Madhyamik Question Papers

বাংলা Model Question Paper 2 (2025) এর উত্তর – Class 10 WBBSE

Bengali
Bengali Model Question Paper 2 (2025) Answer Thumbnail

আপনি কি ২০২৫ সালের মাধ্যমিক বাংলা Model Question Paper 2 (2025)-এর সঠিক উত্তর খুঁজছেন? তাহলে আপনি একদম সঠিক জায়গায় এসেছেন। এই প্রতিবেদনে আমরা WBBSE এর বাংলা Model Question Paper 1 (2025)-এর প্রতিটি প্রশ্নের নিখুঁত ও বিস্তারিত উত্তর তুলে ধরেছি।

নিচে প্রশ্নোত্তরগুলো পরপর সাজানো হয়েছে, যাতে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা সহজেই পড়ে বুঝতে পারে এবং প্রস্তুতিতে কাজে লাগাতে পারে। বাংলা মডেল প্রশ্নপত্র ও তার উত্তর মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত সহায়ক ও গুরুত্বপূর্ণ।

MadhyamikQuestionPapers.com ২০১৭ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সমস্ত মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও উত্তর একেবারে বিনামূল্যে সরবরাহ করে আসছে। ২০২৫ সালের সমস্ত মডেল প্রশ্নপত্র ও তার সমাধান এখানেই সবার আগে আপডেট করা হয়েছে।

আপনার প্রস্তুতিকে আরও শক্তিশালী করতে সম্পূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তরগুলো এখনই দেখে নিন!

Download 2017 to 2024 All Subject’s Madhyamik Question Papers

View All Answers of Last Year Madhyamik Question Papers

যদি দ্রুত প্রশ্ন ও উত্তর খুঁজতে চান, তাহলে নিচের Table of Contents এর পাশে থাকা [!!!] চিহ্নে ক্লিক করুন। এই পেজে থাকা সমস্ত প্রশ্নের উত্তর Table of Contents-এ ধারাবাহিকভাবে সাজানো আছে। যে প্রশ্নে ক্লিক করবেন, সরাসরি তার উত্তরে পৌঁছে যাবেন।

Table of Contents

১। সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো:

১.১ “বুড়োমানুষের কথাটা শুনো।” বুড়োমানুষটি হলেন- 

(ক) নিমাইবাবু, 
(খ) গিরীশ মহাপাত্র, 
(গ) জগদীশবাবু, 
(ঘ) অপূর্ব।

উত্তর: (ক) নিমাইবাবু

১.২ নদেরচাঁদ কোন্ সময়ের ট্রেন রওনা করিয়ে নদীর দিকে হেঁটেছিল? 

(ক) পাঁচটা পনেরোর প্যাসেঞ্জার,
(খ) দুটো চুয়ান্নর প্যাসেঞ্জার, 
(গ) ছটা চল্লিশের ফার্স্ট প্যাসেঞ্জার,
(ঘ) চারটে পঁয়তাল্লিশের প্যাসেঞ্জার।

উত্তর: (ঘ) চারটে পঁয়তাল্লিশের প্যাসেঞ্জার

১.৩ অমৃত ও ইসাব এই দুজনের বাবা-ই পেশায় 

(ক) রাজমিস্ত্রি, 
(খ) শ্রমিক, 
(গ) চাষি, 
(ঘ) ছোটো ব্যবসায়ী।

উত্তর: (গ) চাষি

১.৪ “বাহুরক কন্যার জীবন।” এক্ষেত্রে ‘কন্যা’ হল- 

(ক) বিদ্যাধরি, 
(খ) পদ্মা, 
(গ) পদ্মাবতী, 
(ঘ) অপ্সরা।

উত্তর: (গ) পদ্মাবতী

১.৫ ‘আফ্রিকা’ কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের যে কাব্যগ্রন্থে রয়েছে- 

(ক) ‘মানসী’, 
(খ) ‘চিত্রা’, 
(গ) ‘পত্রপুট’,
(ঘ) ‘নৈবেদ্য’।

উত্তর: (গ) ‘পত্রপুট’

১.৬ “হাসিবে মেঘবাহন;” ‘মেঘবাহন’ বলতে বোঝানো হয়েছে- 

(ক) দেবরাজ ইন্দ্রকে, 
(খ) অগ্নিদেবকে, 
(গ) দেবাদিদেব মহাদেবকে
(ঘ) রামচন্দ্রকে।

উত্তর: (ক) দেবরাজ ইন্দ্রকে

১.৭ ‘কঙ্কাবতী’ ও ‘ডমবুধর’-এর স্বনামধন্য লেখকের নাম-

(ক) তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, 
(খ) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, 
(গ) ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়, 
(ঘ) বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

উত্তর: (গ) ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়

১.৮ পরিভাষার উদ্দেশ্য হল- 

(ক) ভাষার জ্ঞান বাড়ানো, 
(খ) ভাষার সঠিক প্রকাশ, 
(গ) ভাষার সংক্ষেপ ও অর্থ সুনির্দিষ্ট করা, 
(ঘ) ভাষাকে সংক্ষিপ্ত করা। 

উত্তর: (গ) ভাষার সংক্ষেপ ও অর্থ সুনির্দিষ্ট করা

১.৯ “হিমালয় যেন পৃথিবীর মানদণ্ড” উক্তিটি 

(ক) রবীন্দ্রনাথের, 
(খ) বঙ্কিমচন্দ্রের, 
(গ) কালিদাসের, 
(ঘ) বিদ্যাসাগরের।

উত্তর: (গ) কালিদাসের

১.১০ বাঘে-গোরুতে একঘাটে জল খায় – রেখাঙ্কিত পদটি হল 

(ক) সহযোগী কর্তা, 
(খ) ব্যতিহার কর্তা,
(গ) প্রযোজ্য কর্তা,
(ঘ) প্রযোজক কর্তা। 

উত্তর: (খ) ব্যতিহার কর্তা

১.১১ বাক্যের ক্রিয়াকে ‘কী দিয়ে’ প্রশ্ন করলে উত্তরে যে কারক সম্পর্কটি পাওয়া যায় তা হল-

(ক) কর্ম সম্পর্ক, 
(খ) করণ সম্পর্ক,
(গ) অধিকরণ সম্পর্ক, 
(ঘ) অপাদান সম্পর্ক।  

উত্তর: (খ) করণ সম্পর্ক

১.১২ সমাসে প্রাধান্য পায় 

(ক) ধ্বনি, 
(খ) পরপদ, 
(গ) অর্থ, 
(ঘ) পূর্বপদ।

উত্তর: (গ) অর্থ

১.১৩ সসৈন্যে সাজেন আজি’ রেখাঙ্কিত পদটি কোন্ সমাস? 

(ক) সহার্থক বহুব্রীহি, 
(খ) প্রাদি তৎপুরুষ, 
(গ) প্রাদি বহুব্রীহি, 
(ঘ) উপাদান তৎপুরুষ।

উত্তর: (ক) সহার্থক বহুব্রীহি

১.১৪ “এইটুকু কাশির পরিশ্রমেই সে হাঁপাইতে লাগিল।” বাক্যটি কোন শ্রেণির: 

(ক) সরল বাক্য, 
(খ) জটিল বাক্য, 
(গ) যৌগিক বাক্য, 
(ঘ) মিশ্র বাক্য।

উত্তর: (ক) সরল বাক্য

১.১৫ ‘বাক্য’ শব্দের আভিধানিক অর্থ হল 

(ক) যা লেখা যায়, 
(খ) অর্থযুক্ত পদগুচ্ছ, 
(গ) শব্দসমষ্টি, 
(ঘ) যা বলা যায়

উত্তর: (খ) অর্থযুক্ত পদগুচ্ছ

১.১৬ ক্রিয়ার অর্থ প্রাধান্য পায় 

(ক) কর্তৃবাচ্যে, 
(খ) ভাববাচ্যে, 
(গ) কর্মবাচ্যে, 
(ঘ) কর্মকর্তৃবাচ্যে

উত্তর: (খ) ভাববাচ্যে

১.১৭ ‘তারপর যুদ্ধ এল’- এটি কোন্ বাচ্যের উদাহরণ? 

(ক) কর্তৃবাচ্য, 
(খ) কর্মকর্তৃবাচ্য, 
(গ) ভাববাচ্য, 
(ঘ) কর্মবাচ্য

উত্তর: (ঘ) কর্মবাচ্য

২০২৫ এর আরও Model Question Paper পেতে নীচে দেওয়া Facebook, WhatsApp এবং Telegram গ্রুপ Join করে রাখুন। এখানে সবার আগে Answer-এর Update পাওয়া যাবে।

Facebook Page Like & Follow
WhatsApp Channel Join Now
Telegram Channel Join Now

২। কমবেশি ২০টি শব্দে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:

২.১ যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

২.১.১ ‘অপূর্ব রাজি হইয়াছিল।’ — অপূর্ব কার, কোন্ প্রস্তাবে রাজি হয়েছিল?

উত্তর: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের “পথের দাবী” গল্পে অপূর্ব রামদাসের স্ত্রীর প্রস্তাবে রাজি হয়েছিল। 

প্রতিদিন সামান্য মিষ্টান্ন গ্রহণ করার প্রস্তাবে রাজি হয়েছিল।

২.১.২ ‘আজ তার মনে হইল’ — কী মনে হয়েছিল?

উত্তর: ব্রিজের জন্য নদীর উন্মত্ততার মধ্যে যে-বিদ্রোহ সে দেখেছিল, তাতে তার মনে একটা অপরাধবোধ দেখা দেয় এবং তার মনে হয় কী প্রয়োজন ছিল ব্রিজের?’

২.১.৩ “অমৃত ফতোয়া জারি করে দিল,” — অমৃত কী ‘ফতোয়া’ জারি করেছিল?

উত্তর: অমৃত এর ঠিক ইসাবের মতোই জামা চাই তার,  তা নাহলে সে স্কুলে যাবে না এই ফতোয়া জারি করে জানিয়েছিল ।

২.১.৪ তবে তপনেরই বা লেখক হতে বাধা কী?’ — তপনের লেখক হতে বাধা নেই কেন?

উত্তর: নতুন মেসােকে দেখার পর তপন বুঝতে পেরেছিল যে এক জন।   লেখক এবং লেখকেরা কোনাে আকাশ থেকে পড়া কোনো জীব নয়  তার মতােই একজন নিছক মানুষ। তাই লেখক হতে তপনের নিজেরও কোনাে বাধা নেই।

২.১.৫ ‘এটা আমার প্রাণের অনুরোধ।’ — বক্তার প্রাণের অনুরোধটা কী?

উত্তর: সুবোধ ঘোষ রচিত ‘বহুরূপী’ গল্পে জগদীশবাবু বিরাগী সন্ন্যাসীকে তার বাড়িতে কয়েকটা দিন থাকতে বলেছিলেন। এটিই হল প্রাণের অনুরোধ।

২.২ যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

২.২.১ ‘আমাদের মাথায় বোমারু’ — একথা বলার কারণ কী?

উত্তর: বোমানিক্ষেপকারী যুদ্ধবিমান হল বোমারু। বর্তমান শতা সূচনায় ক্ষমতাধারী রাষ্ট্রগুলি নানা অছিলায় দুর্বল রাষ্ট্রের। বোমাবর্ষণ করে শাস্তিভঙ্গ করেছে বলে এ কথা বলা হয়েছে।

২.২.২ ‘ওরে ওই হাসছে ভয়ংকর।’ — ভয়ংকর হাসছে কেন?

উত্তর: প্রলয়োল্লাস ভয়ঙ্কর পরাধীন ভারতবর্ষে আগমন করে সমস্ত রকম অরাজকতার অবসান ঘটাবে। তারপরে হবে নব সৃষ্টি। তাই তার ভয়ঙ্করতা প্রদর্শনের জন্য ভয়ঙ্কর অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছে ।

২.২.৩ “পঞ্চকন্যা পাইলা চেতন।” — ‘পঞ্চকন্যা’ কারা?

উত্তত: যে অচেতন পঞ্চকন্যার কথা বলা হয়েছে তাঁরা হলেন সিংহল রাজকন্যা তথা চিতোর রাজ রন্তসেনের পত্নী পদ্মাবতী ও তাঁর চারজন সখী, চন্দ্রকলা, বিজয়া, রোহিনী এবং বিধুন্নলা।

২.২.৪ “গান দাঁড়াল ঋষিবালক” — ‘ঋষিবালক’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: ঋষিবালক’শব্দটিকে বিশ্লেষণ করলে ‘ঋষি সদৃশ বালক’ বা ‘ঋষির বালক’ পাওয়া যায়। তবে এখানে ঋষিসদৃশ মানসিকতাসম্পন্ন প্রেমাবতার শ্রীকৃষকে বোঝানো হয়েছে।

২.২.৫ ‘বছরগুলো / নেমে এল তার মাথার ওপর।’ — বছরগুলো কীভাবে নেমে এসেছিল?

উত্তর: এক ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে শেষপর্যন্ত কথক এক অজানা উদ্দেশ্যে পা বাড়ায় তার প্রিয় নারীকে অপেক্ষায় দরজায় দাঁড় করিয়ে । সে নারী হয়ত তার স্বদেশের প্রতিমূর্তি। যেহেতু কথক আর ফিরে আসে নি তাই পাহাড়ে ধস নামলে যেমন একটার পর একটা পাথর নেমে আসে সেভাবেই কথকের ফেরার অপেক্ষায় বছরগুলি নেমে এল সেই রমনীর জীবনে।

২.৩ যে-কোনো তিনটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

২.৩.১ ‘এই ছিল তাঁদের ব্যবস্থাপত্র।’ — ভালো কালি তৈরির ব্যবস্থাপত্র কী ছিল?

উত্তর: তাঁদের কালি তৈরির ব্যবস্থাপত্র ছিল’ তিল, আমলকি, হরিতকি, বহেড়া ও শিমুলছাল একত্রে বেটে মেশাতো এবং লােহার পাত্রে রেখে লােহা দিয়ে পিষতে হতো এবং তৈরি হমো খালি । এতে যে কালি তৈরি হতো তা কাগজ ছিড়ে গেলেও কালি উঠতো না।

২.৩.২ ‘তাঁদের চেষ্টা অধিকতর সফল হয়েছে’ — কাদের চেষ্টা, কেন সফল হয়েছে?

উত্তর: ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নিযুক্ত পরিভাষা সমিতির চেষ্টার কথা বলেছেন , একযোগে কাজ করার জন্য অধিকতর সফল হয়।

২.৩.৩ “বৈজ্ঞানিক সাহিত্যে যত কম থাকে ততই ভালো।” — কীসের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: বৈজ্ঞানিক সাহিত্যে যত কম থাকে ততই ভালো এখানে লক্ষণা, ব্যঞ্জনা এবং উৎপ্রেক্ষা, অতিশয়োক্তি ইত্যাদি অলংকার বৈজ্ঞানিক রচনায় যত কম থাকে, ততই ভালো।

২.৩.৪ ‘ক্যালিগ্রাফিস্ট’ কাদের বলে?

উত্তর: লেখার নকশা ও তা সম্পাদন সংক্রান্ত কৌশল যারা বিশেষ ভাবে রপ্ত করে থাকেন তাদেরকে চারু লিপিকর বা ‘ক্যালিগ্রাফিস্ট’ বলে।

২.৪ যে-কোনো আটটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

২.৪.১ নির্দেশক বলতে কী বোঝো? একটি বাক্যে নির্দেশকের প্রয়োগ দেখাও।

উত্তর: নির্দেশক: যেসব পদার্থ নিজেদের বর্ণ পরিবর্তনের মাধ্যমে কোনো দ্রবণের অ্যাসিডীয় বা ক্ষারকীয় প্রকৃতি নির্দেশ করে এবং আয়তনিক বিশ্লেষণে বিক্রিয়ার সমাপ্তি বিন্দু বা শেষ বিন্দু নির্দেশ করে, তাদের নির্দেশক বলে। যেমন-লিটমাস কাগজ, মিথাইল অরেঞ্জ ইত্যাদি।

২.৪.২ নিম্নরেখ পদটির কারক ও বিভক্তি নির্ণয় করো: ‘ও দিদি, আপনার খোঁপায় কলম’।

উত্তর: ও দিদি-সম্বোধন পদে ‘শূন্য’ বিভক্তি।

২.৪.৩ উপমান ও উপমিত কর্মধারয় সমাসের একটি পার্থক্য লেখো।

উত্তর: উপমান সমাসে সাধারণ ধর্মবাচক পদ (যেমন: “এর মতো”, “ন্যায়”) থাকে, কিন্তু উপমিত সমাসে তা উহ্য থাকে।

২.৪.৪ “নগ্ন করল আপন নির্লজ্জ অমানুষতা।” — ‘নির্লজ্জ’ শব্দটির ব্যাসবাক্যসহ সমাস লেখো।

উত্তর:

ব্যাসবাক্য: যে লজ্জা করে না, সে নির্লজ্জ।
সমাস: বহুব্রীহি সমাস।

২.৪.৫ অনুজ্ঞাবাচক বাক্যের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো। একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দাও।

উত্তর: অনুজ্ঞাবাচক বাক্যের বৈশিষ্ট্য:

১. অনুজ্ঞাবাচক বাক্যে অনুমতি বা আজ্ঞা প্রদান করা হয়।

২. এই ধরনের বাক্যে বিনয়ের সাথে কিছু করতে বলা হয়।

উদাহরণ: তুমি এখানে আসতে পারো।

২.৪.৬ ‘সে যে বর্মায় এসেছে এ খবর সত্য।’ — সরল বাক্যে পরিবর্তন করো।

উত্তর: সে বর্মায় এসেছে — এটা সত্য।

২.৪.৭ হিংসার দ্বারা মহৎ কার্য সাধিত হয় না। (কর্তৃবাচ্যে)

উত্তর: হিংসা মহৎ কার্য সাধিত হতে দেয় না। 

২.৪.৮ ‘আকাশে ছাগল চরছে।’ — এখানে বাক্য নির্মাণের কোন্ শর্ত লঙ্ঘিত হয়েছে?

উত্তর: ‘আকাশে ছাগল চরছে।’ এখানে বাক্য নির্মাণের যোগ্যতা শর্ত লঙ্ঘিত হয়েছে।

২.৪.৯ কর্মবাচ্যের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর: কর্মবাচ্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো ক্রিয়াপদ কর্মের অনুসারী এবং কর্ম পদটি বাক্যের প্রধান উদ্দেশ্য হিসেবে বিবেচিত হয়।

২.৪.১০ একশেষ দ্বন্দ্ব সমাসের একটি উদাহরণ দাও।

উত্তর: একশেষ দ্বন্দ্ব সমাসের একটি উদাহরণ: দোয়াত-কলম, মা- বাপ 

৩। প্রসঙ্গ নির্দেশসহ কমবেশি ৬০ শব্দে উত্তর দাও:

৩.১ যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৩.১.১ যে ভয়ংকর আহ্লাদটা হবার কথা, সে আহ্লাদ খুঁজে পায় না।” — ‘আহ্লাদ’ হবার কথা ছিল কেন? আহ্লাদ খুঁজে না পাওয়ার কারণ কী?

উত্তর: তপনের আহ্লাদ হওয়ার কথা ছিল এই ভেবে, যে তপনের লেখা গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হলে লেখক হিসাবে তার নাম ছাপা হবে।

তপনের ছোটোমেসোর সহায়তায় ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় তার গল্প প্রকাশিত হয় এবং চারিদিকে সবাই মেসোর মহত্বেও কথাই বলতে থাকে । মেসো না থাকলে কোনোদিনই ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকার সম্পাদক তপনের লেখা ছুঁয়েও দেখত না এরকম কথাও বলে । এইসব কথার মাঝখানে আসল যে লেখক, সে-ই যেন কোথাও হারিয়ে যায় । তপনের যেন কোনো কৃতিত্বই নেই । এইসব দেখে তপনের লেখা গল্প ছেপে আসার পর তপনের যে আহ্লাদ হওয়া উচিৎ ছিল তা হয় না ।

৩.২.২ ‘চোখের পলকে কোথায় যে অদৃশ্য হইয়া গেল চিঠিখানা।’ — কোন্ চিঠির কথা বলা হয়েছে। সেটির অদৃশ্য হওয়ার পরিস্থির বর্ণনা আরো।

উত্তর: এখানে যে চিঠির কথা বলা হয়েছে, তা হলো সুন্দরের চাকরির জন্য প্রেরিত দরখাস্তপত্র (আবেদনপত্র)। সুন্দরের বাবা তার জন্য একটি চাকরির আবেদন তৈরি করে পাঠাতে চেয়েছিলেন।

চিঠির অদৃশ্য হওয়ার পরিস্থিতি ছিল এমন — গ্রামবাসীরা মিলে যখন বাঁধ নির্মাণ করছিল, তখন নদীর প্রবল স্রোত বাঁধের উপর আঘাত হানে। সেই প্রবল জলের তোড়ে বাঁধসহ নানা কিছু ভেসে যেতে থাকে। চিঠিখানাও সেই জলোচ্ছ্বাসের মধ্যে পড়ে যায় এবং মুহূর্তের মধ্যে চোখের পলকে কোথায় যেন অদৃশ্য হয়ে যায়। এইভাবে নদীর বিদ্রোহ মানুষের শ্রম, স্বপ্ন ও ভবিষ্যতের প্রতীক চিঠিখানাকে ধ্বংস করে দেয়।

৩.২ যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৩.২.১ ‘বাহুরক কন্যার জীবন।’ — কোন্ কন্যা? কীভাবে তাদের জীবন বেঁচেছিল? 

উত্তর: বাহুরক’ কন্যার জীবন।’ অচৈতন্য কন্যা পদ্মাবতী সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে। 

অচৈতন্য পঞ্চকন্যাদের বহু যত্নে সেবা শুশ্রুষা করে চেতনা ফিরিয়ে আনল। যত্ন করেছেন সমুদ্ররাজের কন্যা পদ্মা ও তার সখীগণ। পদ্মর আজ্ঞায় পাঁচজনে মিলে বস্ত্রে ঢেকে উদ্যানের মধ্যে সেই কন্যাকে তারা নিয়ে জান এবং তারা মন্ত্রে ,তন্ত্রে, মহৌষধি দিয়ে মাথায় ও পায়ে সেক দেন , প্রায় চারদণ্ড মতাে সময় ধরে বহু যত্নে পণ্ডকন্যা চিকিৎসা করায় পর অচেতন কন্যার চেতনা ফিরে পায়।

৩.২.২ ‘কাঁপিল লঙ্কা, কাঁপিল জলধি।’ — যে পরিপ্রেক্ষিতে কবি একথা বলেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তর: এই পংক্তিতে কবি তাঁর কাব্যজীবনের প্রথম জাগরণের অভিজ্ঞতাকে বর্ণনা করেছেন। ‘কাঁপিল লঙ্কা’ এবং ‘কাঁপিল জলধি’ দ্বারা কবি তাঁর লেখনির শক্তি এবং প্রভাবের কথা বলেছেন। এটি একটি কাব্যিক উপমা, যা সৃজনশীল শক্তির প্রভাবের বিশালতা এবং শক্তি বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে। তিনি বলছেন যে, তাঁর কলমের শক্তি এমন একটি বিপ্লবের মতো যা মহাকাব্যিক সৃষ্টির উপাদান তৈরি করে। লঙ্কা (রামায়ণের স্থান) এবং জলধি (সাগর) এর মাধ্যমে কবি তার শক্তির বিস্তার এবং প্রভাবকে ব্যাপকভাবে তুলনা করেছেন, যা কাব্যজীবনে এক নবদিগন্তের সূচনা করেছে।

এই প্রসঙ্গে, ‘কাঁপিল’ শব্দের মাধ্যমে কবি প্রকাশ করতে চেয়েছেন যে, তাঁর লেখনি অত্যন্ত শক্তিশালী এবং তা পুরো পৃথিবী তথা মহাকাব্যিক উপাদানগুলিকে প্রভাবিত করতে সক্ষম।

৪। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৪.১ গিরীশ মহাপাত্রের প্রকৃত পরিচয় কী ছিল? তার ছদ্মবেশের বিবরণ দাও।

উত্তর: গিরীশ মহাপাত্র ছিল বিপ্লবী সংগঠনের প্রধান সব্যসাচী মল্লিকের ছদ্মনাম। ব্রিটিশ সরকারের চোখে ধুলো দিতে এবং বিপ্লবী কার্যকলাপ গোপন রাখতে তিনি এই ছদ্মবেশ ধারণ করেন।

ছদ্মবেশে তিনি ছিলেন এক দুর্বল, রোগাক্রান্ত, হাঁপানিতে কাতর, গাঁজা সেবনকারী এক ব্যক্তি। তার পরনে থাকত রঙিন পাঞ্জাবি ও বুকপকেটে বাঘ আঁকা রুমাল। মাথার সামনের চুল লম্বা হলেও ঘাড় ও কানের পাশে ছিল টাক। তবে তার চোখে ছিল এক রহস্যময় গভীরতা, যা তার প্রকৃত পরিচয়ের ইঙ্গিত দিত।

সে “গিরীশ মহাপাত্র” নামটি ছদ্মনামে ব্যবহার করত। এই ছদ্মবেশের অন্তর্গত ছিল—

ভদ্র ও সংযত ভাষাভঙ্গি,

শান্তশিষ্ট চালচলন,

সমাজের সাধারণ শিক্ষিত শ্রেণির সঙ্গে মিশে থাকা।

এই ছদ্মবেশের মাধ্যমে সব্যসাচী বিপ্লবী কর্ম চালিয়ে যান এবং শত্রুদের সহজে ধোঁকা দিতে সক্ষম হন।

৪.২ “এই শহরের জীবনে মাঝে মাঝে বেশ চমৎকার ঘটনা সৃষ্টি করেন বহুরূপী হরিদা।” — ‘বহুরুপী’ গল্প অনুসরণে সেই চমৎকার ঘটনাগুলির পরিচয় দাও। 

উত্তর: হরিদার চরিত্রে লেখকের কর্মজীবনের অভিজ্ঞতার ছায়া পড়েছে। বাঁধাধরা জীবন অপছন্দ হওয়ায় তিনি বহুরূপীর পেশা গ্রহণ করেন। তাঁর চরিত্রে ছিল নাটকীয় বৈচিত্র্য, যা কাজে লাগিয়ে শহুরে জীবনে নানা চমক সৃষ্টি করতেন। যেমন, একদিন বাসস্ট্যান্ডে পাগলের ছদ্মবেশে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন, 

তাঁর মুখ থেকে লালা ঝরে পড়ছিল , দু – চোখ কটকটে লাল । কোমরে জড়ানো ছেঁড়া কম্বল , গলায় টিনের কৌটোর মালা , হাতে একটা থান ইট তুলে তিনি যাত্রীদের দিকে মাঝে মাঝে তেড়ে যাচ্ছিলেন ।

আবার এক সন্ধ্যায় রূপসী বাইজির বেশ ধরে সকলকে অবাক করেন এবং সর্বাধিক উপার্জন করেন। এছাড়া, দয়ালবাবুর লিচুবাগানে নকল পুলিশের ছদ্মবেশে মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করাও ছিল তাঁর বড়ো সাফল্য। হরিদার জীবনের এইসব ঘটনায় তাঁর রূপান্তরের দক্ষতার পরিচয় মেলে।

৫। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৫.১ ‘তারপর যুদ্ধ এল’ — কীসের মতো যুদ্ধ এল? তার কী পরিণতি ঘটল?

উত্তর:  নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতা অনুসারে ‘ রক্তের এক আগ্নেয়পাহাড়ের মতো ‘ যুদ্ধ এসেছিল । 

পরিণতি- শিশু ও বাড়িরা নির্মমভাবে খুন হলো। সমস্ত সমতলে আগুন ধরে গেল। শান্ত হলুদ দেবতারা, যারা হাজার হাজার বছর ধরে ধ্যানে নিমগ্ন ছিল মন্দির থেকে উল্টে পড়ে গেল। তারা টুকরো টুকরো হয়ে চূর্ণ হয়ে গেল, আর স্বপ্ন দেখতে পারল না। সেই মিষ্টি বাড়ি, সেই বারান্দা, যেখানে ঝুলন্ত বিছানায়, গোলাপি গাছ, করতলের মতো ছড়ানো পাতা, চিমনি আর প্রাচীন জলতরঙ্গ—সব পুড়ে ছাই হয়ে গেল। সবকিছু শেষ করে গেল আগুন। এক সময় যেখানে শহর ছিল, সেখানে পড়ে রইল শুধু কাঠকয়লা, দোমড়ানো লোহা, মৃত পাথরের মূর্তির বীভৎস মুখ আর রক্তের এক কালো দাগ। সবকিছু যেন নিঃশেষ করে দিয়ে এক ভয়াবহ নিস্তব্ধতা নেমে এল। অতীতের স্মৃতি, সৌন্দর্য ও জীবনের সব চিহ্ন মুছে গেল সেই ধ্বংসের আগুনে।

৫.২ “কাল-ভয়ংকরের বেশে এবার ওই আসে সুন্দর!” — ‘কাল-ভয়ংকর’ কে? তার ভয়ংকর রূপের বর্ণনা দাও ও তাকে সুন্দর বলা হয়েছে কেন তা ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: এই পঙক্তিতে ‘কাল-ভয়ংকর’ বলতে কবি এমন এক ধ্বংসাত্মক শক্তিকে বোঝাচ্ছেন, যিনি সমাজের সব অন্যায়, শোষণ ও অবিচারের বিরুদ্ধে ভয়ংকর রূপে আবির্ভূত হয়েছেন। এই শক্তি কোনো ব্যক্তি নয়, বরং প্রতীকী এক বিপ্লবী চেতনা, যিনি ধ্বংসের মাধ্যমে নতুন সমাজ গঠনের সংকেত বহন করেন।

তার ভয়ংকর রূপ হল—

তিনি ঝঞ্ঝার মতো উন্মাদ, বজ্রের মতো প্রলয়কারী, তাঁর পায়ে জগৎ কাঁপছে, তাঁর মুখে বজ্রনিনাদ। তিনি ধ্বংস এনেছেন, কিন্তু তা শুধুই ধ্বংসের জন্য নয়—বরং নতুন সৃষ্টি ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে।

তাকে ‘সুন্দর’ বলা হয়েছে কারণ, এই ভয়ংকর রূপ আসলে একটি সুন্দর ভবিষ্যতের সূচনা। কবির মতে, অন্যায়-অবিচারের ভিত্তিকে গুঁড়িয়ে দিয়ে যে বিপ্লব সমাজে শান্তি, সমতা ও স্বাধীনতা আনবে, সে-ই প্রকৃত সুন্দর। তাই ‘কাল-ভয়ংকর’ রূপটি যতই ভীতিকর হোক না কেন, তার অন্তর নিহিত রয়েছে সৌন্দর্য, আশাবাদ ও নবজাগরণের বার্তা।

৬। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৬.১ ‘মুঘল দরবারে একদিন তাঁদের কত না খাতির, কত না সম্মান?’ — তাঁদের বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে? তাঁদের খাতির ও সম্মানের পরিচয় দাও।

উত্তর: ‘তাঁদের’ বলতে ওস্তাদ কলমবাজদের বোঝানো হয়েছে। পারিভাষিক শব্দে এদের বলে ‘ক্যালিগ্রাফিস্ট’ বা ‘লিপিকুশলী’। যাঁরা ওস্তাদ কলমবাজ, তাঁদের স্থান ইতিহাসে পাকা।

মোগল দরবারে তাঁদের প্রচুর খাতির ও সম্মান ছিল। শুধু মোগল দরবার নয়, পৃথিবীর সর্বত্রই তাঁদের কদর ছিল। এমনকি বাংলা দেশেও রাজা-জমিদাররা লিপিকুশলীদের গুণের কদর করতেন। তাঁদের ভরণ-পোষণের ব্যবস্থাও করা হত।

সাধারণ গৃহস্থেরাও এই লিপিকরদের ডেকে পুথি নকল করাতেন। আজও সেসব পুথি দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। সংস্কৃতে যাকে বলে—‘সমানি সমশীর্ষাণি ঘনানি বিরলানি চ’; অর্থাৎ, সব অক্ষর সমান, প্রতিটি ছত্র সুশৃঙ্খল ও পরিচ্ছন্ন।

এইসব লিপিকরদের হস্তাক্ষর ছিল মুক্তোর মতো। অথচ, এঁদের রোজগার ছিল সামান্যই। অষ্টাদশ শতকে এক লিপিকুশলী চারখণ্ড রামায়ণ কপি করে নগদ সাত টাকা, কিছু কাপড় আর মিঠাই সাম্মানিক হিসেবে পেয়েছিলেন। অর্থাৎ, সেসময়ে এদের উপার্জন কম হলেও গুণের সমাদর ছিল।

৬.২ ‘বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চায় এখনও নানা রকম বাধা আছে।’ — লেখক কোন ধরনের বাধার কথা বলেছেন?

উত্তর: বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান” – প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসু বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চা বিষয়ে বিভিন্ন বাধা এর কথা আলোচনা করেছেন।

বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চায় নানারকম বাধা গুলি হলো–

প্রথমত, ইংরেজী জানেন এবং ইংরেজীতে বিজ্ঞান পাঠ এমন পাঠকের বাংলায় বিজ্ঞানচর্চা বেশ কঠিন ।

দ্বিতীয়ত, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ ও কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও উপযুক্ত পারিভাষিক শব্দের অভাব এ পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে ।

তৃতীয়ত, পাশ্চাত্য দেশগুলির তুলনায় আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের বিজ্ঞানবোধ খুবই কম । সামান্য বিজ্ঞানবোধ না থাকলে বিজ্ঞান ভিত্তিক রচনা বোধগম্য হয় না । তাই বাংলায় বিজ্ঞান রচনার ক্ষেত্রে সমস্যা থেকে গিয়েছে ।

চতুর্থত, অনেকে পারিভাষিক শব্দ বাদ দিয়ে রচনাকে সহজ বোধ্য করার ভাবনা ভাবলেও তা বাস্তবতা পায়নি ।

পঞ্চমত, অনেক লেখকের ভাষা আড়ষ্টতা ও ইংরেজির আক্ষরিক অনুবাদ দোষে দুষ্ট হয়ে রচনা তার সাবলীলতা হারায়

ষষ্ঠত, ভুল তথ্য পরিবেশন । অনেকেই না জেনে বা সামান্য জেনে বাংলায় বিজ্ঞান রচনায় ভুল তথ্য পরিবেশন করেন।

সপ্তমত, শেষ বাধাটি হলো– উপমা ও রূপক ছাড়া অন্যান্য অলংকার বিজ্ঞানভিত্তিক রচনার গুরুত্বকে লঘু করে দেখায়

৭। কমবেশি ১২৫ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৭.১ ‘এই পত্র সম্বন্ধে তুমি কিছু জান?’ — পত্রটি কার লেখা? পত্রের বিষয়বস্তু কী?

উত্তর: ‘এই পত্র সম্বন্ধে তুমি কিছু জান?’—এই প্রশ্নটি করা হয় সিরাজউদ্দৌলার প্রসঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ পত্র সম্পর্কে, যা লিখেছিলেন লর্ড ক্লাইভ। এই পত্রটি ছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ষড়যন্ত্রমূলক চক্রান্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এটি লেখা হয়েছিল মীরজাফরকে উদ্দেশ্য করে।

এই পত্রের মূল বিষয়বস্তু ছিল সিরাজউদ্দৌলাকে সিংহাসনচ্যুত করার পরিকল্পনা। ক্লাইভ এই পত্রে সিরাজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করে কিভাবে তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে মীরজাফরকে নবাব করার ছক কষেছিল, তা তুলে ধরেন। এই পত্রটি থেকেই বোঝা যায় কীভাবে বিশ্বাসঘাতকতা, চক্রান্ত এবং বিদেশি শক্তির সাহায্যে সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজিত করা হয়েছিল। এই পত্র ইতিহাসের এক গোপন ষড়যন্ত্রের দলিল হিসেবে গণ্য হয়।

৭.২ ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাট্যাংশ অবলম্বনে সিরাজদ্দৌলার চরিত্রবৈশিষ্ট্য আলোচনা করো।

উত্তর: বিংশ শতাব্দীতে অনেক নাট্যকার ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বদেরকে জাতীয় চেতনা ও মুক্তি-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছেন। শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাটকে সিরাজও সেই ধরনের এক বলিষ্ঠ চরিত্র, যিনি ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে বাংলার মঙ্গলকে প্রাধান্য দিয়েছেন।

তিনি বিদেশি শক্তির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাকে রক্ষা করতে চেয়েছেন। এমনকি শত্রুর সঙ্গে সন্ধি করতে কিংবা অধস্তনদের কাছে ক্ষমা চাইতেও তিনি কুণ্ঠিত হননি। সিরাজের চিন্তাভাবনায় জাত-ধর্মের গণ্ডি ছিল না; তিনি বিশ্বাস করতেন, বাংলা কেবল মুসলমান বা হিন্দুর একার নয় — হিন্দু-মুসলমান একসঙ্গে লড়াই করলেই ব্রিটিশদের রোখা সম্ভব।

একজন নায়কের মতো সিরাজ আত্মসমালোচনার সাহস রাখেন। তিনি বুঝেছিলেন, বাংলার বিপদের পেছনে ষড়যন্ত্রকারীদের পাশাপাশি তাঁর নিজেরও কিছু ত্রুটি ছিল। তাঁর মানসিক দুর্বলতাও স্পষ্ট — তিনি নিজেই বলেন, “পারি না শুধু আমি কঠোর নই বলে।” ঘসেটি বেগমের মতো ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে না পারার জন্য তিনি নিজেকে দায়ী করেন।

সব মিলিয়ে সিরাজদ্দৌলা একজন আত্মবিশ্লেষণী, দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ ও ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার মানুষ, যিনি নাটকে একজন সত্যিকারের নায়কের মর্যাদা পেয়েছেন।

৮। কমবেশি ১৫০ শব্দে যে-কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

৮.১ “ওইটেই তো আমি রে, যন্ত্রণাটাই তো আমি” — বস্তা কে? উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: আলোচ্য উক্তিটি মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাস থেকে গৃহীত।

প্রসঙ্গ – মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপে শেষ দিনের ৪×১০০ মিটার রিলে দৌড়ে রমা যোশির মতো খ্যাতনামা সাঁতারুকে হারিয়ে কোনি বিজয় লাভ করে। জয়লাভের পর বহু মানুষের অভিনন্দন ও উচ্ছ্বাসের ভিড়ে কোনি প্রথমে তার কোচ ক্ষিতীশকে দেখতে না পেয়ে কষ্ট পায়। পরে তাকে খুঁজে পেয়ে আবেগে উথল কোনি রেগে গিয়ে ক্ষিতীশের বুকে ঘুষি মারতে মারতে বলে, সে যন্ত্রণায় মরে যাচ্ছিল। এই আবেগঘন মুহূর্তেই ক্ষিতীশ উক্তিটি বলেন।

তাৎপর্য বিশ্লেষণ 

ব্যক্তিসুখের বিসর্জন – কোনির সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে ক্ষিতীশের আত্মত্যাগ। তাঁকে চ্যাম্পিয়ন বানানোর লক্ষ্যে তিনি সংসারজীবন ভুলে, নিজের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বিসর্জন দিয়ে একনিষ্ঠভাবে পরিশ্রম করে গেছেন। বহু লাঞ্ছনা ও অপমান সহ্য করেও তিনি কখনও দমে যাননি।

অপমানের যন্ত্রণার প্রেরণা – জুপিটারের সতীর্থদের কাছ থেকে পাওয়া অপমান ক্ষিতীশের মনে গভীর ক্ষত তৈরি করেছিল। সেই যন্ত্রণা তাঁকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করে তুলেছিল কোনিকে তৈরি করার জন্য। এই অন্তর্জ্বালা ও মানসিক চাপই তাঁকে সাফল্যের দিকে ধাবিত করেছে।

সংগ্রামী চেতনার প্রতিফলন – ক্ষিতীশের অটল ধৈর্য, কঠোর পরিশ্রম ও সংগ্রামী মনোভাবই তাঁকে করে তুলেছে ইস্পাতকঠিন। আলোচ্য উক্তির মাধ্যমে তাঁর ভেতরের লড়াকু মানসিকতা ও জেদি সংকল্পই প্রকাশ পেয়েছে, যা কোনির জয়কে বাস্তব করে তুলেছে।

৮.২ ‘কোনি তুমি আনস্পোরটিং।’ — কোন প্রসঙ্গে, কার এই উক্তিথ? কোনিকে আনস্পোরটিং বলার কারণ কী? এরপর কী ঘটেছিল?

উত্তর: ‘কোনি তুমি আনস্পোরটিং।’ — এই উক্তিটি বলেছিলেন জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতার একজন বিচারক বা কর্তৃপক্ষ। এই মন্তব্যটি করা হয় জাতীয় পর্যায়ে মেয়েদের সাঁতারে যখন কোনিকে অন্যায্যভাবে ছেঁটে ফেলা হয়। প্রতিযোগিতার দিন কোনির দল থেকে অন্য এক মেয়েকে বেছে নেওয়া হয়, যদিও আসলভাবে প্রতিযোগিতার যোগ্য ছিল কোনি নিজেই। বিষয়টি অনিচ্ছাকৃত হলেও পক্ষপাতদুষ্ট এবং অবিচার ছিল।

এই ঘটনার পর কোনি ক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং প্রতিযোগিতার অন্য একটি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করতে অসম্মতি জানায়। সেই মুহূর্তেই তাকে “Un-Sporting” বা খেলোয়াড়োচিত আচরণ করেনি বলে অভিযোগ করা হয়। এটি মূলত একটি মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা ছিল, যাতে কোনি ভেঙে পড়ে।

তবে এরপর ঘটে গল্পের একটি নাটকীয় ও গৌরবময় মুহূর্ত। খিদ্দা উপযুক্ত যুক্তি ও সাহস নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন এবং কোনিকে আরেকটি ইভেন্টে অংশগ্রহণের সুযোগ এনে দেন। সেই ইভেন্টে কোনি অংশ নেয় এবং উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করে। সে নিজেকে প্রমাণ করে দেয় এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা নত না করে লড়াইয়ের গুরুত্ব তুলে ধরে।

এই ঘটনা উপন্যাসের মূল বার্তা — “Fight, কোনি, fight!” — এর বাস্তব রূপ, যেখানে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করার সাহসিকতা ফুটে ওঠে।

৮.৩ ‘কোনি আস্তে আস্তে মাথা হেলিয়ে দিল।’ — কোন পরিস্থিতির কথা উদ্ধৃতাংশে ফুটে উঠেছে?

উত্তর: মতি নন্দীর লেখা ‘কোনি’ উপন্যাসে উদ্ধৃতাংশটি একটি আবেগঘন ও তাৎপর্যপূর্ণ পরিস্থিতিকে নির্দেশ করে। খিদ্দা যখন কোনিকে জিজ্ঞাসা করে — “তুই কী পারবি রে কোনি?” — তখন কোনি কোনো শব্দ না করে আস্তে আস্তে মাথা হেলিয়ে দেয়। এই মুহূর্তে কোনির নির্ভরতা, আত্মবিশ্বাস এবং খিদ্দার প্রতি অগাধ আস্থা প্রকাশ পায়।

এই পরিস্থিতি তখন সৃষ্টি হয় যখন কোনিকে জাতীয় প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে, অথচ তার সামনে রয়েছে দারিদ্র্য, অনুশীলনের অভাব এবং সামাজিক বৈষম্যের মতো বহু প্রতিকূলতা। খিদ্দা তার মধ্যে লুকিয়ে থাকা ক্ষমতা ও জেদকে জাগিয়ে তোলে। কোনির সেই ‘হ্যাঁ’-সূচক নিঃশব্দ সম্মতি শুধু খিদ্দার প্রশ্নের উত্তর নয়, বরং তার নিজের সংগ্রাম ও স্বপ্নপূরণের যাত্রার এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়।

এই সংক্ষিপ্ত অথচ গভীর মুহূর্তে লেখক ছাত্র ও শিক্ষকের বিশ্বাস, সাহস, এবং সংগ্রামের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলেছেন। কোনির সেই মাথা হেলানো তার নীরব প্রতিজ্ঞার প্রতীক, যা তাকে পরবর্তী সময়ে বিজয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়।

৯। চলিত গদ্যে বঙ্গানুবাদ করো:

India is my motherland. It is an ancient country. India is the second largest population country in the world. All kinds of people live here and they speak in different languages, wear different costumes and observe customs.

উত্তর: ভারত আমার মাতৃভূমি। এটি একটি প্রাচীন দেশ। জনসংখ্যার দিক থেকে ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। এখানে নানা ধরনের মানুষ বাস করে। তারা ভিন্ন ভাষায় কথা বলে, বিভিন্ন পোশাক পরে এবং নানান রীতি-নীতি পালন করে।”

১০। কমবেশি ১৫০ শব্দে নীচের যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

১০.১ মাধ্যমিকের পর কী বিষয় নিয়ে পড়বে — এ বিষয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে একটি কাল্পনিক সংলাপ রচনা করো।

উত্তর:

পলাশ: অর্ণব, মাধ্যমিক তো শেষ, এবার কী ভাবছিস? কোন বিষয়ে পড়বি?

অর্ণব: ভাবছি বিজ্ঞান নিয়ে পড়ব। ছোটবেলা থেকেই ডাক্তার হতে চাই। তাই বায়োলজি থাকলে ভালো হয়।

পলাশ: দারুণ! আমি কিন্তু কলা বিভাগে যেতে চাই। ইতিহাস নিয়ে আমার খুব আগ্রহ, ভবিষ্যতে সিভিল সার্ভিসে বসতে চাই।

অর্ণব: খুব ভালো সিদ্ধান্ত। তুই তো বরাবরই সমাজ আর রাজনীতি নিয়ে আগ্রহী ছিলি।

পলাশ: আর তোর বিজ্ঞানপ্রীতিটা আমি জানি। তুই ভালো করবি, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু ভয় লাগছে, পারব তো?

অর্ণব: ভয় পেলেই তো চলবে না! আমরা এখন জীবন গড়ার মোড়ে দাঁড়িয়ে। ইচ্ছেটাই আসল।

পলাশ: ঠিক বলেছিস। চল, নতুন স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাই।

অর্ণব: হ্যাঁ রে! নিজেদের লক্ষ্য ঠিক রাখলে আমরা নিশ্চয় সফল হবো।

১০.২ বেপরোয়া গাড়ি চালানোয় চলে গেল একটি তাজা প্রাণ — এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।

উত্তর: বেপরোয়া গাড়ি চালানোয় চলে গেল একটি তাজা প্রাণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা, ২৯ এপ্রিল: গতকাল সন্ধ্যায় শহরের বেলঘরিয়ার সড়কে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাল এক স্কুলপড়ুয়া। নিহত ছাত্রটির নাম শুভদীপ দত্ত (১৬)। জানা গেছে, সে পাশের দোকান থেকে কিছু কিনে রাস্তা পার হচ্ছিল, সেই সময় একটি দ্রুতগতির প্রাইভেট কার তাকে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই শুভদীপ পড়ে যায় এবং স্থানীয়রা সঙ্গে সঙ্গে তাকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গাড়িটি অত্যন্ত বেপরোয়াভাবে চালানো হচ্ছিল। পুলিশ গাড়িটি আটক করেছে এবং চালককে গ্রেপ্তার করেছে।

এই ঘটনার পর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অভিভাবক ও সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রশাসনের কাছে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

এই ঘটনা আমাদের আবার মনে করিয়ে দেয়, ট্র্যাফিক আইন মেনে না চললে কতো সহজেই ঝরে যেতে পারে একটি তাজা প্রাণ।

১১। যে-কোনো একটি বিষয় অবলম্বনে রচনা লেখো: (কমবেশি ৪০০ শব্দে)

১১.১ পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার।

উত্তর: পরিবেশ দূষণ ও তার   প্রতিকার

পরিবেশ মানুষের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। সুস্থ ও সুন্দর জীবনযাপনের জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কিন্তু আধুনিক যুগে শিল্পায়ন, নগরায়ন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে পরিবেশ আজ চরমভাবে দূষিত হচ্ছে। এই দূষণ মানুষের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য ও প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করছে।

পরিবেশ দূষণ বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। যেমন—বায়ু দূষণ, জল দূষণ, মাটি দূষণ এবং শব্দ দূষণ। বায়ু দূষণের প্রধান কারণ হলো কলকারখানা ও যানবাহনের ধোঁয়া, ধুলা এবং রাসায়নিক গ্যাস। জল দূষণ ঘটে নদী-নালা ও জলাশয়ে কারখানার বর্জ্য, নোংরা জল এবং প্লাস্টিকজাত দ্রব্য ফেলার ফলে। মাটি দূষণের পেছনে রয়েছে অতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার এবং অব্যবস্থাপনা। এছাড়াও শব্দ দূষণ—যেমন—হর্ন, মাইক, কলকারখানার আওয়াজ ইত্যাদিও মানবদেহের ক্ষতি করে।

পরিবেশ দূষণের প্রভাবে মানুষের মধ্যে নানা রকম রোগব্যাধি বৃদ্ধি পাচ্ছে—যেমন শ্বাসকষ্ট, ক্যানসার, হৃদরোগ, ত্বকের সমস্যা ইত্যাদি। এছাড়াও প্রাণীকূল ও উদ্ভিদজগৎ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বর্ষার অনিয়ম, গ্রীষ্মের অতিরিক্ত তাপমাত্রা, বরফ গলন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ইত্যাদি জলবায়ু পরিবর্তনের লক্ষণ স্পষ্টভাবে ধরা পড়ছে।

এই দূষণ প্রতিরোধে আমাদের সক্রিয় হতে হবে। সর্বপ্রথম, জনসচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার। গাছ লাগানো ও সংরক্ষণ করা, প্লাস্টিক ব্যবহার কমানো, পুনর্ব্যবহারযোগ্য জিনিস ব্যবহার করা এবং বর্জ্য সঠিকভাবে নিষ্কাশন করা জরুরি। শিল্পকারখানার বর্জ্য প্রক্রিয়াজাত করে তবেই নিষ্কাশন করা উচিত। সরকারিভাবে দূষণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন প্রয়োগ এবং পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে।

সবশেষে বলা যায়, পরিবেশ দূষণ রোধ করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। একটি সুস্থ ও সুন্দর পৃথিবীর জন্য আমাদের সচেতন হতে হবে এখনই। না হলে আগামী প্রজন্মের জন্য আমরা রেখে যাব একটি বিপর্যস্ত ও বসবাসের অনুপযোগী পৃথিবী।

১১.২ ছাত্রজীবনে শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা।

উত্তর: ছাত্রজীবনে শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা

ছাত্রজীবন হলো মানুষের জীবনের ভিত্তি গঠনের সময়। এই সময়ে শিক্ষালাভের পাশাপাশি নীতি-নৈতিকতা, চরিত্র গঠন এবং সামাজিক দায়িত্ববোধ তৈরি হয়। আর এইসব গুণাবলি অর্জনের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজন শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা।

শৃঙ্খলা মানে হলো নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলা এবং নিয়মানুবর্তিতা মানে কর্তব্যপালনে নিয়ম অনুসরণ করা। ছাত্রজীবনে শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা রক্ষা করলে একজন ছাত্র ভবিষ্যতে সুনাগরিক হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে। ঠিক সময়ে ঘুম থেকে ওঠা, বিদ্যালয়ে সময়মতো যাওয়া, পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়া, শিক্ষকের আদেশ পালন, বন্ধুদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা—এসবই নিয়মানুবর্তিতার প্রকাশ।

যে ছাত্র জীবনের শুরুতেই শৃঙ্খলার পথ অনুসরণ করে, তার জীবন গঠনের ভিত্তি হয় মজবুত। সে দায়িত্বশীল হয়ে ওঠে এবং ভবিষ্যতে যেকোনো পেশায় সফল হতে পারে। একজন ভালো ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক বা প্রশাসক হওয়ার জন্যও শৃঙ্খলা অপরিহার্য।

অন্যদিকে, যে ছাত্র শৃঙ্খলাহীন জীবনযাপন করে, সে পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ে, জীবনে সাফল্য পায় না এবং সমাজেও নিজের অবস্থান দৃঢ় করতে পারে না। নিয়ম না মানলে জীবনে বিশৃঙ্খলা নেমে আসে, যা পরবর্তীকালে পস্তাতে হয়।

শিক্ষক ও অভিভাবকদের দায়িত্ব হলো ছাত্রদের মধ্যে ছোটবেলা থেকেই শৃঙ্খলার চর্চা শুরু করা। বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিতি, যথাসময়ে কাজ সম্পন্ন করা, সময় ব্যবস্থাপনা শেখানো—এসব কিছুর মধ্য দিয়েই একজন ছাত্র নিয়মানুবর্তিতার গুণ অর্জন করে।

ছাত্রজীবনে এই গুণগুলো অর্জন করা যতটা জরুরি, ততটাই তা আজকের সমাজে উপেক্ষিত হচ্ছে। প্রযুক্তির আসক্তি, অবাধ স্বাধীনতা ও দায়িত্ববোধের অভাব অনেক ছাত্রকে ভুল পথে পরিচালিত করছে। তাই শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা চর্চা এখন সময়ের দাবি।

শেষ কথা, ছাত্রজীবনে শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা মানুষকে মহান করে তোলে। ভবিষ্যতের সফল ও সুশৃঙ্খল জীবনের জন্য ছাত্রজীবন থেকেই এর চর্চা আবশ্যক।

১১.৩ তোমার জীবনের একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা।

উত্তর: তোমার জীবনের একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা

মানুষের জীবনে কিছু ঘটনা থাকে যা আজীবন স্মৃতিতে গেঁথে থাকে। তেমনই একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা আমার জীবনে ঘটেছিল যখন আমি প্রথমবার বিদ্যালয়ের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী হিসেবে পুরস্কার পেয়েছিলাম। এটি আমার জীবনের অন্যতম গর্বের ও আনন্দের মুহূর্ত।

ঘটনাটি ঘটেছিল অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময়। সেবার বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষায় আমি প্রথম স্থান অধিকার করি এবং শিক্ষকরা আমার সার্বিক আচরণ, পাঠে মনোযোগ ও সহপাঠীদের সহায়তার জন্য আমাকে শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থীর পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেন। আমি তখন জানতাম না যে আমাকে এই পুরস্কার দেওয়া হবে। অনুষ্ঠান চলাকালীন প্রধান শিক্ষক যখন আমার নাম ঘোষণা করলেন, আমি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম।

মঞ্চে উঠে যখন পুরস্কার এবং সার্টিফিকেট হাতে পেলাম, আমার মনে হচ্ছিল আমি যেন স্বপ্ন দেখছি। উপস্থিত সকল শিক্ষক, অভিভাবক ও সহপাঠীরা হাততালি দিচ্ছিল। মঞ্চ থেকে নামার সময় আমি আমার বাবা-মায়ের চোখে গর্বের দীপ্তি দেখতে পেয়েছিলাম। সেই মুহূর্তটা আমার হৃদয়ে অম্লান হয়ে আছে।

এই অভিজ্ঞতা আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। আমি বুঝতে পারলাম পরিশ্রম কখনো বিফলে যায় না। যদি নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সঙ্গে কাজ করা যায়, তবে সাফল্য একদিন আসবেই। সেই পুরস্কার আমাকে আরও আত্মবিশ্বাসী করে তোলে এবং ভবিষ্যতে ভালো কিছু করার প্রেরণা জোগায়।

এটি শুধুমাত্র একটি পুরস্কার পাওয়া নয়, বরং নিজেকে নতুন করে আবিষ্কারের সুযোগ ছিল। আমি বুঝে গিয়েছিলাম, লক্ষ্য স্থির রেখে পরিশ্রম করলে যে কোনো কিছু অর্জন সম্ভব।

এই স্মরণীয় অভিজ্ঞতা আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। আজও যখন আমি কোনো কাজে হতাশ হই, তখন সেই পুরস্কার লাভের দিনটি মনে করি। তা আমাকে নতুন করে সাহস ও উদ্দীপনা দেয়।

১১.৪ তোমার প্রিয় সাহিত্যিক।

উত্তর: আমার প্রিয় সাহিত্যিক

আমার প্রিয় সাহিত্যিক হলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি শুধু বাংলা সাহিত্যের নয়, বরং বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিভা। কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ—সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই যেখানে তাঁর অবদান নেই। তাঁর সৃষ্টিকর্ম আজও পাঠকসমাজকে মুগ্ধ করে এবং জীবনের গভীরতাকে নতুনভাবে উপলব্ধি করতে সাহায্য করে।

রবীন্দ্রনাথ ১৮৬১ সালের ৭ মে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছোটবেলা থেকেই সাহিত্যচর্চায় আগ্রহী ছিলেন। অল্প বয়সে লেখালেখি শুরু করে তিনি শীঘ্রই সাহিত্য জগতে নিজের প্রতিভার ছাপ রাখেন।

তাঁর লেখা গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এটি ছিল এশিয়ার প্রথম নোবেল অর্জন। তাঁর লেখায় প্রেম, প্রকৃতি, মানবতা, দেশপ্রেম ও জীবনের গভীর ভাবনা প্রকাশ পেয়েছে।

আমার রবীন্দ্রনাথকে প্রিয় লাগার প্রধান কারণ তাঁর লেখার ভাষা এবং ভাবের গভীরতা। তাঁর কবিতায় যেমন হৃদয়ের সূক্ষ্ম অনুভূতির প্রকাশ ঘটে, তেমনি তাঁর গল্প-উপন্যাসে সমাজের বাস্তব চিত্র ফুটে ওঠে। ছুটি, পোস্টমাস্টার, কাবুলিওয়ালা প্রভৃতি ছোটগল্পগুলো আমার খুব প্রিয়। আবার শেষের কবিতা, ঘরে বাইরে, চোখের বালি উপন্যাসগুলো মনকে নাড়া দেয়।

তাঁর গানও অতুলনীয়। রবীন্দ্রসংগীত বাংলা গানের এক অনন্য ধারা। জীবনের নানা অনুভূতি—আনন্দ, বেদনা, প্রেম, প্রকৃতি, ঈশ্বর—সবই তাঁর গানে সুরে ও কথায় ফুটে ওঠে।

রবীন্দ্রনাথ শুধু সাহিত্যিক নন, ছিলেন একজন দার্শনিক, শিক্ষাবিদ ও সমাজচিন্তক। শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি শিক্ষার নতুন পথ দেখিয়েছেন। তিনি মানুষকে মুক্ত চিন্তা ও মানবিকতার পথে আহ্বান জানিয়েছেন।

তাঁর জীবন ও সাহিত্য আমাকে সব সময় অনুপ্রাণিত করে। তাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই আমার প্রিয় সাহিত্যিক। তাঁর লেখা যতই পড়ি, ততই নতুন কিছু শেখার ও বোঝার সুযোগ পাই।


MadhyamikQuestionPapers.com এ আপনি অন্যান্য বছরের প্রশ্নপত্রের ও Model Question Paper-এর উত্তরও সহজেই পেয়ে যাবেন। আপনার মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতিতে এই গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ কেমন লাগলো, তা আমাদের কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আরও পড়ার জন্য, জ্ঞান অর্জনের জন্য এবং পরীক্ষায় ভালো ফল করার জন্য MadhyamikQuestionPapers.com এর সাথে যুক্ত থাকুন।

Tag Post :
Share This :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *