চিকিৎসা ব্যর্থ হয়, তখন তিনি ভগবানের কৃপা কামনা করেন।

দায়িত্বশীল ও সংগঠনক্ষম – সখীদের নিয়ে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন এবং সবার কাজকে সুসংগঠিত রাখেন।

আশাবাদী – “বিধি মোরে না কর নৈরাশ” — এই উক্তিতে তার আশাবাদী মনোভাব ফুটে উঠেছে। সর্বোপরি, পদ্মার চরিত্রে দয়া, ধর্মবিশ্বাস, কর্তব্যনিষ্ঠা ও নেতৃত্বের গুণাবলি কবিতাংশে স্পষ্টভাবে প্রতিভাত হয়েছে।

৬। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৬.১ “তাই কেটে কাগজের মতো সাইজ করে নিয়ে আমরা তাতে ‘হোম-টাস্ক’ করতাম।” কীসে  ‘হোম-টাস্ক’ করা হত? ‘হোম-টাস্ক’ করার সম্পূর্ণ বিবরণ দাও।

উত্তর: উদ্ধৃত অংশটিতে ‘হোম-টাস্ক’ করা হত কলাপাতায়।

প্রথমে কলাগাছ থেকে কলাপাতা সংগ্রহ করে তা কেটে সাধারণ কাগজের মতো আকার ও সাইজ দেওয়া হত। রোগা বাঁশের কঞ্চি কেটে কলম বানানো হত। কলমের মুখটি বিশেষভাবে চিরে দেওয়া হত যাতে কালি ধীরে ধীরে চুইয়ে পড়ে। কাঠের উনুনে রান্নার সময় কড়াইয়ের তলায় জমা কালি লাউপাতা দিয়ে ঘষে তোলা হত। তারপর সেই কালি একটি পাথরের বাটিতে রাখা জলে গুলে নেওয়া হত। এই কালো জলে হরতকী ঘষা হত বা পোড়া আতপ চালের গুঁড়ো মেশানো হত। মিশ্রণটি ভালো করে মেশানোর পর একটি পোড়া খুন্তি দিয়ে তা ছ্যাঁকা দেওয়া হত। শেষে এটিকে একটি ন্যাকড়া দিয়ে ছেঁকে মাটির দোয়াতে রাখা হত। প্রস্তুতকৃত কলাপাতার ওপর বাঁশের কলম ও ঘরে তৈরি কালি দিয়ে হোম-টাস্ক করা হত। কলাপাতায় করা হোম-টাস্কগুলি একটি বান্ডিল করে স্কুলে নিয়ে যাওয়া হত। মাস্টারমশাই সেই পাতাগুলি দেখে এবং বুঝে আড়াআড়ি ভাবে একটি টানে সেগুলি ছিঁড়ে পড়ুয়াদের ফেরত দিতেন। স্কুল থেকে ফেরার পথে কোনো পুকুরে সেই ছেঁড়া কলাপাতাগুলি ফেলে আসা হত। পাতাগুলি বাইরে ফেলা হত না এই বিশ্বাসে যে, গোরু যদি সেগুলি খেয়ে নেয় তবে তা অমঙ্গলজনক হবে, কারণ গোরুকে অক্ষর খাওয়ানো পাপ বলে বিবেচিত হত।

৬.২ ‘বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান’ রচনাটি অনুসরণে পরিভাষা প্রণয়নে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ ও কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা আলোচনা করো।

উত্তর: “বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান” রচনাটিতে বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান চর্চার অন্যতম প্রধান অন্তরায় হিসেবে পরিভাষার অভাব ও অসামঞ্জস্যতার সমস্যাটির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই সমস্যা দূরীকরণে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ ও কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা রচনাকারী যথাক্রমে ব্যর্থ ও সফল উদ্যোগ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের ভূমিকা – রচনা অনুসারে, বহু বছর আগে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সঙ্গে যুক্ত কিছু বিদ্যোৎসাহী লেখক বিভিন্ন বিষয়ের পরিভাষা রচনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের এই প্রচেষ্টা সফল হয়নি মূলত পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণে। তারা সমবেতভাবে বা একযোগে কাজ না করে স্বতন্ত্রভাবে পরিভাষা প্রণয়ন করেছিলেন। এর ফলে তাদের কাজে দুটি বড় রকমের ত্রুটি দেখা দেয় –

১. সংকলিত পরিভাষায় কোনো সাম্য বা সমন্বয় রক্ষিত হয়নি।

২. একই ইংরেজি শব্দ বা সংজ্ঞার জন্য বিভিন্ন প্রতিশব্দ রচিত হয়েছে, যা পরিভাষার মানসম্মতকরণে বাধা সৃষ্টি করেছে।

কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা – রচনাকারী ১৯৩৬ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৃহীত উদ্যোগকে অনেক বেশি সফল ও কার্যকর হিসেবে মূল্যায়ন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় একটি পরিভাষা সমিতি নিযুক্ত করেছিল, যার গঠন ছিল বহুশাস্ত্রবিশারদ ও বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে। এই সমিতিতে বিভিন্ন বিজ্ঞানের অধ্যাপক, ভাষাতত্ত্ববিদ, সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত এবং লেখকবৃন্দ একত্রিত হয়ে সমবেতভাবে কাজ করেছিলেন। এই সমন্বিত পদ্ধতিই তাদের সাফল্যের মূল কারণ ছিল। রচনাকারী এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি প্রতিষ্ঠিত করেছেন যে, পরিভাষা রচনা কোনো একক ব্যক্তির কাজ নয়; এটি সমবেত প্রচেষ্টা ছাড়া সম্পন্ন হলে নানা ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে যেতে পারে।

৭। কমবেশি ১২৫ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৭.১ “পলাশি, রাক্ষসী পলাশি!” বক্তা কে? পলাশির প্রান্তরকে তিনি ‘রাক্ষসী’ বলেছেন কেন?

উত্তর: প্রদত্ত অংশটুকু শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের সিরাজদ্দৌলা নাটকাংশ থেকে নেওয়া হয়েছে যার বক্তা হলেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা।

নবাব সিরাজউদ্দৌলা পলাশির প্রান্তরকে ‘রাক্ষসী’ বলেছেন নিম্নলিখিত কারণে –

রক্তের তৃষ্ণা – তাঁর মতে, পলাশির প্রান্তর প্রকৃতিগতভাবে রক্তপিপাসু। যে পলাশ ফুলের লাল রঙে সাধারণত প্রান্তর সুশোভিত হওয়ার কথা, সেখানে এখন যুদ্ধের কারণে মানুষের রক্তে ভেসে যাবে। প্রান্তর যেন রক্ত পান করার জন্য লালায়িত এক রাক্ষসী।

ভয়ানক ভবিষ্যতের আভাস – সিরাজ বুঝতে পারছেন যে পলাশির আসন্ন যুদ্ধ তাঁর ভাগ্য নির্ধারণ করবে। এই প্রান্তরই হয়তো তাঁর পতনের কারণ হবে, তাই তাঁর মনে হচ্ছে এই স্থানটি একটি ধ্বংসাত্মক শক্তির মতো, একটি রাক্ষসী।

মর্মন্তুদ বেদনা ও ক্ষোভ – ষড়যন্ত্র, বিশ্বাসঘাতকতা এবং অবিশ্বাসের জালে জড়িত হয়ে সিরাজ যে গভীর মর্মবেদনা ও হতাশায় ভুগছেন, তারই বহিঃপ্রকাশ এই উক্তি। পলাশি তাঁর কাছে একটি নির্মম, অমানবিক শক্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে। সুতরাং, আসন্ন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ এবং নিজের অনিশ্চিত ভাগ্যের বিষাদ ও আক্ষেপ থেকেই সিরাজউদ্দৌলা পলাশির প্রান্তরকে “রাক্ষসী পলাশি” বলে অভিহিত করেছেন।

৭.২ ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাটক অবলম্বনে ঘসেটি বেগম চরিত্রটি আলোচনা করো।

উত্তর: “সিরাজদ্দৌলা” নাটকে ঘসেটি বেগম চরিত্রটি মূলত ইতিহাস-অনুগ। তিনি ছিলেন সিরাজউদ্দৌলার মাসি। আলিবর্দী খানের মৃত্যুর পর বাংলার সিংহাসনে তিনি তাঁর স্বামীকে দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু স্বামীর আকস্মিক মৃত্যু সিরাজের সিংহাসনলাভকে অনিবার্য করে তোলে। নিজের আকাঙ্ক্ষা পূরণ না হওয়ায়, সিরাজের প্রতি ঈর্ষাবশতই তিনি ইংরেজদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে পড়েন। ঘসেটি বেগমের প্রথম সংলাপ— “ওখানে কী দেখচ মূর্খ, বিবেকের দিকে চেয়ে দ্যাখো।” —সন্তানতুল্য সিরাজের প্রতি এটি কোনোভাবেই যথার্থ বলে মনে হয় না। তাঁর উক্তিতে প্রতিহিংসারই আভাস মেলে— “আমার রাজ্য নাই, তাই আমার কাছে রাজনীতিও নাই—আছে শুধু প্রতিহিংসা।” নির্দোষ লুৎফা বেগমকেও অকারণে বিদ্রূপ করে গেছেন অশিষ্ট ঘসেটি। লুৎফা বেগম তাঁর সম্পর্কে বলেছেন— “ওর নিশ্বাসে বিষ, ওর দৃষ্টিতে আগুন, ওর অঙ্গ-সঞ্চালনে ভূমিকম্প!” —যা প্রমাণ করে একটি নেতিবাচক চরিত্র হিসেবে ঘসেটি বেগম সফলভাবে চিত্রিত হয়েছেন।

৮। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৮.১ ‘ফাইট কোনি, ফাইট।’ এই উক্তিটি কোনির লড়াকু মানসিকতাকে কতখানি প্রভাবিত করেছিল ‘কোনি’ উপন্যাস অবলম্বনে লেখো।

উত্তর: ‘ফাইট কোনি, ফাইট’— এই সহজ ও সংক্ষিপ্ত উক্তিটি ‘কোনি’ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র কোনির লড়াকু মানসিকতাকে আমূল পরিবর্তন করে দেয় এবং তাকে একজন সফল সাঁতারু হিসেবে গড়ে উঠতে প্রেরণা জোগায়। এই উক্তির প্রভাবকে নিম্নলিখিতভাবে বিশ্লেষণ করা যায় –

মানসিক দৃঢ়তা ও আত্মবিশ্বাসের সঞ্চার – কোনি যখন প্রতিযোগিতার জলেই হাঁপিয়ে উঠেছে, শারীরিক ও মানসিকভাবে পর্যুদস্ত, ঠিক তখনই ক্ষিতীশের ‘ফাইট কোনি, ফাইট’ কথাটি তার অন্তরে পৌঁছে যায়। এটি কোনির কাছে কেবল একটি উৎসাহবাক্য নয়, বরং এক ধরনের মন্ত্র হয়ে ওঠে। এই কথাটি তার ভেতর লুকিয়ে থাকা সমস্ত সঞ্চিত শক্তি ও যন্ত্রণাকে একসঙ্গে জাগিয়ে তোলে। এটি তাকে মনে করিয়ে দেয় যে, সে পারবে। ফলে, তার শরীরে এক নতুন শক্তির সঞ্চার হয় এবং সে অসম্ভবকে জয় করতে সক্ষম হয়।

অদৃশ্য সঙ্গী ও মানসিক অবলম্বন – উপন্যাসে দেখা যায়, কোনি যখন সাঁতারে পিছিয়ে আছে, তখন সে ক্ষিতীশকে খুঁজছে। কিন্তু ক্ষিতীশকে না পেয়ে সে মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে যখন সে জানতে পারে যে, ক্ষিতীশ জলের নিচে থেকে এই কথাটি বলছিল, তখন এই উক্তিটি তার কাছে এক অদৃশ্য কিন্তু শক্তিশালী সঙ্গীতে পরিণত হয়। এটি কোনির মনে এই বিশ্বাস জন্মায় যে, সে একা নয়, তার সংগ্রামে কেউ আছে। এই মানসিক অবলম্বনই তাকে শেষ পর্যন্ত জয়ী হতে সাহায্য করে।

যন্ত্রণাকে শক্তিতে রূপান্তর – ক্ষিতীশের ‘ফাইট কোনি, ফাইট’ বাক্যটি কোনির ভেতরের সমস্ত হতাশা, বঞ্চনা ও যন্ত্রণাকে একত্রিত করে একটি বিস্ফোরক শক্তিতে রূপান্তরিত করে। লেখক খুব স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন— “ওর ছিপছিপে শরীরটার মধ্যে দিনে দিনে সঞ্চিত যন্ত্রণায় ঠাসা শক্তির ভাণ্ডারটিতে যেন বিস্ফোরণ ঘটল।” এই বিস্ফোরণটি সম্ভব হয়েছিল ‘ফাইট’ করার সেই মানসিক আহ্বানের কারণে।

পরিচয় ও অস্তিত্বের সংকট দূরীকরণ – কোনির জীবন সংগ্রামময়। জুপিটার ক্লাব থেকে তাড়ানো, সমাজের বিভিন্ন বাঁধা— সবকিছুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতীক হয়ে ওঠে এই উক্তিটি। এটি তাকে শুধু সাঁতারের প্রতিযোগিতাই জিততে সাহায্য করে না, বরং তার অস্তিত্বের সংকট ও আত্মপরিচয়ের লড়াইয়েও বিজয়ী করে।

উপসংহার – ‘ফাইট কোনি, ফাইট’—এই সহজ কথাটি কোনির জন্য কেবল একটি উৎসাহবাক্য নয়, এটি তার অন্তরের অন্তস্থল থেকে উৎসারিত সংগ্রামের চেতনাকে জাগ্রত করে। এটি তার লড়াকু মানসিকতাকে শাণিত করে, তাকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে এবং শেষ পর্যন্ত একজন সত্যিকারের Fighter-এ পরিণত করে। এই উক্তির মাধ্যমেই কোনি তার ভেতরের শক্তিকে চিনতে পারে এবং অসম্ভবকে জয় করার সাহস খুঁজে পায়।

৮.২ “ক্ষিদ্দা, এবার আমরা কী খাব?” বক্তা কে? উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কীভাবে তাদের সাহায্য করেছেন?

উত্তর: মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাসের “ক্ষিদ্দা, এবার আমরা কী খাব?” এই লাইনটির বক্তা হলেন কোনি।

পরিবারের বড় দাদা কমল টিবি রোগে মারা যাওয়ার পর কোনিদের সংসারে নেমে আসে চরম দারিদ্র্য ও অনিশ্চয়তা। সেই সময় হতবিহ্বল কোনি তার সাঁতার-প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহকে উদ্দেশ করে প্রশ্ন করেছিল— “ক্ষিদ্দা, এবার আমরা কী খাব?” উদ্দিষ্ট ব্যক্তি ক্ষিতীশ শুধু একজন দক্ষ প্রশিক্ষকই নন, ছিলেন মহান হৃদয়ের মানুষ। কোনির প্রতিভা প্রথম গঙ্গায় দেখে তিনি স্বেচ্ছায় তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্যোগের সময় তিনি শুধুমাত্র কোনিকেই নয়, পুরো পরিবারকেই নিজের সাধ্যের বাইরে থেকে সাহায্য করেন। তিনি কোনির মায়ের জন্য ছিট কাপড় কাটার কাজ জোগাড় করেন এবং নিজেই কাপড় পৌঁছে দিতেন। কাটার পর সেই কাপড় কোনির মাধ্যমে পাঠানো হতো, যাতে তাদের কিছু উপার্জন হয়। পাশাপাশি কোনির জন্য লীলাবতীর দোকানে চল্লিশ টাকার মাসমাইনের কাজও জোগাড় করে দেন। অন্নসংস্থানের ব্যবস্থাও করেন তিনি। এভাবেই ক্ষিতীশ মানসিক, আর্থিক ও কর্ম-সহায়তায় কোনিদের পরিবারকে আগলে রাখেন।

৮.৩ “আমার বিরুদ্ধে চার্জগুলো স্পষ্ট করে চিঠিতে বলা নেই।” কোন্ প্রসঙ্গে, কে এই মন্তব্য করেছেন? তাঁর বিরুদ্ধে কী অভিযোগ ছিল?

উত্তর: প্রশ্নোদিত মন্তব্যটি করেছেন কোনি উপন্যাসের সাঁতারু প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ, যিনি ক্ষিদ্দা নামে পরিচিত।

জুপিটার সুইমিং ক্লাবের সভায় সম্পাদক ধীরেন ঘোষ উল্লেখ করেন যে, সেদিনের আলোচনার বিষয় খুবই সীমিত, শুধুমাত্র সাঁতারুদের পেশ করা একটি চিঠি নিয়ে কথা বলাই মূল উদ্দেশ্য। এটি ছিল সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহের বিরুদ্ধে উত্থাপিত একটি অভিযোগপত্র। যেহেতু চিঠিটি ইতিমধ্যে সদস্যদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে, তাই নতুন করে বিস্তারিত ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। তবে আত্মপক্ষ সমর্থনে ক্ষিতীশ সিংহ তীব্র আপত্তি জানান এবং এ প্রসঙ্গে তিনি তাঁর মন্তব্য তুলে ধরেন। ক্ষিতীশের বিরুদ্ধে সাঁতারুদের করা অভিযোগের প্রভাবে দশ দিন ধরে অনুশীলনে উপস্থিত হতে না পারার কথাও উঠে আসে। প্রধান অভিযোগগুলির মধ্যে রয়েছে—ক্ষিতীশ একজন জ্যেষ্ঠ সাঁতারুকে কনিষ্ঠদের সামনে অপমান করেছেন, এক সাঁতারুর বাড়িতে গিয়ে তার বাবাকে অবমাননা করেছেন, তাঁর আচরণের কারণে ক্লাবের কৃতী মহিলা সাঁতারুরা অন্য ক্লাবে চলে গেছেন, তিনি মহিলা সাঁতারুদের পুরুষদের মতোই কঠোর ব্যায়াম করাতে চেয়েছেন, পোশাক নিয়ে বকাঝকা করেছেন এবং জোরপূর্বক তাদের চুল কাটতে চেয়েছেন। অভিযোগের এই বিস্তৃত তালিকাই সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহের বিরুদ্ধে উপস্থাপন করা হয়।

৯। চলিত বাংলায় অনুবাদ করো:

We should try to prosper in life. But we should not give up our sense of morality. If we compromise with dishonesty, it will be difficult for us to respect ourselves. So it is important to choose the right way.

উত্তর: আমাদের জীবনে উন্নতি করার চেষ্টা করা উচিত। কিন্তু নৈতিকতা যেন কখনও না হারাই। যদি আমরা অসততার সঙ্গে আপস করি, তাহলে নিজেদেরই আর সম্মান করতে পারব না। তাই সঠিক পথ বেছে নেওয়াটা খুবই জরুরি।

১০। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

১০.১ পড়াশোনার চাপে হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব-এই বিষয়ে দুইজন বন্ধুর মধ্যে সংলাপ রচনা করো।

উত্তর: 

পড়াশোনার চাপে হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব

রাহুল : কাল রাতে আবার তিন ঘণ্টা কোচিং-এর হোমওয়ার্ক করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। মনে হচ্ছে পড়াশোনার চাপে আমার শৈশবটাই হারিয়ে যাচ্ছে।

সায়ন : সত্যি বলেছিস। আমিও এখন খেলতেই পারি না। স্কুল, কোচিং, প্রোজেক্ট—এসব নিয়ে দিনটা কেমন যেন দমবন্ধ হয়ে যায়।

রাহুল : আমাদের বয়সে তো মাঠে দৌড়ঝাঁপ করার কথা, খেলা-ধুলা, গল্প—এসবই স্বাভাবিক। কিন্তু এখন দেখি শুধু বই আর পরীক্ষা নিয়ে জীবন।

সায়ন : বাবা-মা বলে ভালো রেজাল্ট করলেই নাকি ভবিষ্যৎ ভালো হবে। কিন্তু এভাবে অত চাপ নিয়ে পড়লে তো মানসিক স্বাস্থ্যেরই ক্ষতি হচ্ছে।

রাহুল : ঠিক বলেছিস। একটু সময়ের দরকার নিজের জন্যও। পড়াশোনার পাশাপাশি আনন্দ-ফুর্তিও তো জরুরি।

সায়ন : হ্যাঁ, আমি ভাবছি প্রতিদিন অন্তত আধঘণ্টা খেলব। তাতে মনটা ফ্রেশ থাকবে, পড়াশোনাতেও মন বসবে।

রাহুল : আমিও তাই করব। পড়া যেমন গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক তেমন শৈশবকে বাঁচিয়ে রাখাও খুব দরকার।

১০.২ বিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপন এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।

উত্তর: 

আমাদের বিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন

নিজস্ব সংবাদদাতা,২১শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫: আজ আমাদের বিদ্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হলো। সকাল দশটার সময় বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে শহিদ মিনারে পুষ্পার্পণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। প্রধান শিক্ষক, শিক্ষকমণ্ডলী ও ছাত্রছাত্রীরা একযোগে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর বিদ্যালয়ের হলঘরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান শিক্ষক মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা দেন।

ছাত্রছাত্রীদের আবৃত্তি, গান, নাটিকা ও ভাষা শহিদদের স্মরণে বিশেষ উপস্থাপনা অনুষ্ঠানকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। এ ছাড়া মাতৃভাষার সমৃদ্ধি ও ব্যবহার বৃদ্ধির ওপর ভিত্তি করে দেওয়ালিকা প্রকাশ করা হয়। শেষে শ্রেষ্ঠ পরিবেশনার জন্য কয়েকজনকে পুরস্কৃত করা হয়। সার্বিকভাবে, দিনটি বিদ্যালয়ের সকলের মনে মাতৃভাষার প্রতি নতুন করে ভালবাসা ও গর্বের অনুভূতি জাগিয়ে তোলে।

১১। কমবেশি ৪০০ শব্দে যে-কোনো একটি বিষয় অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা করো:

১১.১ পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা।

উত্তর: 

পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা

বর্তমান পৃথিবীতে পরিবেশ রক্ষা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন, বন নিধন, প্রাকৃতিক সম্পদের অপব্যবহার ইত্যাদির ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে সমাজের প্রতিটি মানুষের মতো ছাত্রছাত্রীদেরও পরিবেশ রক্ষায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। ভবিষ্যতের নাগরিক হিসেবে তারা পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হলে আগামীর পৃথিবী সুস্থ ও বাসযোগ্য হতে পারে।

প্রথমত, ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের দৈনন্দিন জীবনে পরিবেশবান্ধব অভ্যাস গড়ে তুলতে পারে। যেমন—অপ্রয়োজনে বিদ্যুৎ অপচয় না করা, বিশুদ্ধ পানি সংরক্ষণ করা, প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো, পরিবেশ দূষণকারী বস্তু এড়িয়ে চলা ইত্যাদি। তারা স্কুলে ও বাড়িতে আবর্জনা আলাদা করে ফেলার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারে এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য জিনিস ব্যবহারে উৎসাহ দিতে পারে।

দ্বিতীয়ত, গাছ লাগানো ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে ছাত্রছাত্রীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তারা স্কুলের পরিবেশকে সবুজ করতে সুন্দর উদ্যোগ নিতে পারে। পরিবেশবান্ধব ক্যাম্পেইন, বাগান তৈরির প্রকল্প, সাপ্তাহিক পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি—এসবের মাধ্যমে তারা নিজেদের পাশাপাশি সমাজকে পরিবেশ সচেতন করতে সক্ষম।

তৃতীয়ত, বিভিন্ন পরিবেশ দিবস যেমন—বিশ্ব পরিবেশ দিবস, জল দিবস, পৃথিবী দিবস প্রভৃতি উপলক্ষে বিদ্যালয়ে রচনা প্রতিযোগিতা, পোস্টার আঁকা, সেমিনার ও আলোচনা সভার আয়োজন করা যেতে পারে। এ ধরনের কার্যক্রমে ছাত্রছাত্রীরা অংশ নিয়ে পরিবেশ সমস্যার গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারে এবং অন্যদেরও সচেতন করতে সাহায্য করতে পারে।

চতুর্থত, সামাজিক মাধ্যমেও ছাত্রছাত্রীরা পরিবেশ রক্ষার বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারে। পরিবেশ সম্পর্কে সত্য তথ্য ও সতর্কতা শেয়ার করে তারা সমাজে সচেতনতা বাড়াতে পারে। আধুনিক যুগে তথ্যের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করা অত্যন্ত সহজ, ফলে তারা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে পরিবেশের গুরুত্ব পৌঁছে দিতে পারে।

শেষত, ছাত্রছাত্রীরা তাদের পরিবার, প্রতিবেশী ও বন্ধুবান্ধবদের পরিবেশবান্ধব জীবনযাপনে উৎসাহিত করতে পারে। তারা শিক্ষার মাধ্যমে শিখে নেওয়া পরিবেশ সম্পর্কিত জ্ঞান অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দিলে একটি দায়িত্বশীল ও সচেতন সমাজ গড়ে ওঠে।

সর্বোপরি বলা যায়, পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর। তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ পরিবেশকে রক্ষা করতে যেমন সাহায্য করে, তেমনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর, সুস্থ ও নিরাপদ পৃথিবী গড়ে তুলতে সহায়ক হয়। তাই ছাত্রছাত্রীদের উচিত সচেতনভাবে পরিবেশ রক্ষার কাজে নিজেকে যুক্ত করা এবং অন্যদেরও উদ্বুদ্ধ করা।

১১.২ একটি ভ্রমণের অভিজ্ঞতা।

উত্তর: 

একটি ভ্রমণের অভিজ্ঞতা

ভ্রমণ মানুষের মন ও মানস গঠনের একটি অপরিহার্য অংশ। ভ্রমণের মাধ্যমে আমরা যেমন নতুন স্থানের সঙ্গে পরিচিত হই, তেমনি জীবনের নানা দিক সম্পর্কে নতুন অভিজ্ঞতা লাভ করি। আমার জীবনে সবচেয়ে স্মরণীয় যে ভ্রমণটি হয়েছে, তা হলো গত শীতের ছুটিতে পরিবারের সঙ্গে দার্জিলিং ভ্রমণ।

আমরা খুব ভোরে ট্রেনে চেপে নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছাই। সেখান থেকে একটি গাড়ি ভাড়া করে পাহাড়ের পথে যাত্রা শুরু করি। প্রথমদিকে রাস্তাগুলি ছিল সমতল, কিন্তু ক্রমশ পাহাড়ি পথের ঘোরপ্যাঁচ সামনে এসে দেখা দিল। রাস্তার দুইধারের সবুজ পাহাড়, তার মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া ধোঁয়া-ধরা মেঘ—সব মিলিয়ে অপূর্ব সৌন্দর্য চোখে পড়ে। ঠান্ডা হাওয়া গায়ে লাগতেই শরীর-মন আরও প্রফুল্ল হয়ে ওঠে। পথে ছোট ছোট চায়ের দোকান আর পাহাড়ি মানুষের হাসিমুখ আমাদের আপ্যায়ণ করেছিল।

দার্জিলিং পৌঁছে আমরা একটি হোটেলে উঠি। জানালা খুলতেই দূরে দেখা গেল তুষার-ঢাকা কানchenজঙ্ঘা। বিকেলে আমরা মাল রোডে ঘুরতে যাই। পাহাড়ি সন্ধ্যার আবহ, দোকানগুলির আলো ঝলমল এবং পর্যটকদের ভিড়—সব মিলিয়ে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। সেখানে আমি প্রথমবার টংবা নামের স্থানীয় গরম পানীয় দেখলাম, যদিও আমরা তা খাইনি। কিছু পাহাড়ি হস্তশিল্পও সংগ্রহ করি।

পরের দিন সকালে আমরা বিখ্যাত টাইগার হিলে সূর্যোদয় দেখতে যাই। অন্ধকার ভেদ করে যখন সূর্যের প্রথম আলো তুষারশৃঙ্গকে আগুনের মতো লাল করে তুলল, তখন মনে হল প্রকৃতির এই সৌন্দর্য শব্দে প্রকাশ করা যায় না। এরপর আমরা ঘুরে দেখি বাটাসিয়া লুপ, ঘোড়া পাহাড়, চিড়িয়াখানা এবং হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট। প্রতিটি জায়গায় প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং মানুষের পরিশ্রমের ছাপ স্পষ্টভাবে অনুভব করা যায়।

তৃতীয় দিনে আমরা বিখ্যাত টয় ট্রেনে চড়ে কার্শিয়াঙের দিকে যাত্রা করি। ছোট্ট ট্রেনটির ধীরগতি, পাহাড়ের পাশ দিয়ে এগোনো আর রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের হাত নেড়ে শুভেচ্ছা—সব মিলিয়ে এক অনন্য অভিজ্ঞতা। কার্শিয়াঙে কিছুক্ষণ ঘুরে আমরা আবার দার্জিলিং ফিরে আসি।

শেষ দিনে মেঘে ঢাকা আকাশ আর পাহাড়ি হাওয়া আমাদের মনকে আরও বিষণ্ণ করে তোলে, কারণ ফিরে আসার সময় হয়ে গিয়েছিল। দার্জিলিংয়ের সৌন্দর্য, পাহাড়ি মানুষের আন্তরিকতা এবং পরিবার নিয়ে কাটানো সময়—সব মিলিয়ে এই ভ্রমণ আমার জীবনের অন্যতম সেরা অভিজ্ঞতা হয়ে আছে।

এই ভ্রমণ আমাকে শিখিয়েছে যে পৃথিবী কত সুন্দর, আর ভ্রমণ আমাদের মনকে কতটা সমৃদ্ধ করে। তাই সুযোগ পেলেই নতুন জায়গা ঘুরে দেখা উচিত।

১১.৩ শিক্ষাবিস্তারে গণমাধ্যমের ভূমিকা।

উত্তর: 

শিক্ষাবিস্তারে গণমাধ্যমের ভূমিকা

আধুনিক বিশ্বে শিক্ষা শুধুমাত্র পাঠ্যবই কেন্দ্রিক সীমাবদ্ধ জ্ঞান নয়; বরং এটি এক বিস্তৃত মানবিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের মাধ্যম। শিক্ষাকে সাধারণ মানুষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে গণমাধ্যম আজ অপরিহার্য ভূমিকা পালন করছে। সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র, ইন্টারনেট ও সামাজিক মাধ্যম—সব ধরনের গণমাধ্যমই শিক্ষাবিস্তারের এক শক্তিশালী হাতিয়ার রূপে আবির্ভূত হয়েছে।

প্রথমত, সংবাদপত্র শিক্ষার্থীদের বিশ্বজুড়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলি সম্পর্কে জানায়। বিভিন্ন বিজ্ঞান, সাহিত্য, ইতিহাস ও পরিবেশসংক্রান্ত তথ্য সংবাদপত্রে সহজেই পাওয়া যায়। এতে শিক্ষার্থীর দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত হয় এবং তারা বাস্তবজীবনের সঙ্গে শিক্ষার সংযোগ খুঁজে পায়। রেডিও এবং টেলিভিশনেও বিভিন্ন শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান, তথ্যচিত্র এবং আলোচনা প্রচারিত হয়, যা শ্রেণিকক্ষের বাইরে অতিরিক্ত জ্ঞান দান করে। বিশেষ করে দূরবর্তী গ্রামের মানুষ যেখানে মানসম্মত শিক্ষা পাওয়া কঠিন, সেখানে রেডিও ও টেলিভিশন বহুদিন ধরেই শিক্ষার বিকল্প মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে।

দ্বিতীয়ত, ইন্টারনেট বর্তমান যুগে শিক্ষাবিস্তারের সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম। অনলাইন ক্লাস, ভার্চুয়াল লাইব্রেরি, ডিজিটাল নোটস, ভিডিও টিউটোরিয়াল—সবই শিক্ষার্থীদের হাতে অজস্র সুযোগ এনে দিয়েছে। একজন শিক্ষার্থী আজ ঘরে বসেই বিশ্বের সেরা শিক্ষাগুরুদের কাছ থেকে পাঠ গ্রহণ করতে পারছে। বিশেষ করে কোভিড মহামারির সময় অনলাইন শিক্ষা স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে প্রযুক্তি ও গণমাধ্যম শিক্ষাকে টিকিয়ে রাখার মূল সহায়ক।

গণমাধ্যম শিক্ষার্থীদের নৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক চেতনা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা যেমন—নারীশিক্ষার গুরুত্ব, দারিদ্র্য, পরিবেশ দূষণ, স্বাস্থ্যবিধি—এসব বিষয়ে সচেতনতা ছড়িয়ে দেয় গণমাধ্যম। ফলে শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র বইয়ের জ্ঞানেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং তারা সমাজকে বোঝে এবং দায়িত্বশীল নাগরিক হওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করে।

তবে গণমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতাও প্রয়োজন। ভুয়া তথ্য, অপসংস্কৃতি বা ভুল ধারণা অনেক সময় শিক্ষার্থীর মননে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। তাই সঠিক তথ্য নির্বাচন ও সঠিকভাবে গণমাধ্যম ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি।

সব মিলিয়ে, শিক্ষাবিস্তারে গণমাধ্যম এক মহাশক্তি। এটি শিক্ষাকে সহজলভ্য, আকর্ষণীয় এবং আধুনিক করে তুলেছে। ভবিষ্যতে প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে গণমাধ্যম শিক্ষাক্ষেত্রে আরও নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে—এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই।

১১.৪ এশিয়ান গেম্স-এ ভারতের সাফল্য।

উত্তর: 

এশিয়ান গেম্স-এ ভারতের সাফল্য

এশিয়ান গেম্স এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, যেখানে বিভিন্ন দেশের ক্রীড়াবিদরা অংশগ্রহণ করে নিজেদের দক্ষতা প্রদর্শন করেন। স্বাধীনতা–উত্তর ভারত প্রথম থেকেই এই প্রতিযোগিতায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করে আসছে। সময়ের সঙ্গে ভারত শুধু অংশগ্রহণই করেনি, বরং বহু ইভেন্টে অসামান্য দক্ষতা ও সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে। ভারতের ক্রীড়াবিদদের কঠোর পরিশ্রম, শৃঙ্খলা ও আত্মবিশ্বাস দেশকে এশিয়ার ক্রীড়াক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছে।

ভারতের জন্য এশিয়ান গেম্স একটি বড় মঞ্চ, যেখানে বিভিন্ন ক্ষেত্র—অ্যাথলেটিক্স, কুস্তি, ব্যাডমিন্টন, বক্সিং, শুটিং, হকি, কাবাডি, সাঁতার প্রভৃতি খেলায় বহু সাফল্য এসেছে। বিশেষ করে শুটিং, কুস্তি ও অ্যাথলেটিক্সে ভারতীয় ক্রীড়াবিদরা বরাবরই উজ্জ্বল পারফরম্যান্স দেখিয়ে আসছেন। তরুণ প্রজন্মের বহু খেলোয়াড় এই প্রতিযোগিতাকে নিজেদের প্রতিভা প্রকাশের প্রথম আন্তর্জাতিক মঞ্চ হিসেবে দেখে। তাঁদের দৃঢ় মনোবল ও অধ্যবসায়ের ফলে ভারতের পদকভাণ্ডার প্রতিবারই সমৃদ্ধ হয়েছে।

মহিলা ক্রীড়াবিদদের অবদানও উল্লেখযোগ্য। তাঁরা পুরুষদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভারতের গৌরব বাড়িয়েছেন। বিভিন্ন খেলায় মহিলাদের সাফল্য ভারতের ক্রীড়া-সংস্কৃতিকে নতুন দিগন্তে নিয়ে গিয়েছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে এসে আন্তর্জাতিক মঞ্চে জয় লাভ করা ক্রীড়াবিদরা প্রমাণ করেছেন যে সুযোগ ও সঠিক দিকনির্দেশনা থাকলে প্রতিভা বিকাশের পথ সহজ হয়।

এশিয়ান গেম্সে ভারতের সাফল্যের পেছনে সরকারের ক্রীড়া-উদ্যোগ, উন্নত প্রশিক্ষণব্যবস্থা, আধুনিক অবকাঠামো এবং বিভিন্ন ক্রীড়া-সংস্থার নিরলস প্রচেষ্টার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্রীড়া-বৃত্তি, বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবির, বিদেশে প্রশিক্ষণের সুযোগ—এসবই ভারতীয় ক্রীড়াবিদদের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করেছে। দেশের নানা প্রান্তে নতুন ক্রীড়া–একাডেমি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করাও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে।

এশিয়ান গেম্সে ভারতের ক্রমবর্ধমান সাফল্য শুধু খেলাধুলোয় উন্নতির প্রমাণই নয়, বরং জাতীয় ঐক্য, গর্ব ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। এই সাফল্য নতুন প্রজন্মকে খেলাধুলায় অংশগ্রহণের অনুপ্রেরণা জোগায় এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে আরও বড় সাফল্যের স্বপ্ন দেখায়।

সব মিলিয়ে বলা যায়, এশিয়ান গেম্সে ভারতের সাফল্য দেশের ক্রীড়া–ইতিহাসকে আলোকিত করেছে। ভবিষ্যতেও ভারতের ক্রীড়াবিদরা আরও উচ্চতর সাফল্য অর্জন করবেন—এই প্রত্যাশাই আজ সকলের মনে নতুন আশার আলো জ্বালিয়ে দেয়।


MadhyamikQuestionPapers.com এ আপনি অন্যান্য বছরের প্রশ্নপত্রের ও Model Question Paper-এর উত্তরও সহজেই পেয়ে যাবেন। আপনার মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতিতে এই গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ কেমন লাগলো, তা আমাদের কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আরও পড়ার জন্য, জ্ঞান অর্জনের জন্য এবং পরীক্ষায় ভালো ফল করার জন্য MadhyamikQuestionPapers.com এর সাথে যুক্ত থাকুন।

Tag Post :
Share This :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *